হাসতে নাকি জানে না কেউ! by সুজাত হোসেন
তাঁদের কাজ মানুষকে হাসানো। তুষার খান,
সাজু খাদেম ও শামীম জামান—তিনজনই অভিনেতা। পর্দায় তাঁদের অভিনয় দেখে না
চাইলেও হেসে উঠি আমরা। এই রসিক অভিনেতাদের কাছ থেকে শুনতে চাই রসে টইটম্বুর
কথা।
সেগুলো শোনাতেও চাই সবাইকে। কিন্তু শুটিং নিয়ে
তাঁরা সবাই মহা ব্যস্ত। আড্ডায় বসার সময় কোথায়? তাই তাঁদের হাসির কথা শুনতে
মুঠোফোনে ডিজিটাল আড্ডা দেওয়া ছাড়া উপায় কী!
রাত তখন ১০টা পেরিয়ে গেছে। ফোনে পাওয়া গেল তুষার খানকে। ফোনটা ধরেই স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে তাঁর কথা, ‘ইশ্ রে, খাওনের সময়ও ফোন দেয়!’ এরপর হাসতে হাসতেই বললেন, ‘কিছু মনে কইরেন না ভাই। এইটা ইতিকথা নাটকে আমার জামাইল্যা চরিত্রের সংলাপ।’
বুঝতে তখন আর বাকি নেই যে হাসির কথা শোনাতে এর মধ্যেই রসের হাঁড়ি খুলে বসেছেন তুষার খান।
‘মানুষ হলো দুই প্রকার, সাধারণ ও অসাধারণ। কিন্তু জানেন, আরেক রকমের মানুষ আছে? সেটা হলো, অস্বাভাবিক শ্রেণী—অর্থাৎ আমরা অভিনয়শিল্পীরা। সকালবেলা সবাই সুন্দর পোশাক পরে অফিসে যায়। আর আমরা বের হই কখনো ভালো জামা-কাপড়, কখনো আবার ছেঁড়া-ফাটা পুরোনো লুঙ্গি-গামছা নিয়ে। আমাদের দেখে দর্শক যেমন আবেগাপ্লুত হয়ে আনন্দ পায়, আবার রেগেমেগে গালও দেয়। আমরা খুবই অস্বাভাবিক, বুঝলেন!...হা হা হা।’
তুষার খান হাসতে হাসতে ওপ্রান্ত থেকে এবার প্রশ্ন রাখলেন, ‘বলেন, এগুলো কি অস্বাভাবিক কাজ না?’
তাঁকে ফোন করেছি হাসির কথা শুনতে; কিন্তু তিনি কী বলছেন এসব! তখনই আবার তাঁর কথা, ‘একটা কৌতুক বলি, পাগলাগারদের একটি কক্ষের সব পাগল হঠাৎ নাচতে শুরু করল। চিকিৎসক এ দৃশ্য দেখে ভাবলেন, পাগলেরা হয়তো সুস্থ হয়ে গেছে। তিনি তাদের জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা নাচছ কেন?
উত্তরে পাগলেরা বলল, বিয়ে বাড়িতে নাচব নাকি বসে থাকব? চিকিৎসক বুঝতে পারলেন তাদের পাগলামি কতটা বেড়েছে! হঠাৎ তাঁর চোখে পড়ল গারদে ওই কক্ষের সবচেয়ে বড় পাগলটা একদম চুপচাপ। এবার চিকিৎসক তাকে জিজ্ঞেস করলেন, সবাই নাচছে, তুমি নাচছ না কেন? সে বলল, আপনি কি পাগল হইছেন—বিয়ে বাড়িতে বর কি কখনো নাচে?’
আস্ত একটি কৌতুক বলে আড্ডাটা রসে-বশে বেশ জমিয়ে দিলেন তুষার খান। এবার সাজু খাদেমের পালা। তাঁর সঙ্গে কথার শুরুতেই একটি প্রশ্ন ছুড়লেন তিনি, ‘ভাই, বলেন তো প্রথম ফোনসেট আবিষ্কারের পর আর কোন জিনিসটি আবিষ্কারের প্রয়োজন ছিল?’
