নির্বাচনে তিস্তা ও সীমান্ত চুক্তির প্রভাব পড়বে : দীপু মনি'বাংলাদেশে উদার গণতান্ত্রিক সরকার চান মনমোহন'
বাংলাদেশের সঙ্গে স্বাক্ষরিত স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নে ইতিবাচক
মনোভাব প্রকাশ করেছেন ভারতের রাজ্যসভার বিরোধীদলীয় নেতা বিজেপির অরুণ
জেটলি। তবে তিনি বিষয়টি নিয়ে তাঁর দল বিজেপির নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন
বলে জানিয়েছেন।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে ভারত সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা.
দীপু মনি পার্লামেন্ট হাউসে অরুণ জেটলির সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা
জানান।
এর আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে দেখা করেন দীপু মনি। ওই বৈঠকে বাংলাদেশে উদার গণতান্ত্রিক সরকার থাকবে- এমনটাই প্রত্যাশা করেন মনমোহন সিং। সেই সঙ্গে দুই দেশের সম্পর্ক যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে তা যেন বজায় থাকে, তাও চান তিনি।
ওই বৈঠকে মনমোহন সিং বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা নদীর পানিবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষর এবং সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বৈঠক শেষে ডা. দীপু মনি সাংবাদিকদের এসব কথা জানান। তবে তিস্তা ও সীমান্ত চুক্তি না হলে আগামী নির্বাচনে এর প্রভাব পড়বে বলে মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'যদি বিল (স্থল সীমান্ত) পাস না হয় আর তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি যদি না এগোয়, তাহলে আগামী নির্বাচনে বিষয়গুলো নিশ্চিতভাবেই বড় ধরনের ইস্যু হয়ে দাঁড়াবে।' খবর বাসস ও বিডিনিউজের।
নির্বাচনের ছয় মাসেরও কম সময় বাকি থাকতে এসব অমীমাংসিত বিষয় নিয়ে বিজেপির সঙ্গে আলোচনা করতেই দিল্লি গেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আগামী ৫ আগস্ট শুরু হতে যাওয়া ভারতের রাজ্যসভার বর্ষাকালীন অধিবেশনে আবারও স্থল সীমান্ত বিলটি তুলবে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের দল কংগ্রেস।
অরুণ জেটলির সঙ্গে বৈঠকের পর এক প্রশ্নের জবাবে দীপু মনি বলেন, 'আমরা তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষর এবং সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের ব্যাপারে আশাবাদী।' তিনি বলেন, সীমান্ত চুক্তির সমস্যাটি দীর্ঘদিনের। এটি বাস্তবায়িত হলে শুধু বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশের মানুষ উপকৃত হবে। ভারতের প্রতিটি রাজনৈতিক দল এবং জনগণের এ চুক্তি সমর্থন করা উচিত। দীর্ঘদিন পর আমাদের সামনে এ সমস্যা সমাধানের একটি সুযোগ এসেছে এবং তা আমাদের কাজে লাগাতে হবে। ডা. দীপু মনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার প্রথমবার সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করে। তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষর এবং সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন এখন প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
এ ছাড়া গতকাল রাতে ডা. দীপু মনির সম্মানে ইফতার ও নৈশ ভোজের আয়োজন করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশিদ।
দীপু মনি দেখা করতে গেলে ড. মনমোহন সিং তাঁর ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের ব্যাপারে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকে ভারত। নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশ যে ব্যবস্থা নিয়েছে, ভারত তাকে সব সময়ই গুরুত্বসহকারে দেখে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রয়াসের কারণেই এ অঞ্চলে শান্তির পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁরা প্রত্যাশা করেন, বাংলাদেশে উদার গণতান্ত্রিক সরকার থাকবে এবং দুই দেশের সম্পর্ক যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে, তা বজায় থাকবে।
