ঝুঁকিতে আবাসন খাত
নতুন আইনে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আরোপের ফলে আবাসন খাত ভয়াবহ ঝুঁকিতে পড়বে। পহেলা জুলাই থেকে ফ্ল্যাটের অর্ধেক দামের ওপর ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট পরিশোধ করতে হবে। এতে ফ্ল্যাটের দাম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে। বর্তমানে আবাসন খাতে মন্দা চলছে। এ পরিস্থিতিতে নতুন সিদ্ধান্ত মন্দাভাব আরও দীর্ঘায়িত করবে বলে বিশেষজ্ঞরা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, আবাসনের পাশাপাশি স্টিল, জুয়েলারি ও পরিবহন খাতেও ঝুঁকি বাড়বে। এ শঙ্কাকে বাস্তব ভিত্তি দিচ্ছে আবাসন খাতের প্রধান উপকরণ রডের মূল্য বৃদ্ধি। ভ্যাটের কারণে টনপ্রতি রডের দাম বাড়বে সাড়ে সাত হাজার টাকা। হাজারপ্রতি ইটের দামও বাড়বে। সিমেন্টের কাঁচামাল ফ্লাইঅ্যাশের ওপরও ১০ শতাংশ সংরক্ষণমূলক শুল্কারোপ করা হয়েছে। এতে সিমেন্টের দামও বাড়বে। এ ছাড়া ভরিপ্রতি স্বর্ণের দাম বাড়বে প্রায় সাত হাজার টাকা। পণ্য পরিবহনেও ব্যয় বাড়বে। এ প্রসঙ্গে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, নতুন আইনে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আরোপের ফলে আবাসন খাতের ব্যয় বাড়বে। যার প্রভাব পড়বে চাহিদার ওপর। সামগ্রিকভাবে এ খাতে বিনিয়োগ কমতে পারে। তিনি আরও বলেন, জুয়েলারি শিল্পের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হলে চোরাচালান বাড়বে। কারণ সম্প্রতি ভারত স্বর্ণের শুল্ক কমিয়েছে। এটি দেশীয় জুলেয়ারি শিল্পের জন্য একটি অশনিসংকেত। বর্তমানে ১৫টি সেবা খাতের ওপর সংকুচিত ভিত্তিমূল্যে দেড় থেকে ১০ শতাংশ হারে ভ্যাট আদায় হয়।
প্রস্তাবিত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ১ জুলাই থেকে নতুন ভ্যাট আইন পুরোপুরি বাস্তবায়নের প্রস্তাব দিয়েছেন। এর ফলে ১ জুলাইয়ের পর থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত ছাড়া সব ধরনের পণ্য ক্রয় ও সেবা গ্রহণের বিপরীতে ভোক্তাদের ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে। যার মধ্যে আছে আবাসন, জুয়েলারি, পরিবহন খাতও। এ ছাড়া নতুন আইনে ট্যারিফ মূল্যও বাতিল করা হয়েছে। ইট ও রডের মতো নির্মাণসামগ্রীর ওপরও ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে। যার ফলে এসব পণ্যের দাম বাড়বে। এসব খাতকে সংবেদনশীল উল্লেখ করে হ্রাসকৃত হারে ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব দিয়েছিল ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। আবাসন খাতের ওপর দেড় শতাংশ, স্টিল খাতের ওপর দশমিক ৫ শতাংশ, জুয়েলারি খাতের ওপর দেড় শতাংশ, ইটের ওপর দেড় শতাংশ হারে ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে তা অগ্রাহ্য হয়েছে। গত শনিবার বাজেট-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনেও একই দাবি জানিয়েছে এফবিসিসিআই। বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ‘১৯৯১ সাল থেকে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আরোপিত হয়েছে। তাতে ভোক্তা ও ব্যবসায়ীরা অভ্যস্ত হয়ে গেছেন। আমি ভ্যাট হার ১৫ শতাংশই বহাল রাখার প্রস্তাব করছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘মূল্য সংযোজন কর বর্তমানে এক অভিন্ন হারে প্রয়োগ করা হবে। হারটি হবে ১৫ শতাংশ এবং এটি আগামী ৩ বছরের জন্য অপরিবর্তিত থাকবে।’ যদিও অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় সংকুচিত ভিত্তিমূল্যের ব্যাপারে কিছুই বলেননি। এসব খাতের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের ফলে কী প্রভাব পড়বে সেটিও বলেননি। জুয়েলারি খাত সম্পর্কে আমদানি শুল্ক অংশের বক্তৃতায় একটি নীতিমালা করার কথা বলেছেন। আবাসন খাত : নতুন ভ্যাট আইনের প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে আবাসন খাত। ভ্যাটের প্রভাবে ফ্ল্যাট তৈরির উপকরণ রডের দাম বাড়বে টনপ্রতি সাড়ে ৭ হাজার টাকা।
