পদ্মা সেতু প্রকল্প-দুদকের কাজ তদারক করতে এ মাসে আসছে বিশ্বব্যাংকের প্যানেল
পদ্মা সেতুর দুর্নীতি তদন্ত পর্যবেক্ষণে তিন সদস্যের একটি প্যানেলের নাম ঘোষণা করেছে বিশ্বব্যাংক। প্যানেলের চেয়ারম্যান করা হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) সাবেক প্রধান প্রসিকিউটর ও আর্জেন্টিনার আইনজীবী লুইস গাব্রিয়েল মোরেনো ওকাম্পোকে।
তাঁর সঙ্গে থাকবেন হংকংয়ের দুর্নীতিবিরোধী স্বাধীন কমিশনের (আইসিএসি) সাবেক কমিশনার ড. টিমোথি এইচ এম টং ও যুক্তরাজ্যের দুর্নীতি দমন কার্যালয়ের সাবেক পরিচালক রিচার্ড অল্ডারম্যান। চলতি মাসের মাঝামাঝি দলটি বাংলাদেশে আসবে।
ওয়াশিংটনভিত্তিক বহুজাতিক ঋণদাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুর দুর্নীতি তদন্তে গতকাল শনিবার এই তিনজনকে নিয়ে প্যানেল ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পদ্মা সেতুর কথিত দুর্নীতির তদন্ত করছে। ওই তদন্ত কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে বিশ্বব্যাংককে প্রতিবেদন দেবেন সংস্থাটির নিয়োগ দেওয়া এই তিন ভিনদেশি। তাঁদের প্রতিবেদনের ওপরই নির্ভর করছে পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন করবে কি করবে না।
বিশ্বব্যাংক গঠিত প্যানেলকে স্বাগত জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। গতকাল এক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, 'এটা খু্বই ভালো। আমাদের দুদকও তদন্ত করছে। এর মধ্য দিয়ে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে। বিশ্বব্যাংকের প্যানেলকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে।'
গতকাল বিকেলে শিল্পকলা একাডেমীতে এক অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষ করে পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করতে দেরি হবে না। আগামী এপ্রিল-মে মাসের মধ্যেই কাজ শুরু হবে।
ঢাকায় বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি অ্যালেন গোল্ডস্টেইন সাংবাদিকদের জানান, তদন্তের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের সঙ্গে সমঝোতা চূড়ান্ত করতে বিশ্বব্যাংকের যে প্রতিনিধিদলটির আসার কথা ছিল, তারা এই মাসের মাঝামাঝিতে আসবে।
বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম প্যানেল সম্পর্কে বলেছেন, 'আমি প্যানেলকে স্বাগত জানাই। দুদকের তদন্ত সম্পর্কে তাঁদের অনুসন্ধান ও মতামত নিয়ে আমরা সামনের দিকে এগোব। পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন বাংলাদেশের জনগণের জন্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। আমরা সততার সঙ্গে প্রকল্প বাস্তবায়নে অঙ্গীকারাবদ্ধ। এই প্যানেলের পর্যবেক্ষণ বাংলাদেশের জনগণের জন্য একটি বড় সুযোগ, যা তদন্তে স্বচ্ছতা, দায়িত্বশীলতার অন্তরায়গুলো দূর করবে। আশা করি, দুদকের পরিপূর্ণ, স্বচ্ছ ও পরিষ্কার তদন্তের জন্য এই প্যানেলকে সরকার তার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পূর্ণাঙ্গ সহযোগিতা করবে।
বিশ্বের ১০০ শীর্ষ চিন্তাবিদের একজন আর্জেন্টিনার আইনজীবী লুইস গাব্রিয়েল মোরেনো ওকাম্পো অপরাধ আইনে শিক্ষকতাও করেছেন। বিশ্বে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে ২০০৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হলে তিনি প্রধান প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ পান। তখন থেকে ২০১১ সালের এপ্রিল পর্যন্ত তিনি আইসিসির প্রধান প্রসিকিউটরের দায়িত্ব পালন করেন। বুয়েন্স এইরেস ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপনার পাশাপাশি স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও হার্ভার্ড ল স্কুলে পড়ান তিনি। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যও ছিলেন তিনি।
