খালেদার প্যারোল নিয়ে গুঞ্জন
প্যারোলে
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারামুক্তি নিয়ে গুঞ্জন চলছে রাজনৈতিক
মহলে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায় ঘোষণার পর থেকে দীর্ঘ ১৪ মাস ধরে
কারাভোগ করছেন তিনি। কারাগারে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে সম্প্রতি
তাকে স্থানান্তর করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়
হাসপাতালে। বর্তমানে তিনি হাসপাতালের কেবিন ব্লকের ৬২১ নম্বর কেবিনে
চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
২০১৮ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি কারাগারে পাঠানোর দুই সপ্তাহ পর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন খালেদা জিয়া। বিএনপি নেতাদের অব্যাহত দাবির মুখে দুইমাস পর ৮ই ফেব্রুয়ারি তাকে একবার বিএসএমএমইউতে এনে কিছু শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ফের ফিরিয়ে নেয়া হয় কারাগারে। সেখানে তার শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হলে তাকে একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তি করে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের মতামত নিয়ে সুচিকিৎসার দাবি জানায় বিএনপি। সরকার তার চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড করলেও তাকে বিএসএমএমইউতে চিকিৎসার প্রস্তাব দেয়া হয়।
কিন্তু বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার দাবিতে অটল থাকেন খালেদা জিয়া। অন্যদিকে সরকারও অটল থাকে নিজেদের অবস্থানে। শেষে তার শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হলে আদালতের নির্দেশে তাকে সেপ্টেম্বর মাসে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করে দুইমাস চিকিৎসা দেয়া হয়। সে সময় বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়া প্যারোলে মুক্তি পাচ্ছেন এমন একটি গুঞ্জন তৈরি হয়েছিল রাজনৈতিক মহলে। ২০১৮ সালের ৪ঠা নভেম্বর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ‘বিএনপি চাইলে বিদেশে চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।’
কিন্তু প্যারোলে মুক্তির ব্যাপারে খালেদা জিয়া ও তার দল বিএনপি ন্যূনতম আগ্রহ প্রকাশ না করায় সে গুঞ্জন একপর্যায়ে স্তিমিত হয়ে যায়। এদিকে জাতীয় নির্বাচনের হতাশাজনক পরিস্থিতির পর তার প্যারোলে মুক্তির বিষয়টি ফের আলোচনায় আসে। বিশেষ করে খালেদা জিয়া কারাগারে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার পর তাকে বিএসএমএমইউতে স্থানান্তর করা হলে আবারও জোরালো হাওয়া পেয়েছে সে গুঞ্জন। রাজনৈতিক মহলে আলোচনা হচ্ছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে খালেদা জিয়ার রাজি হওয়ার বিষয়টি মূলত উন্নত চিকিৎসার জন্য প্যারোলে মুক্তি নিয়ে তার বিদেশে যাওয়ার প্রথম পদক্ষেপ। তবে বিষয়টিকে উড়িয়ে দিয়েছে বিএনপি। উল্টো খালেদা জিয়াকে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর ট্রানজিট হিসাবে সরকার বিএসএমএমইউকে ব্যবহার করছে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দলটির নেতারা। বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেছেন, ‘দীর্ঘদিন কারাগারে থেকে অসুস্থ হয়ে পড়া বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য প্যারোলের প্রস্তাব কেউ দেয়নি।