আর ইটের দামও বাড়বে হাজারপ্রতি ৬০০ টাকা। ফলে ফ্ল্যাটের নির্মাণ খরচ বাড়বে। তার ওপর নতুন আইনে ফ্ল্যাট বিক্রির অর্ধেক মূল্যের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। অর্থাৎ পুরো ফ্ল্যাটের ওপর সাড়ে সাত শতাংশ হারে ভ্যাট পরিশোধ করতে হবে। এসব করের বোঝার কারণে আবাসন খাতের মন্দা দীর্ঘস্থায়ী হবে বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। বর্তমানে আয়তনভেদে ফ্ল্যাটের ওপর ভ্যাট আরোপিত আছে। ১ থেকে ১১০০ বর্গফুট ফ্ল্যাটের ওপর সংকুচিত ভিত্তিমূল্যে দেড় শতাংশ, ১১০০ থেকে ১৬০০ বর্গফুটের ওপর আড়াই শতাংশ এবং ১৬০০ বর্গফুটের বেশি হলে সাড়ে ৪ শতাংশ হারে ভ্যাট দিতে হয়। কিন্তু নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন হলে সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে। অর্থবিল ২০১৭-এর মাধ্যমে নতুন ভ্যাট আইন সংশোধন করা হয়েছে। প্রথম তফসিল সংশোধন করে ভ্যাট অব্যাহতির প্রাপ্ত পণ্য ও সরবরাহ তালিকা বাড়ানো হয়েছে। তফসিলের ১১নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘স্থাবর সম্পত্তি আবাসিক ভবন সংক্রান্ত হলে নতুন আবাসিক ভবনের প্রথম বিক্রয় বা আবাসিক ভবন হিসেবে প্রথম ব্যবহারের দুই বছরের মধ্যে পরবর্তী বিক্রয় ব্যতীত তার বিক্রয়।’ এ অনুচ্ছেদের ব্যাখ্যা জানতে চাইলে ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পের উপপরিচালক জাকির হোসেন বলেন, নতুন ফ্ল্যাট হলে সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে। এরপর দু’বছর পর্যন্ত তা হস্তান্তর হলে ভ্যাট দিতে হবে না। কিন্তু দু’বছর পর তা আবার বিক্রি বা হস্তান্তর হলে আবারও সাড়ে ৭ শতাংশ হারে ভ্যাট দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, আগে ফ্ল্যাটের ওপর সংকুচিত ভিত্তিমূল্যে ভ্যাট দেয়ায় আবাসন ব্যবসায়ীরা রেয়াত নিতে পারতেন না। নতুন আইনে উপকরণ কর রেয়াত নেয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ফলে ভ্যাট হার সাড়ে ৭ শতাংশ থেকে আরও কমে আসবে। এ প্রসঙ্গে আবাসন খাত মালিকদের সংগঠন রিহ্যাবের সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামীন বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে ভবন নির্মাণের প্রতিটি আইটেমের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। এমনিতে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ভবন নির্মাণে সর্বোচ্চ ব্যয় হয় বাংলাদেশে। নতুন করে ভ্যাট আরোপের ফলে সেটি আরও বেড়ে যাবে। ফলে ফ্ল্যাটের দাম বাড়া ছাড়া কমার সুযোগ নেই। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আবাসন খাতে মন্দা চলছে। ফ্ল্যাট নিয়ে ব্যবসায়ীরা বসে আছেন বিক্রি হচ্ছে না। জমি কিনে বসে আছেন, ফ্ল্যাট বানাতে পারছেন না। নতুন আইনে ভ্যাট আরোপের ফলে মন্দা আরও দীর্ঘস্থায়ী হবে।
