বিকল্প পথ রেখে দুর্বল সেতুতে চলছে ভারতীয় ট্রেইলার by দুলাল ঘোষ
আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত প্রায় ৪৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কে চারটি সেতু ও ১৫টি কালভার্টের ওপর দিয়ে ১৫ টনের বেশি ওজনের যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করেছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর। তাই বেশি ওজনবাহী বাংলাদেশি যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা করছে পুলিশ। কিন্তু এই পথ দিয়ে ভারতের ত্রিপুরার পালাটানা বিদ্যুৎকেন্দ্রের অতি ভারী যন্ত্রপাতিবাহী ট্রেইলার, পরীক্ষামূলক ট্রানজিট ও নিয়মিত ট্রানজিটের মালামালবাহী ভারী যানবাহন প্রতিদিন চলাচল করছে।
পুলিশ বলছে, এসব যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ওপরের নির্দেশ লাগবে। তবে সওজ বলছে, সেতুর ওপর দিয়ে এসব যানবাহন চলাচলের কথা নয়। এগুলোর জন্য নিচ দিয়ে বিকল্প রাস্তা করা আছে। সওজ সূত্র বলছে, সেতু-কালভার্টগুলোর অধিকাংশ ৫০ থেকে ৬০ বছরের পুরোনো হওয়ায় এগুলোর ওপর দিয়ে ১৫ টনের বেশি পণ্য নিয়ে যান চলাচলের ওপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। ওজনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এসব সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া ট্রাফিক পুলিশ ১৫ থেকে ১৭টি পরিবহনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। কিন্তু ওডিসি (ওভার ডাইমেনশনাল কার্গো) ও ট্রানজিটের পণ্যবাহী যানগুলো অতিরিক্ত ভার নিয়ে চলাচল করছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সওজ জানিয়েছে, ট্রেইলারগুলো চলাচলের জন্য সেতুগুলো উপযোগী নয়। তাই ভারী এই যানগুলোকে সেতু ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়নি। এই যানগুলোর জন্য সেতুর পাশ দিয়ে বিকল্প সড়ক তৈরি করা হয়েছে। এগুলো সে পথেই চলার কথা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সওজ সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের ৩০ নভেম্বর ত্রিপুরার পালাটানা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভারী যন্ত্রাংশ ওডিসি পরিবহনবিষয়ক সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর হয়। এতে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর এবং ভারতের ওয়েল অ্যান্ড গ্যাস কোম্পানি (ওএনজিসি) ও ত্রিপুরা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (ওটিপিসি) সই করেছে।
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার পালাটানায় ৭২৬ দশমিক ৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ৯৬টি কনটেইনার পশ্চিমবঙ্গ থেকে নৌপথে বাংলাদেশের আশুগঞ্জ নৌবন্দরে এবং এখান থেকে সড়কপথে আখাউড়া স্থলবন্দর হয়ে ত্রিপুরায় যাবে। এই কনটেইনারগুলোর সর্বোচ্চ ওজন ৩২৫ মেট্রিক টন। এর জন্য আশুগঞ্জ থেকে আখাউড়া পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ কিংবা পুনঃসংস্কারের কাজে অর্থায়ন করবে ওটিপিসি।
সওজ সূত্র আরও জানায়, সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর হওয়ার পর আসাম বেঙ্গল কেরিয়ার নামে ভারতীয় পরিবহন সংস্থা (এবিসি ইন্ডিয়া লিমিটেড) আশুগঞ্জ থেকে আখাউড়া পর্যন্ত সেতুগুলোর পাশে খাল ও নদীর ওপর বিকল্প সড়ক নির্মাণ করে। পানির প্রবাহ ঠিক রাখতে সড়কের নিচে কংক্রিটের পাইপ বসানো হয়। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কোরলিয়া খালে একটি পন্টুন স্থাপন করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী, সেতুর পরিবর্তে পাশের বিকল্প সড়ক ব্যবহার করে চলতি বছরের ২৯ মার্চ চারটি ট্রেইলার আগরতলায় পৌঁছায়।
