আটকে গেছে চট্টগ্রাম বন্দরের ২৭ প্রকল্প
নৌ মন্ত্রণালয়ের একটি নির্দেশনায় আটকে গেছে তিন হাজার কোটি টাকার ২৭টি উন্নয়ন প্রকল্প। চট্টগ্রাম বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নে গৃহীত এসব প্রকল্পের মধ্যে কনটেইনার ও কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের ৩৫টি যন্ত্রপাতি ক্রয়, ভাসমান ক্রেন ক্রয়, টার্মিনাল নির্মাণ ও সাড়ে ৩শ' সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পও রয়েছে। মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক অনুমোদন নিয়ে এর মধ্যে কয়েকটি প্রকল্পের টেন্ডার কার্যক্রমও সম্পন্ন করে ফেলেছিল বন্দর কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু নতুন নির্দেশনার কারণে আগের সব কার্যক্রম বাতিল হয়ে গেছে। এখন বন্দর কর্তৃপক্ষকে সব প্রকল্প আবার নতুন করে সাজিয়ে অনুমোদনের জন্য 'প্রজেক্ট প্রোফাইল' পাঠাতে হবে সাতটি মন্ত্রণালয়ে। অনুমোদন পাওয়ার পর টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পেরোতে হবে আরও ১০টি ধাপ! চট্টগ্রাম বন্দর চলে ১৯৭৬ সালের পোর্ট অর্ডিন্যান্স দিয়ে। এ অর্ডিন্যান্সের ৩৫(১)অনুচ্ছেদে উল্লেখ আছে, 'বন্দরের আয়ের টাকা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও পোর্টের উন্নয়ন কাজে বন্দর কর্তৃপক্ষ ব্যবহার করতে পারবে।' তাই ২৩ বছর আগে একটি পরিপত্র জারি হলেও বন্দর কর্তৃপক্ষ মন্ত্রণালয়কে অবহিত করে ছোট প্রকল্পগুলো রাজস্ব বাজেটে রেখে নিজেরা সম্পন্ন করত। আর ৫০ কোটি টাকা বা তারও বড় অঙ্কের প্রকল্প হলে অনুমোদন নিত মন্ত্রণালয় থেকে। স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হওয়ায় বন্দরকে এখন সব প্রকল্পই ২৩ বছর আগের একটি পরিপত্র অনুযায়ী পাস
করাতে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে নৌ মন্ত্রণালয়।
কী আছে নতুন নির্দেশনায়
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ৯টি প্রকল্পকে অগ্রাধিকার দিয়ে অনুমোদনের জন্য এপ্রিল মাসে একটি প্রস্তাবনা পাঠায় নৌ মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু এসব প্রকল্পের অনুমোদন না দিয়ে উল্টো সব কার্যক্রম বাতিল করতে বলে নৌ মন্ত্রণালয়। ২০১১ সালের ১৭ এপ্রিল নৌ মন্ত্রণালয়ের সহকারী প্রধান রুমি তংচঙ্গ্যা স্বাক্ষরিত একটি পত্রে মন্ত্রণালয়ের উদ্বৃতি দিয়ে উল্লেখ করা হয়, 'তালিকাভুক্ত প্রকল্পগুলো ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল (ডিপিপি) কিংবা টেকনিক্যাল প্রজেক্ট প্রপোজাল (টিপিপি) অনুসারে নতুন করে পাঠানো হোক।'
চট্টগ্রাম বন্দরে একই বিষয়ে নৌ মন্ত্রণালয় থেকে আরেকটি চিঠি পাঠানো হয় গত ১১ জানুয়ারি। ২০১০ সালের ২৯ ডিসেম্বর নৌমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মাসিক এডিপি পর্যালোচনা সভার উদ্বৃতি দিয়ে সহকারী প্রধান উম্মে হাসিনা স্বাক্ষরিত সেই পত্রে উল্লেখ করা হয়, 'সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নে যে কোনো উন্নয়নমূলক কার্যক্রম সম্পাদনের লক্ষ্যে পণ্য, কার্য ও সেবা সংগ্রহ/ক্রয় প্রকল্প আকারে গ্রহণ করতে হবে। বিদ্যমান পরিপত্র অনুসরণে এসব প্রকল্প অনুমোদন প্রক্রিয়াকরণ পূর্বক যথানিয়মে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে হবে।'
