অস্ট্রেলিয়ার নতুন শরণার্থী নীতিতে জাতিসংঘের উদ্বেগ প্রকাশ
নৌকায় করে অস্ট্রেলিয়ায় আসা আশ্রয়প্রার্থীদের পাপুয়া নিউগিনিতে (পিএনজি) পাঠানোর বিষয়ে কেভিন রাড সরকারের নতুন নীতির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। বিশ্ব সংস্থার উদ্বাস্তুবিষয়ক শাখা ইউএনএইচসিআর গতকাল শুক্রবার বলেছে, অস্ট্রেলিয়ার ওই সিদ্ধান্ত তাদের ‘অস্বস্তিতে’ ফেলেছে। কারণ, পাপুয়া নিউগিনিতে শরণার্থীদের পর্যাপ্ত সুরক্ষার ব্যবস্থা নেই। অস্ট্রেলিয়ার সরকার এক সপ্তাহ আগে নতুন কঠোর অভিবাসন নীতি ঘোষণা করে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন থেকে আশ্রয়প্রার্থী বা শরণার্থীদের কিছুটা উত্তরে অবস্থিত পিএনজির মানুস দ্বীপে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। অস্ট্রেলিয়ার ওই কঠোর নীতির বিষয়ে গতকাল প্রথমবারের মতো বিবৃতি দেন জাতিসংঘের উদ্বাস্তুবিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর)। বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, তারা উদ্বিগ্ন যে এ নীতির আওতায় আরও বেশিসংখ্যক আশ্রয়প্রার্থীকে দরিদ্র দেশটিতে পাঠানো হতে পারে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘পাপুয়া নিউগিনিতে বর্তমানে শরণার্থীদের পর্যাপ্ত সুরক্ষার মানের ঘাটতি নিয়ে ইউএনএইচসিআর অস্বস্তিতে রয়েছে।’ অস্ট্রেলিয়া ২০১২ সালে মানুস দ্বীপ ও নাউরুতে শরণার্থী পাঠানো আবার শুরু করে। নৌকায় করে আসা শরণার্থীর ঢল কমানোর লক্ষ্যে ওই পদক্ষেপ নেওয়া হয়। কিন্তু এবার বলা হয়েছে, তাদেরকে পাপুয়া নিউগিনিতে শুধু তালিকাভুক্ত বা বাছাই করা হবে না সেখানেই স্থায়ীভাবে রাখা হবে। ইউএনএইচসিআর বলছে, এ ক্ষেত্রে আইনি বিষয়ও রয়েছে। সংস্থাটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি সরেজমিনে পরিদর্শনের আলোকে ইউএনএইচসিআরের মূল্যায়ন হচ্ছে, আশ্রয়প্রার্থীদের অস্ট্রেলিয়া থেকে পিএনজিতে পাঠানোর ক্ষেত্রে আইনি কাঠামোয় উল্লেখযোগ্য ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে জাতীয় সক্ষমতার অভাব, অবকাঠামোগত অবস্থার বেহাল দশা, অযৌক্তিকভাবে আটক ইত্যাদি। এই অবস্থায় সেখানে পাঠানো শরণার্থীদের, বিশেষ করে পরিবার ও শিশুদের শারীরিক ও মনঃসামাজিক অবস্থার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। ইউএনএইচসিআর বলছে, পিএনজিতে বিদ্যমান সমস্যাগুলোর সমাধান করা হচ্ছে। তবে অস্ট্রেলিয়ার নতুন নীতির আওতায় সেখানে আরও বেশি আশ্রয়প্রার্থী বা শরণার্থী পাঠানো হলে, তাদের যথাযথ সুরক্ষার নিশ্চয়তা দেওয়াটা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। এর আগে অস্ট্রেলিয়ার মানবাধিকার কমিশনও দেশটির নতুন ঘোষিত নীতির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। কমিশন বলেছে, বিতর্কিত ওই নীতির মাধ্যমে সরকার অস্ট্রেলিয়ার আইনি বাধ্যবাধকতাকে লঙ্ঘন করতে পারে। সম্প্রতি পিএনজির একটি অভিবাসী অন্তরীণ কেন্দ্রের সাবেক নিরাপত্তা কর্মকর্তা সেখানে বন্দীদের ওপর ধর্ষণসহ বিভিন্ন নির্যাতনের অভিযোগ করেন। এএফপি।
No comments