স্বাচিপের ভয়ে পরিচালক হাসপাতাল-ছাড়া!ঢাকা শিশু হাসপাতালে অচলাবস্থা by তৌফিক মারুফ
সরকারি দল সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন
স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) একটি গ্রুপের ভয়ে দুই সপ্তাহ ধরে
হাসপাতাল থেকে এক রকম পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালক।
এর আগে একই চক্রের দাপটের মুখে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন ওই হাসপাতালের
ব্যবস্থাপনা বোর্ডের চেয়ারম্যান। এ পরিস্থিতিতে অচলাবস্থার কবলে পড়েছে শিশু
রোগ চিকিৎসায় দেশের সবচেয়ে বড় বিশেষায়িত এ হাসপাতাল। বন্ধ রয়েছে
হাসপাতালের জরুরি কেনাকাটা, জনবল নিয়োগ, বাজেট অনুমোদন, ব্যাংক হিসাব
ব্যবস্থাপনাসহ প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম। ওষুধ-পথ্য কেনা চলছে
বাকিতে। চলতি মাস শেষে অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে রোগীদের খাদ্য সরবরাহ।
একাধিকবার এসব বিষয়ে কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হলেও কোনো
সুরাহা দেখছেন না হাসপাতালটির চিকিৎসক-কর্মচারীরা।
হাসপাতালের বিভিন্ন পর্যায়ের চিকিৎসক ও কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিভিন্ন যন্ত্রপাতি কেনা ও অন্যান্য টেন্ডার-প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে হাসপাতালের ক্যান্টিন ইজারার ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রভাব খাটিয়ে আসছিল স্থানীয় স্বাচিপের একটি শক্তিশালী চক্র। কর্তৃপক্ষ এর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণের ফলে ওই চক্র ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এর সঙ্গে নতুন যুক্ত হয়েছে স্বাচিপের কেন্দ্রীয় পর্যায়ের এক প্রভাবশালী নেতাকে এই হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা বোর্ডের চেয়ারম্যান মনোনয়নে কর্তৃপক্ষের অনীহার বিষয়টি। তবে স্বাচিপের পক্ষ থেকে পাল্টা অভিযোগ করা হয়েছে পরিচালকের বিরুদ্ধে।
জানতে চাইলে ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মনজুর হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, 'সব কিছু মিলিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে আমি শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ বোধ করছি। তাই হাসপাতালে যাচ্ছি না। ছুটিতে আছি।'
শিশু হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা বোর্ডের অন্যতম সদস্য ও স্বাচিপের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি অধ্যাপক ডা. সারফুদ্দিন আহম্মেদ বলেন, 'শুনেছি পরিচালক অনেক দিন ধরেই নাকি হাসপাতালে আসছেন না। এ ছাড়া চেয়ারম্যান না থাকার সুযোগে তিনি (পরিচালক) এককভাবে স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে সব কিছু করছিলেন, এমনকি হাসপাতালের অন্য ডাক্তার-কর্মকর্তাদেরও তোয়াক্কা করছিলেন না।'
অধ্যাপক ডা. সারফুদ্দিন আরো বলেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মন্ত্রণালয় থেকে চেয়ারম্যান মনোনয়নের বিষয়টি চূড়ান্ত করা উচিত। নয়তো হাসপাতালটির অচলাবস্থা কাটবে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিশু হাসপাতালের একাধিক জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক কালের কণ্ঠকে জানান, এ হাসপাতাল শাখা স্বাচিপের সভাপতি ও সম্পাদক অনেক দিন ধরেই কেনাকাটা, নিয়োগ, ঠিকাদারি এবং হাসপাতালের কেন্টিনের ইজারা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে ব্যবস্থাপনা বোর্ডের বেশির ভাগ সদস্যের শক্ত অবস্থানের ফলে অনেক ক্ষেত্রেই তাঁরা সুবিধা নিতে পারেননি। এ নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের বিরোধ দেখা দেয়। বোর্ডের কোনো কোনো প্রভাবশালী সদস্য ওই গ্রুপটিকে আগে থেকেই মদদ দিয়ে আসছিলেন। এক পর্যায়ে তাদের ক্ষুব্ধ আচরণের মুখে ব্যবস্থাপনা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান গত ১০ মার্চ স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন। ২০০৯ সালের ৬ এপ্রিল অধ্যাপক ডা. মাহমুদুর রহমানকে চেয়ারম্যান করে ১৫ সদস্যের শিশু হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা বোর্ড গঠন করা হয়েছিল।
