ভালো থাকুন by পোস্ট-পারটাম সাইকোসিস
প্রতি হাজার শিশু জন্মের মধ্যে এক বা দুজন
প্রসূতি প্রসবোত্তর জটিল মানসিক সমস্যা 'পোস্ট-পারটাম সাইকোসিস' বা
'পিউয়েরপেরাল সাইকোসিস' রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।
সাধারণত
প্রসবের দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে এর উপসর্গ দেখা দেয়। রোগী ক্লান্তি,
নিদ্রাহীনতা ও অস্থিরতা বোধ করেন। কারো মধ্যে আবার আবেগ নিয়ন্ত্রণে
অসামঞ্জস্যতা দেখা দেয়। পরবর্তী সময় অহেতুক সন্দেহ, ভ্রান্ত বিশ্বাস,
দ্বিধা, বেশি এবং আবোলতাবোল কথা বলা, অসংলগ্ন, অস্বাভাবিক আচরণ, খাওয়া ও
পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে উদাসীনতা, খিটখিটে মেজাজ, সন্তানের প্রতি
মাত্রাতিরিক্ত মনোযোগ অথবা অমনোযোগিতা, অযত্ন প্রভৃতি উপসর্গ দেখা দেয়।
রোগীর ভ্রান্ত বিশ্বাস অনেক সময় এ পর্যায়ে চলে যায় যে রোগী মনে করেন, তাঁর
সন্তানটি অশুভ কিছু; একে হত্যা করা উচিত। অনেকে গায়েবি আওয়াজ শুনতে পান।
কিছু ক্ষেত্রে রোগের চূড়ান্ত পর্যায়ে রোগী তাঁর সন্তানের ক্ষতি করেন বা
মেরে ফেলেন। প্রথম গর্ভধারণ এবং অবিবাহিত মায়েদের ক্ষেত্রে এ রোগের ঝুঁকি
বেশি। এ ছাড়া যেসব প্রসূতির নিজেদের অথবা পরিবারের কারো গুরুতর মানসিক
রোগের ইতিহাস আছে, তারাও এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। একবার এ
রোগে আক্রান্ত হলে পরবর্তী গর্ভধারণে এ রোগে আবার আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি
থাকে। পোস্ট-পারটাম সাইকোসিস একটি 'সাইকিয়াট্রিক ইমারজেন্সি'। যদি প্রসূতি
চান, তবে সন্তানকে তাঁর সঙ্গে রাখা যেতে পারে। তবে মা ও শিশু উভয়কে নিবিড়
পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। বিশেষত মায়ের মনে যদি শিশুর ক্ষতি করা সংক্রান্ত
ভাবনা থাকে। রোগের তীব্র অবস্থা বা 'একিউট সাইকোসিস' সময়টুকু কেটে গেলে
সাইকোথেরাপি দিতে হয়। সাইকোথেরাপি সেশনে সাধারণত প্রসূতিকে তাঁর মাতৃত্বের
ভূমিকায় সহজ হতে ও মানিয়ে নিতে সহায়তা করা হয়। এ ছাড়া স্বামী এবং পরিবারের
অন্যদের সহযোগিতাও এ সময় একান্ত প্রয়োজন।
ডা. মুনতাসীর মারুফ
ডা. মুনতাসীর মারুফ
No comments