বর্ষা মৌসুমে সেতুর পাশের অধিকাংশ বিকল্প সড়ক পানিতে তলিয়ে যায়। কোথাও কোথাও এই বিকল্প সড়কের কারণে পানি আটকে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে ভারত থেকে নেমে আসা উজানের পানি আটকে গিয়ে আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের প্রায় ছয়টি গ্রাম প্লাবিত হয়।
এসব কারণে প্রায় দুই মাস ট্রেইলার চলাচল বন্ধ থাকে। আখাউড়া তিতাস নদীর রেলওয়ে ও সড়ক এই দুটি সেতুর মাঝখানে নিচের বিকল্প সড়ক কেটে সেখানে তৈরি করা হয় জেটি। পন্টুন দিয়ে পার করানো হয় তিনটি ভারী যন্ত্রাংশ।
এর পর থেকে বাংলাদেশের দুর্বল ও ঝুঁকিপূর্ণ সেতু ব্যবহার করে চলাচল করছে ট্রেইলারগুলো। ট্রেইলার পরিবহন করছে ভারতীয় কোম্পানি এবিসি। এই কোম্পানির বাংলাদেশি এজেন্ট গালফ ওরিয়েন্ট সিওয়েজ।
গালফের প্রকৌশলী ফারুক আহম্মেদ প্রথম আলোকে বলেন, ভারী যন্ত্রাংশগুলো ত্রিপুরায় চলে গেছে। এখনো প্রায় ৪৩টি মডিউল (যন্ত্রাংশ বহনকারী বৃহৎ আকারের কনটেইনার) রয়েছে। এগুলো খুলে কয়েকটি ভাগে একাধিক ট্রেইলারে নেওয়া হচ্ছে। তিনি দাবি করেন, এই পথের সেতুগুলো দিয়ে প্রতিদিন ৩৫ থেকে ৪০ টন পণ্য নিয়ে স্থলবন্দরে ট্রাক আসছে। তাই ওডিসির ট্রেইলার চলাচলে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, প্রায় ৬০ বছর আগে সড়ক ও সেতু নির্মাণ করা হয়। তখন এত ভারী যান এই পথে চলাচল করবে এমন চিন্তা করে করা হয়নি। এই পথের রামলাইল সেতুটি পরিত্যক্ত। পাশে বেইলি সেতু নির্মাণ করা হলেও ভারী পণ্যবাহী যান চলাচলের কারণে সেটিও ক্ষতিগ্রস্ত। ট্রেইলারগুলো এই ক্ষতিগ্রস্ত সেতু ব্যবহার করছে তা আগে থেকে সওজকে জানায়নি। সওজ ১৫ টনের বেশি পণ্য নিয়ে চলাচলকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে চিঠি দিয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক মো. বজলুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, লোকাল যানগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত ভার বহন আইনে মামলাও করা হচ্ছে। তিনি বলেন, তবে ভারতীয় ট্রেইলারগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হলে ওপর থেকে নির্দেশ লাগবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সওজ জানিয়েছে, ট্রেইলারগুলো চলাচলের জন্য সেতুগুলো উপযোগী নয়। তাই ভারী এই যানগুলোকে সেতু ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়নি। এই যানগুলোর জন্য সেতুর পাশ দিয়ে বিকল্প সড়ক তৈরি করা হয়েছে। এগুলো সে পথেই চলার কথা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সওজ সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের ৩০ নভেম্বর ত্রিপুরার পালাটানা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভারী যন্ত্রাংশ ওডিসি পরিবহনবিষয়ক সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর হয়। এতে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর এবং ভারতের ওয়েল অ্যান্ড গ্যাস কোম্পানি (ওএনজিসি) ও ত্রিপুরা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (ওটিপিসি) সই করেছে।