লৌহ শিল্প : আবাসন খাতের প্রধান উপকরণ রডও নিস্তার পায়নি নতুন ভ্যাট আইনের থাবা থেকে। প্রকৃত মূল্যের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের ফলে রডের দাম বাড়বে। বর্তমানে টনপ্রতি রডে ৫০০ টাকা ভ্যাট দিয়ে আসছেন ব্যবসায়ীরা। এ প্রসঙ্গে অটো রি-রোলিং মিল অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি আনামুল হক ইকবাল বলেন, রডের ওপর ভ্যাট আরোপের ফলে টনপ্রতি রডের দাম বাড়বে সাড়ে ৭ হাজার টাকা। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত সরকার। কারণ সরকারের চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয়ও আনুপাতিক হারে বাড়বে। পাশাপাশি ব্যক্তি খাতে ভবন নির্মাণের খরচ বাড়বে। তিনি আরও বলেন, এনবিআর বলছে নতুন আইনে রেয়াত নিতে পারবেন উদ্যোক্তারা। কিন্তু রড তৈরির কাঁচামাল হচ্ছে স্ক্র্যাপ ও ভাঙারির দোকান থেকে সংগ্রহ করা পুরনো লোহা-লক্কড়। ভাঙারির দোকানদারের কাছ থেকে পুরনো লোহা কিনলে তিনি চালান দিতে পারবেন না। কারণ ওই দোকানদার এসব সংগ্রহ করেন টোকাই ও ফেরিওয়ালাদের কাছ থেকে। অর্থাৎ রি-রোলিং মালিকদের রেয়াত পাওয়ার সুযোগ নেই। একই অবস্থা নির্মাণ খাতের আরেকটি উপকরণ ইটের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। আগে ট্যারিফ মূল্যের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হতো। নতুন আইনে প্রকৃত মূল্যের ওপর ভ্যাট দিতে হবে বিধায় প্রতি হাজার ইটের দাম বাড়বে ৬০০ টাকা।
জুয়েলারি : বিয়ে-শাদির কেনাকাটায় বাঙালি ঐতিহ্যের অংশ হয়ে উঠেছে সোনার গহনা। নতুন আইনের আওতায় সোনার দামও বাড়বে। আগে গহনা মূল্যের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হতো। নতুন আইনে ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে। ফলে সোনার গহনার দাম ভরিপ্রতি বাড়বে প্রায় ৭ হাজার টাকা। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) সাধারণ সম্পাদক দিলিপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, জুয়েলারি শিল্প বর্তমানে চরম দুর্দিন পার করছে। এমনিতে জুয়েলারির দোকানগুলো সব ফাঁকা। বেচাবিক্রি প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। তার ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের বোঝা এ খাত বহন করতে পারবে না। এতে স্বর্ণালংকারের দাম বেড়ে যাবে। গ্রাহকরা কম মূল্যে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে অলংকার আনতে উৎসাহিত হবেন। ফলে বাংলাদেশের অর্থ বিদেশে চলে যাবে। তিনি আরও বলেন, নতুন ভ্যাট আইনে রেয়াত প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করা হয়েছে। বাজুস এটিকে স্বাগত জানায়। কিন্তু জুয়েলারি শিল্পে ব্যবহৃত স্বর্ণের বড় অংশ তাঁতীবাজার ও শাঁখারী বাজারের পোদ্দারদের কাছ থেকে আহরণ করা হয়। এসব পোদ্দার গ্রাহকদের কাছ থেকে স্বর্ণ কিনে সেটিকে রিফাইন করে। স্বর্ণ কেনার সময় গ্রাহকের কাছ থেকে চালান রাখা সম্ভব নয়। ফলে তাদের কাছ থেকে চালান পাওয়াও জুয়েলারি শিল্পের জন্য সম্ভব নয়। তাই রেয়াত ব্যবস্থা শক্তিশালী হলেও জুয়েলারি মালিকদের সেটি পাওয়া সম্ভব না।
পরিবহন খাত : আগে পেট্রোলিয়াম পণ্য পরিবহনে সাড়ে ৪ শতাংশ এবং অন্যান্য পণ্য পরিবহনে ১০ শতাংশ ভ্যাট আদায় করা হতো। প্রস্তাবিত বাজেটে খাদ্যশস্য পরিবহন ছাড়া অন্য সব পণ্য পরিবহনের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। এর ফলে পেট্রোলিয়াম পণ্য পরিবহন খরচ বাড়বে। যার প্রভাব পড়বে জ্বালানি তেলের ওপর। এতে জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে পারে। এ ছাড়া আমদানি-রফতানি কাজে ব্যবহৃত পরিবহনের খরচও বাড়বে। ফলে উদ্যোক্তাদের পণ্য উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে। যার প্রভাব পড়বে উৎপাদিত পণ্যমূল্যের ওপর।
