একজন সাহারার নির্দয় বিদায় by মিজানুর রহমান
ঘটনাটি
মর্মান্তিক, হৃদয় বিদারক। সামান্য মশার অত্যাচার থেকে বাঁচতে ঘরের
দরজা-জানালা বন্ধ রেখেছিলেন। এমনটা আগেও করেছেন। কিন্তু এবার সেটাই কাল
হলো। গ্যাসের চুলা জ্বালাতে গিয়ে বিস্ফোরণ, মুহুর্তেই আগুনের লেলিহান শিখার
আক্রমণ। অসহ্য যন্ত্রণা, ছটফট। অ্যাপোলো থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসকদের চারদিনের চেষ্টা।
স্বজনদের অপেক্ষা, প্রার্থনা-আকুতি। কিন্তু না, সব বৃথা। তিনি আর ফিরলেন না। চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে সদ্য ঢাকা ফেরৎ বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা হুমায়রা আক্তার জাহান। সাহারা পুতুল নামে স্বজন ও বন্ধু মহলে পরিচিত তিনি। ফেসবুকেও ওই নামেই তার অ্যাকাউন্ট। গ্রামের বাড়ি মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার গাঙ্গকুল (খাদিম বাড়ি)। বয়স পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই। তিন সন্তানের জননী সাহারার ফেসবুক প্রোফাইল পিকচারে নাতনির সঙ্গে ছবি খানা এখনও জ্বলজ্বল করছে। তবে তার ওয়াল ভরে গেছে শোকাহত স্বজনদের করুণ আর্তনাদে। তার চিরশান্তি কামনা করছেন তারা।
সদা হাসি-খুশি সাহারা অন্যান্য দিনের মত ৫ই আগস্ট রাতের খাবার প্রস্তুতির জন্য রান্না ঘরে ঢুকেছিলেন। কিন্তু কে জানতো সেখানেই জীবন বিধ্বংসী ঘটনার মুখোমুখি হবেন তিনি। উপস্থিত স্বামী ব্যবসায়ী সেলিম আহমেদ এবং এ লেভেল পড়ুয়া ছেলে আহমেদ আবদুল্লাহর ভাষ্য মতে, পুরো ঘটনার স্থায়ীত্ব মিনিট খানেক। হঠাৎ রান্না ঘরে বিকট শব্দ, সঙ্গে আগুনের ঝলকানি, চিৎকার। শরীরে আগুন নিয়ে সাহারা তখন দৌড়ে ড্রয়িং রুমে। তৎক্ষণাৎ তোয়ালে নিয়ে মায়ের শরীরের আগুন নেভানোর চেষ্টা ছেলের। স্বামী পানি ঢালছেন। কিন্তু এ আগুন কি এত সহজে নিভে? পাশের বাথরুমে ঠেলে শাওয়ার ছাড়ার পর যখন আগুন নিভলো, ততক্ষণে সব শেষ!
প্রতিবেশীর সহায়তায় পাশের অ্যাপোলো হাসপাতালে নেয়া হলো চটজলদি। প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর রেফার করা হলো ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে। রাতেই স্থানান্তর হলেন সেখানে।
পোড়া রোগীর চিকিৎসায় বাংলাদেশের অত্যাধুনিক ঢামেক বার্ন ইউনিটে তাকে বাঁচানোর হেন চেষ্টা নেই যা করা হয়নি। চিকিৎসকদের ভাষ্য মতে, জটিলতা ছিল অনেক। তার শরীরের ৮৪ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। তাছাড়া তিনি আগে থেকেই ডায়েবেটিসের রোগী। ম্যানেজ করা কঠিন। তবুও চেষ্টা করে যাওয়া। কিন্তু সে কী আর হয়!
৯ই জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শারীরিক অবস্থার চূড়ান্ত অবণতি। সবাইকে কাঁদিয়ে তিনি বিদায় নিলেন। হাসপাতালের বারান্দায় তখন তার সুহৃদ-স্বজনদের ভিড়। একমাত্র মেয়ে চার্টার অ্যাকাউন্টেন্ট নাবিলা বিলাপ করছেন মায়ের জন্য। তাকে শান্তনা দেয়ার চেষ্টায় সবাই। কান পাতলে যে আওয়াজ আসছিল সেটি বড়ই বেদনাদায়ক। তা হল- নিউইয়র্কে স্থায়ীভাবে বসবাসরত সাহারার বড় ছেলে আহমেদ জুননুন সদ্য বাবা হয়েছেন। তার একমাত্র কন্যাকে দেখতেই সাহারা-সেলিম দম্পতি আড়াই মাস আগে যুক্তরাষ্ট্রে যান। সেখানে তারা ছেলে-বৌমা আর নতনিকে নিয়ে ঈদ-উল ফিতর উদযাপন করেন। বেশ ভালই ছিলেন। নিয়মিত ফেসবুকে ছবি আপডেট কমেন্ট শেয়ারে তা খানিকটা হলেও অনুমেয়। স্বজনরা বিলাপ করে বলছিলেন- নিউইয়র্কে নাতনির সঙ্গে অরেকটি ঈদ উদযাপনের অনুরোধ ছিল ছেলে এবং বৌমার। মা’কে আটকানোর জন্য তারা এ-ও বলেছিল দেশে ‘ডেঙ্গু’ হচ্ছে। কিন্তু তিনি সব আবদার- অনুরোধ অগ্রাহ্য করে দেশে ফেরার জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়েন। দেশে থাকা মেয়ে নাবিলা এবং ছোট ছেলে আহমেদ আবদুল্লাহ’র সঙ্গে ঈদ করতে তিনি স্বামীকে নিয়ে ৩১ শে জুলাই ঢাকা ফিরেন।