চেয়ারপারসন নিজে কিংবা তার পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ এ ধরনের প্রস্তাব দেননি।’ গতকাল বুধবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির শহীদ সফিউর রহমান মিলনায়তনে সুপ্রিম কোর্ট বারের বর্তমান কমিটির বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘প্যারোলে মুক্তির বিষয়টি পত্রপত্রিকা থেকে আমরা জেনেছি। সরকারের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে প্রস্তাব দেয়া হয়নি।’ খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে সরকারের সদিচ্ছা নেই অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন কারাগারে থেকে অসুস্থ হয়ে পড়া বিএনপি চেয়ারপারসনের মুক্তিতে সরকারের সদিচ্ছা নেই। রাজনৈতিক মামলা দিয়ে তাকে দীর্ঘদিন ধরে কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে। দিন দিন মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে।’ এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেলের ভূমিকা নিয়েও সমালোচনা করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন বলেন, ‘খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে দৃষ্টি ভিন্ন দিকে নিতে প্যারোলে মুক্তির ইস্যুটি একটা কৌশল হতে পারে। এ সময় সরকারের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করে খালেদা জিয়াকে কেরানীগঞ্জ কারাগারে নেয়ার ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
জাতীয় নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বৈরী পরিস্থিতি মোকাবিলা, হতাশাজনক ফলাফল, ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তা ও কারাগারে খালেদা জিয়ার শারীরিক পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতির প্রেক্ষিতে তার প্যারোলে মুক্তির গুঞ্জনটি উড়িয়ে দিচ্ছেন না রাজনৈতিক মহল। তারা এ ব্যাপারে নানারকম যুক্তিও দাঁড় করাচ্ছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তি নিয়ে রাজনৈতিক মাঠে চলছে নানা তৎপরতা। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এ নিয়ে পর্দার আড়ালে সরকার ও বিএনপি’র মধ্যে সমঝোতার চেষ্টাও চলছে। খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে প্যারোলে মুক্তির আবেদন করলেই বিষয়টি যত দ্রুত সম্ভব চূড়ান্ত হবে। মুক্তি পেলে সৌদি আরব ও যুক্ত্যরাজ্যে চিকিৎসা নিতে পারেন খালেদা জিয়া। কারণ এর আগেও কয়েক দফা দেশ দু’টিতে চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি। রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন চলছে, সরকারের দিক থেকেই প্যারোলের বিষয়টি আনা হচ্ছে আলোচনায়। নানারকম যুক্তি দেখিয়ে এ ব্যাপারে একটি ভিত্তি দাঁড় ও প্রচারণা চালানো হচ্ছে কৌশলে।
অন্যদিকে স্বাভাবিকভাবে আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়ার জামিন ও কারামুক্তির দাবি বিএনপি’র। খালেদা জিয়া নিজেই স্বাভাবিক আইনি প্রক্রিয়ায় জামিনে মুক্তি চান। কিন্তু এ ব্যাপারে সরকারের তরফে ন্যূনতম ইতিবাচক সাড়া নেই। এমন পরিস্থিতিতে খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির বিষয়টির পাশাপাশি বিএনপি দলীয় ৬ এমপি’র শপথগ্রহণ নিয়েও গুঞ্জন চলছে। যদিও দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করার বিষয়টি দলের গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডা হিসেবে বিবেচিত হলেও তারা সেটা জামিনে মুক্তির মাধ্যমেই চাইছেন। বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেছেন, তিনি একবার খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির কথাটা তুলেছিলেন।