আটকে যাওয়া ২৭ প্রকল্প
৮০০ কোটি টাকার কেসিটি টার্মিনাল নির্মাণ, ৪১ কোটি টাকার ভেসেল ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম, ৩৫ কোটি টাকার ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, ৩১৫ কোটি ৫৪ লাখ টাকার ফ্লোটিং ক্রেন, ৫৪ কোটি টাকার টাগ কাণ্ডারি-৯ প্রতিস্থাপন, ৩১ কোটি ৫০ লাখ টাকার সিসিটিভি স্থাপন, ২৭৭ কোটি টাকার কার্গো ও কনটেইনার হ্যান্ডলিং ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ, ২১ কোটি টাকার সিগোয়িং ওয়াটার সাপ্লাই ভেসেল সংগ্রহ, ১২ কোটি টাকার রিপ্লেসমেন্ট সার্ভে বোট (জরিপ-১১) বাই ওয়ান মডার্ন সার্ভে বোট, সাড়ে ৪০০ কোটি টাকার ড্রেজার সংগ্রহ, ৫০ কোটি টাকার রিপ্লেসমেন্ট অব টাগ বোট (কাণ্ডারি-৬), সাড়ে ১৯ কোটি টাকার প্রকিউরমেন্ট অব ওয়ান সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ-কাম-অ্যাম্বুলেন্স শিপ, ২০৩ কোটি টাকার বহুতল বিশিষ্ট গাড়ি পার্কিং সুবিধাদি নির্মাণ, ৬৩ কোটি টাকার সার্ভে জেটি নির্মাণ, ১৮২ কোটি টাকার নিউমুরিং আবাসিক এলাকায় ওভারফ্লো ইয়ার্ড নির্মাণ, ১০০ কোটি টাকার সিপিএ টাওয়ার নির্মাণ, ৫০ কোটি টাকার কাস্টম অকশন শেড নির্মাণ, ৩০ কোটি টাকার হাসপাতাল কমপ্লেক্স নির্মাণ, চবক কর্মচারীদের জন্য ৯৫ কোটি টাকায় তিনটি ভবন নির্মাণ, ৪০ কোটি টাকায় শামসুজ্জামান স্টেডিয়াম সংস্কার, ২০ কোটি টাকায় রেস্ট হাউস নির্মাণ, ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে পাইলট ভেসেল দিশারি-৫ পরিবর্তন, ৯০ কোটি টাকায় শোর ক্রেন ক্রয় ও ২০ কোটি টাকায় পাইলট ভেসেল প্রহরী ও রক্ষী পরিবর্তনের প্রকল্প রয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক মানের এক্সপোজিশন কাম কনভেনশন সেন্টার নির্মাণ, ব্রেক বাল্ক মালামাল খালাসের জেটি নির্মাণ ও বহুতল বিশিষ্ট অফিসার্স কোয়ার্টার নির্মাণ প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
প্রথম ৯টি প্রকল্পের মধ্যে চারটির টেন্ডার প্রক্রিয়া পর্যন্ত সম্পন্ন করে ফেলেছিল বন্দর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সব প্রক্রিয়া বাতিল করা হয়।
প্রকল্প পাসের পরও আছে ১০ ধাপ
৫০ কোটি টাকার অধিক কোনো টেন্ডারের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষকে এখন অতিক্রম করতে হবে নূ্যনতম ১০টি ধাপ। টেন্ডার ডকুমেন্ট তৈরি ও কার্যক্রম পরিচালনা করতে বন্দর কর্তৃপক্ষকে শুরুতে গঠন করতে হবে টেন্ডার প্রস্তুতকরণ কমিটি। এরপর গঠন করতে হবে টেন্ডার উন্মুক্তকরণ কমিটি। টেন্ডারে অংশ গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান শর্তাবলী যথাযথভাবে পালন করেছে কি-না তা যাচাই বাছাই করতে গঠন করতে হবে মূল্যায়ন