উত্তর কলকাতায় জোর লড়াই হবে by অমর সাহা
ভারতের
লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি আসনের মধ্যে ২টি আসন খুবই
গুরুত্বপূর্ণ। একটি কলকাতা উত্তর, অন্যটি কলকাতা দক্ষিণ। এই দুই আসনের
মধ্যে উত্তর কলকাতায় জোর লড়াইয়ের আভাস মিলছে।
তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাস দক্ষিণ কলকাতায়। রাজ্য কংগ্রেসের সভাপতি সোমেন মিত্র ও বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসুর বাস উত্তর কলকাতায়।
কংগ্রেস, বিজেপি, সিপিএম, সিপিআই, ফরোয়ার্ড ব্লক, আরএসপি, এসইউসিআইসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের দপ্তর উত্তর কলকাতায়।
গুরুত্বপূর্ণ শিয়ালদহ, বড় বাজার, ধর্মতলার অবস্থান উত্তর কলকাতায়। কবিগুরুর জন্মভিটে জোড়াসাঁকো উত্তর কলকাতায়। এখানে রয়েছে অধিকাংশ হাসপাতাল, বাজারঘাট। ফলে দক্ষিণ কলকাতার চেয়ে এখনো গুরুত্ব বেশি উত্তর কলকাতার।
উত্তর কলকাতা আসনে ভোট হচ্ছে একবারে শেষ বা সপ্তম দফায় ১৯ মে। লোকসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এখানে জোর লড়াই শুরু হয়েছে। প্রার্থীও রয়েছেন ওজনদাররা।
আসনটিতে তৃণমূলের প্রার্থী সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি তৃণমূলের একনিষ্ঠ নেতা। আগে কংগ্রেস করতেন। তৃণমূলের জন্মের পর তৃণমূল করেন। তিনি তিনবার সাংসদ হয়েছেন। চারবার বিধায়ক হয়েছেন। এবার চতুর্থবারের জন্য নির্বাচন করছেন।
স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতা হলেও সুদীপ আটকে গেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের চাঞ্চল্যকর ১৭ হাজার কোটি রুপির রোজভ্যালি আর্থিক দুর্নীতি মামলায়। এই মামলার জেরে ২০১৭ সালে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআই তাঁকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় ওডিশার রাজধানী ভূবনেশ্বরে। সেখানের তাঁকে কারাগারে থাকতে হয় বেশ কিছুদিন। একই বছরের মে মাসে ওডিশা হাইকোর্ট সুদীপের শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে তাঁকে জমিনে মুক্তি দেন। সুদীপের স্ত্রী নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়ও তৃণমূলের বিধায়ক। তিনি একসময় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী ছিলেন।
কলকাতা উত্তরে তৃণমূলের সুদীপের বিরুদ্ধে ভোটযুদ্ধে নেমেছেন বিজেপির রাহুল সিনহা। তিনিও বড় মাপের যোদ্ধা। রাহুল সিনহা ছয় বছর ছিলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি। ২০১৫ সালে হয়েছেন বিজেপির জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক।
২০১৪ সালের নির্বাচনে রাহুল সিনহা একই আসনে লড়ে যথেষ্ট বেগ দিয়েছিলেন তৃণমূলের সুদীপকে। সুদীপ সেদিন বুঝেছিলেন, রাহুল সিনহার শক্তি উত্তর কলকাতায় একবারেই কম নয়। গত নির্বাচনে সুদীপ পেয়েছিলেন ৩ লাখ ৪৩ হাজার ৬৮৭ ভোট। আর রাহুল সিনহা পেয়েছিলেন ২ লাখ ৪৭ হাজার ৪৬১ ভোট। সিপিএম প্রার্থী রূপা বাগচি পেয়েছিলেন ১ লাখ ৯৬ হাজার ৫৩টি ভোট। কংগ্রেসের প্রার্থী বর্তমান রাজ্য সভাপতি সোমেন মিত্র পেয়েছিলেন ১ লাখ ৩০ হাজার ৭৮৩ ভোট।