তখন বিএনপি হাইকমান্ড সেটাকে সহজভাবে নেয়নি। তারা মনে করেছিলেন এটা বিএনপি’র রাজনীতিতে পরাজয় হবে। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে খালেদা জিয়াকে আইনি প্রক্রিয়ায় জামিনে মুক্তি দেয়া হলে বিএনপি দলীয় ৬ এমপি শপথ নিতে পারেন। এ রকমই একটি সমঝোতার পথেই হাঁটছে সরকার ও বিএনপি। দলটির নেতারা মনে করেন, আইনি প্রক্রিয়ায় চেয়ারপারসনের মুক্তি আরও বিলম্ব হতে পারে। আইনি প্রক্রিয়ায় তার মুক্তির অনিশ্চয়তা নিয়ে দলটির সিনিয়র নেতারাই বক্তব্য দিয়ে আসছেন কয়েকমাস ধরে। এছাড়া বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় আইনি প্রক্রিয়া ও রাজপথের কঠোর কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারকে চাপে ফেলে চেয়ারপারসনকে মুক্ত করা কঠিন। এমন বিলম্বে তাঁর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতির আশঙ্কা রয়েছে। তাই যে কোনো মূল্যে চেয়ারপারসনের সুচিকিৎসার পথ বের করতে চান তারা।
এর অংশ হিসেবে নেপথ্যে সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে। বিএনপি’র ছোট একটি প্রতিনিধি দল এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টা ও সরকারের একজন প্রভাবশালী মন্ত্রীর সঙ্গেও কয়েকদফা অনানুষ্ঠানিক বৈঠকও করেছেন। সেখানে সরকারের তরফে পূর্বশর্ত হিসেবে সামনে এসেছে বিএনপি’র নির্বাচিত এমপিদের সংসদে যেতে হবে। তবে এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বিএনপি। সংসদে যাওয়াসহ সমঝোতার পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে চেয়ারপারসনের সিদ্ধান্তের ওপর। বিএনপি নেতারা জানান, প্যারোলের ব্যাপারে খালেদা জিয়া এখন পর্যন্ত ন্যূনতম আগ্রহ প্রকাশ করেননি। বরং এ বিষয়ে তিনি বিরক্তিও প্রকাশ করেছেন। ওয়ান- ইলেভেন সরকারের আমলে কারাগারে তার কাছে বিদেশে যাওয়ার শর্তে প্যারোলে মুক্তির প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি সেটা গ্রহণ করেননি। কেবল মায়ের মৃত্যুর পর শেষ দেখা দেখতে কয়েক ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি নিয়েছিলেন তিনি। এবারও প্যারোলের ব্যাপারে আগ্রহ নেই তার। কিন্তু রাজনৈতিক মহলের মতে, এবার খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা গুরুতর। পরিস্থিতিই পাল্টে দিতে পারে বিএনপি’র অবস্থান।
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন জামিনে মুক্তি পেতে হলে খালেদা জিয়াকে অন্তত চারটি মামলায় জামিন নিতে হবে। এর মধ্যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা ছাড়া বাকি মামলা দু’টি ধর্মীয় উসকানি ও মানহানির। প্রথম দুই মামলায় সাজা হয়েছে তার। পরের দুই মামলায় সমপ্রতি তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। এছাড়া খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সব মিলিয়ে মামলা রয়েছে ৩৬টি। ফলে সরকারের সঙ্গে সমঝোতা ছাড়া আইনি প্রক্রিয়ায় তার মুক্তির বিষয়টি কঠিন। আর প্যারোলে মুক্তির বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার। ফলে এখানে আইনের চেয়ে সরকারের ইচ্ছা-অনিচ্ছার বিষয়টিই প্রধান। সরকার ইচ্ছা করলে কাউকে অনির্দিষ্টকালের জন্য প্যারোলে মুক্তি দিতে পারে।