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার পালাটানায় ৭২৬ দশমিক ৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ৯৬টি কনটেইনার পশ্চিমবঙ্গ থেকে নৌপথে বাংলাদেশের আশুগঞ্জ নৌবন্দরে এবং এখান থেকে সড়কপথে আখাউড়া স্থলবন্দর হয়ে ত্রিপুরায় যাবে। এই কনটেইনারগুলোর সর্বোচ্চ ওজন ৩২৫ মেট্রিক টন। এর জন্য আশুগঞ্জ থেকে আখাউড়া পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ কিংবা পুনঃসংস্কারের কাজে অর্থায়ন করবে ওটিপিসি।
সওজ সূত্র আরও জানায়, সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর হওয়ার পর আসাম বেঙ্গল কেরিয়ার নামে ভারতীয় পরিবহন সংস্থা (এবিসি ইন্ডিয়া লিমিটেড) আশুগঞ্জ থেকে আখাউড়া পর্যন্ত সেতুগুলোর পাশে খাল ও নদীর ওপর বিকল্প সড়ক নির্মাণ করে। পানির প্রবাহ ঠিক রাখতে সড়কের নিচে কংক্রিটের পাইপ বসানো হয়। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কোরলিয়া খালে একটি পন্টুন স্থাপন করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী, সেতুর পরিবর্তে পাশের বিকল্প সড়ক ব্যবহার করে চলতি বছরের ২৯ মার্চ চারটি ট্রেইলার আগরতলায় পৌঁছায়।
বর্ষা মৌসুমে সেতুর পাশের অধিকাংশ বিকল্প সড়ক পানিতে তলিয়ে যায়। কোথাও কোথাও এই বিকল্প সড়কের কারণে পানি আটকে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে ভারত থেকে নেমে আসা উজানের পানি আটকে গিয়ে আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের প্রায় ছয়টি গ্রাম প্লাবিত হয়।
এসব কারণে প্রায় দুই মাস ট্রেইলার চলাচল বন্ধ থাকে। আখাউড়া তিতাস নদীর রেলওয়ে ও সড়ক এই দুটি সেতুর মাঝখানে নিচের বিকল্প সড়ক কেটে সেখানে তৈরি করা হয় জেটি। পন্টুন দিয়ে পার করানো হয় তিনটি ভারী যন্ত্রাংশ।
এর পর থেকে বাংলাদেশের দুর্বল ও ঝুঁকিপূর্ণ সেতু ব্যবহার করে চলাচল করছে ট্রেইলারগুলো। ট্রেইলার পরিবহন করছে ভারতীয় কোম্পানি এবিসি। এই কোম্পানির বাংলাদেশি এজেন্ট গালফ ওরিয়েন্ট সিওয়েজ।
গালফের প্রকৌশলী ফারুক আহম্মেদ প্রথম আলোকে বলেন, ভারী যন্ত্রাংশগুলো ত্রিপুরায় চলে গেছে। এখনো প্রায় ৪৩টি মডিউল (যন্ত্রাংশ বহনকারী বৃহৎ আকারের কনটেইনার) রয়েছে। এগুলো খুলে কয়েকটি ভাগে একাধিক ট্রেইলারে নেওয়া হচ্ছে। তিনি দাবি করেন, এই পথের সেতুগুলো দিয়ে প্রতিদিন ৩৫ থেকে ৪০ টন পণ্য নিয়ে স্থলবন্দরে ট্রাক আসছে। তাই ওডিসির ট্রেইলার চলাচলে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, প্রায় ৬০ বছর আগে সড়ক ও সেতু নির্মাণ করা হয়। তখন এত ভারী যান এই পথে চলাচল করবে এমন চিন্তা করে করা হয়নি। এই পথের রামলাইল সেতুটি পরিত্যক্ত। পাশে বেইলি সেতু নির্মাণ করা হলেও ভারী পণ্যবাহী যান চলাচলের কারণে সেটিও ক্ষতিগ্রস্ত। ট্রেইলারগুলো এই ক্ষতিগ্রস্ত সেতু ব্যবহার করছে তা আগে থেকে সওজকে জানায়নি। সওজ ১৫ টনের বেশি পণ্য নিয়ে চলাচলকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে চিঠি দিয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক মো. বজলুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, লোকাল যানগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত ভার বহন আইনে মামলাও করা হচ্ছে। তিনি বলেন, তবে ভারতীয় ট্রেইলারগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হলে ওপর থেকে নির্দেশ লাগবে।
No comments