কারাগারে খালেদা জিয়ার দেড় বছর by আবদুর রহিম
বছর
পেরিয়ে গেছে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বন্দিজীবন। ৮ আগস্ট
পূর্ণ হলো দেড় বছর। দিন-ক্ষণে ৫৪৪ দিন! এরই মধ্যে বদলে গেছে তার জীবনধারা।
রাত জাগার পুরনো অভ্যাস ত্যাগ করেছেন তিনি।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা অবস্থায় কক্ষের বাতি রাত সাড়ে ৯টা থেকে ১০টার মধ্যেই নিভে যেত। এরপর আদালতের নির্দেশে চিকিৎসা নিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেও ঠিক সময়মতো তাকে ঘুমিয়ে যেতে হচ্ছে।
অতীতে রাজনীতিতে মুক্ত সময়ে নানা কাজে ব্যস্ত থাকলেও এখন বন্দি অবস্থায় কারারক্ষীদের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে, চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে আর গৃহপরিচারিকা ফাতেমার সঙ্গে খুনসুঁটিতে কাটছে দিবা-নিশি।
তবে হাসপাতালে অধিকাংশ সময় চুপচাপই থাকেন খালেদা জিয়া। সময় কাটে ইবাদত-বন্দেগি আর বই ও পত্রিকা পড়ে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এবারই প্রথম কারাজীবন নয় খালেদা জিয়ার। এর আগে ১৯৮২ সালের ৩ জানুয়ারি রাজনীতিতে যোগ দেয়ার পর তিনি মোট চারবার গ্রেপ্তার হন।
এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় ১৯৮৩ সালের ২৮ নভেম্বর, ১৯৮৪ সালের ৩ মে, ১৯৮৭ সালের ১১ নভেম্বর তিনি গ্রেপ্তার হন।
তবে তখন তাকে বেশি দিন আটক থাকতে হয়নি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে ৩৭২ দিন জাতীয় সংসদ ভবন এলাকার স্থাপিত বিশেষ সাব জেলে এক বছরেরও বেশি সময় ছিলেন তিনি।
সর্বশেষ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিশেষ আদালতের রায়ে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড মাথায় নিয়ে কারাগারে ঢুকেন খালেদা জিয়া। ওই দিন থেকে পুরনো ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারে শুরু হয় তার কারাজীবন।
এরপর অসুস্থকার কারণে আদালতের নির্দেশে এখন রয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে। তার বিরুদ্ধে ৩৫ মামলার মধ্যে একটিতে জামিন হলে, অন্য মামলা সামনে আসছে। এভাবেই চলছে জামিনের সংগ্রাম।
সর্বশেষ গত সপ্তাহে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায়ও খালেদার জামিন আবেদন সরাসরি নাকচ হয়ে যায়। দলে জামিনের আশা সৃষ্টি হলেও তাও ফের বন্ধ হয়ে যায়।
তার দেখাশোনার জন্য প্রথম দিন থেকে স্বেচ্ছায় কারাগারে রয়েছেন গৃহপরিচারিকা ফাতেমা। এ নিয়ে শুরু থেকেই ছিলো বিতর্কও।
পরে খালেদা জিয়ার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত খালেদা জিয়াকে দেখাশোনার জন্য ফাতেমাকে কারাগারে রাখার নির্দেশ দেন।
সূত্র জানায়, কারাগারে খালেদা জিয়া শ্বাসকষ্ট, উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট, চোখ ও হাঁটুর সমস্যায় ভুগছেন। সেই সঙ্গে ডায়াবেটিসের কারণে তার চোখের সমস্যা হচ্ছে।
গত বছরের ৫ জুন কারাগারে মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। এমন অবস্থায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিশেষায়িত ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করাতে সরকারের কাছে একাধিকবার দাবিও জানায় বিএনপি। কিন্তু সে দাবি পূরণ হয়নি।
অন্যদিকে, ধীরে ধীরে খালেদা জিয়ার সঙ্গে পরিবার ও দলের নেতাদের দেখা পাওয়ার অনুমতি কমে আসে। বিএনপির অভিযোগ, বন্দিদের আইনসম্মত অধিকার থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন তিনি।