চিকিৎসকরা জানান, অধ্যাপক মাহমুদুর রহমানের পদত্যাগের পর একই বোর্ডের সদস্য ও বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সাবেক মহাসচিব এবং স্বাচিপের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি অধ্যাপক ডা. সারফুদ্দিন আহম্মেদকে মনোনয়নের জন্য তৎপর হয়ে ওঠে স্বাচিপের একটি গ্রুপ। তবে স্বাচিপের আরেক গ্রুপ ওই পদে জাতীয় অধ্যাপক এবং শিশু হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা বোর্ডের আরেক জ্যেষ্ঠ সদস্য অধ্যাপক ডা. শায়লা খাতুনকে মনোনয়নের জন্য তৎপর হয়। হাসপাতালের পরিচালক ডা. মনজুর হোসেনও লিখিতভাবে ডা. শায়লাকে মনোনয়নের প্রস্তাব করেন। এতে ডা. সারফুদ্দিন আহম্মেদের পক্ষের স্বাচিপ গ্রুপ আরো ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।
এ প্রসঙ্গে স্বাচিপ নেতা অধ্যাপক ডা. সারফুদ্দিন আহম্মেদ বলেন, 'মন্ত্রণালয় যদি আমাকে চেয়ারম্যান করে তবে আমি আপত্তি করব না। কারণ, আমার পর্যাপ্ত যোগ্যতা আছে বলে মনে করি। তবে না করলেও আমার বলার কিছু নেই।'
হাসপাতালের পরিচালক এ বিষয়ে বলেন, 'বিভিন্ন দিক থেকে জাতীয় অধ্যাপক ডা. শায়লা খাতুন অনেক জ্যেষ্ঠ ও বেশি যোগ্য। তাই আমি তাঁর নাম প্রস্তাব করেছি। মন্ত্রণালয় যত দ্রুত বোর্ডের চেয়ারম্যান মনোনয়নের বিষয়টি সুরাহা করবে, ততই এ প্রতিষ্ঠানের জন্য মঙ্গল হবে। কারণ বোর্ডের সিদ্ধান্ত ছাড়া কিছুই করা যাচ্ছে না।'
এদিকে ঢাকা শিশু হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এমন একাধিক শিশু বিশেষজ্ঞ জানান, সম্পূর্ণরূপে একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বছরের পর বছর এ হাসপাতালের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে আছে। ফলে যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তখন সেই সরকারের দলীয় চিকিৎসক ও কর্মচারীদের দাপটে হাসপাতালের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়।
এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য গতকাল শুক্রবার স্বাস্থ্যসচিবের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও সংযোগ পাওয়া সম্ভব হয়নি।
হাসপাতালের বিভিন্ন পর্যায়ের চিকিৎসক ও কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিভিন্ন যন্ত্রপাতি কেনা ও অন্যান্য টেন্ডার-প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে হাসপাতালের ক্যান্টিন ইজারার ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রভাব খাটিয়ে আসছিল স্থানীয় স্বাচিপের একটি শক্তিশালী চক্র। কর্তৃপক্ষ এর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণের ফলে ওই চক্র ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এর সঙ্গে নতুন যুক্ত হয়েছে স্বাচিপের কেন্দ্রীয় পর্যায়ের এক প্রভাবশালী নেতাকে এই হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা বোর্ডের চেয়ারম্যান মনোনয়নে কর্তৃপক্ষের অনীহার বিষয়টি। তবে স্বাচিপের পক্ষ থেকে পাল্টা অভিযোগ করা হয়েছে পরিচালকের বিরুদ্ধে।
জানতে চাইলে ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মনজুর হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, 'সব কিছু মিলিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে আমি শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ বোধ করছি। তাই হাসপাতালে যাচ্ছি না। ছুটিতে আছি।'