লৌহ শিল্প : আবাসন খাতের প্রধান উপকরণ রডও নিস্তার পায়নি নতুন ভ্যাট আইনের থাবা থেকে। প্রকৃত মূল্যের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের ফলে রডের দাম বাড়বে। বর্তমানে টনপ্রতি রডে ৫০০ টাকা ভ্যাট দিয়ে আসছেন ব্যবসায়ীরা। এ প্রসঙ্গে অটো রি-রোলিং মিল অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি আনামুল হক ইকবাল বলেন, রডের ওপর ভ্যাট আরোপের ফলে টনপ্রতি রডের দাম বাড়বে সাড়ে ৭ হাজার টাকা। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত সরকার। কারণ সরকারের চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয়ও আনুপাতিক হারে বাড়বে। পাশাপাশি ব্যক্তি খাতে ভবন নির্মাণের খরচ বাড়বে। তিনি আরও বলেন, এনবিআর বলছে নতুন আইনে রেয়াত নিতে পারবেন উদ্যোক্তারা। কিন্তু রড তৈরির কাঁচামাল হচ্ছে স্ক্র্যাপ ও ভাঙারির দোকান থেকে সংগ্রহ করা পুরনো লোহা-লক্কড়। ভাঙারির দোকানদারের কাছ থেকে পুরনো লোহা কিনলে তিনি চালান দিতে পারবেন না। কারণ ওই দোকানদার এসব সংগ্রহ করেন টোকাই ও ফেরিওয়ালাদের কাছ থেকে। অর্থাৎ রি-রোলিং মালিকদের রেয়াত পাওয়ার সুযোগ নেই। একই অবস্থা নির্মাণ খাতের আরেকটি উপকরণ ইটের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। আগে ট্যারিফ মূল্যের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হতো। নতুন আইনে প্রকৃত মূল্যের ওপর ভ্যাট দিতে হবে বিধায় প্রতি হাজার ইটের দাম বাড়বে ৬০০ টাকা।
জুয়েলারি : বিয়ে-শাদির কেনাকাটায় বাঙালি ঐতিহ্যের অংশ হয়ে উঠেছে সোনার গহনা। নতুন আইনের আওতায় সোনার দামও বাড়বে। আগে গহনা মূল্যের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হতো। নতুন আইনে ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে। ফলে সোনার গহনার দাম ভরিপ্রতি বাড়বে প্রায় ৭ হাজার টাকা। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) সাধারণ সম্পাদক দিলিপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, জুয়েলারি শিল্প বর্তমানে চরম দুর্দিন পার করছে। এমনিতে জুয়েলারির দোকানগুলো সব ফাঁকা। বেচাবিক্রি প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। তার ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের বোঝা এ খাত বহন করতে পারবে না। এতে স্বর্ণালংকারের দাম বেড়ে যাবে। গ্রাহকরা কম মূল্যে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে অলংকার আনতে উৎসাহিত হবেন। ফলে বাংলাদেশের অর্থ বিদেশে চলে যাবে। তিনি আরও বলেন, নতুন ভ্যাট আইনে রেয়াত প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করা হয়েছে। বাজুস এটিকে স্বাগত জানায়। কিন্তু জুয়েলারি শিল্পে ব্যবহৃত স্বর্ণের বড় অংশ তাঁতীবাজার ও শাঁখারী বাজারের পোদ্দারদের কাছ থেকে আহরণ করা হয়। এসব পোদ্দার গ্রাহকদের কাছ থেকে স্বর্ণ কিনে সেটিকে রিফাইন করে। স্বর্ণ কেনার সময় গ্রাহকের কাছ থেকে চালান রাখা সম্ভব নয়। ফলে তাদের কাছ থেকে চালান পাওয়াও জুয়েলারি শিল্পের জন্য সম্ভব নয়। তাই রেয়াত ব্যবস্থা শক্তিশালী হলেও জুয়েলারি মালিকদের সেটি পাওয়া সম্ভব না।
পরিবহন খাত : আগে পেট্রোলিয়াম পণ্য পরিবহনে সাড়ে ৪ শতাংশ এবং অন্যান্য পণ্য পরিবহনে ১০ শতাংশ ভ্যাট আদায় করা হতো। প্রস্তাবিত বাজেটে খাদ্যশস্য পরিবহন ছাড়া অন্য সব পণ্য পরিবহনের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। এর ফলে পেট্রোলিয়াম পণ্য পরিবহন খরচ বাড়বে। যার প্রভাব পড়বে জ্বালানি তেলের ওপর। এতে জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে পারে। এ ছাড়া আমদানি-রফতানি কাজে ব্যবহৃত পরিবহনের খরচও বাড়বে। ফলে উদ্যোক্তাদের পণ্য উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে। যার প্রভাব পড়বে উৎপাদিত পণ্যমূল্যের ওপর।
No comments