৫ সেপ্টেম্বর কারাগারের ভেতরে অস্থায়ী আদালতে হাজিরা দিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, আপনাদের যত দিন ইচ্ছা, যত ইচ্ছা সাজা দেন। আমি বারবার আদালতে আসতে পারব না। আমি অসুস্থ। আমি পা নাড়াতে পারি না। ডাক্তার আমাকে বিশ্রামে থাকতে বলেছেন।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার দেখভাল করা বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. এ জেড এম জাহিদ বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ডায়াবেটিস কখনো ১৮ থেকে ২০ এর নিচে নামেনি। তিনি হাঁটতে পারেন না। খেতে পারেন না। এখন তার ডায়াবেটিস ২০-এর নিচে নামছেই না। তিনি পা সোজা করতে পারছেন না। হাঁটতে তো পারেনই না।
হুইল চেয়ার ছাড়া তিনি চলতেই পারেন না। তাকে হুইল চেয়ারে করেই ওয়াস রুমে, শাওয়ার নিতে অথবা বিছানায় নিতে হয়। অথচ সরকারপ্রধান থেকে শুরু করে সরকারের লোকেরা বলে বেড়াচ্ছে, আমরা তার (খালেদা জিয়া) স্বাস্থ্য নিয়ে প্রতিদিন বলে বেড়াচ্ছি। তার স্বাস্থ্য নিয়ে তার পরিবার, আমরা, দেশবাসী সবাই চরম উদ্বিগ্ন।
ডা. জাহিদ আরো বলেন, তার এখন বয়স ৭৫। এই বয়সে তার যে শারীরিক অবস্থা, তা একজন চিকিৎসক হিসেবে আমাদের কাছে খুব ঝুঁকিপূর্ণ।
যেকোনো সময় অঘটন ঘটে যেতে পারে। পরিণতি মারাত্মক রূপ নিতে পারে। আমরা চিকিৎসক হিসেবে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে মারাত্মক উদ্বিগ্ন।
শক্তিশালী আন্দোলন ছাড়া শুধু আইনি প্রক্রিয়ার ওপর নির্ভর করে শিগগিরই খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করার কোনো আশা দেখছেন না বিএনপির সিনিয়র নেতা ও খালেদার আইনজীবীরা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, বিএনপি এবং এর নেতাকর্মীদের পুনরুজ্জীবিত করতে খালেদা জিয়াকে মুক্তির একক ইস্যুতে আন্দোলনের দিকে দলটির মনোনিবেশ করা উচিত।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, খালেদা জিয়া কারাগার থেকে বের হবেন এবং এ দেশের মানুষ তাকে বের করবে, সংগ্রামের মধ্যে দিয়েই বের করবে। আমরা বারবার এ সংকটে পড়েছি, বিপদে পড়েছি।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা অবস্থায় কক্ষের বাতি রাত সাড়ে ৯টা থেকে ১০টার মধ্যেই নিভে যেত। এরপর আদালতের নির্দেশে চিকিৎসা নিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেও ঠিক সময়মতো তাকে ঘুমিয়ে যেতে হচ্ছে।
অতীতে রাজনীতিতে মুক্ত সময়ে নানা কাজে ব্যস্ত থাকলেও এখন বন্দি অবস্থায় কারারক্ষীদের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে, চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে আর গৃহপরিচারিকা ফাতেমার সঙ্গে খুনসুঁটিতে কাটছে দিবা-নিশি।
তবে হাসপাতালে অধিকাংশ সময় চুপচাপই থাকেন খালেদা জিয়া। সময় কাটে ইবাদত-বন্দেগি আর বই ও পত্রিকা পড়ে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এবারই প্রথম কারাজীবন নয় খালেদা জিয়ার। এর আগে ১৯৮২ সালের ৩ জানুয়ারি রাজনীতিতে যোগ দেয়ার পর তিনি মোট চারবার গ্রেপ্তার হন।
এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় ১৯৮৩ সালের ২৮ নভেম্বর, ১৯৮৪ সালের ৩ মে, ১৯৮৭ সালের ১১ নভেম্বর তিনি গ্রেপ্তার হন।
তবে তখন তাকে বেশি দিন আটক থাকতে হয়নি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে ৩৭২ দিন জাতীয় সংসদ ভবন এলাকার স্থাপিত বিশেষ সাব জেলে এক বছরেরও বেশি সময় ছিলেন তিনি।
সর্বশেষ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিশেষ আদালতের রায়ে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড মাথায় নিয়ে কারাগারে ঢুকেন খালেদা জিয়া। ওই দিন থেকে পুরনো ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারে শুরু হয় তার কারাজীবন।