কমিটি। এখানে কোনো অনিয়ম পেলে পুনঃদরপত্র আহ্বান করবেন তারা। অন্যথায় সর্বনিম্ন দরদাতাকে চিহ্নিত করে মূল্যায়ন কমিটি তা উপস্থাপন করবে বন্দর চেয়ারম্যানের কাছে। চেয়ারম্যান তা পুনঃনিরীক্ষা করে উপস্থাপন করবেন বন্দরের উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ৪ সদস্যের বোর্ডে। সেখানে পুরো প্রক্রিয়া পুনরায় যাচাই-বাছাই করবেন বোর্ড সদস্যরা। ২৪ কোটি টাকার অধিক কাজ হলে বোর্ড সদস্যরা পাঠাবেন নৌ মন্ত্রণালয়ে। এখানে সচিব মনোনীত কমিটি পুনরায় যাচাই-বাছাই করবেন। ৫০ কোটি টাকার নিচের দরপত্র হলে মন্ত্রণালয়ের এ কমিটি তা অনুমোদন দেবে। অন্যথায় তারা সুপারিশ পাঠাবে ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির কাছে। এ কমিটির বৈঠক নিয়মিত অনুষ্ঠিত না হওয়ায় আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় পড়ে বিলম্বিত হয় সিদ্ধান্ত।
সংশ্লিষ্টরা যা বলেন
নতুন নির্দেশনা প্রসঙ্গে নৌমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, 'স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প গ্রহণ, অনুমোদন ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ১৯৮৮ সালে একটি পরিপত্র জারি করা হয়েছে। নানা কারণে এটি পুরোপুরি মেনে এতদিন কাজ করা সম্ভব হয়নি। আর্থিক শৃঙ্খলা আনতে তাই বন্দরের প্রকল্প বাস্তবায়নে এখন সেই পরিপত্র অনুসরণ করতে বলেছি আমরা।' বন্দর অর্ডিন্যান্স প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান কমোডর আনওয়ারুল ইসলাম বলেন, 'অর্ডিন্যান্সে ভিন্ন কথা থাকলেও নৌ মন্ত্রণালয় পরিপত্র অনুসরণ করতে বলেছে আমাদের। জটিলতা বাড়লেও আমরা সেই নির্দেশনা অনুসারেই কাজ করব এখন।' বন্দর ব্যবহারকারী চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিম বলেন, 'মন্ত্রণালয়ের এমন নির্দেশনা মানতে গেলে জরুরি ইকুইপমেন্ট আসতেই লাগবে কয়েক বছর। পরিপত্রে আন্তঃমন্ত্রণালয়কে ১৫ দিনের মধ্যে মতামত প্রদান করতে বলা হলেও ইকুইপমেন্ট ও সিসিটিভি ক্যামেরার মতো জরুরি প্রকল্পে চার মাসেও চূড়ান্ত মতামত পাওয়া যায়নি। এটি পাওয়ার পর আরও অন্তত ১৪-১৫ ধাপ পেরুনোর আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতে হবে প্রতিটি প্রকল্পকে। তাই গৃহীত প্রকল্পগুলোর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিতই মনে হয় আমাদের কাছে।'
করাতে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে নৌ মন্ত্রণালয়।
কী আছে নতুন নির্দেশনায়
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ৯টি প্রকল্পকে অগ্রাধিকার দিয়ে অনুমোদনের জন্য এপ্রিল মাসে একটি প্রস্তাবনা পাঠায় নৌ মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু এসব প্রকল্পের অনুমোদন না দিয়ে উল্টো সব কার্যক্রম বাতিল করতে বলে নৌ মন্ত্রণালয়। ২০১১ সালের ১৭ এপ্রিল নৌ মন্ত্রণালয়ের সহকারী প্রধান রুমি তংচঙ্গ্যা স্বাক্ষরিত একটি পত্রে মন্ত্রণালয়ের উদ্বৃতি দিয়ে উল্লেখ করা হয়, 'তালিকাভুক্ত প্রকল্পগুলো ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল (ডিপিপি) কিংবা টেকনিক্যাল প্রজেক্ট প্রপোজাল (টিপিপি) অনুসারে নতুন করে পাঠানো হোক।'