আইসিসির প্রধান প্রসিকিউটর থাকাকালে ২০০৭ সালে কেনিয়ার নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতার দায়ে ২০১০ সালের রায়ে ছয় মন্ত্রীকে বরখাস্ত করেন লুইস। ২০১১ সালের ৩ মার্চ মোরেনো ওকাম্পো ঘোষণা দেন, লিবিয়ার প্রয়াত নেতা গাদ্দাফির নেতৃত্বাধীন নিরাপত্তা বাহিনী সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। ওই বছরের ১৬ মে তিনি গাদ্দাফি, তাঁর ছেলে সাইফ আল-ইসলাম, লিবিয়ার গোয়েন্দা প্রধান আবদুল্লাহ সেনুছির বিরুদ্ধে ২৭ জুন পরোয়ানা জারি করেন। ১৯৫২ সালে জন্ম নেওয়া ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ ওকাম্পো আর্জেন্টিনায় সামরিক সরকারের দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরোধিতায় উচ্চকণ্ঠ ছিলেন।
বিশ্বব্যাংক প্যানেলের অন্য সদস্য যুক্তরাজ্যের দুর্নীতি দমন কার্যালয়ের (সিরিয়াস ফ্রড অফিস-এসএফও) সাবেক পরিচালক ৬০ বছর বয়সী রিচার্ড অল্ডারম্যান। তিনি ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠানটিতে পরিচালক হিসেবে যোগ দেন।
অন্যদিকে, হংকংয়ের স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশনের সাবেক কমিশনার টিমোথি টং চীনের রেনমিন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেটধারী। তিনি ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব এন্টি-করাপশন অথরিটির (আইএএসিএ) নির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
বিশ্বব্যাংকের গতকালের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পদ্মা সেতুতে অর্থায়নের বিষয়ে সংস্থাটির সঙ্গে কয়েকটি বিষয়ে একমত হয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে রয়েছে- তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত অভিযুক্ত সব সরকারি কর্মকর্তাকে দায়িত্ব থেকে সরাতে হবে। দুদক যাতে সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করতে পারে সেজন্য বিশেষ তদন্ত ও কৌঁসুলি দল গঠন করতে হবে। সরকারের তদন্তের বিশ্বাসযোগ্যতার জন্য বিশ্বব্যাংকের নিয়োগ করা একটি বহির্প্যানেল থাকবে। এই প্যানেল সবকিছু খতিয়ে দেখতে পারবে। এ ছাড়া ক্রয়-সংক্রান্ত কাজে অর্থায়নকারী সংস্থাগুলোকে প্রাধান্য দিয়ে নতুন ব্যবস্থা করতে হবে। বিশ্বব্যাংক বলেছে, এসব শর্তের সঠিক বাস্তবায়ন ও লুইস মোরেনো ওকাম্পোর নেতৃত্বাধীন প্যানেলের সন্তোষজনক প্রতিবেদন পাওয়ার পরই পদ্মা সেতুতে অর্থায়নের ব্যাপারে অগ্রসর হবে বিশ্বব্যাংক।
ওয়াশিংটনভিত্তিক বহুজাতিক ঋণদাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুর দুর্নীতি তদন্তে গতকাল শনিবার এই তিনজনকে নিয়ে প্যানেল ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পদ্মা সেতুর কথিত দুর্নীতির তদন্ত করছে। ওই তদন্ত কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে বিশ্বব্যাংককে প্রতিবেদন দেবেন সংস্থাটির নিয়োগ দেওয়া এই তিন ভিনদেশি। তাঁদের প্রতিবেদনের ওপরই নির্ভর করছে পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন করবে কি করবে না।
বিশ্বব্যাংক গঠিত প্যানেলকে স্বাগত জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। গতকাল এক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, 'এটা খু্বই ভালো। আমাদের দুদকও তদন্ত করছে। এর মধ্য দিয়ে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে। বিশ্বব্যাংকের প্যানেলকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে।'
গতকাল বিকেলে শিল্পকলা একাডেমীতে এক অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষ করে পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করতে দেরি হবে না। আগামী এপ্রিল-মে মাসের মধ্যেই কাজ শুরু হবে।
ঢাকায় বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি অ্যালেন গোল্ডস্টেইন সাংবাদিকদের জানান, তদন্তের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের সঙ্গে সমঝোতা চূড়ান্ত করতে বিশ্বব্যাংকের যে প্রতিনিধিদলটির আসার কথা ছিল, তারা এই মাসের মাঝামাঝিতে আসবে।
বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম প্যানেল সম্পর্কে বলেছেন, 'আমি প্যানেলকে স্বাগত জানাই। দুদকের তদন্ত সম্পর্কে তাঁদের অনুসন্ধান ও মতামত নিয়ে আমরা সামনের দিকে এগোব। পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন বাংলাদেশের জনগণের জন্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। আমরা সততার সঙ্গে প্রকল্প বাস্তবায়নে অঙ্গীকারাবদ্ধ। এই প্যানেলের পর্যবেক্ষণ বাংলাদেশের জনগণের জন্য একটি বড় সুযোগ, যা তদন্তে স্বচ্ছতা, দায়িত্বশীলতার অন্তরায়গুলো দূর করবে। আশা করি, দুদকের পরিপূর্ণ, স্বচ্ছ ও পরিষ্কার তদন্তের জন্য এই প্যানেলকে সরকার তার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পূর্ণাঙ্গ সহযোগিতা করবে।
বিশ্বের ১০০ শীর্ষ চিন্তাবিদের একজন আর্জেন্টিনার আইনজীবী লুইস গাব্রিয়েল মোরেনো ওকাম্পো অপরাধ আইনে শিক্ষকতাও করেছেন। বিশ্বে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে ২০০৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হলে তিনি প্রধান প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ পান। তখন থেকে ২০১১ সালের এপ্রিল পর্যন্ত তিনি আইসিসির প্রধান প্রসিকিউটরের দায়িত্ব পালন করেন। বুয়েন্স এইরেস ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপনার পাশাপাশি স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও হার্ভার্ড ল স্কুলে পড়ান তিনি। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যও ছিলেন তিনি।
আইসিসির প্রধান প্রসিকিউটর থাকাকালে ২০০৭ সালে কেনিয়ার নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতার দায়ে ২০১০ সালের রায়ে ছয় মন্ত্রীকে বরখাস্ত করেন লুইস। ২০১১ সালের ৩ মার্চ মোরেনো ওকাম্পো ঘোষণা দেন, লিবিয়ার প্রয়াত নেতা গাদ্দাফির নেতৃত্বাধীন নিরাপত্তা বাহিনী সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। ওই বছরের ১৬ মে তিনি গাদ্দাফি, তাঁর ছেলে সাইফ আল-ইসলাম, লিবিয়ার গোয়েন্দা প্রধান আবদুল্লাহ সেনুছির বিরুদ্ধে ২৭ জুন পরোয়ানা জারি করেন। ১৯৫২ সালে জন্ম নেওয়া ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ ওকাম্পো আর্জেন্টিনায় সামরিক সরকারের দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরোধিতায় উচ্চকণ্ঠ ছিলেন।
বিশ্বব্যাংক প্যানেলের অন্য সদস্য যুক্তরাজ্যের দুর্নীতি দমন কার্যালয়ের (সিরিয়াস ফ্রড অফিস-এসএফও) সাবেক পরিচালক ৬০ বছর বয়সী রিচার্ড অল্ডারম্যান। তিনি ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠানটিতে পরিচালক হিসেবে যোগ দেন।
অন্যদিকে, হংকংয়ের স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশনের সাবেক কমিশনার টিমোথি টং চীনের রেনমিন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেটধারী। তিনি ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব এন্টি-করাপশন অথরিটির (আইএএসিএ) নির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
বিশ্বব্যাংকের গতকালের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পদ্মা সেতুতে অর্থায়নের বিষয়ে সংস্থাটির সঙ্গে কয়েকটি বিষয়ে একমত হয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে রয়েছে- তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত অভিযুক্ত সব সরকারি কর্মকর্তাকে দায়িত্ব থেকে সরাতে হবে। দুদক যাতে সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করতে পারে সেজন্য বিশেষ তদন্ত ও কৌঁসুলি দল গঠন করতে হবে। সরকারের তদন্তের বিশ্বাসযোগ্যতার জন্য বিশ্বব্যাংকের নিয়োগ করা একটি বহির্প্যানেল থাকবে। এই প্যানেল সবকিছু খতিয়ে দেখতে পারবে। এ ছাড়া ক্রয়-সংক্রান্ত কাজে অর্থায়নকারী সংস্থাগুলোকে প্রাধান্য দিয়ে নতুন ব্যবস্থা করতে হবে। বিশ্বব্যাংক বলেছে, এসব শর্তের সঠিক বাস্তবায়ন ও লুইস মোরেনো ওকাম্পোর নেতৃত্বাধীন প্যানেলের সন্তোষজনক প্রতিবেদন পাওয়ার পরই পদ্মা সেতুতে অর্থায়নের ব্যাপারে অগ্রসর হবে বিশ্বব্যাংক।
No comments