লন্ডনে পৌঁছেছেন খালেদা জিয়া
যুক্তরাজ্যের লন্ডনে পৌঁছেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। রোববার স্থানীয় সময় ৭টা ২০ মিনিটে (বাংলাদেশে দুপুর ১২টা ২০ মিনিট) তাকে বহনকারী এমিরেটস এয়ারলাইন্সের বিমানটি হিথরো বিমানবন্দরে পৌঁছে। বিমানবন্দরে তাকে অভ্যর্থনা জানান তার ছেলে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার স্ত্রী জোবাইদা রহমান। চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান ও শামসুদ্দিন দিদার যুগান্তরকে এ তথ্য জানান। এর আগে শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ইকে ৫৮৭ ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের উদ্দেশে রওনা হন খালেদা জিয়া। তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আওয়াল, খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব আবদুস সাত্তার ও গৃহকর্মী ফাতেমা বেগম। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে যাত্রা বিরতি শেষে রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে বিমানটি লন্ডনের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। চোখ ও পায়ের চিকিৎসা করাতে লন্ডনে গেছেন খালেদা জিয়া। বাংলাদেশ ও লন্ডন বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, হিথরো বিমানবন্দরে তারেক রহমান ছাড়াও যুক্তরাজ্য শাখা বিএনপির সিনিয়র নেতারা অপেক্ষা করছিলেন। বিমানবন্দরে ছেলেকে (তারেক) দেখেই বুকে জড়িয়ে ধরেন এবং কান্নায় ভেঙে পড়েন খালেদা জিয়া। একপর্যায়ে জোবাইদাকেও কাছে টেনে নেন তিনি। এ সময় সেখানে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। পরে আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে খালেদা জিয়াকে নিজ গাড়িতে করে কিংসটন এলাকার বাসায় নিয়ে যান তারেক রহমান। সামনের আসনে মাকে বসিয়ে তারেক নিজেই গাড়ি চালান। বাসায় যাওয়ার আগে টার্মিনালে প্রবাসী নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
চেয়ারপারসনের লন্ডন সফরকে কেন্দ্র করে স্থানীয় সময় ভোর থেকেই নেতাকর্মীরা হিথরো বিমানবন্দরে জড়ো হতে থাকেন। যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন রাজ্য ছাড়াও ইউরোপের কয়েকটি দেশ থেকে নেতাকর্মীরা সেখানে উপস্থিত হন। বিমানবন্দরে রাস্তার দুই পাশে তারা লাইন ধরে দাঁড়িয়ে চেয়ারপারসনকে অভিনন্দন জানান। গাড়ির ভেতর থেকে হাত তুলে অভিনন্দনের জবাব দেন খালেদা জিয়া। বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক মহিদুর রহমান, ব্যারিস্টার আবদুস সালাম, যুক্তরাজ্য শাখা বিএনপির সভাপতি এমএ মালেক, সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদ, যুক্তরাজ্য বিএনপি নেতা মজিবুর রহমান, আবদুল হামিদ চৌধুরী, শহিদুল ইসলাম মামুন, মিজবাউজ্জামান সোহেল, নাসিম আহমেদ চৌধুরী, খসরুজ্জামান খসরু প্রমুখ বিমানবন্দরে ছিলেন। লন্ডনের একটি সূত্র জানায়, বিমানবন্দর থেকে বাসায় যাওয়ার পর আবারও আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শামিলা রহমান সিঁথি, তার দুই মেয়ে জাহিয়া রহমান ও জাফিয়া রহমান দীর্ঘদিন পর খালেদা জিয়াকে কাছে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। নিজেকে সামলে রাখতে পারেননি তারেক রহমান, জোবাইদা রহমান এবং তাদের মেয়ে জাইমা রহমানও। এ সময় খালেদা জিয়াও আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। নাতনিদের বুকে জড়িয়ে আদর করেন। খালেদা জিয়ার সফরকে কেন্দ্র করে বিএনপির সিনিয়র নেতারাও লন্ডনে যেতে শুরু করেছেন। এরই মধ্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু লন্ডনে অবস্থান করছেন। ২০১৫ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গিয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন। সেখানে বড় ছেলে তারেক রহমানসহ তার পরিবার এবং প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী ও মেয়েদের নিয়ে ঈদ উদযাপন করেন তিনি। এর আগে ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্র ঘুরে দেশে ফেরার পথে বড় ছেলে তারেক রহমানকে দেখতে লন্ডনে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া।
No comments