এবার অবশ্য এই আসনে বামফ্রন্ট প্রার্থী করেছে সিপিএমের নারী নেত্রী কনীনিকা ঘোষকে। পেশায় স্কুলশিক্ষিকা এই নারী নেত্রী ইতিমধ্যে ভোটের মাঠে নেমে পড়েছেন। তিনি মনে করেন, এবার আর মানুষ অতটা ঝুঁকবেন না বিজেপি বা তৃণমূলের দিকে। ফলে ত্রিমুখী লড়াইয়ে তাঁর জয়ের পথ খুলে যেতে পারে।
তবে এই যুক্তি মানছেন না বিজেপির প্রার্থী রাহুল সিনহা। তিনি এবার দারুণ আশাবাদী। বলেছেন, মানুষ ভোট দিতে পারলে এবার তাঁর জয় আর আটকে রাখা যাবে না। মানুষ দেখেছে তৃণমূলের শাসন, দুর্নীতি। দুর্নীতির মামলায় জড়ানোর ঘটনা। সুতরাং অবাধ নির্বাচন হলে তিনিই এবার জিতবেন।
উত্তর কলকাতায় প্রচুর অবাঙালি মানুষের বাস। তাঁরা সাধারণত বিজেপির দিকে ঝুঁকে থাকে। ভোটের বাজারে তাই বাড়তি সুযোগ পেতে পারে বিজেপি।
সুদীপ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, রাজ্যে নেতা বলতে এখনো মমতাই। তাঁর উন্নয়নের জোয়ারে ভেসে গেছে রাজ্য। তাই কলকাতাবাসী এবারও তাঁকে বিপুল ভোটে জয়ী করবেন।
উত্তর কলকাতার এই আসন নিয়ে জোর লড়াই শুরু হয়েছে। কংগ্রেস এখনো এই আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি। ঘোষণা করলে এবার এই আসনে চতুর্মুখী লড়াই হবে। কারণ, এখনো কলকাতায় বহু কংগ্রেস সমর্থক রয়েছেন। তাঁরা নিশ্চয়ই কংগ্রেসকে বিমুখ করবে না।
সব মিলিয়ে বলতে হয়, উত্তর কলকাতায় ভোটের মহারণ শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু কে জিতবে, তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে ২৩ মে পর্যন্ত। ওই দিনই বের হবে ফলাফল।
তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাস দক্ষিণ কলকাতায়। রাজ্য কংগ্রেসের সভাপতি সোমেন মিত্র ও বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসুর বাস উত্তর কলকাতায়।
কংগ্রেস, বিজেপি, সিপিএম, সিপিআই, ফরোয়ার্ড ব্লক, আরএসপি, এসইউসিআইসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের দপ্তর উত্তর কলকাতায়।
গুরুত্বপূর্ণ শিয়ালদহ, বড় বাজার, ধর্মতলার অবস্থান উত্তর কলকাতায়। কবিগুরুর জন্মভিটে জোড়াসাঁকো উত্তর কলকাতায়। এখানে রয়েছে অধিকাংশ হাসপাতাল, বাজারঘাট। ফলে দক্ষিণ কলকাতার চেয়ে এখনো গুরুত্ব বেশি উত্তর কলকাতার।
উত্তর কলকাতা আসনে ভোট হচ্ছে একবারে শেষ বা সপ্তম দফায় ১৯ মে। লোকসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এখানে জোর লড়াই শুরু হয়েছে। প্রার্থীও রয়েছেন ওজনদাররা।
আসনটিতে তৃণমূলের প্রার্থী সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি তৃণমূলের একনিষ্ঠ নেতা। আগে কংগ্রেস করতেন। তৃণমূলের জন্মের পর তৃণমূল করেন। তিনি তিনবার সাংসদ হয়েছেন। চারবার বিধায়ক হয়েছেন। এবার চতুর্থবারের জন্য নির্বাচন করছেন।