স্বজনদের অপেক্ষা, প্রার্থনা-আকুতি। কিন্তু না, সব বৃথা। তিনি আর ফিরলেন না। চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে সদ্য ঢাকা ফেরৎ বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা হুমায়রা আক্তার জাহান। সাহারা পুতুল নামে স্বজন ও বন্ধু মহলে পরিচিত তিনি। ফেসবুকেও ওই নামেই তার অ্যাকাউন্ট। গ্রামের বাড়ি মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার গাঙ্গকুল (খাদিম বাড়ি)। বয়স পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই। তিন সন্তানের জননী সাহারার ফেসবুক প্রোফাইল পিকচারে নাতনির সঙ্গে ছবি খানা এখনও জ্বলজ্বল করছে। তবে তার ওয়াল ভরে গেছে শোকাহত স্বজনদের করুণ আর্তনাদে। তার চিরশান্তি কামনা করছেন তারা।
সদা হাসি-খুশি সাহারা অন্যান্য দিনের মত ৫ই আগস্ট রাতের খাবার প্রস্তুতির জন্য রান্না ঘরে ঢুকেছিলেন। কিন্তু কে জানতো সেখানেই জীবন বিধ্বংসী ঘটনার মুখোমুখি হবেন তিনি। উপস্থিত স্বামী ব্যবসায়ী সেলিম আহমেদ এবং এ লেভেল পড়ুয়া ছেলে আহমেদ আবদুল্লাহর ভাষ্য মতে, পুরো ঘটনার স্থায়ীত্ব মিনিট খানেক। হঠাৎ রান্না ঘরে বিকট শব্দ, সঙ্গে আগুনের ঝলকানি, চিৎকার। শরীরে আগুন নিয়ে সাহারা তখন দৌড়ে ড্রয়িং রুমে। তৎক্ষণাৎ তোয়ালে নিয়ে মায়ের শরীরের আগুন নেভানোর চেষ্টা ছেলের। স্বামী পানি ঢালছেন। কিন্তু এ আগুন কি এত সহজে নিভে? পাশের বাথরুমে ঠেলে শাওয়ার ছাড়ার পর যখন আগুন নিভলো, ততক্ষণে সব শেষ!
প্রতিবেশীর সহায়তায় পাশের অ্যাপোলো হাসপাতালে নেয়া হলো চটজলদি। প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর রেফার করা হলো ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে। রাতেই স্থানান্তর হলেন সেখানে।
পোড়া রোগীর চিকিৎসায় বাংলাদেশের অত্যাধুনিক ঢামেক বার্ন ইউনিটে তাকে বাঁচানোর হেন চেষ্টা নেই যা করা হয়নি। চিকিৎসকদের ভাষ্য মতে, জটিলতা ছিল অনেক। তার শরীরের ৮৪ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। তাছাড়া তিনি আগে থেকেই ডায়েবেটিসের রোগী। ম্যানেজ করা কঠিন। তবুও চেষ্টা করে যাওয়া। কিন্তু সে কী আর হয়!
৯ই জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শারীরিক অবস্থার চূড়ান্ত অবণতি। সবাইকে কাঁদিয়ে তিনি বিদায় নিলেন। হাসপাতালের বারান্দায় তখন তার সুহৃদ-স্বজনদের ভিড়। একমাত্র মেয়ে চার্টার অ্যাকাউন্টেন্ট নাবিলা বিলাপ করছেন মায়ের জন্য। তাকে শান্তনা দেয়ার চেষ্টায় সবাই। কান পাতলে যে আওয়াজ আসছিল সেটি বড়ই বেদনাদায়ক। তা হল- নিউইয়র্কে স্থায়ীভাবে বসবাসরত সাহারার বড় ছেলে আহমেদ জুননুন সদ্য বাবা হয়েছেন। তার একমাত্র কন্যাকে দেখতেই সাহারা-সেলিম দম্পতি আড়াই মাস আগে যুক্তরাষ্ট্রে যান। সেখানে তারা ছেলে-বৌমা আর নতনিকে নিয়ে ঈদ-উল ফিতর উদযাপন করেন। বেশ ভালই ছিলেন। নিয়মিত ফেসবুকে ছবি আপডেট কমেন্ট শেয়ারে তা খানিকটা হলেও অনুমেয়। স্বজনরা বিলাপ করে বলছিলেন- নিউইয়র্কে নাতনির সঙ্গে অরেকটি ঈদ উদযাপনের অনুরোধ ছিল ছেলে এবং বৌমার। মা’কে আটকানোর জন্য তারা এ-ও বলেছিল দেশে ‘ডেঙ্গু’ হচ্ছে। কিন্তু তিনি সব আবদার- অনুরোধ অগ্রাহ্য করে দেশে ফেরার জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়েন। দেশে থাকা মেয়ে নাবিলা এবং ছোট ছেলে আহমেদ আবদুল্লাহ’র সঙ্গে ঈদ করতে তিনি স্বামীকে নিয়ে ৩১ শে জুলাই ঢাকা ফিরেন।
ছবিঃ ফেসবুক থেকে -মানবজমিন |
No comments