মাদ্রাসা নিয়ে গবেষণা, গ্রন্থ প্রকাশঃ শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের ৯২ শতাংশ রাজনীতিতে যুক্ত
দেশের প্রতি তিনজন শিক্ষার্থীর একজন মাদ্রাসায় পড়ে। মাদ্রাসা থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মাত্র ২ শতাংশ কর্মসংস্থানের সুযোগ পায়। তাদের একটি অংশ জঙ্গি তৎপরতায় লিপ্ত হয়। আর এ কাজে মাদ্রাসার প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের যোগসাজশ থাকে। এ ছাড়া মাদ্রাসার শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের ৯২ শতাংশই বিভিন্ন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এর মধ্যে ৬৭ শতাংশ জড়িত বিএনপি, জামায়াত, ইসলামী শাসনতন্ত্র কিংবা খেলাফত মজলিসের সঙ্গে।
অর্থনীতিবিদ ড. আবুল বারকাতের নেতৃত্বে একটি গবেষক দলের গবেষণা থেকে এমন তথ্য উঠে এসেছে। শহর ও গ্রামের ৯৯টি এলাকার মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, কর্মকর্তাদের ওপর গত দুই বছর এ গবেষণা চালানো হয়। গবেষণায় ১৯৫০ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত তথ্য স্থান পেয়েছে।
গবেষণা থেকে প্রাপ্ত ফল বই আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে 'পলিটিক্যাল ইকোনমি অব মাদ্রাসা এডুকেশন ইন বাংলাদেশ' শীর্ষক এ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন জাতীয় অধ্যাপক ড. এ এফ সালাহ উদ্দিন আহমেদ। নিজেরা করি ও অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। রঙিন মলাটে ৩৯৭ পৃষ্ঠার এ বইয়ে ১৫টি অধ্যায় রয়েছে। বইটি ইংরেজিতে প্রকাশ করা হয়েছে। শিগগিরই এর বাংলা অনুবাদ প্রকাশ করা হবে বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন।
ড. আবুল বারকাত বলেন, বেকারত্ব বেশি হলেও মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী ভর্তির অনুপাত মূলধারার শিক্ষাব্যবস্থার চেয়ে বেশি। প্রতিবছর দশমিক ৪৪ শতাংশ শিক্ষার্থী মাদ্রাসায় বেশি ভর্তি হচ্ছে। বিশেষ করে, সামরিক স্বৈরশাসন ও দেশের অস্থিতিশীল অবস্থায় মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী, শিক্ষকের সংখ্যা বেড়ে যায়। দেশে বর্তমানে প্রতি তিনজন শিক্ষার্থীর একজন মাদ্রাসার। শিক্ষকের ক্ষেত্রেও একই হার। মূলধারা ও মাদ্রাসাসহ দেশে মোট শিক্ষার্থী এক কোটি।
আবুল বারকাত বলেন, 'বাংলাদেশে মাদ্রাসার সংখ্যা কত, ছাত্র ও শিক্ষক কত_এ বিষয়ে সরকারি কোনো তথ্য নেই। তবে গবেষণার হিসেবে দেখা গেছে, ২০০৮ সালে দেশে মাদ্রাসার সংখ্যা ছিল ৫৪ হাজার ১৩০টি। এর মধ্যে আলিয়া মাদ্রাসা ১৪ হাজার ৫১৮ ও কওমি মাদ্রাসা ৩৯ হাজার ৬১২টি। এর মধ্যে ৮৭ শতাংশ মাদ্রাসা গ্রামে অবস্থিত। অথচ ১৯৫০ সালে মাদ্রাসার সংখ্যা ছিল চার হাজার ৩৩০টি।'
গবেষণার ফলাফলে বলা হয়, তাদের প্রাপ্ত তথ্য শিক্ষাব্যবস্থায় বড় ধরনের ভারসাম্যহীনতা নির্দেশ করে। দরিদ্র-নিম্নবিত্ত ঘরের সন্তানদের সংখ্যা মাদ্রাসায় আনুপাতিক হারে বেশি। এটা নির্দেশ করে যে রাষ্ট্র দারিদ্র্য ঘরের সন্তানদের মূলধারার শিক্ষায় আনতে ব্যর্থ হয়েছে। এ ছাড়া সামরিক শাসনের সময় মাদ্রাসা শিক্ষার প্রসার নির্দেশ করে যে গণতন্ত্রহীনতা শিক্ষাব্যবস্থাকে বিকৃত করে। মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মকর্তাদের কত অংশ জঙ্গি তৎপরতায় শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করে তা গবেষণায় জানা না গেলেও মাদ্রাসার সিলেবাস জঙ্গি তৎপরতায় শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করে না বলে গবেষকরা নিশ্চিত হয়েছেন।
প্রকাশনা অনুষ্ঠানে ড. সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, মাদ্রাসা শিক্ষায় অনেক ঘাটতি আছে_যা এ গবেষণায় উঠে আসেনি। কিছু তথ্যগত ভুল থাকলেও বইটি গুণগত মানসম্পন্ন হয়েছে। তিনি বলেন, মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থার প্রধান সীমাবদ্ধতা হলো, এ শিক্ষাপদ্ধতিতে নতুন জ্ঞান চর্চার সুযোগ নেই। মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসুদ বইটির মূল্যায়ন করে বলেন, '৯০ ভাগই ভালো হয়েছে, আর ১০ ভাগে কলঙ্ক রয়েছে।' কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বইটিতে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
