ব্যতিক্রমী রাজনীতিক জেরেমি করবিন
ব্রিটেনের আগাম নির্বাচনে অনেকটা বহিরাগত হিসেবেই প্রচারণা শুরু করেছিলেন লেবার দলের নেতা জেরেমি করবিন। তবে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে গত এপ্রিলে আগাম নির্বাচন ঘোষণা দেয়ার পর গত দু’মাসে ব্যাপক জনসমর্থন লাভ করেছেন করবিন। ব্যাপক এ জনসমর্থন আগামী বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে তাকে প্রধানমন্ত্রীর পদে অধিষ্ঠিত করবে বলে আশা করছেন তিনি। ৬৮ বছর বয়সী অদম্য এ নেতা এখন ব্রিটিশ রাজনীতিতে আর বহিরাগত নন। এদিক থেকে তাকে এক ব্যতিক্রমী রাজনীতিকই বলতে হবে। এএফপি জানায়, ১৯৮৩ সাল থেকে দীর্ঘসময় ধরে পার্লামেন্ট সদস্য থাকলেও সমাজতান্ত্রিক মতাদর্শের কারণে বেশিরভাগ সময় ছিলেন কোণঠাসা ও উপেক্ষিত। তবে নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে ২০১৫ সালে লেবার দলের নেতৃত্বে চলে আসেন তিনি। বামপন্থী তৃণমূলের সমর্থকরাই মূলত করবিনের শক্তি। ২০১৬ সালে দলের দুই-তৃতীয়াংশ এমপির বিরোধিতা সত্ত্বেও পুনরায় দলের প্রধান পদে নির্বাচিত হন তিনি। ক্ষমতাসীন রক্ষণশীল প্রধানমন্ত্রী তেরেসা তাকে দুর্বল, অগোছালো ও সরকার চালানোর ক্ষেত্রে অযোগ্য এবং ব্রিটেনের নিরাপত্তা ও উন্নতির প্রতি ঝুঁকি বলে আখ্যায়িত করেছেন। উত্তর আয়ারল্যান্ড সংঘাতের ক্ষেত্রে আইরিশ রিপাবলিকান আর্মির কর্মকাণ্ডের (আইআরএ) নিন্দা জানানোর ব্যর্থতার কারণে ডানপন্থীদের পক্ষ থেকে প্রায়ই তাকে সমালোচনা করা হয়।
গত তিন মাসে তিনটি বড় ধরনের সন্ত্রাসী হামলার পর এ নিয়ে প্রশ্ন উঠলে করবিন বলেন, উত্তর আয়ারল্যান্ড সমস্যার সমাধানে তিনি আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। নির্বাচনকে সামনে রেখে করবিনের নেতৃত্বে লেবার দল যে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে তা দেশটির ভোটারদের প্রশংসা কুড়িয়েছে। তেরেসা সরকারের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিরোধে ব্যর্থতার অভিযোগ করেছেন করবিন। তেরেসা যেখানে পুলিশের সংখ্যা কমানোর কথা বলছেন, সন্ত্রাস দমনের লক্ষ্যে করবিন তখন ১০ হাজার নতুন পুলিশ কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে বলে ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। লেবার দলের নির্বাচনী ইশতেহারে করবিনের মধ্যপন্থী দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ পেয়েছে। একজন আজীবন প্রতিবাদী রাজনীতিক ও প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক ব্যবস্থাবিরোধী ইমেজ দেশটির তরুণ ভোটারদের কাছে তাকে ব্যাপক জনপ্রিয় করে তুলেছে। ব্যক্তিগত জীবনে মধ্যপন্থা অবলম্বন করেন করবিন। কোনো রকম বিলাসিতা পছন্দ করেন না তিনি। এমনকি তার কোনো গাড়ি নেই। উত্তর লন্ডনের ইসলিংটনের এ এমপি আজও একটি বাইসাইকেল চড়েন। তার স্ত্রী লরা আলভারেজ একটি কফি কোম্পানি পরিচালনা করেন। বয়সের দিকে লরা করবিনের চেয়ে ২০ বছরের ছোট। এল গ্যাটো নামে তাদের একটা বিড়াল আছে। এ বিড়ালটির মধ্যেও সমাজতান্ত্রিক প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়, করবিন মন্তব্য করেছেন।
No comments