এদিকে নির্বাচনী পরিবেশ ও ভোট জালিয়াতির অভিযোগ তুলে জোটের ৮ এমপি’র শপথ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। কিন্তু সে সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে প্রথমেই শপথ নেন গণফোরাম মনোনীত প্রার্থী সুলতান মোহাম্মদ মনসুর। এ বিষয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় বিএনপি’র তৃণমূলে। বিষয়টি গণফোরামও দৃশ্যত ভালোভাবে নেয়নি। সুলতান মনসুরকে বহিষ্কার করে গণফোরাম। তখন তিনি বলেছিলেন, আগামীতে অন্যরাও শপথ নেবেন। তিন মাস সময় নিয়ে সম্প্রতি স্থানীয় পর্যায়ে ভোটারদের একটি সভার সিদ্ধান্তের দোহাই দিয়ে শপথ নেন গণফোরাম মনোনীত আরেক প্রার্থী মোকাব্বির খান। তার শপথ নিয়েও ব্যাপক নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে বিএনপি’র তৃণমূলে। বিএনপি ও গণফোরামের নেতৃত্ব পর্যায়েও কিছুটা অবকাশ তৈরি হয়েছে বিশ্বাস-অবিশ্বাসের। কারণ সুলতান মনসুরকে বহিষ্কার করার পাশাপাশি তার সদস্যপদ বাতিলের অনুরোধ জানিয়ে স্পিকার ও সিইসিকে চিঠি দেয়ার কথা ছিল গণফোরামের। কিন্তু দিচ্ছি, দেবো করে সে চিঠি এখনও দেয়া হয়নি।
তার উপর দলটির আরেক নেতা মোকাব্বির খান শপথ নিয়েছেন। গণফোরাম মনোনীত দুই এমপি’র শপথ শেষে এখন গুঞ্জন তৈরি হয়েছে বিএনপি’র ৬ নেতার শপথ নিয়ে। রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন চলছে, বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা শপথ নেবেন বলেই সুলমান মনসুরের সদস্যপদ বাতিল চেয়ে চিঠি দেয়া হয়নি। মূলত রাজনৈতিক সমঝোতার অংশ হিসেবে ‘ধীরে চলো নীতি’ অবলম্বন করছেন বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এ কারণে কোনো কঠোর রাজনৈতিক কর্মসূচিও নেই তাদের। যদিও প্রকাশ্যে এ ব্যাপারে পরিষ্কার নেতিবাচক অবস্থান রয়েছে বিএনপি’র। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সরকার ও বিএনপি’র মধ্যে এক ধরনের ছাড় দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। সেটা ইতিবাচক পথে এগোলে এমপি হিসেবে শপথ নেবেন বিএনপি নেতারা। অন্যদিকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য জামিনে মুক্তি পাবেন খালেদা জিয়া। এদিকে দলীয় চেয়ারপারসনের মুক্তি ও চিকিৎসার ব্যাপারে তৃণমূল নেতাকর্মীদের চাপ রয়েছে নীতি-নির্ধারকদের ওপর। ফলে খালেদা জিয়ার জীবন বাঁচানোর যুক্তিতে বড় করে দেখিয়ে সংসদে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে বিএনপি। তবে সবকিছুই নির্ভর করছে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ওপর।
২০১৮ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি কারাগারে পাঠানোর দুই সপ্তাহ পর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন খালেদা জিয়া। বিএনপি নেতাদের অব্যাহত দাবির মুখে দুইমাস পর ৮ই ফেব্রুয়ারি তাকে একবার বিএসএমএমইউতে এনে কিছু শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ফের ফিরিয়ে নেয়া হয় কারাগারে। সেখানে তার শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হলে তাকে একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তি করে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের মতামত নিয়ে সুচিকিৎসার দাবি জানায় বিএনপি। সরকার তার চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড করলেও তাকে বিএসএমএমইউতে চিকিৎসার প্রস্তাব দেয়া হয়।
কিন্তু বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার দাবিতে অটল থাকেন খালেদা জিয়া। অন্যদিকে সরকারও অটল থাকে নিজেদের অবস্থানে। শেষে তার শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হলে আদালতের নির্দেশে তাকে সেপ্টেম্বর মাসে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করে দুইমাস চিকিৎসা দেয়া হয়। সে সময় বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়া প্যারোলে মুক্তি পাচ্ছেন এমন একটি গুঞ্জন তৈরি হয়েছিল রাজনৈতিক মহলে। ২০১৮ সালের ৪ঠা নভেম্বর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ‘বিএনপি চাইলে বিদেশে চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।’
