শিশুশ্রম বন্ধ করুন by আসিফ আল আজাদ

শিশুরা আমাদের ভবিষ্যৎ। সাংবিধানিক ও আইনগত বাধ্যবাধকতা থাকা সত্ত্বেও দেশের অধিকাংশ শিশু নানাভাবে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত। অনেক শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত।
সম্প্রতি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটি কর্তৃক 'শিশু অধিকার আইন-২০১৩' সংসদে উত্থাপিত এবং পাসও হয়েছে।
সাংবিধানিকভাবে ১৮ বছরের কম বয়সীদের শিশু বলে গণ্য করা হয়। সে হিসেবে দ্বাদশ শ্রেণীতে অধ্যয়নরত সব শিক্ষার্থীই শিশু। কারণে-অকারণে শিশুদের তথা ছাত্রছাত্রীদের রাজনীতিতে ব্যবহার করা আমাদের দেশে নতুন নয়। তবে ছিন্নমূল, পথশিশু ও কর্মজীবী শিশুদের আমাদের দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দল যেভাবে ব্যবহার করে আসছে, অধ্যয়নরত ছাত্রছাত্রীদের বেলায় তত ব্যাপক নয়। যেসব শিশু পড়ালেখার পরিবর্তে স্বল্প আয়ের কর্মে নিয়োজিত, টাকার বিনিময়ে তাদের ঝুঁঁকিপূর্ণ রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করা সহজ। সব রাজনৈতিক দলের মিটিং-মিছিলে শিশুদের অংশগ্রহণ নিরুৎসাহিত করতে পারে একমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোই।
দেশের শহর-বন্দরেই শুধু নয়, গ্রামাঞ্চলেও গৃহকর্মী হিসেবে শিশু শ্রমিকদের সংখ্যা প্রায় ৪০ শতাংশ। শিল্প-কারখানা বিশেষ করে গার্মেন্ট শিল্পে শিশু শ্রমিকদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। অথচ আইন আছে শিশুশ্রম বন্ধ রাখার। আইন আছে শিশু অধিকারের, কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। বাংলাদেশ ২০০১ সালে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম সংবলিত আইএলও কনভেনশনের ১৮২ নম্বর অনুচ্ছেদকে অনুসমর্থন করেছে।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে ২৮টি ঝুঁঁকিপূর্ণ কাজ শিশুদের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদের ৩২ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, শিশুদের স্বাস্থ্য অথবা শারীরিক, মানসিক, আত্মিক, নৈতিক বা সামাজিক বিকাশের জন্য ক্ষতিকর কিংবা এসবে ব্যাঘাত ঘটায় বা বিপদের আশঙ্কা থাকে এমন কাজ না করানোর জন্য রাষ্ট্রগুলো ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এ ধরনের অমানবিক কাজ বন্ধ করতে হবে। কাজেই সংসদীয় স্থায়ী কমিটি কর্তৃক রাজনীতিতে শিশুদের ব্যবহার নিষিদ্ধ করার প্রস্তাবটিকে আমরা স্বাগত জানাই। আমাদের ভবিষ্যৎ রক্ষায় আমরা চাই এটি যথাযথভাবে কার্যকর হোক।

য় আসিফ আল আজাদ :শিক্ষার্থী গণবিশ্ববিদ্যালয়, সাভার, ঢাকা
asifsavar@gmail.com

No comments

Powered by Blogger.