স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতা হলেও সুদীপ আটকে গেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের চাঞ্চল্যকর ১৭ হাজার কোটি রুপির রোজভ্যালি আর্থিক দুর্নীতি মামলায়। এই মামলার জেরে ২০১৭ সালে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআই তাঁকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় ওডিশার রাজধানী ভূবনেশ্বরে। সেখানের তাঁকে কারাগারে থাকতে হয় বেশ কিছুদিন। একই বছরের মে মাসে ওডিশা হাইকোর্ট সুদীপের শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে তাঁকে জমিনে মুক্তি দেন। সুদীপের স্ত্রী নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়ও তৃণমূলের বিধায়ক। তিনি একসময় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী ছিলেন।
কলকাতা উত্তরে তৃণমূলের সুদীপের বিরুদ্ধে ভোটযুদ্ধে নেমেছেন বিজেপির রাহুল সিনহা। তিনিও বড় মাপের যোদ্ধা। রাহুল সিনহা ছয় বছর ছিলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি। ২০১৫ সালে হয়েছেন বিজেপির জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক।
২০১৪ সালের নির্বাচনে রাহুল সিনহা একই আসনে লড়ে যথেষ্ট বেগ দিয়েছিলেন তৃণমূলের সুদীপকে। সুদীপ সেদিন বুঝেছিলেন, রাহুল সিনহার শক্তি উত্তর কলকাতায় একবারেই কম নয়। গত নির্বাচনে সুদীপ পেয়েছিলেন ৩ লাখ ৪৩ হাজার ৬৮৭ ভোট। আর রাহুল সিনহা পেয়েছিলেন ২ লাখ ৪৭ হাজার ৪৬১ ভোট। সিপিএম প্রার্থী রূপা বাগচি পেয়েছিলেন ১ লাখ ৯৬ হাজার ৫৩টি ভোট। কংগ্রেসের প্রার্থী বর্তমান রাজ্য সভাপতি সোমেন মিত্র পেয়েছিলেন ১ লাখ ৩০ হাজার ৭৮৩ ভোট।
এবার অবশ্য এই আসনে বামফ্রন্ট প্রার্থী করেছে সিপিএমের নারী নেত্রী কনীনিকা ঘোষকে। পেশায় স্কুলশিক্ষিকা এই নারী নেত্রী ইতিমধ্যে ভোটের মাঠে নেমে পড়েছেন। তিনি মনে করেন, এবার আর মানুষ অতটা ঝুঁকবেন না বিজেপি বা তৃণমূলের দিকে। ফলে ত্রিমুখী লড়াইয়ে তাঁর জয়ের পথ খুলে যেতে পারে।
তবে এই যুক্তি মানছেন না বিজেপির প্রার্থী রাহুল সিনহা। তিনি এবার দারুণ আশাবাদী। বলেছেন, মানুষ ভোট দিতে পারলে এবার তাঁর জয় আর আটকে রাখা যাবে না। মানুষ দেখেছে তৃণমূলের শাসন, দুর্নীতি। দুর্নীতির মামলায় জড়ানোর ঘটনা। সুতরাং অবাধ নির্বাচন হলে তিনিই এবার জিতবেন।
উত্তর কলকাতায় প্রচুর অবাঙালি মানুষের বাস। তাঁরা সাধারণত বিজেপির দিকে ঝুঁকে থাকে। ভোটের বাজারে তাই বাড়তি সুযোগ পেতে পারে বিজেপি।
সুদীপ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, রাজ্যে নেতা বলতে এখনো মমতাই। তাঁর উন্নয়নের জোয়ারে ভেসে গেছে রাজ্য। তাই কলকাতাবাসী এবারও তাঁকে বিপুল ভোটে জয়ী করবেন।
উত্তর কলকাতার এই আসন নিয়ে জোর লড়াই শুরু হয়েছে। কংগ্রেস এখনো এই আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি। ঘোষণা করলে এবার এই আসনে চতুর্মুখী লড়াই হবে। কারণ, এখনো কলকাতায় বহু কংগ্রেস সমর্থক রয়েছেন। তাঁরা নিশ্চয়ই কংগ্রেসকে বিমুখ করবে না।
সব মিলিয়ে বলতে হয়, উত্তর কলকাতায় ভোটের মহারণ শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু কে জিতবে, তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে ২৩ মে পর্যন্ত। ওই দিনই বের হবে ফলাফল।
No comments