অভিনব প্রস্তাব দিয়ে বিদ্রুপের শিকার ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী
যুক্তরাজ্য
আর ফ্রান্সের মাঝখানে যে ইংলিশ চ্যানেল- সেটির ওপর একটি ব্রিজ নির্মাণের
প্রস্তাব দিয়েছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রী বরিস জনসন। ফরাসী প্রেসিডেন্ট
এমানুয়েল ম্যাক্রর সঙ্গে এক শীর্ষ বৈঠকের সময় ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রী
এই প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, এই দুই দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য এরকম
একটা সংযোগ খুবই দরকার। তবে ফরাসী প্রেসিডেন্ট ম্যাক্র এই প্রস্তাবে রাজী
হয়েছেন বলে যে খবর বেরিয়েছে, তা অস্বীকার করেছেন তার এক মুখপাত্র।
ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্য এখন সাগরের তলদেশ নিয়ে যাওয়া এক টানেল দিয়ে
যুক্ত। চ্যানেল টানেল বা ইউরোটানেল নামে পরিচিত এই টানেল দিয়ে ট্রেন চলাচল
করে। দুই দেশের মধ্যে এরকম একটি ব্রিজ নির্মাণের প্রস্তাব এর আগে ১৯৮১
সালেও দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তখন এটিকে অবাস্তব প্রস্তাব বলে উড়িয়ে দেয়া
হয়। কারণ এতে করে নাকি জাহাজ চলাচলে অসুবিধা হতে পারে। তবে ব্রিটেনের
ইনস্টিটিউশন অব স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনীয়ার্সের প্রেসিডেন্ট ইয়ান ফার্থ
জানিয়েছেন, এটি বিশাল বড় কাজ সন্দেহ নেই, কিন্তু এরকম একটি ব্রিজ অবশ্যই
নির্মাণ করা সম্ভব। সোশ্যাল মিডিয়ায় অবশ্য বরিস জনসনের এই প্রস্তাব নিয়ে
ব্যঙ্গ করতে ছাড়েননি অনেকে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
যেভাবে মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল তৈরি করে তার খরচ মেক্সিকোর কাছ থেকেই
আদায় করার কথা বলেছিলেন, অনেকে বরিস জনসনের এই প্রস্তাবকে তার সঙ্গে তুলনা
করেছেন। ব্রেক্সিট গণভোটের সময় ব্রিটেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের করে
আনার পক্ষে যারা প্রচারণায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, বরিস জনসন তাদের অন্যতম।
এমানুয়েল ম্যাক্র ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর এই প্রথম
যুক্তরাজ্য সফরে এসেছেন। তিনি যুক্তরাজ্যের স্যান্ডহার্স্ট রয়্যাল
মিলিটারি একাডেমী পরিদর্শন করেন এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে'র
সঙ্গে বৈঠক করেন। বিবিসি জানতে পেরেছে, বরিস জনসন যখন ফরাসী প্রেসিডেন্টের
সঙ্গে বিভিন্ন অবকাঠামো প্রকল্প নিয়ে কথা বলছিলেন, তখন এই ব্রিজ নির্মাণের
প্রস্তাব দিয়েছিলেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র বিবিসিকে
জানায়, ব্রিটেন আর ফ্রান্স, যাদের মাঝখানে মাত্র বিশ মাইলের দূরত্ব, তারা
যে কেবলমাত্র একটি রেললাইন দ্বারা যুক্ত, এটি তিনি মানতে পারছেন না। সেই
পটভূমিতেই তিনি এই ব্রিজের ধারণাটি নিয়ে কথা বলেছেন। বরিস জনসন লন্ডনের
মেয়র থাকাকালেও এরকম বড় বড় সব অভিনব প্রকল্পের প্রস্তাব দিয়ে
আলোচনা-সমালোচনার শিকার হন। লন্ডনে টেমস নদীর মোহনায় কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি
করে সেখানে বিমান বন্দর তৈরির প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি। হিথ্রো বিমান
বন্দরকে সম্প্রসারণের বিকল্প হিসেবে এই প্রস্তাবের পক্ষে তিনি বেশ সরব
ছিলেন। লন্ডনের রাস্তায় যে দোতলা রোডমাস্টার বাসগুলো চলতো, সেগুলো
প্রত্যাহারের তিন বছরের মাথায় বরিস জনসন মেয়র হয়ে আবার সেগুলো ফিরিয়ে
আনেন।
No comments