চট্টগ্রাম বন্দরে একই বিষয়ে নৌ মন্ত্রণালয় থেকে আরেকটি চিঠি পাঠানো হয় গত ১১ জানুয়ারি। ২০১০ সালের ২৯ ডিসেম্বর নৌমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মাসিক এডিপি পর্যালোচনা সভার উদ্বৃতি দিয়ে সহকারী প্রধান উম্মে হাসিনা স্বাক্ষরিত সেই পত্রে উল্লেখ করা হয়, 'সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নে যে কোনো উন্নয়নমূলক কার্যক্রম সম্পাদনের লক্ষ্যে পণ্য, কার্য ও সেবা সংগ্রহ/ক্রয় প্রকল্প আকারে গ্রহণ করতে হবে। বিদ্যমান পরিপত্র অনুসরণে এসব প্রকল্প অনুমোদন প্রক্রিয়াকরণ পূর্বক যথানিয়মে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে হবে।'
আটকে যাওয়া ২৭ প্রকল্প
৮০০ কোটি টাকার কেসিটি টার্মিনাল নির্মাণ, ৪১ কোটি টাকার ভেসেল ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম, ৩৫ কোটি টাকার ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, ৩১৫ কোটি ৫৪ লাখ টাকার ফ্লোটিং ক্রেন, ৫৪ কোটি টাকার টাগ কাণ্ডারি-৯ প্রতিস্থাপন, ৩১ কোটি ৫০ লাখ টাকার সিসিটিভি স্থাপন, ২৭৭ কোটি টাকার কার্গো ও কনটেইনার হ্যান্ডলিং ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ, ২১ কোটি টাকার সিগোয়িং ওয়াটার সাপ্লাই ভেসেল সংগ্রহ, ১২ কোটি টাকার রিপ্লেসমেন্ট সার্ভে বোট (জরিপ-১১) বাই ওয়ান মডার্ন সার্ভে বোট, সাড়ে ৪০০ কোটি টাকার ড্রেজার সংগ্রহ, ৫০ কোটি টাকার রিপ্লেসমেন্ট অব টাগ বোট (কাণ্ডারি-৬), সাড়ে ১৯ কোটি টাকার প্রকিউরমেন্ট অব ওয়ান সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ-কাম-অ্যাম্বুলেন্স শিপ, ২০৩ কোটি টাকার বহুতল বিশিষ্ট গাড়ি পার্কিং সুবিধাদি নির্মাণ, ৬৩ কোটি টাকার সার্ভে জেটি নির্মাণ, ১৮২ কোটি টাকার নিউমুরিং আবাসিক এলাকায় ওভারফ্লো ইয়ার্ড নির্মাণ, ১০০ কোটি টাকার সিপিএ টাওয়ার নির্মাণ, ৫০ কোটি টাকার কাস্টম অকশন শেড নির্মাণ, ৩০ কোটি টাকার হাসপাতাল কমপ্লেক্স নির্মাণ, চবক কর্মচারীদের জন্য ৯৫ কোটি টাকায় তিনটি ভবন নির্মাণ, ৪০ কোটি টাকায় শামসুজ্জামান স্টেডিয়াম সংস্কার, ২০ কোটি টাকায় রেস্ট হাউস নির্মাণ, ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে পাইলট ভেসেল দিশারি-৫ পরিবর্তন, ৯০ কোটি টাকায় শোর ক্রেন ক্রয় ও ২০ কোটি টাকায় পাইলট ভেসেল প্রহরী ও রক্ষী পরিবর্তনের প্রকল্প রয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক মানের এক্সপোজিশন কাম কনভেনশন সেন্টার নির্মাণ, ব্রেক বাল্ক মালামাল খালাসের জেটি নির্মাণ ও বহুতল বিশিষ্ট অফিসার্স কোয়ার্টার নির্মাণ প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
প্রথম ৯টি প্রকল্পের মধ্যে চারটির টেন্ডার প্রক্রিয়া পর্যন্ত সম্পন্ন করে ফেলেছিল বন্দর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সব প্রক্রিয়া বাতিল করা হয়।
