তেরেসার রঙিন স্বপ্ন কী দুঃস্বপ্ন হতে যাচ্ছে
ব্রিটেনের নির্বাচন সম্ভবত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মের জন্য দুঃস্বপ্ন হতে যাচ্ছে। গত ১৮ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে ব্রিটেনে আগাম নির্বাচনের ডাক দেন। তখন অনেকেই বলেছিলেন, নির্বাচনে বড় ধরনের জয় পেতে যাচ্ছেন তেরেসা। বলা হয়েছিল, এক্ষেত্রে তেরেসার দুটো বড় ধরনের সুবিধা রয়েছে। একটি ব্রেক্সিট ইস্যুতে নিজেকে একজন শক্তিশালী নেতৃত্ব হিসেবে উপস্থাপনের সুযোগ। অপর সুবিধা হচ্ছে, তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্ব^ী প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন। তেরেসাসহ অনেকেই করবিনকে দুর্বল ও কর্মক্ষম বলে তিরস্কার করে থাকেন। এএফপি জানায়, আগামী বৃহস্পতিবার নির্বাচন সামনে রেখে সময় যতই ঘনিয়ে আসছে, এসব প্রত্যাশা ক্রমেই অনিশ্চয়তার মেঘে ঢেকে যাচ্ছে। লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের রাজনীতির অধ্যাপক আয়ান বেগ বলেন, ‘তিনি মনে করেছিলেন, নির্বাচনে হেসেখেলেই জিততে যাচ্ছেন তিনি। তার এ ধারণা এখন ভেঙে গেছে।’ নির্বাচনী ইশতেহার ও প্রচারণার ক্ষেত্রে ভুল পদক্ষেপ এবং প্রতিদ্বন্দ্ব^ী নেতা করবিনের প্রত্যাশার চেয়ে ভালো পারফরমেন্স তেরেসার ভিত নাড়িয়ে দিয়েছে। নির্বাচনী প্রচারণার ক্ষেত্রে আর মাত্র কয়েকটা দিন হাতে রয়েছে। এ মুহূর্তে প্রচারণায় গিয়ে তিনি ভোটারদের অদ্ভুত সব প্রশ্নের সম্মুখীন হতে পারেন। ভোটাররা জানতে চাইতে পারেন, ব্রিটেনের নিরাপত্তা বাহিনী কেন সন্ত্রাসী হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ হচ্ছে।
গত তিন মাসে দেশটিতে তিনটা সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছে। এতে অন্তত ৩৪ জন নিহত ও ২ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে তেরেসার জনসমর্থন কেবলই কমছে। রোববারের এক জনমত জরিপ বলেছে, ক্ষমতাসীন টোরি পার্টি লেবার দলের চেয়ে মাত্র ১ পয়েন্ট এগিয়ে আছে। গত সপ্তাহে ইউগভের চালানো এক জনমত জরিপে বলা হয়, তেরেসার রক্ষণশীল দল নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে না। সরকর গড়তে হলে অন্য দলের সমর্থন লাগবে দলটির। এমনকি একটা ঝুলন্ত পার্লামেন্ট গঠিত হতে পারে বলে জানানো হয় জরিপে। নির্বাচনী প্রচারণায় তেরেসার একমাত্র মন্ত্র হচ্ছে, ব্রেক্সিট কার্যকর করতে তার মতো শক্তিশালী ও স্থায়ী নেতৃত্ব প্রয়োজন। তবে জনসমক্ষে তেরেসার আচরণ ও স্বাস্থ্য খাত, নিরাপত্তার মতো বিষয়গুলোতে তার দলের অবস্থান তার ভাবমূর্তি অনেকটাই মলিন করে দিয়েছে। একদিকে ব্রেক্সিট ইস্যু ভোটারদের মধ্যে আশানুরূপ আলোড়ন তৈরি করতে পারেনি। অন্যদিকে নির্বাচনী ইশতেহারে বার্ধক্য ভাতা, স্কুল তহবিল ও ন্যাশনাল হেল’ সার্ভিস (এনএইচএস) বা জাতীয় স্বাস্থ্যসেবায় তেরেসার দলের ভর্তুকি কমিয়ে দেয়ার ঘোষণায় ভোটারদের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে। দুটো ব্যাপারই লেবার দলের জন্য শাপেবর হয়েছে। লেবার পার্টি সরকারি পরিষেবায় ভর্তুকি বৃদ্ধি, ধনী ও ব্যবসায়ীদের ওপর উচ্চ হারে কর বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে।
No comments