নতুন মুদ্রানীতি- শঙ্কা ও সম্ভাবনার দোলাচল
বাংলাদেশ ব্যাংক বৃহস্পতিবার চলতি বছর
জুলাই থেকে ডিসেম্বর পরিসরে ছয় মাসের জন্য নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেছেন, মূল্যস্ফীতি ও প্রবৃদ্ধির
ভারসাম্য রক্ষায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক যত্নবান থাকবে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয় ও সেবার জন্য জনসাধারণের ব্যয় যেন নিয়ন্ত্রিত
থাকে, সেজন্য চেষ্টা চলবে। অন্যদিকে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয়
ঋণ ও মুদ্রা সরবরাহও নিশ্চিত করা হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ নীতি ও কৌশলের
সঙ্গে অর্থনীতিবিদ এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত সবাই একমত হবেন_ এমন
আশা করা যায় না। কেউ মনে করবেন, উদ্যোক্তাদের ঋণের প্রবাহে রাশ টেনে ধরা
কোনো অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য নয়। এতে বিনিয়োগ কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় না-ও থাকতে
পারে। এর অর্থ হচ্ছে, উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রায় পেঁৗছাতে না পারা এবং একই সঙ্গে
নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ধীরগতি। আবার ঢালাওভাবে ঋণ প্রদান করা হলে
হলমার্কের মতো কেলেঙ্কারির আশঙ্কা থাকে। মুদ্রার সরবরাহ বেড়ে গিয়ে
মূল্যস্ফীতিও ঘটাতে পারে। সরকার পুঁজিবাজারে অর্থের সরবরাহ বাড়াতে আগ্রহী।
তবে এতেও নানা ধরনের ঝুঁকি থাকে। অর্থনীতির স্বাভাবিক সূত্র না মেনে কেবল
টাকার জোগান বাড়িয়ে শেয়ারবাজার চাঙ্গা করা হলে তাতে কৃত্রিমতা থাকে এবং এ
ধারায় বিপর্যয়ের শঙ্কা থাকে ষোলআনা। সাধারণ নির্বাচনের বছরে নানা সূত্রেই
বাজারে অর্থের সরবরাহ বাড়তে পারে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা নির্বাচন কমিশনের
ফরমান উপেক্ষা করেই টাকা ঢালেন। এটা রেওয়াজ। তাদের কালো টাকা অনেক মানুষের
মুখে হাসি ফোটায়। শিল্প-বাণিজ্যের যেসব উদ্যোক্তা রক্ষণশীল মুদ্রানীতির
জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সমালোচনা করেন, তাদেরই একটি অংশকে হয়তো দেখা যাবে
কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা নিয়ে নির্বাচনের মাঠে। এ অর্থ নতুন নতুন শিল্প স্থাপনে
খাটানো হলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বেড়ে যেত। কিন্তু অর্থনীতির চেয়ে রাজনীতি
যদি বেশি আকৃষ্ট করে, তা থেকে মুক্ত থাকা যে সহজ নয়! নতুন মুদ্রানীতি
প্রবৃদ্ধির সহায়ক হবে, নাকি স্থবিরতা বিরাজ করবে_ সেটা এখনই বলা যায় না।
তবে এটাও মনে রাখতে হবে যে, বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি গতি সৃষ্টি হয়েছে
এবং তার মূল স্রষ্টা এ দেশের কৃষি ও শিল্প খাতের কোটি কোটি শ্রমজীবী
নারী-পুরুষ। তারা কাজ করে মূলত দেশের জন্য এবং তা থেকে নিজের জন্য পায় কেবল
ছিটেফোঁটা। মুদ্রানীতি বলে যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে, সেটা তাদের
বেশিরভাগের কিন্তু জানাও নে
No comments