'নিজেরা করি'র সমন্বয়কারী খুশি কবীরের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন ড. কাজী নুরুল ইসলাম, ড. জাহেদা আহমদ, ড. আমেনা মহসীন, মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসুদ প্রমুখ।
গবেষণা থেকে প্রাপ্ত ফল বই আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে 'পলিটিক্যাল ইকোনমি অব মাদ্রাসা এডুকেশন ইন বাংলাদেশ' শীর্ষক এ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন জাতীয় অধ্যাপক ড. এ এফ সালাহ উদ্দিন আহমেদ। নিজেরা করি ও অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। রঙিন মলাটে ৩৯৭ পৃষ্ঠার এ বইয়ে ১৫টি অধ্যায় রয়েছে। বইটি ইংরেজিতে প্রকাশ করা হয়েছে। শিগগিরই এর বাংলা অনুবাদ প্রকাশ করা হবে বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন।
ড. আবুল বারকাত বলেন, বেকারত্ব বেশি হলেও মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী ভর্তির অনুপাত মূলধারার শিক্ষাব্যবস্থার চেয়ে বেশি। প্রতিবছর দশমিক ৪৪ শতাংশ শিক্ষার্থী মাদ্রাসায় বেশি ভর্তি হচ্ছে। বিশেষ করে, সামরিক স্বৈরশাসন ও দেশের অস্থিতিশীল অবস্থায় মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী, শিক্ষকের সংখ্যা বেড়ে যায়। দেশে বর্তমানে প্রতি তিনজন শিক্ষার্থীর একজন মাদ্রাসার। শিক্ষকের ক্ষেত্রেও একই হার। মূলধারা ও মাদ্রাসাসহ দেশে মোট শিক্ষার্থী এক কোটি।
আবুল বারকাত বলেন, 'বাংলাদেশে মাদ্রাসার সংখ্যা কত, ছাত্র ও শিক্ষক কত_এ বিষয়ে সরকারি কোনো তথ্য নেই। তবে গবেষণার হিসেবে দেখা গেছে, ২০০৮ সালে দেশে মাদ্রাসার সংখ্যা ছিল ৫৪ হাজার ১৩০টি। এর মধ্যে আলিয়া মাদ্রাসা ১৪ হাজার ৫১৮ ও কওমি মাদ্রাসা ৩৯ হাজার ৬১২টি। এর মধ্যে ৮৭ শতাংশ মাদ্রাসা গ্রামে অবস্থিত। অথচ ১৯৫০ সালে মাদ্রাসার সংখ্যা ছিল চার হাজার ৩৩০টি।'
গবেষণার ফলাফলে বলা হয়, তাদের প্রাপ্ত তথ্য শিক্ষাব্যবস্থায় বড় ধরনের ভারসাম্যহীনতা নির্দেশ করে। দরিদ্র-নিম্নবিত্ত ঘরের সন্তানদের সংখ্যা মাদ্রাসায় আনুপাতিক হারে বেশি। এটা নির্দেশ করে যে রাষ্ট্র দারিদ্র্য ঘরের সন্তানদের মূলধারার শিক্ষায় আনতে ব্যর্থ হয়েছে। এ ছাড়া সামরিক শাসনের সময় মাদ্রাসা শিক্ষার প্রসার নির্দেশ করে যে গণতন্ত্রহীনতা শিক্ষাব্যবস্থাকে বিকৃত করে। মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মকর্তাদের কত অংশ জঙ্গি তৎপরতায় শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করে তা গবেষণায় জানা না গেলেও মাদ্রাসার সিলেবাস জঙ্গি তৎপরতায় শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করে না বলে গবেষকরা নিশ্চিত হয়েছেন।
প্রকাশনা অনুষ্ঠানে ড. সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, মাদ্রাসা শিক্ষায় অনেক ঘাটতি আছে_যা এ গবেষণায় উঠে আসেনি। কিছু তথ্যগত ভুল থাকলেও বইটি গুণগত মানসম্পন্ন হয়েছে। তিনি বলেন, মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থার প্রধান সীমাবদ্ধতা হলো, এ শিক্ষাপদ্ধতিতে নতুন জ্ঞান চর্চার সুযোগ নেই। মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসুদ বইটির মূল্যায়ন করে বলেন, '৯০ ভাগই ভালো হয়েছে, আর ১০ ভাগে কলঙ্ক রয়েছে।' কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বইটিতে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
'নিজেরা করি'র সমন্বয়কারী খুশি কবীরের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন ড. কাজী নুরুল ইসলাম, ড. জাহেদা আহমদ, ড. আমেনা মহসীন, মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসুদ প্রমুখ।
No comments