কিন্তু প্যারোলে মুক্তির ব্যাপারে খালেদা জিয়া ও তার দল বিএনপি ন্যূনতম আগ্রহ প্রকাশ না করায় সে গুঞ্জন একপর্যায়ে স্তিমিত হয়ে যায়। এদিকে জাতীয় নির্বাচনের হতাশাজনক পরিস্থিতির পর তার প্যারোলে মুক্তির বিষয়টি ফের আলোচনায় আসে। বিশেষ করে খালেদা জিয়া কারাগারে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার পর তাকে বিএসএমএমইউতে স্থানান্তর করা হলে আবারও জোরালো হাওয়া পেয়েছে সে গুঞ্জন। রাজনৈতিক মহলে আলোচনা হচ্ছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে খালেদা জিয়ার রাজি হওয়ার বিষয়টি মূলত উন্নত চিকিৎসার জন্য প্যারোলে মুক্তি নিয়ে তার বিদেশে যাওয়ার প্রথম পদক্ষেপ। তবে বিষয়টিকে উড়িয়ে দিয়েছে বিএনপি। উল্টো খালেদা জিয়াকে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর ট্রানজিট হিসাবে সরকার বিএসএমএমইউকে ব্যবহার করছে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দলটির নেতারা। বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেছেন, ‘দীর্ঘদিন কারাগারে থেকে অসুস্থ হয়ে পড়া বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য প্যারোলের প্রস্তাব কেউ দেয়নি।
চেয়ারপারসন নিজে কিংবা তার পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ এ ধরনের প্রস্তাব দেননি।’ গতকাল বুধবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির শহীদ সফিউর রহমান মিলনায়তনে সুপ্রিম কোর্ট বারের বর্তমান কমিটির বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘প্যারোলে মুক্তির বিষয়টি পত্রপত্রিকা থেকে আমরা জেনেছি। সরকারের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে প্রস্তাব দেয়া হয়নি।’ খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে সরকারের সদিচ্ছা নেই অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন কারাগারে থেকে অসুস্থ হয়ে পড়া বিএনপি চেয়ারপারসনের মুক্তিতে সরকারের সদিচ্ছা নেই। রাজনৈতিক মামলা দিয়ে তাকে দীর্ঘদিন ধরে কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে। দিন দিন মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে।’ এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেলের ভূমিকা নিয়েও সমালোচনা করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন বলেন, ‘খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে দৃষ্টি ভিন্ন দিকে নিতে প্যারোলে মুক্তির ইস্যুটি একটা কৌশল হতে পারে। এ সময় সরকারের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করে খালেদা জিয়াকে কেরানীগঞ্জ কারাগারে নেয়ার ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
জাতীয় নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বৈরী পরিস্থিতি মোকাবিলা, হতাশাজনক ফলাফল, ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তা ও কারাগারে খালেদা জিয়ার শারীরিক পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতির প্রেক্ষিতে তার প্যারোলে মুক্তির গুঞ্জনটি উড়িয়ে দিচ্ছেন না রাজনৈতিক মহল। তারা এ ব্যাপারে নানারকম যুক্তিও দাঁড় করাচ্ছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তি নিয়ে রাজনৈতিক মাঠে চলছে নানা তৎপরতা। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এ নিয়ে পর্দার আড়ালে সরকার ও বিএনপি’র মধ্যে সমঝোতার চেষ্টাও চলছে। খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে প্যারোলে মুক্তির আবেদন করলেই বিষয়টি যত দ্রুত সম্ভব চূড়ান্ত হবে। মুক্তি পেলে সৌদি আরব ও যুক্ত্যরাজ্যে চিকিৎসা নিতে পারেন খালেদা জিয়া। কারণ এর আগেও কয়েক দফা দেশ দু’টিতে চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি। রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন চলছে, সরকারের দিক থেকেই প্যারোলের বিষয়টি আনা হচ্ছে আলোচনায়। নানারকম যুক্তি দেখিয়ে এ ব্যাপারে একটি ভিত্তি দাঁড় ও প্রচারণা চালানো হচ্ছে কৌশলে।