আলোচনাকালে মনমোহন সিং ও দীপু মনি দুই দেশের সরকারের মধ্যে নেওয়া প্রকল্পগুলোর দ্রুত বাস্তবায়নে সন্তোষ প্রকাশ করেন। দুই দেশের মধ্যে পাওয়ার গ্রিড সংযোগকাজ এগিয়ে চলছে। সেপ্টেম্বর থেকে গ্রিডে বিদ্যুৎ সঞ্চালন শুরু হবে। এ ছাড়া জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর কাজও এগিয়ে চলছে। টিপাইমুখের যৌথ সমীক্ষা শেষ হয়েছে। সেখানে ভারত-বাংলাদেশ যৌথভাবে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে দুই দেশই লাভবান হবে। আগরতলা-আখাউড়া রেল সংযোগের কাজ সন্তোষজনকভাবে এগিয়ে যাওয়ায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেন বলে ডা. দীপু মনি জানান।
দীপু মনি আরো জানান, ড. মনমোহন আবারও বলেছেন, 'ভারত এমন কোনো প্রকল্প গ্রহণ করবে না যাতে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।' তাঁরা পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ, আমদানি-রপ্তানি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে দীপু মনির বৈঠকের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা শিব শংকর মেনন, সে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে ভারতের সঙ্গে অমীমাংসিত বিষয়গুলোর সমাধানে বাংলাদেশের প্রত্যাশার কথা জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, তাঁর সরকার আগামী মাসে ভারতীয় পার্লামেন্টে স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নে সংবিধান সংশোধনের বিল পাসের অপেক্ষায় রয়েছে। তিনি বলেন, 'আমি নিশ্চিত, অনেক দিন ধরে ঝুলে থাকা এ চুক্তি বাস্তবায়নের গুরুত্ব সব দলই বুঝতে পারবে।'
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ১৯৭৪ সালে স্বাক্ষরিত স্থল সীমান্ত চুক্তি এবং ২০১১ সালে সই হওয়া এ-সংক্রান্ত প্রটোকল বাস্তবায়িত করতে হলে ভারতের সংবিধান সংশোধন করতে হবে। এ লক্ষ্যে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোট সরকার এর আগে পার্লামেন্টে বিল তোলার উদ্যোগ নিলেও বিষয়টি আটকে আছে প্রধান বিরোধী দল বিজেপির বিরোধিতার কারণে।
কোনো বিল পাস করতে হলে ভারতীয় পার্লামেন্টের উভয় কক্ষ লোকসভা ও রাজ্যসভায় অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন দরকার। কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোট সরকারের ওই সংখ্যক সদস্য নেই।
২০১১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের যে সফরে ঢাকায় স্থল সীমান্ত চুক্তির প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয়, ওই সময়ই তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি হওয়ার কথা ছিল দুই দেশের মধ্যে। সব প্রস্তুতি চূড়ান্ত করা হলেও শেষ মুহূর্তে চুক্তি আটকে যায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতার কারণে।
দীপু মনি বলেন, 'জনগণ যখন ভোট দেবে তখন তারা এ বিষয়গুলো অবশ্যই মনে রাখবে।' তিনি বলেন, সীমান্ত নিয়ে অমীমাংসিত বিষয়গুলোর সমাধান না হওয়ায় মাঝেমধ্যেই উত্তেজনা তৈরি হচ্ছে এবং কখনো কখনো তা রক্তপাতের মতো ঘটনায় গড়াচ্ছে।
স্থল সীমান্ত চুক্তি ও প্রটোকলের আওতায় ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের মোট সাত হাজার ১১০ একর আয়তনের ৫১টি এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের মোট ১৭ হাজার ১৬০ একর আয়তনের ১১১টি ছিটমহল বিনিময়ের কথা রয়েছে, যা নিয়ে বিজেপির আপত্তি। দলটি বলছে, ছিটমহল বিনিময় হলে যে পরিমাণ জমি হাতবদল হবে, তাতে ভারত প্রায় সাত হাজার একর বেশি জমি হারাবে।
বাংলাদেশি ছিটমহলগুলোতে জনসংখ্যা রয়েছে প্রায় ১৪ হাজার এবং ভারতীয় ছিটমহলগুলোর জনসংখ্যা প্রায় ৩৭ হাজার।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার দিল্লির অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনে দেওয়া বক্তৃতায় গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় প্রতিবেশী দেশগুলোকে নিয়ে যৌথ পানি ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার প্রস্তাব দেন দীপু মনি। তিনি মনে করেন, নদীভিত্তিক পানিবণ্টন ব্যবস্থার বদলে অভিন্ন নদীগুলো নিয়ে যৌথ ব্যবস্থা গড়ে তোলা দরকার। আর এ ক্ষেত্রে নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার এবং চীনকেও সঙ্গে নেওয়া প্রয়োজন।