শিশু হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা বোর্ডের অন্যতম সদস্য ও স্বাচিপের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি অধ্যাপক ডা. সারফুদ্দিন আহম্মেদ বলেন, 'শুনেছি পরিচালক অনেক দিন ধরেই নাকি হাসপাতালে আসছেন না। এ ছাড়া চেয়ারম্যান না থাকার সুযোগে তিনি (পরিচালক) এককভাবে স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে সব কিছু করছিলেন, এমনকি হাসপাতালের অন্য ডাক্তার-কর্মকর্তাদেরও তোয়াক্কা করছিলেন না।'
অধ্যাপক ডা. সারফুদ্দিন আরো বলেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মন্ত্রণালয় থেকে চেয়ারম্যান মনোনয়নের বিষয়টি চূড়ান্ত করা উচিত। নয়তো হাসপাতালটির অচলাবস্থা কাটবে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিশু হাসপাতালের একাধিক জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক কালের কণ্ঠকে জানান, এ হাসপাতাল শাখা স্বাচিপের সভাপতি ও সম্পাদক অনেক দিন ধরেই কেনাকাটা, নিয়োগ, ঠিকাদারি এবং হাসপাতালের কেন্টিনের ইজারা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে ব্যবস্থাপনা বোর্ডের বেশির ভাগ সদস্যের শক্ত অবস্থানের ফলে অনেক ক্ষেত্রেই তাঁরা সুবিধা নিতে পারেননি। এ নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের বিরোধ দেখা দেয়। বোর্ডের কোনো কোনো প্রভাবশালী সদস্য ওই গ্রুপটিকে আগে থেকেই মদদ দিয়ে আসছিলেন। এক পর্যায়ে তাদের ক্ষুব্ধ আচরণের মুখে ব্যবস্থাপনা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান গত ১০ মার্চ স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন। ২০০৯ সালের ৬ এপ্রিল অধ্যাপক ডা. মাহমুদুর রহমানকে চেয়ারম্যান করে ১৫ সদস্যের শিশু হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা বোর্ড গঠন করা হয়েছিল।
চিকিৎসকরা জানান, অধ্যাপক মাহমুদুর রহমানের পদত্যাগের পর একই বোর্ডের সদস্য ও বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সাবেক মহাসচিব এবং স্বাচিপের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি অধ্যাপক ডা. সারফুদ্দিন আহম্মেদকে মনোনয়নের জন্য তৎপর হয়ে ওঠে স্বাচিপের একটি গ্রুপ। তবে স্বাচিপের আরেক গ্রুপ ওই পদে জাতীয় অধ্যাপক এবং শিশু হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা বোর্ডের আরেক জ্যেষ্ঠ সদস্য অধ্যাপক ডা. শায়লা খাতুনকে মনোনয়নের জন্য তৎপর হয়। হাসপাতালের পরিচালক ডা. মনজুর হোসেনও লিখিতভাবে ডা. শায়লাকে মনোনয়নের প্রস্তাব করেন। এতে ডা. সারফুদ্দিন আহম্মেদের পক্ষের স্বাচিপ গ্রুপ আরো ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।
এ প্রসঙ্গে স্বাচিপ নেতা অধ্যাপক ডা. সারফুদ্দিন আহম্মেদ বলেন, 'মন্ত্রণালয় যদি আমাকে চেয়ারম্যান করে তবে আমি আপত্তি করব না। কারণ, আমার পর্যাপ্ত যোগ্যতা আছে বলে মনে করি। তবে না করলেও আমার বলার কিছু নেই।'
হাসপাতালের পরিচালক এ বিষয়ে বলেন, 'বিভিন্ন দিক থেকে জাতীয় অধ্যাপক ডা. শায়লা খাতুন অনেক জ্যেষ্ঠ ও বেশি যোগ্য। তাই আমি তাঁর নাম প্রস্তাব করেছি। মন্ত্রণালয় যত দ্রুত বোর্ডের চেয়ারম্যান মনোনয়নের বিষয়টি সুরাহা করবে, ততই এ প্রতিষ্ঠানের জন্য মঙ্গল হবে। কারণ বোর্ডের সিদ্ধান্ত ছাড়া কিছুই করা যাচ্ছে না।'
এদিকে ঢাকা শিশু হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এমন একাধিক শিশু বিশেষজ্ঞ জানান, সম্পূর্ণরূপে একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বছরের পর বছর এ হাসপাতালের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে আছে। ফলে যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তখন সেই সরকারের দলীয় চিকিৎসক ও কর্মচারীদের দাপটে হাসপাতালের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়।
এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য গতকাল শুক্রবার স্বাস্থ্যসচিবের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও সংযোগ পাওয়া সম্ভব হয়নি।
No comments