সাজুর কথার গতি কোন দিকে যাচ্ছে, আমরা তা বুঝতে পারছি না। বিষয়টি আমলে নিয়ে তখন উত্তরটিও ফাঁস করলেন তিনি, ‘বুঝলেন না, আবিষ্কার করার দরকার ছিল দ্বিতীয় ফোনসেটটি, যেটা না হলে আমাদের এই ডিজিটাল আড্ডাটি হতো না। আপনার কাছে এই দ্বিতীয় ফোনসেটটি না থাকলে এখন আমাদের ফোনোআড্ডাটার বারোটা বাজত, জানেন?...হা হা হা।’ হাসির শব্দ একটু পরে আরও উচ্চকিত হয়ে উঠল।
বোঝা গেল সাজু খাদেমও আছেন বেশ ফুরফুরে মেজাজে। এ সময় কথায় কথায় তুষার খানকে নিয়ে তিনি বলে ফেললেন একটি মজার চুটকি, ‘একদিন তুষার খান যাচ্ছিলেন রিকশা করে। পাশ দিয়ে যাচ্ছিল আরেকটি ভ্যানগাড়ি। ভ্যানের চালক রিকশাচালকের দিকে প্রচণ্ড ক্ষোভ নিয়ে তাকাল আর মনে মনে রিকশাচালককে উদ্দেশ করে বলল, “শালা! আমি যারে উঠাব ভ্যানে, আমার সেই মক্কেলকে তুমিই উঠাইয়া নিলা...!’” আবারও জোরসে হাসি।
এরই মধ্যে ফোন করলেন শামীম জামান। প্রথমেই আক্ষেপ, ‘ভাই, আমাদের তো চরিত্র নাই—আজ অফিসের বস তো কাল কেরানি। কখনো জামাই আবার কখনো সিঁধেল চোর। আর বাকিগুলো তো বললামই না...আমাদের কি কোনো স্থায়ী চরিত্র আছে?’
পরক্ষণেই বললেন, ‘শোনেন, শুটিংয়ের একটা গল্প বলি। একবার গ্রামের এক ভিক্ষুকের চরিত্রে অভিনয় করছিলাম। তো, এক বৃদ্ধ আমাকে ভিক্ষুক ভেবে ২০ টাকার একটা নোট দিয়ে চলে গেলেন। এভাবে বেশ কিছু টাকা জমল। তারপর ওই জমানো টাকা দিয়ে শুটিং শেষে ইউনিটের সবাই মিলে দোকানে গিয়ে কোমল পানীয় খাচ্ছি। এ সময় সেই বৃদ্ধ হঠাৎ এসে হাজির। বিষয়টি বুঝতে পেরে আমার ওপর প্রচণ্ড খেপে গেলেন তিনি। ফেরত নিলেন ভিক্ষা দেওয়া টাকাটিও...। এ ঘটনা বলার পর আপনারা কি বলবেন, আরও হাসির ঘটনা বলা লাগবে?’
না, তাঁদের হাসির ঘটনা যেহেতু শেষ হওয়ার নয়, তাই আপাতত এখানেই ইস্তফা।
রাত তখন ১০টা পেরিয়ে গেছে। ফোনে পাওয়া গেল তুষার খানকে। ফোনটা ধরেই স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে তাঁর কথা, ‘ইশ্ রে, খাওনের সময়ও ফোন দেয়!’ এরপর হাসতে হাসতেই বললেন, ‘কিছু মনে কইরেন না ভাই। এইটা ইতিকথা নাটকে আমার জামাইল্যা চরিত্রের সংলাপ।’
বুঝতে তখন আর বাকি নেই যে হাসির কথা শোনাতে এর মধ্যেই রসের হাঁড়ি খুলে বসেছেন তুষার খান।
‘মানুষ হলো দুই প্রকার, সাধারণ ও অসাধারণ। কিন্তু জানেন, আরেক রকমের মানুষ আছে? সেটা হলো, অস্বাভাবিক শ্রেণী—অর্থাৎ আমরা অভিনয়শিল্পীরা। সকালবেলা সবাই সুন্দর পোশাক পরে অফিসে যায়। আর আমরা বের হই কখনো ভালো জামা-কাপড়, কখনো আবার ছেঁড়া-ফাটা পুরোনো লুঙ্গি-গামছা নিয়ে। আমাদের দেখে দর্শক যেমন আবেগাপ্লুত হয়ে আনন্দ পায়, আবার রেগেমেগে গালও দেয়। আমরা খুবই অস্বাভাবিক, বুঝলেন!...হা হা হা।’
তুষার খান হাসতে হাসতে ওপ্রান্ত থেকে এবার প্রশ্ন রাখলেন, ‘বলেন, এগুলো কি অস্বাভাবিক কাজ না?’
