এবার আক্রান্ত রাজধানীর ফুটপাত by শেখ সাবিহা আলম
ঢাকাবাসীকে নির্বিঘ্নে হাঁটার সুযোগ করে
দিতে ঢাকা সিটি করপোরেশন ফুটপাত সংস্কারের কাজে নেমেছে। ঢাকা শহরের একটা
বড় অংশজুড়ে রাস্তাঘাট, নর্দমার পাশাপাশি জোরেশোরে ফুটপাত ভাঙার কাজ চলছে।
যে নগরবাসীর অসুবিধা দূর করার জন্য ঢাকা সিটি করপোরেশন খোঁড়াখুঁড়ি করছে,
সেই নগরবাসী বর্ষাকালে ফুটপাত সংস্কারের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
ঢাকা (দক্ষিণ) সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পাঁচটি অঞ্চলে ২৬ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সংস্কারের কাজ চলছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কাজ চলছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অঞ্চল-১-এ। এখানে ১৪ দশমিক ৩০ কিলোমিটার পরিমাণ রাস্তা কাটা হয়েছে আর ফুটপাত ভাঙা হয়েছে ১১ দশমিক ৬৭ কিলোমিটার জায়গায়। সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা, নর্দমা ও ফুটপাত উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় একযোগে খোঁড়াখুঁড়ি চলছে।
প্রকল্প শুরু হয়েছে দুই বছর আগে, এখন কেন খোঁড়াখুঁড়ি—এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা সিটি করপোরেশনের ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা, নর্দমা ও ফুটপাত উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মো. নুরুল আমিন বলেছেন, ‘বর্ষা মৌসুমে আমরা খোঁড়াখুঁড়ি করতে চাই না। কিন্তু জুনের ৩০ তারিখের মধ্যে কাজ শেষ করার একটা বাধ্যবাধকতা থাকে।’ আর অঞ্চল-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী খায়রুল বাকের বলেছেন, বহু বছর ধরে ফুটপাত সংস্কার করা হয়নি। বিভিন্ন ভবনের মালিক নিজেদের মতো করে ফুটপাত দখল করে নিয়েছেন। সড়কের সঙ্গে ফুটপাতের যে অ্যালাইনমেন্ট থাকার কথা, সেটা নষ্ট হয়েছে। শহরের সব ফুটপাত যেন একইরকম হয়, সে জন্যই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, প্রকল্পটিতে প্রথম বছরে বরাদ্দ ছিল ২৫ কোটি টাকা, বর্তমান অর্থবছরে বরাদ্দ ৭২ কোটি টাকা। এ ছাড়া ঢাকা (দক্ষিণ) সিটি করপোরেশন রাস্তা, ফুটপাত ও সারফেস ড্রেন রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নে এ বছর বরাদ্দ আছে ১০০ কোটি টাকা। বিভিন্ন সূত্র বলছে, অর্থবছরের শেষে কোনো রকমে কাজ শুরু ও শেষ করার প্রবণতা থেকে এই কাজগুলো হয়। কাজের মান ভালো হয় না। একই কাজ বছর বছর করতে হয়।
ওয়ার্ক ফর বেটার বাংলাদেশের অন্যতম পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুল আলম প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, করপোরেশন কী সংস্কার করছে? ফুটপাতে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারবে? আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলো গাড়ি ওঠানোর জন্য ইচ্ছেমতো জায়গায় জায়গায় ঢালু করে নিয়েছে। সেটা কি সংস্কার করা হচ্ছে? ব্যবহারের অনুপযোগী ফুটপাতগুলো কি আগে সংস্কার করা হচ্ছে?