প্রকল্প পাসের পরও আছে ১০ ধাপ
৫০ কোটি টাকার অধিক কোনো টেন্ডারের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষকে এখন অতিক্রম করতে হবে নূ্যনতম ১০টি ধাপ। টেন্ডার ডকুমেন্ট তৈরি ও কার্যক্রম পরিচালনা করতে বন্দর কর্তৃপক্ষকে শুরুতে গঠন করতে হবে টেন্ডার প্রস্তুতকরণ কমিটি। এরপর গঠন করতে হবে টেন্ডার উন্মুক্তকরণ কমিটি। টেন্ডারে অংশ গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান শর্তাবলী যথাযথভাবে পালন করেছে কি-না তা যাচাই বাছাই করতে গঠন করতে হবে মূল্যায়ন কমিটি। এখানে কোনো অনিয়ম পেলে পুনঃদরপত্র আহ্বান করবেন তারা। অন্যথায় সর্বনিম্ন দরদাতাকে চিহ্নিত করে মূল্যায়ন কমিটি তা উপস্থাপন করবে বন্দর চেয়ারম্যানের কাছে। চেয়ারম্যান তা পুনঃনিরীক্ষা করে উপস্থাপন করবেন বন্দরের উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ৪ সদস্যের বোর্ডে। সেখানে পুরো প্রক্রিয়া পুনরায় যাচাই-বাছাই করবেন বোর্ড সদস্যরা। ২৪ কোটি টাকার অধিক কাজ হলে বোর্ড সদস্যরা পাঠাবেন নৌ মন্ত্রণালয়ে। এখানে সচিব মনোনীত কমিটি পুনরায় যাচাই-বাছাই করবেন। ৫০ কোটি টাকার নিচের দরপত্র হলে মন্ত্রণালয়ের এ কমিটি তা অনুমোদন দেবে। অন্যথায় তারা সুপারিশ পাঠাবে ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির কাছে। এ কমিটির বৈঠক নিয়মিত অনুষ্ঠিত না হওয়ায় আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় পড়ে বিলম্বিত হয় সিদ্ধান্ত।
সংশ্লিষ্টরা যা বলেন
নতুন নির্দেশনা প্রসঙ্গে নৌমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, 'স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প গ্রহণ, অনুমোদন ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ১৯৮৮ সালে একটি পরিপত্র জারি করা হয়েছে। নানা কারণে এটি পুরোপুরি মেনে এতদিন কাজ করা সম্ভব হয়নি। আর্থিক শৃঙ্খলা আনতে তাই বন্দরের প্রকল্প বাস্তবায়নে এখন সেই পরিপত্র অনুসরণ করতে বলেছি আমরা।' বন্দর অর্ডিন্যান্স প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান কমোডর আনওয়ারুল ইসলাম বলেন, 'অর্ডিন্যান্সে ভিন্ন কথা থাকলেও নৌ মন্ত্রণালয় পরিপত্র অনুসরণ করতে বলেছে আমাদের। জটিলতা বাড়লেও আমরা সেই নির্দেশনা অনুসারেই কাজ করব এখন।' বন্দর ব্যবহারকারী চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিম বলেন, 'মন্ত্রণালয়ের এমন নির্দেশনা মানতে গেলে জরুরি ইকুইপমেন্ট আসতেই লাগবে কয়েক বছর। পরিপত্রে আন্তঃমন্ত্রণালয়কে ১৫ দিনের মধ্যে মতামত প্রদান করতে বলা হলেও ইকুইপমেন্ট ও সিসিটিভি ক্যামেরার মতো জরুরি প্রকল্পে চার মাসেও চূড়ান্ত মতামত পাওয়া যায়নি। এটি পাওয়ার পর আরও অন্তত ১৪-১৫ ধাপ পেরুনোর আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতে হবে প্রতিটি প্রকল্পকে। তাই গৃহীত প্রকল্পগুলোর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিতই মনে হয় আমাদের কাছে।'
No comments