তাঁকে ফোন করেছি হাসির কথা শুনতে; কিন্তু তিনি কী বলছেন এসব! তখনই আবার তাঁর কথা, ‘একটা কৌতুক বলি, পাগলাগারদের একটি কক্ষের সব পাগল হঠাৎ নাচতে শুরু করল। চিকিৎসক এ দৃশ্য দেখে ভাবলেন, পাগলেরা হয়তো সুস্থ হয়ে গেছে। তিনি তাদের জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা নাচছ কেন?
উত্তরে পাগলেরা বলল, বিয়ে বাড়িতে নাচব নাকি বসে থাকব? চিকিৎসক বুঝতে পারলেন তাদের পাগলামি কতটা বেড়েছে! হঠাৎ তাঁর চোখে পড়ল গারদে ওই কক্ষের সবচেয়ে বড় পাগলটা একদম চুপচাপ। এবার চিকিৎসক তাকে জিজ্ঞেস করলেন, সবাই নাচছে, তুমি নাচছ না কেন? সে বলল, আপনি কি পাগল হইছেন—বিয়ে বাড়িতে বর কি কখনো নাচে?’
আস্ত একটি কৌতুক বলে আড্ডাটা রসে-বশে বেশ জমিয়ে দিলেন তুষার খান। এবার সাজু খাদেমের পালা। তাঁর সঙ্গে কথার শুরুতেই একটি প্রশ্ন ছুড়লেন তিনি, ‘ভাই, বলেন তো প্রথম ফোনসেট আবিষ্কারের পর আর কোন জিনিসটি আবিষ্কারের প্রয়োজন ছিল?’
সাজুর কথার গতি কোন দিকে যাচ্ছে, আমরা তা বুঝতে পারছি না। বিষয়টি আমলে নিয়ে তখন উত্তরটিও ফাঁস করলেন তিনি, ‘বুঝলেন না, আবিষ্কার করার দরকার ছিল দ্বিতীয় ফোনসেটটি, যেটা না হলে আমাদের এই ডিজিটাল আড্ডাটি হতো না। আপনার কাছে এই দ্বিতীয় ফোনসেটটি না থাকলে এখন আমাদের ফোনোআড্ডাটার বারোটা বাজত, জানেন?...হা হা হা।’ হাসির শব্দ একটু পরে আরও উচ্চকিত হয়ে উঠল।
বোঝা গেল সাজু খাদেমও আছেন বেশ ফুরফুরে মেজাজে। এ সময় কথায় কথায় তুষার খানকে নিয়ে তিনি বলে ফেললেন একটি মজার চুটকি, ‘একদিন তুষার খান যাচ্ছিলেন রিকশা করে। পাশ দিয়ে যাচ্ছিল আরেকটি ভ্যানগাড়ি। ভ্যানের চালক রিকশাচালকের দিকে প্রচণ্ড ক্ষোভ নিয়ে তাকাল আর মনে মনে রিকশাচালককে উদ্দেশ করে বলল, “শালা! আমি যারে উঠাব ভ্যানে, আমার সেই মক্কেলকে তুমিই উঠাইয়া নিলা...!’” আবারও জোরসে হাসি।
এরই মধ্যে ফোন করলেন শামীম জামান। প্রথমেই আক্ষেপ, ‘ভাই, আমাদের তো চরিত্র নাই—আজ অফিসের বস তো কাল কেরানি। কখনো জামাই আবার কখনো সিঁধেল চোর। আর বাকিগুলো তো বললামই না...আমাদের কি কোনো স্থায়ী চরিত্র আছে?’
পরক্ষণেই বললেন, ‘শোনেন, শুটিংয়ের একটা গল্প বলি। একবার গ্রামের এক ভিক্ষুকের চরিত্রে অভিনয় করছিলাম। তো, এক বৃদ্ধ আমাকে ভিক্ষুক ভেবে ২০ টাকার একটা নোট দিয়ে চলে গেলেন। এভাবে বেশ কিছু টাকা জমল। তারপর ওই জমানো টাকা দিয়ে শুটিং শেষে ইউনিটের সবাই মিলে দোকানে গিয়ে কোমল পানীয় খাচ্ছি। এ সময় সেই বৃদ্ধ হঠাৎ এসে হাজির। বিষয়টি বুঝতে পেরে আমার ওপর প্রচণ্ড খেপে গেলেন তিনি। ফেরত নিলেন ভিক্ষা দেওয়া টাকাটিও...। এ ঘটনা বলার পর আপনারা কি বলবেন, আরও হাসির ঘটনা বলা লাগবে?’
না, তাঁদের হাসির ঘটনা যেহেতু শেষ হওয়ার নয়, তাই আপাতত এখানেই ইস্তফা।
No comments