রাজধানীর রাসেল স্কয়ার থেকে গ্রীনরোড পর্যন্ত এক কিলোমিটার রাস্তার দুই ধারে ঘুরে দেখা গেছে, গাড়ি ঢোকার ব্যবস্থা করতে বড় বড় আবাসনের সামনে ইচ্ছেমতো ফুটপাত নষ্ট করা হয়েছে। কিন্তু সিটি করপোরেশন কোনোটিই ভাঙেনি। কোথাও কোথাও ভালো ফুটপাত ভাঙা হচ্ছে। ফুটপাত ভাঙার কারণে পথচারীরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হচ্ছেন। রাস্তার ওপর স্তূপ করে রাখা হয়েছে ভাঙা ফুটপাতের ইট-পাথর। সঙ্গে আছে নর্দমা উন্নয়নের জন্য আনা বড় বড় রিং। কোথাও কোথাও রাস্তা সংস্কারেরও কাজ চলছে। বৃষ্টির কারণে নানা জায়গায় পানি জমে থাকছে। নগরবাসীর দুর্গতির যেন সীমা নেই।
রাজধানীর কাঁটাবন এলাকার ব্যবসায়ী সবুরা খানম প্রথম আলো ডটকমকে জানান, বর্ষা মৌসুম বলে এমনিতেই বেচাকেনা নেই। সপ্তাহ দুয়েক ধরে ফুটপাত ভাঙা। সামনে বড় বড় রিং ফেলা হয়েছে। নিয়মিত ক্রেতারাই আসতে পারছেন না। পান্থপথ এলাকার পান-সিগারেটের দোকানদার মো. এমদাদ বলেন, ‘এহন কষ্ট হইতাছে। সিটি করপোরেশন কইছে রিংডি ফালাইলে পানি জমব না। এইহানে তো কোমর হমান পানি উডে।’
নিয়ম বানায় করপোরেশন, ভাঙেও করপোরেশন
বর্ষায় খোঁড়াখুঁড়ির সংস্কার বন্ধে ঢাকা সিটি করপোরেশন একটি নির্দেশিকা তৈরি করে ২০০৩ সালে। সিদ্ধান্ত হয়েছিল জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত কোনো সংস্কারের কাজ হবে না। যদি খুব প্রয়োজন পড়ে তাহলে সংস্কার স্থলে সাইনবোর্ড টাঙানো হবে। সেখানে কবে শুরু হয়েছে এবং কবে শেষ হবে, সে কথা লেখা থাকবে। খোঁড়াখুঁড়ি ও সংস্কার উভয় ক্ষেত্রেই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সব আবর্জনা সরিয়ে নেওয়া হবে। এ নিয়ম সিটি করপোরেশন বিগত বছরগুলোতে মানেনি, এ বছরও মানছে না।
ঢাকা (দক্ষিণ) সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পাঁচটি অঞ্চলে ২৬ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সংস্কারের কাজ চলছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কাজ চলছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অঞ্চল-১-এ। এখানে ১৪ দশমিক ৩০ কিলোমিটার পরিমাণ রাস্তা কাটা হয়েছে আর ফুটপাত ভাঙা হয়েছে ১১ দশমিক ৬৭ কিলোমিটার জায়গায়। সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা, নর্দমা ও ফুটপাত উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় একযোগে খোঁড়াখুঁড়ি চলছে।
প্রকল্প শুরু হয়েছে দুই বছর আগে, এখন কেন খোঁড়াখুঁড়ি—এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা সিটি করপোরেশনের ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা, নর্দমা ও ফুটপাত উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মো. নুরুল আমিন বলেছেন, ‘বর্ষা মৌসুমে আমরা খোঁড়াখুঁড়ি করতে চাই না। কিন্তু জুনের ৩০ তারিখের মধ্যে কাজ শেষ করার একটা বাধ্যবাধকতা থাকে।’ আর অঞ্চল-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী খায়রুল বাকের বলেছেন, বহু বছর ধরে ফুটপাত সংস্কার করা হয়নি। বিভিন্ন ভবনের মালিক নিজেদের মতো করে ফুটপাত দখল করে নিয়েছেন। সড়কের সঙ্গে ফুটপাতের যে অ্যালাইনমেন্ট থাকার কথা, সেটা নষ্ট হয়েছে। শহরের সব ফুটপাত যেন একইরকম হয়, সে জন্যই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, প্রকল্পটিতে প্রথম বছরে বরাদ্দ ছিল ২৫ কোটি টাকা, বর্তমান অর্থবছরে বরাদ্দ ৭২ কোটি টাকা। এ ছাড়া ঢাকা (দক্ষিণ) সিটি করপোরেশন রাস্তা, ফুটপাত ও সারফেস ড্রেন রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নে এ বছর বরাদ্দ আছে ১০০ কোটি টাকা। বিভিন্ন সূত্র বলছে, অর্থবছরের শেষে কোনো রকমে কাজ শুরু ও শেষ করার প্রবণতা থেকে এই কাজগুলো হয়। কাজের মান ভালো হয় না। একই কাজ বছর বছর করতে হয়।
ওয়ার্ক ফর বেটার বাংলাদেশের অন্যতম পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুল আলম প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, করপোরেশন কী সংস্কার করছে? ফুটপাতে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারবে? আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলো গাড়ি ওঠানোর জন্য ইচ্ছেমতো জায়গায় জায়গায় ঢালু করে নিয়েছে। সেটা কি সংস্কার করা হচ্ছে? ব্যবহারের অনুপযোগী ফুটপাতগুলো কি আগে সংস্কার করা হচ্ছে?
রাজধানীর রাসেল স্কয়ার থেকে গ্রীনরোড পর্যন্ত এক কিলোমিটার রাস্তার দুই ধারে ঘুরে দেখা গেছে, গাড়ি ঢোকার ব্যবস্থা করতে বড় বড় আবাসনের সামনে ইচ্ছেমতো ফুটপাত নষ্ট করা হয়েছে। কিন্তু সিটি করপোরেশন কোনোটিই ভাঙেনি। কোথাও কোথাও ভালো ফুটপাত ভাঙা হচ্ছে। ফুটপাত ভাঙার কারণে পথচারীরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হচ্ছেন। রাস্তার ওপর স্তূপ করে রাখা হয়েছে ভাঙা ফুটপাতের ইট-পাথর। সঙ্গে আছে নর্দমা উন্নয়নের জন্য আনা বড় বড় রিং। কোথাও কোথাও রাস্তা সংস্কারেরও কাজ চলছে। বৃষ্টির কারণে নানা জায়গায় পানি জমে থাকছে। নগরবাসীর দুর্গতির যেন সীমা নেই।
রাজধানীর কাঁটাবন এলাকার ব্যবসায়ী সবুরা খানম প্রথম আলো ডটকমকে জানান, বর্ষা মৌসুম বলে এমনিতেই বেচাকেনা নেই। সপ্তাহ দুয়েক ধরে ফুটপাত ভাঙা। সামনে বড় বড় রিং ফেলা হয়েছে। নিয়মিত ক্রেতারাই আসতে পারছেন না। পান্থপথ এলাকার পান-সিগারেটের দোকানদার মো. এমদাদ বলেন, ‘এহন কষ্ট হইতাছে। সিটি করপোরেশন কইছে রিংডি ফালাইলে পানি জমব না। এইহানে তো কোমর হমান পানি উডে।’
নিয়ম বানায় করপোরেশন, ভাঙেও করপোরেশন
বর্ষায় খোঁড়াখুঁড়ির সংস্কার বন্ধে ঢাকা সিটি করপোরেশন একটি নির্দেশিকা তৈরি করে ২০০৩ সালে। সিদ্ধান্ত হয়েছিল জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত কোনো সংস্কারের কাজ হবে না। যদি খুব প্রয়োজন পড়ে তাহলে সংস্কার স্থলে সাইনবোর্ড টাঙানো হবে। সেখানে কবে শুরু হয়েছে এবং কবে শেষ হবে, সে কথা লেখা থাকবে। খোঁড়াখুঁড়ি ও সংস্কার উভয় ক্ষেত্রেই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সব আবর্জনা সরিয়ে নেওয়া হবে। এ নিয়ম সিটি করপোরেশন বিগত বছরগুলোতে মানেনি, এ বছরও মানছে না।
No comments