খায় দায় জব্বর মোটা হয় মনসুর by মাসুদা ভাট্টি
মাসুদা ভাট্টি: লেখক, সাংবাদিক |
পদ্মা
পার হয়ে যাদের ওপাড়ে যেতে হয় তাদের কাছে ফেরিঘাট এক ভয়ংকর অভিজ্ঞতা। যদিও
ফেরিঘাট নিয়ে অনেক গল্প-উপন্যাস লেখা হয়েছে, কিন্তু পারাপারকারী যাত্রীদের
কাছে এই অভিজ্ঞতা এতটাই চরম ও ভয়ংকর যে, প্রত্যেকেই স্বপ্ন দেখেন, একদিন এই
ভয়াবহতা থাকবে না, মাত্র ১০/১৫ মিনিটে গাড়িতে বসেই পদ্মা পার হওয়া যাবে।
এই ঘাটে প্রায়শই সাধারণ যাত্রীকে অপেক্ষায় থাকতে হয় ফেরীর, যদিও ফেরী ঘাটেই ভিড়ে রয়েছে দেখা যায় কিন্তু সমস্যা কী? কোনো একজন ক্ষমতাবান আসবেন, তার জন্য অপেক্ষা করছেন ফেরি-মহাশয়। এই সময় ফেরি-কর্তৃপক্ষ কোথায় যেন গায়েব হয়ে যান। আবার ঈদে-চান্দে যখন মানুষ বাড়ি ফেরে তখন এই ঘাটে যে বিশাল যানজট তৈরি হয় তার মধ্যেও দেখা যায় কারো কারো গাড়ি হুশ করে বেরিয়ে গিয়ে সোজা ফেরিতে উঠে যায়, এসব গাড়ি থেকে নেমে পরিবার-পরিজন নিয়ে ভিআইপি কেবিনে বসে চা-পানি খান তারা, ততক্ষণে বাইরে মারধর চলছে, কে আগে উঠবে, কীভাবে উঠবে।
মজার ব্যাপার হলো, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই খোঁজ নিয়ে জানা যায় যে, এই যারা ফেরী থামিয়ে রেখে কিংবা লাইনে না দাঁড়িয়ে ফেরীতে ওঠেন তাদের বেশিরভাগই সরকারী কর্মকর্তা, সেনা কর্মকর্তা এবং এমপি মহোদয়। মন্ত্রীদের জন্য ফেরী এমনিতেই নির্দিষ্ট থাকে আর আজকাল তো মন্ত্রীদের অনেকে হেলিকপ্টারে করে যাওয়া-আসা করেন।
যে সরকারী কর্মকর্তার জন্য ফেরীর অপেক্ষা করার কারণে এক আহত কিশোরের প্রাণ গেলো তাকে আসলে কোনো শাস্তির আওতায় আনা যাবে না, কারণ সরকারী কাজেই হয়ত তাকে ঢাকায় দ্রুত আসতে হবে এই মর্মে বয়ান দিয়ে তিনি বেঁচে যাবেন।
রাজনীতিবিদদের ক্ষেত্রে সামান্য অসুবিধে হয় কারণ তাদের ভোটের সময় হলেও জনগণের সামনে গিয়ে দাঁড়াতে হয়, ফলে তারা একেবারে ভয়হীন নন জনগণকে কষ্ট দেয়ার ক্ষেত্রে।
বাংলায় একটি প্রবাদ আছে, “খায় দায় জব্বর মোটা হয় মনসুর” -- এদেশের অবস্থাও অনেকটা তাই, প্রশাসনের কাছে রাষ্ট্রকে এত বেশি মূল্যে রাষ্ট্রটি ইজারা দেওয়া হয়েছে যে, এখন তার সবটুকু দায় শোধ করতে হচ্ছে জনগণকে। কখনও কখনও সে দায় জীবন দিয়েই শোধ করতে হয়।
এই ঘাটে প্রায়শই সাধারণ যাত্রীকে অপেক্ষায় থাকতে হয় ফেরীর, যদিও ফেরী ঘাটেই ভিড়ে রয়েছে দেখা যায় কিন্তু সমস্যা কী? কোনো একজন ক্ষমতাবান আসবেন, তার জন্য অপেক্ষা করছেন ফেরি-মহাশয়। এই সময় ফেরি-কর্তৃপক্ষ কোথায় যেন গায়েব হয়ে যান। আবার ঈদে-চান্দে যখন মানুষ বাড়ি ফেরে তখন এই ঘাটে যে বিশাল যানজট তৈরি হয় তার মধ্যেও দেখা যায় কারো কারো গাড়ি হুশ করে বেরিয়ে গিয়ে সোজা ফেরিতে উঠে যায়, এসব গাড়ি থেকে নেমে পরিবার-পরিজন নিয়ে ভিআইপি কেবিনে বসে চা-পানি খান তারা, ততক্ষণে বাইরে মারধর চলছে, কে আগে উঠবে, কীভাবে উঠবে।
মজার ব্যাপার হলো, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই খোঁজ নিয়ে জানা যায় যে, এই যারা ফেরী থামিয়ে রেখে কিংবা লাইনে না দাঁড়িয়ে ফেরীতে ওঠেন তাদের বেশিরভাগই সরকারী কর্মকর্তা, সেনা কর্মকর্তা এবং এমপি মহোদয়। মন্ত্রীদের জন্য ফেরী এমনিতেই নির্দিষ্ট থাকে আর আজকাল তো মন্ত্রীদের অনেকে হেলিকপ্টারে করে যাওয়া-আসা করেন।
যে সরকারী কর্মকর্তার জন্য ফেরীর অপেক্ষা করার কারণে এক আহত কিশোরের প্রাণ গেলো তাকে আসলে কোনো শাস্তির আওতায় আনা যাবে না, কারণ সরকারী কাজেই হয়ত তাকে ঢাকায় দ্রুত আসতে হবে এই মর্মে বয়ান দিয়ে তিনি বেঁচে যাবেন।
রাজনীতিবিদদের ক্ষেত্রে সামান্য অসুবিধে হয় কারণ তাদের ভোটের সময় হলেও জনগণের সামনে গিয়ে দাঁড়াতে হয়, ফলে তারা একেবারে ভয়হীন নন জনগণকে কষ্ট দেয়ার ক্ষেত্রে।
বাংলায় একটি প্রবাদ আছে, “খায় দায় জব্বর মোটা হয় মনসুর” -- এদেশের অবস্থাও অনেকটা তাই, প্রশাসনের কাছে রাষ্ট্রকে এত বেশি মূল্যে রাষ্ট্রটি ইজারা দেওয়া হয়েছে যে, এখন তার সবটুকু দায় শোধ করতে হচ্ছে জনগণকে। কখনও কখনও সে দায় জীবন দিয়েই শোধ করতে হয়।
>>>মাসুদা ভাট্টি: লেখক, সাংবাদিক।
>>লেখাটি ফেসবুক থেকে নেয়া, এর মতামত ও ভাষা লেখকের নিজস্ব।
>>লেখাটি ফেসবুক থেকে নেয়া, এর মতামত ও ভাষা লেখকের নিজস্ব।
No comments