এর আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে দেখা করেন দীপু মনি। ওই বৈঠকে বাংলাদেশে উদার গণতান্ত্রিক সরকার থাকবে- এমনটাই প্রত্যাশা করেন মনমোহন সিং। সেই সঙ্গে দুই দেশের সম্পর্ক যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে তা যেন বজায় থাকে, তাও চান তিনি।
ওই বৈঠকে মনমোহন সিং বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা নদীর পানিবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষর এবং সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বৈঠক শেষে ডা. দীপু মনি সাংবাদিকদের এসব কথা জানান। তবে তিস্তা ও সীমান্ত চুক্তি না হলে আগামী নির্বাচনে এর প্রভাব পড়বে বলে মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'যদি বিল (স্থল সীমান্ত) পাস না হয় আর তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি যদি না এগোয়, তাহলে আগামী নির্বাচনে বিষয়গুলো নিশ্চিতভাবেই বড় ধরনের ইস্যু হয়ে দাঁড়াবে।' খবর বাসস ও বিডিনিউজের।
নির্বাচনের ছয় মাসেরও কম সময় বাকি থাকতে এসব অমীমাংসিত বিষয় নিয়ে বিজেপির সঙ্গে আলোচনা করতেই দিল্লি গেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আগামী ৫ আগস্ট শুরু হতে যাওয়া ভারতের রাজ্যসভার বর্ষাকালীন অধিবেশনে আবারও স্থল সীমান্ত বিলটি তুলবে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের দল কংগ্রেস।
অরুণ জেটলির সঙ্গে বৈঠকের পর এক প্রশ্নের জবাবে দীপু মনি বলেন, 'আমরা তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষর এবং সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের ব্যাপারে আশাবাদী।' তিনি বলেন, সীমান্ত চুক্তির সমস্যাটি দীর্ঘদিনের। এটি বাস্তবায়িত হলে শুধু বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশের মানুষ উপকৃত হবে। ভারতের প্রতিটি রাজনৈতিক দল এবং জনগণের এ চুক্তি সমর্থন করা উচিত। দীর্ঘদিন পর আমাদের সামনে এ সমস্যা সমাধানের একটি সুযোগ এসেছে এবং তা আমাদের কাজে লাগাতে হবে। ডা. দীপু মনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার প্রথমবার সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করে। তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষর এবং সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন এখন প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
এ ছাড়া গতকাল রাতে ডা. দীপু মনির সম্মানে ইফতার ও নৈশ ভোজের আয়োজন করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশিদ।
দীপু মনি দেখা করতে গেলে ড. মনমোহন সিং তাঁর ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের ব্যাপারে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকে ভারত। নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশ যে ব্যবস্থা নিয়েছে, ভারত তাকে সব সময়ই গুরুত্বসহকারে দেখে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রয়াসের কারণেই এ অঞ্চলে শান্তির পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁরা প্রত্যাশা করেন, বাংলাদেশে উদার গণতান্ত্রিক সরকার থাকবে এবং দুই দেশের সম্পর্ক যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে, তা বজায় থাকবে।