অন্যদিকে স্বাভাবিকভাবে আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়ার জামিন ও কারামুক্তির দাবি বিএনপি’র। খালেদা জিয়া নিজেই স্বাভাবিক আইনি প্রক্রিয়ায় জামিনে মুক্তি চান। কিন্তু এ ব্যাপারে সরকারের তরফে ন্যূনতম ইতিবাচক সাড়া নেই। এমন পরিস্থিতিতে খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির বিষয়টির পাশাপাশি বিএনপি দলীয় ৬ এমপি’র শপথগ্রহণ নিয়েও গুঞ্জন চলছে। যদিও দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করার বিষয়টি দলের গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডা হিসেবে বিবেচিত হলেও তারা সেটা জামিনে মুক্তির মাধ্যমেই চাইছেন। বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেছেন, তিনি একবার খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির কথাটা তুলেছিলেন।
তখন বিএনপি হাইকমান্ড সেটাকে সহজভাবে নেয়নি। তারা মনে করেছিলেন এটা বিএনপি’র রাজনীতিতে পরাজয় হবে। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে খালেদা জিয়াকে আইনি প্রক্রিয়ায় জামিনে মুক্তি দেয়া হলে বিএনপি দলীয় ৬ এমপি শপথ নিতে পারেন। এ রকমই একটি সমঝোতার পথেই হাঁটছে সরকার ও বিএনপি। দলটির নেতারা মনে করেন, আইনি প্রক্রিয়ায় চেয়ারপারসনের মুক্তি আরও বিলম্ব হতে পারে। আইনি প্রক্রিয়ায় তার মুক্তির অনিশ্চয়তা নিয়ে দলটির সিনিয়র নেতারাই বক্তব্য দিয়ে আসছেন কয়েকমাস ধরে। এছাড়া বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় আইনি প্রক্রিয়া ও রাজপথের কঠোর কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারকে চাপে ফেলে চেয়ারপারসনকে মুক্ত করা কঠিন। এমন বিলম্বে তাঁর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতির আশঙ্কা রয়েছে। তাই যে কোনো মূল্যে চেয়ারপারসনের সুচিকিৎসার পথ বের করতে চান তারা।
এর অংশ হিসেবে নেপথ্যে সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে। বিএনপি’র ছোট একটি প্রতিনিধি দল এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টা ও সরকারের একজন প্রভাবশালী মন্ত্রীর সঙ্গেও কয়েকদফা অনানুষ্ঠানিক বৈঠকও করেছেন। সেখানে সরকারের তরফে পূর্বশর্ত হিসেবে সামনে এসেছে বিএনপি’র নির্বাচিত এমপিদের সংসদে যেতে হবে। তবে এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বিএনপি। সংসদে যাওয়াসহ সমঝোতার পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে চেয়ারপারসনের সিদ্ধান্তের ওপর। বিএনপি নেতারা জানান, প্যারোলের ব্যাপারে খালেদা জিয়া এখন পর্যন্ত ন্যূনতম আগ্রহ প্রকাশ করেননি। বরং এ বিষয়ে তিনি বিরক্তিও প্রকাশ করেছেন। ওয়ান- ইলেভেন সরকারের আমলে কারাগারে তার কাছে বিদেশে যাওয়ার শর্তে প্যারোলে মুক্তির প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি সেটা গ্রহণ করেননি। কেবল মায়ের মৃত্যুর পর শেষ দেখা দেখতে কয়েক ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি নিয়েছিলেন তিনি। এবারও প্যারোলের ব্যাপারে আগ্রহ নেই তার। কিন্তু রাজনৈতিক মহলের মতে, এবার খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা গুরুতর। পরিস্থিতিই পাল্টে দিতে পারে বিএনপি’র অবস্থান।
