শাম্মী হত্যা মামলা তদন্ত করবে পিবিআই
রাজধানীর
কল্যাণপুরে আলোচিত গৃহবধূ শাম্মী হত্যা মামলা তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো
অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে বর্তমান
ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পর্যালোচনার জন্য তিনজন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ দিয়ে কমিটি গঠন
করতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ
কমিটিকে বর্তমান ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পর্যালোচনা করে নতুন করে প্রতিবেদন
দাখিল করতে হবে। বুধবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল
করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ সংক্রান্ত একটি রুল নিষ্পত্তি করে এ
আদেশ দেন। এর আগে হাইকোর্টের তলবে রোববার ময়নাতদন্তকারী ঢাকা মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ আদালতে হাজির হয়ে
ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন। এছাড়া এদিন মামলার তদন্ত
কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার এসআই নওশের আলী আদালতের তলবে হাজির ছিলেন।
ময়নাতদন্ত রিপোর্টে ডা. সোহেল মাহমুদ নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন থাকলেও তা
মৃত্যুর জন্য যথেষ্ট নয় বলে উল্লেখ করেছিলেন। একইসঙ্গে তিনি এই মৃত্যুকে
আত্মহত্যা বলে অভিহিত করেছেন। পরবর্তীতে আদালত ময়নাতদন্ত রিপোর্ট দেখে
উপরোক্ত আদেশ দেন। গণমাধ্যমের খবর নজরে আনা আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও
রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইউসুফ মাহমুদ মোর্শেদ আদালতে
উপস্থিত ছিলেন। দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ
নজরে নিয়ে গত ৭ নভেম্বর আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে
তলব করেন। প্রতিবেদনটি নজরে আনেন দুদকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম
খান। খুরশীদ আলম খান যুগান্তরকে বলেন, শাম্মী হত্যার ময়না তদন্তকারী ঢাকা
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদকে আদালত
তলব করেছেন। উল্লেখ্য, গত ৫ নভেম্বর দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় ‘‘গৃহবধূ
শাম্মী হত্যা মামলা ‘মাকে বাবা অনেক কষ্ট দিয়ে মেরেছে’ তদন্ত কর্মকর্তার
গড়িমসির অভিযোগ” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়,
গত ৭ জুন রাতে রাজধানীর কল্যাণপুরে ভাড়া বাসায় একটি বায়িং হাউসের ঊর্ধ্বতন
কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন টিটু তার স্ত্রী শামিমা লাইলা আরজুমান্না খান
শাম্মীকে অমানবিক নির্যাতন করে হত্যা করে। পরে চিকিৎসার নামে হাসপাতালে
নেয়ার পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর ছোট ভাই মো.
ফরহাদ হোসেন খান বাবু বাদী হয়ে ৮ জুন মিরপুর মডেল থানায় মামলা করেন। পরে
পুলিশ ঘাতক স্বামী আলমগীর ও তার তৃতীয় স্ত্রী ইসরাত জাহান মুক্তাকে
গ্রেফতার করে। অভিযোগ উঠেছে, আলোচিত এ মামলার তদন্ত নিয়ে গড়িমসি করছেন
তদন্তকারী কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার এসআই মো. নওশের আলী। মামলার বাদী
মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, ঢাকায় অবস্থানরত আসামির ধনাঢ্য ভগ্নিপতি মো. আবদুল
বাছেদ অর্থের মাধ্যমে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পরিবর্তন এবং মামলাটি ভিন্ন খাতে
প্রবাহে কাজ করছেন। আর তাই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই নওশের আলী
প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে ঘাতক আসামির পক্ষে ভূমিকা রাখছেন।
No comments