মুরসিকে ১৫ দিন আটক রাখার নির্দেশ আদালতের
কায়রোর রাবা আদাউইয়া স্কয়ারে গতকাল মোহাম্মদ মুরসির সমর্থকদের বিক্ষোভ ষ ছবি: এএফপি |
মিসরের রাজধানী কায়রোয় গতকাল শুক্রবার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির সমর্থকদের সঙ্গে বিরোধীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে ফিলিস্তিনের কট্টরপন্থী সংগঠন হামাসের সঙ্গে যোগাযোগের অভিযোগে মুরসিকে ১৫ দিন আটক রাখার নির্দেশ দিয়েছেন মিসরের একটি আদালত। আগে থেকেই মুরসি সমর্থক ও বিরোধীরা শুক্রবার কায়রোর রাজপথে পাল্টাপাল্টি সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছিল। সেনাপ্রধান আল-সিসি সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় জনগণকে রাস্তায় নামার আহ্বান জানিয়েছিলেন। উভয় পক্ষের সমর্থকদের সংঘর্ষে তাক্ষণিকভাবে হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। মিসরের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা মেনা গতকাল জানায়, ২০১১ সালে আরব বসন্ত বিপ্লবের সময় কারাগার থেকে পালাতে সহায়তার জন্য ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন মুরসি। এটিসহ কিছু রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগে আদালত গতকাল তাঁকে ১৫ দিনের জন্য আটক রাখার নির্দেশ দেন। এই সময়ে তাঁর বিরুদ্ধে ওই অভিযোগগুলোর তদন্ত চলবে। তদন্তের সময় বাড়ানো হলে মুরসির আটকাদেশের মেয়াদও বাড়ানো হবে। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে মুরসিকে জনসমক্ষে দেখা যায়নি। তারপর এই প্রথম সরকারের পক্ষ থেকে তাঁর সম্পর্কে কোনো তথ্য জানানো হলো। কায়রোয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল দুপুরের পর রাজধানীর লাগোয়া শহর সুব্রায় মুরসির সমর্থক ও বিরোধীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। কিছুক্ষণের মধ্যে তা আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। টিভির ফুটেজে দেখা যায়, সংঘর্ষে অংশ নেওয়া লোকজন পরস্পরের দিকে পাথর ও ইট-পাটকেল ছুড়ছে। কায়রোর রাজপথে গতকাল সাঁজোয়া যান নিয়ে সেনা সদস্যদের টহল দিতে দেখা যায়। সেনাবাহিনী সহিংসতার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। মুক্তি দেওয়ার আহ্বান: এদিকে মিসরের সার্বিক পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে মুরসিকে মুক্তি দিতে দেশটির সামরিকবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন। বান কি মুনের উপমুখপাত্র এডোয়ার্ডো ডেল বুয়ে গত বৃহস্পতিবার জানান, মুরসি ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের দ্রুত ছেড়ে দেওয়া কিংবা তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো স্বচ্ছতার ভিত্তিতে দ্রুত নিষ্পত্তি করার আহ্বান জানিয়েছেন মহাসচিব। সার্বিক পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান: মিসরে সেনা অভ্যুত্থান হয়েছে কি না, সে ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলবে না যুক্তরাষ্ট্র। ওবামা প্রশাসনকে এটা নিশ্চিত করতে বলতেই হবে—এমন কোনো আইনও নেই। যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ কথা বলেছেন। বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট কিছু নয় বলেও মন্তব্য করেন তাঁরা। নির্ভরযোগ্য মিত্র মিসরে সহায়তা অব্যাহত রাখতেই দৃশ্যত এই কৌশল নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন কায়রোকে বছরে সামরিকসহ ১৫৫ কোটি ডলার সহায়তা দেয়। মিসরের অভ্যুত্থানকে ‘সামরিক অভ্যুত্থান’ বললে আইনত ওয়াশিংটন আর কায়রোকে সহায়তা দিতে পারবে না। এএফপি, বিবিসি ও রয়টার্স।
No comments