এরপর অসুস্থকার কারণে আদালতের নির্দেশে এখন রয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে। তার বিরুদ্ধে ৩৫ মামলার মধ্যে একটিতে জামিন হলে, অন্য মামলা সামনে আসছে। এভাবেই চলছে জামিনের সংগ্রাম।
সর্বশেষ গত সপ্তাহে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায়ও খালেদার জামিন আবেদন সরাসরি নাকচ হয়ে যায়। দলে জামিনের আশা সৃষ্টি হলেও তাও ফের বন্ধ হয়ে যায়।
তার দেখাশোনার জন্য প্রথম দিন থেকে স্বেচ্ছায় কারাগারে রয়েছেন গৃহপরিচারিকা ফাতেমা। এ নিয়ে শুরু থেকেই ছিলো বিতর্কও।
পরে খালেদা জিয়ার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত খালেদা জিয়াকে দেখাশোনার জন্য ফাতেমাকে কারাগারে রাখার নির্দেশ দেন।
সূত্র জানায়, কারাগারে খালেদা জিয়া শ্বাসকষ্ট, উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট, চোখ ও হাঁটুর সমস্যায় ভুগছেন। সেই সঙ্গে ডায়াবেটিসের কারণে তার চোখের সমস্যা হচ্ছে।
গত বছরের ৫ জুন কারাগারে মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। এমন অবস্থায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিশেষায়িত ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করাতে সরকারের কাছে একাধিকবার দাবিও জানায় বিএনপি। কিন্তু সে দাবি পূরণ হয়নি।
অন্যদিকে, ধীরে ধীরে খালেদা জিয়ার সঙ্গে পরিবার ও দলের নেতাদের দেখা পাওয়ার অনুমতি কমে আসে। বিএনপির অভিযোগ, বন্দিদের আইনসম্মত অধিকার থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন তিনি।
৫ সেপ্টেম্বর কারাগারের ভেতরে অস্থায়ী আদালতে হাজিরা দিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, আপনাদের যত দিন ইচ্ছা, যত ইচ্ছা সাজা দেন। আমি বারবার আদালতে আসতে পারব না। আমি অসুস্থ। আমি পা নাড়াতে পারি না। ডাক্তার আমাকে বিশ্রামে থাকতে বলেছেন।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার দেখভাল করা বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. এ জেড এম জাহিদ বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ডায়াবেটিস কখনো ১৮ থেকে ২০ এর নিচে নামেনি। তিনি হাঁটতে পারেন না। খেতে পারেন না। এখন তার ডায়াবেটিস ২০-এর নিচে নামছেই না। তিনি পা সোজা করতে পারছেন না। হাঁটতে তো পারেনই না।
হুইল চেয়ার ছাড়া তিনি চলতেই পারেন না। তাকে হুইল চেয়ারে করেই ওয়াস রুমে, শাওয়ার নিতে অথবা বিছানায় নিতে হয়। অথচ সরকারপ্রধান থেকে শুরু করে সরকারের লোকেরা বলে বেড়াচ্ছে, আমরা তার (খালেদা জিয়া) স্বাস্থ্য নিয়ে প্রতিদিন বলে বেড়াচ্ছি। তার স্বাস্থ্য নিয়ে তার পরিবার, আমরা, দেশবাসী সবাই চরম উদ্বিগ্ন।
ডা. জাহিদ আরো বলেন, তার এখন বয়স ৭৫। এই বয়সে তার যে শারীরিক অবস্থা, তা একজন চিকিৎসক হিসেবে আমাদের কাছে খুব ঝুঁকিপূর্ণ।
যেকোনো সময় অঘটন ঘটে যেতে পারে। পরিণতি মারাত্মক রূপ নিতে পারে। আমরা চিকিৎসক হিসেবে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে মারাত্মক উদ্বিগ্ন।
শক্তিশালী আন্দোলন ছাড়া শুধু আইনি প্রক্রিয়ার ওপর নির্ভর করে শিগগিরই খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করার কোনো আশা দেখছেন না বিএনপির সিনিয়র নেতা ও খালেদার আইনজীবীরা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, বিএনপি এবং এর নেতাকর্মীদের পুনরুজ্জীবিত করতে খালেদা জিয়াকে মুক্তির একক ইস্যুতে আন্দোলনের দিকে দলটির মনোনিবেশ করা উচিত।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, খালেদা জিয়া কারাগার থেকে বের হবেন এবং এ দেশের মানুষ তাকে বের করবে, সংগ্রামের মধ্যে দিয়েই বের করবে। আমরা বারবার এ সংকটে পড়েছি, বিপদে পড়েছি।
No comments