আলোচনাকালে মনমোহন সিং ও দীপু মনি দুই দেশের সরকারের মধ্যে নেওয়া প্রকল্পগুলোর দ্রুত বাস্তবায়নে সন্তোষ প্রকাশ করেন। দুই দেশের মধ্যে পাওয়ার গ্রিড সংযোগকাজ এগিয়ে চলছে। সেপ্টেম্বর থেকে গ্রিডে বিদ্যুৎ সঞ্চালন শুরু হবে। এ ছাড়া জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর কাজও এগিয়ে চলছে। টিপাইমুখের যৌথ সমীক্ষা শেষ হয়েছে। সেখানে ভারত-বাংলাদেশ যৌথভাবে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে দুই দেশই লাভবান হবে। আগরতলা-আখাউড়া রেল সংযোগের কাজ সন্তোষজনকভাবে এগিয়ে যাওয়ায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেন বলে ডা. দীপু মনি জানান।
দীপু মনি আরো জানান, ড. মনমোহন আবারও বলেছেন, 'ভারত এমন কোনো প্রকল্প গ্রহণ করবে না যাতে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।' তাঁরা পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ, আমদানি-রপ্তানি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে দীপু মনির বৈঠকের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা শিব শংকর মেনন, সে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে ভারতের সঙ্গে অমীমাংসিত বিষয়গুলোর সমাধানে বাংলাদেশের প্রত্যাশার কথা জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, তাঁর সরকার আগামী মাসে ভারতীয় পার্লামেন্টে স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নে সংবিধান সংশোধনের বিল পাসের অপেক্ষায় রয়েছে। তিনি বলেন, 'আমি নিশ্চিত, অনেক দিন ধরে ঝুলে থাকা এ চুক্তি বাস্তবায়নের গুরুত্ব সব দলই বুঝতে পারবে।'
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ১৯৭৪ সালে স্বাক্ষরিত স্থল সীমান্ত চুক্তি এবং ২০১১ সালে সই হওয়া এ-সংক্রান্ত প্রটোকল বাস্তবায়িত করতে হলে ভারতের সংবিধান সংশোধন করতে হবে। এ লক্ষ্যে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোট সরকার এর আগে পার্লামেন্টে বিল তোলার উদ্যোগ নিলেও বিষয়টি আটকে আছে প্রধান বিরোধী দল বিজেপির বিরোধিতার কারণে।
কোনো বিল পাস করতে হলে ভারতীয় পার্লামেন্টের উভয় কক্ষ লোকসভা ও রাজ্যসভায় অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন দরকার। কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোট সরকারের ওই সংখ্যক সদস্য নেই।
২০১১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের যে সফরে ঢাকায় স্থল সীমান্ত চুক্তির প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয়, ওই সময়ই তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি হওয়ার কথা ছিল দুই দেশের মধ্যে। সব প্রস্তুতি চূড়ান্ত করা হলেও শেষ মুহূর্তে চুক্তি আটকে যায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতার কারণে।
দীপু মনি বলেন, 'জনগণ যখন ভোট দেবে তখন তারা এ বিষয়গুলো অবশ্যই মনে রাখবে।' তিনি বলেন, সীমান্ত নিয়ে অমীমাংসিত বিষয়গুলোর সমাধান না হওয়ায় মাঝেমধ্যেই উত্তেজনা তৈরি হচ্ছে এবং কখনো কখনো তা রক্তপাতের মতো ঘটনায় গড়াচ্ছে।
স্থল সীমান্ত চুক্তি ও প্রটোকলের আওতায় ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের মোট সাত হাজার ১১০ একর আয়তনের ৫১টি এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের মোট ১৭ হাজার ১৬০ একর আয়তনের ১১১টি ছিটমহল বিনিময়ের কথা রয়েছে, যা নিয়ে বিজেপির আপত্তি। দলটি বলছে, ছিটমহল বিনিময় হলে যে পরিমাণ জমি হাতবদল হবে, তাতে ভারত প্রায় সাত হাজার একর বেশি জমি হারাবে।
বাংলাদেশি ছিটমহলগুলোতে জনসংখ্যা রয়েছে প্রায় ১৪ হাজার এবং ভারতীয় ছিটমহলগুলোর জনসংখ্যা প্রায় ৩৭ হাজার।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার দিল্লির অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনে দেওয়া বক্তৃতায় গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় প্রতিবেশী দেশগুলোকে নিয়ে যৌথ পানি ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার প্রস্তাব দেন দীপু মনি। তিনি মনে করেন, নদীভিত্তিক পানিবণ্টন ব্যবস্থার বদলে অভিন্ন নদীগুলো নিয়ে যৌথ ব্যবস্থা গড়ে তোলা দরকার। আর এ ক্ষেত্রে নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার এবং চীনকেও সঙ্গে নেওয়া প্রয়োজন।
No comments