দক্ষিণ আফ্রিকা নিয়ে শ্বেতাঙ্গ রাষ্ট্রের স্বপ্ন ছিল থ্যাচারের
যুক্তরাজ্যের
সাবেক প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার দক্ষিণ আফ্রিকা নিয়ে শ্বেতাঙ্গ
রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখতেন। তিনি বিশ্বাস করতেন দক্ষিণ আফ্রিকার স্রেফ
শ্বেতাঙ্গ রাষ্ট্র হওয়া উচিত। মেইল অন সানডেতে প্রকাশিত দিনলিপিতে ব্রিটিশ
ডিপ্লোম্যাটিক সার্ভিসের সাবেক প্রধান স্যার প্যাট্রিক রাইট চাঞ্চল্যকর এ
তথ্য জানিয়েছেন।
প্যাট্রিক লিখেছেন, মার্গারেট থ্যাচার জার্মানদের ঘৃণা
করতেন এবং তাদের পুনঃএকত্রীকরণে বিরোধী ছিলেন। এমনকি ভিয়েতনাম থেকে নৌকায়
করে আসা লোকদের সাগরে ঠেলে দিতে চেয়েছিলেন তিনি। খবর দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের।
প্যাট্রিক দাবি করেছেন, ১৯১০ সালের প্রাক্কালে দক্ষিণ আফ্রিকার যে অবস্থা
ছিল সেই পরিস্থিতি প্রত্যাশা করতেন থ্যাচার। দিনলিপিতে স্যার প্যাট্রিক
লিখেছেন, আমন্ত্রণ পেয়ে তিনি থ্যাচারের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে যোগ দিয়েছিলেন।
আমাদের সামনে আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের সভাপতি অলিভান টাম্বোকে নিয়ে
লেখা একটি সংবাদের সমালোচনা দিয়ে তিনি আলোচনা শুরু করেছিলেন। তিনি বলেন,
এটাই প্রমাণ করছে তার সঙ্গে আমাদের আলোচনা করা উচিত নয়।’ প্যাট্রিক আরও
দাবি করেন, গোঁফওয়ালা পুরুষদের প্রতি এলার্জি ছিল থ্যাচারের, কারণ তারা
দেখতে নাপিতের মতো। প্যাট্রিক জানান, ১৯১০ সালে প্রাক্কালে প্রতিবেশী
কৃষ্ণাঙ্গ দেশগুলো থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ছোট শ্বেতাঙ্গ রাষ্ট্র হিসেবে
থাকা দক্ষিণ আফ্রিকার পরিস্থিতি ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে তার দৃষ্টিভঙ্গি তুলে
ধরেন থ্যাচার। মার্গারেট থ্যাচারের এ আকাক্সক্ষার ব্যাপারে স্যার
প্যাট্রিক প্রশ্ন তুলে বলেছিলেন,
এর মাধ্যমে জাতিবিদ্বেষ ছড়াতে পারে। এসময়
থ্যাচার ধমক দিয়ে উঠে তাকে বলেন, ‘আমাদের কৌশলগত স্বার্থের ব্যাপারে কি
আপনার কোনো চিন্তা নেই?’ স্যার প্যাট্রিক আরও দাবি করেন, ১৯৮৯ সালে
ভিয়েতনাম যুদ্ধের পর ৭০ হাজার ভিয়েতনামি তাদের দেশ থেকে পালিয়ে হংকং ও
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পাঁচটি দেশে চলে আসে। ওই সময় সবচেয়ে বাজে পরিস্থিতিতে
ছিলেন থ্যাচার। তিনি ওই ভিয়েতানামিদের ফেরত পাঠানোর এবং তাদেরকে সাগরের
দিকে ঠেলে দেয়ার পক্ষে ছিলেন। প্যাট্রিকের ডায়েরিতে থ্যাচারের
জার্মানিফোবিয়ার বিষয়েও উল্লেখ রয়েছে। তিনি লিখেছেন, থ্যাচার মনে করতেন
জার্মান ভাষাভাষীরা সম্প্রদায়ের নিয়ন্ত্রণ নিতে যাচ্ছে। জার্মানির
পুনঃএকত্রীকরণ বিষয়ে কোনো আলোচনাকে অশালীন বাচালতা মনে করতেন তিনি।
প্যাট্রিক লিখেছেন, থ্যাচারের পররাষ্ট্রনীতির বিষয় তিনটি বিভাগের মধ্যে
সীমাবদ্ধ ছিল, সংসদীয় বিভাগ, স্বরাষ্ট্র বিভাগ ও বিদেশাতঙ্ক।
No comments