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন জামিনে মুক্তি পেতে হলে খালেদা জিয়াকে অন্তত চারটি মামলায় জামিন নিতে হবে। এর মধ্যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা ছাড়া বাকি মামলা দু’টি ধর্মীয় উসকানি ও মানহানির। প্রথম দুই মামলায় সাজা হয়েছে তার। পরের দুই মামলায় সমপ্রতি তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। এছাড়া খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সব মিলিয়ে মামলা রয়েছে ৩৬টি। ফলে সরকারের সঙ্গে সমঝোতা ছাড়া আইনি প্রক্রিয়ায় তার মুক্তির বিষয়টি কঠিন। আর প্যারোলে মুক্তির বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার। ফলে এখানে আইনের চেয়ে সরকারের ইচ্ছা-অনিচ্ছার বিষয়টিই প্রধান। সরকার ইচ্ছা করলে কাউকে অনির্দিষ্টকালের জন্য প্যারোলে মুক্তি দিতে পারে।
এদিকে নির্বাচনী পরিবেশ ও ভোট জালিয়াতির অভিযোগ তুলে জোটের ৮ এমপি’র শপথ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। কিন্তু সে সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে প্রথমেই শপথ নেন গণফোরাম মনোনীত প্রার্থী সুলতান মোহাম্মদ মনসুর। এ বিষয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় বিএনপি’র তৃণমূলে। বিষয়টি গণফোরামও দৃশ্যত ভালোভাবে নেয়নি। সুলতান মনসুরকে বহিষ্কার করে গণফোরাম। তখন তিনি বলেছিলেন, আগামীতে অন্যরাও শপথ নেবেন। তিন মাস সময় নিয়ে সম্প্রতি স্থানীয় পর্যায়ে ভোটারদের একটি সভার সিদ্ধান্তের দোহাই দিয়ে শপথ নেন গণফোরাম মনোনীত আরেক প্রার্থী মোকাব্বির খান। তার শপথ নিয়েও ব্যাপক নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে বিএনপি’র তৃণমূলে। বিএনপি ও গণফোরামের নেতৃত্ব পর্যায়েও কিছুটা অবকাশ তৈরি হয়েছে বিশ্বাস-অবিশ্বাসের। কারণ সুলতান মনসুরকে বহিষ্কার করার পাশাপাশি তার সদস্যপদ বাতিলের অনুরোধ জানিয়ে স্পিকার ও সিইসিকে চিঠি দেয়ার কথা ছিল গণফোরামের। কিন্তু দিচ্ছি, দেবো করে সে চিঠি এখনও দেয়া হয়নি।
তার উপর দলটির আরেক নেতা মোকাব্বির খান শপথ নিয়েছেন। গণফোরাম মনোনীত দুই এমপি’র শপথ শেষে এখন গুঞ্জন তৈরি হয়েছে বিএনপি’র ৬ নেতার শপথ নিয়ে। রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন চলছে, বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা শপথ নেবেন বলেই সুলমান মনসুরের সদস্যপদ বাতিল চেয়ে চিঠি দেয়া হয়নি। মূলত রাজনৈতিক সমঝোতার অংশ হিসেবে ‘ধীরে চলো নীতি’ অবলম্বন করছেন বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এ কারণে কোনো কঠোর রাজনৈতিক কর্মসূচিও নেই তাদের। যদিও প্রকাশ্যে এ ব্যাপারে পরিষ্কার নেতিবাচক অবস্থান রয়েছে বিএনপি’র। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সরকার ও বিএনপি’র মধ্যে এক ধরনের ছাড় দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। সেটা ইতিবাচক পথে এগোলে এমপি হিসেবে শপথ নেবেন বিএনপি নেতারা। অন্যদিকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য জামিনে মুক্তি পাবেন খালেদা জিয়া। এদিকে দলীয় চেয়ারপারসনের মুক্তি ও চিকিৎসার ব্যাপারে তৃণমূল নেতাকর্মীদের চাপ রয়েছে নীতি-নির্ধারকদের ওপর। ফলে খালেদা জিয়ার জীবন বাঁচানোর যুক্তিতে বড় করে দেখিয়ে সংসদে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে বিএনপি। তবে সবকিছুই নির্ভর করছে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ওপর।
No comments