গভীর খাদে বিদ্যুৎ খাত -জ্বালানি খাতকে রাহুমুক্ত করতে সক্রিয় হোন
বিদ্যুতের ঘাটতি ও উৎপাদনের বিপরীত গতি যেন তৈলাক্ত বাঁশ বেয়ে ওঠা আর পিছলে যাওয়ার গল্প।
বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের দুরবস্থা পরিমাপের জন্য পরিসংখ্যানের দ্বারস্থ হওয়ার দরকার নেই। সব ঋতুতে চলা বিদ্যুতের ঘাটতির শিকার জনজীবনই এর প্রমাণ। তার পরও গত সোমবারের প্রথম আলোর সংবাদ জানাচ্ছে, প্রতিবছর ১০ শতাংশ হারে চাহিদা বাড়ছে ও পুরোনো কেন্দ্রগুলোর উৎপাদনক্ষমতা কমছে। এদিকে নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের গতিও শামুকের মতোই ধীর। বিদ্যুৎ খাতের এই গভীর খাদে পড়া অবস্থা দীর্ঘদিনের অবহেলার ফল। বিদ্যুৎ এখন জাতীয় ভোগান্তি ও ব্যর্থতার অপর নাম।
গত প্রায় দুই দশকে বিদ্যুৎ খাতে সরকার নিজস্ব অর্থে কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করেনি, অথচ কেবল খুুঁটি পুঁতেই শত শত কোটি টাকা অপচয় করা হয়েছে। বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক বা অন্য কোনো বিনিয়োগকারী সংস্থার কাছ থেকে গত কয়েকটি সরকার আর্থিক সহায়তা না পেলেও, তাদের অনেক শর্ত এই খাতের বিকাশে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে সংস্কারের অভাবে সরকারিভাবে স্থাপিত বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদনক্ষমতাও কমছে; সেগুলো এখন জরাজীর্ণ অবস্থায়। উৎপাদিত বিদ্যুতের একটি অংশ চুরি হয়ে যাওয়ার কথাও সুবিদিত। পাশাপাশি মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে গ্যাসের সংকট। বিশেষজ্ঞদের অভিযোগ, উৎপাদনক্ষমতা অনুযায়ী গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে না। গ্যাস না থাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদনও কমছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা যেসব অজুহাত দিয়ে থাকেন, তা কেবল বহুল ব্যবহূতই নয়, অবিশ্বাস্যও বটে। দেশের গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে সামান্য ব্যয়েই আরও গ্যাস উত্তোলন সম্ভব। তা না করে বছরের পর বছর একই অজুহাত চলে আসছে, আর দেওয়া হচ্ছে প্রতিশ্রুতি। এর সঙ্গে জড়িত হয়েছে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সঞ্চালনব্যবস্থার ত্রুটি, দুর্নীতি, অপচয় ও চূড়ান্ত অব্যবস্থাপনা। জ্বালানি খাতের দুর্নীতির সঙ্গে গ্যাস ও বিদ্যুৎ-সংকটের সম্পর্কের বিষয়টি তাই উপেক্ষা করা যায় না।
বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধানে গত তিনটি সরকারই বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ভরসা দিয়ে আসছে। অথচ বাস্তবে অগ্রগতি সামান্যই। এ ক্ষেত্রেও চলছে দীর্ঘসূত্রতা, দরপত্র নিয়ে অস্বচ্ছতা। আবার বিদ্যুতের মতো স্পর্শকাতর জাতীয় অগ্রাধিকারের বিষয়টির ভবিষ্যত্ কেবল বেসরকারি খাতের ওপর নির্ভরশীল থাকতে পারে না। উন্নত দেশগুলোতে সরকারি-বেসরকারি অনুপাত ৭০ বনাম ৩০ শতাংশ। বহু বছর ধরে পরমাণু শক্তিচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ সৌরবিদ্যুৎ ইত্যাদির কথা উঠছে আর পড়ছে, বাস্তবায়ন হচ্ছে না কিছুই। অভিজ্ঞতা বলে, বিদ্যুৎ বিষয়ে কোনো সরকারই প্রতিশ্রুতি রাখতে পারেনি। এ রকম এক ধারাবাহিক অবহেলারই ফল হলো আজকের বিদ্যুৎ-সংকট।
সরকারি তহবিলে নিজস্ব অর্থায়নে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা সদিচ্ছা ও পরিকল্পনার ব্যাপার। বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে নিজস্বভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের অনুমতি দিতে হবে এবং উৎপাদিত বিদ্যুতের উদ্বৃত্ত অংশ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করার ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানো এবং পুরোনো বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো সংস্কারে হাত লাগাতে হবে। শিল্প-কৃষি-শিক্ষা-চিকিৎসাক্ষেত্রে বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখার বিকল্প নেই। মনে রাখতে হবে, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সঙ্গে জাতীয় জীবনের সব ক্ষেত্রই যুক্ত। এই খাতে স্থবিরতা সমাজ ও অর্থনীতির সব ক্ষেত্রকে অচল করে দিতে পারে এবং জন্ম দিতে পারে বিরাট বিস্তৃত অসন্তোষের।
বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের দুরবস্থা পরিমাপের জন্য পরিসংখ্যানের দ্বারস্থ হওয়ার দরকার নেই। সব ঋতুতে চলা বিদ্যুতের ঘাটতির শিকার জনজীবনই এর প্রমাণ। তার পরও গত সোমবারের প্রথম আলোর সংবাদ জানাচ্ছে, প্রতিবছর ১০ শতাংশ হারে চাহিদা বাড়ছে ও পুরোনো কেন্দ্রগুলোর উৎপাদনক্ষমতা কমছে। এদিকে নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের গতিও শামুকের মতোই ধীর। বিদ্যুৎ খাতের এই গভীর খাদে পড়া অবস্থা দীর্ঘদিনের অবহেলার ফল। বিদ্যুৎ এখন জাতীয় ভোগান্তি ও ব্যর্থতার অপর নাম।
গত প্রায় দুই দশকে বিদ্যুৎ খাতে সরকার নিজস্ব অর্থে কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করেনি, অথচ কেবল খুুঁটি পুঁতেই শত শত কোটি টাকা অপচয় করা হয়েছে। বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক বা অন্য কোনো বিনিয়োগকারী সংস্থার কাছ থেকে গত কয়েকটি সরকার আর্থিক সহায়তা না পেলেও, তাদের অনেক শর্ত এই খাতের বিকাশে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে সংস্কারের অভাবে সরকারিভাবে স্থাপিত বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদনক্ষমতাও কমছে; সেগুলো এখন জরাজীর্ণ অবস্থায়। উৎপাদিত বিদ্যুতের একটি অংশ চুরি হয়ে যাওয়ার কথাও সুবিদিত। পাশাপাশি মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে গ্যাসের সংকট। বিশেষজ্ঞদের অভিযোগ, উৎপাদনক্ষমতা অনুযায়ী গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে না। গ্যাস না থাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদনও কমছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা যেসব অজুহাত দিয়ে থাকেন, তা কেবল বহুল ব্যবহূতই নয়, অবিশ্বাস্যও বটে। দেশের গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে সামান্য ব্যয়েই আরও গ্যাস উত্তোলন সম্ভব। তা না করে বছরের পর বছর একই অজুহাত চলে আসছে, আর দেওয়া হচ্ছে প্রতিশ্রুতি। এর সঙ্গে জড়িত হয়েছে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সঞ্চালনব্যবস্থার ত্রুটি, দুর্নীতি, অপচয় ও চূড়ান্ত অব্যবস্থাপনা। জ্বালানি খাতের দুর্নীতির সঙ্গে গ্যাস ও বিদ্যুৎ-সংকটের সম্পর্কের বিষয়টি তাই উপেক্ষা করা যায় না।
বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধানে গত তিনটি সরকারই বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ভরসা দিয়ে আসছে। অথচ বাস্তবে অগ্রগতি সামান্যই। এ ক্ষেত্রেও চলছে দীর্ঘসূত্রতা, দরপত্র নিয়ে অস্বচ্ছতা। আবার বিদ্যুতের মতো স্পর্শকাতর জাতীয় অগ্রাধিকারের বিষয়টির ভবিষ্যত্ কেবল বেসরকারি খাতের ওপর নির্ভরশীল থাকতে পারে না। উন্নত দেশগুলোতে সরকারি-বেসরকারি অনুপাত ৭০ বনাম ৩০ শতাংশ। বহু বছর ধরে পরমাণু শক্তিচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ সৌরবিদ্যুৎ ইত্যাদির কথা উঠছে আর পড়ছে, বাস্তবায়ন হচ্ছে না কিছুই। অভিজ্ঞতা বলে, বিদ্যুৎ বিষয়ে কোনো সরকারই প্রতিশ্রুতি রাখতে পারেনি। এ রকম এক ধারাবাহিক অবহেলারই ফল হলো আজকের বিদ্যুৎ-সংকট।
সরকারি তহবিলে নিজস্ব অর্থায়নে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা সদিচ্ছা ও পরিকল্পনার ব্যাপার। বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে নিজস্বভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের অনুমতি দিতে হবে এবং উৎপাদিত বিদ্যুতের উদ্বৃত্ত অংশ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করার ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানো এবং পুরোনো বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো সংস্কারে হাত লাগাতে হবে। শিল্প-কৃষি-শিক্ষা-চিকিৎসাক্ষেত্রে বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখার বিকল্প নেই। মনে রাখতে হবে, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সঙ্গে জাতীয় জীবনের সব ক্ষেত্রই যুক্ত। এই খাতে স্থবিরতা সমাজ ও অর্থনীতির সব ক্ষেত্রকে অচল করে দিতে পারে এবং জন্ম দিতে পারে বিরাট বিস্তৃত অসন্তোষের।
No comments