‘গরু বিক্রি, জবাই বন্ধের নির্দেশনা অসাংবিধানিক’
গরু
বিক্রি ও জবাই নিষিদ্ধ করতে যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের
তরফ থেকে তাতে ভীষণ চটেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি সরকারের এমন পদক্ষেপকে ‘অসাংবিধানিক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। বলেছেন,
আমরা কি খাবো সে সিদ্ধান্ত কেন্দ্র আমাদের ওপর চাপিয়ে দিতে পারে না। এমন
নির্দেশ আমরা মানতে বাধ্য নই। এ খবর দিয়েছে অনলাইন জি নিউজ। এতে বলা হয়,
সোমবার এ নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করেন মমতা। এ সময় তিনি বলেন, সরকারের এমন
একতরফা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে লড়াই হবে আইনি। কারণ, এই নির্দেশনার মাধ্যমে
দেশের ফেডারেল যে কাঠামো রয়েছে তা ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে। তিনি মোদি সরকারের
এমন সিদ্ধান্তকে ধর্ম নিরপেক্ষতার বিরোধী, এন্টি-ফেডারেল বলে আখ্যায়িত
করেন। মমতা বলেন, আমরা কি খাবো সে সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় সরকার নিতে পারে না।
আমি তাদের কাছে অনুরোধ করবো তারা যেন এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করে। তিনি দাবি
করেন, ধর্ম নিরপেক্ষ সব দলই এ ইস্যুতে তার অবস্থানকে সমর্থন করেন।
আইনিভাবে এ সমস্যার মোকাবিলা করা হবে। এ সময় তিনি কেন্দ্রীয় সরকারকে
হুঁশিয়ার করে দেন। বলেন, গণতন্ত্র নিয়ে খেলা করবেন না। ধ্বংস করবেন না
ফেডারেল কাঠামো। উল্লেখ্য, কেরালা রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় সরকারের গরু বিষয়ক
নির্দেশনার তীব্র সমালোচনা করার একদিন পরে মমতা এমন প্রতিক্রিয়া দেখালেন। এ
বিষয়ে কেরালা রাজ্য সরকার আইনি লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছে। তারা বলেছে, গবাদি
পশু জবাইয়ের জন্য বিক্রি করা নিষিদ্ধ করা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার যে
নির্দেশনা দিয়েছে তার পাল্টা একটি আইন প্রণয়ন করবেন তারা। এ জন্য বিজেপি
নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার ও আরএসএস’কে লক্ষ্য করে কেরালার মুখ্যমন্ত্রী
পিনারায়ী বিজয়া বলেছেন, রাজ্যের মানুষের খাদ্যভ্যাস কি হবে সে শিক্ষা
দিল্লি বা নাগপুর থেকে নির্ধারণ করে দেয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। এর আগে তিনি
কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে
একটি চিঠি লিখেছিলেন। ওদিকে বিরোধী কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউডিএফ সোমবারকে
নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে একটি ‘কালো দিবস’ হিসেবে পালন করে। এ ইস্যু নিয়ে যখন
তীব্র বিতর্ক চলছিল তখন রোববারই ভারতীয় যুব কংগ্রেসকর্মী রিজিল মুকুলতি ও
তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা নেয় পুলিশ। তাতে অভিযোগ করা হয়, তারা
কান্নুর এলাকায় একটি বাছুর জবাই করেছেন। এরপর তার মাংস রান্না করে বিতরণ
করেছেন। রাজ্যের সর্বত্র ‘গরুর মাংস উৎসব’ পালনের অংশ হিসেবে কংগ্রেস ও বাম
দলগুলো এ কাজ করে। এর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকারের গরু বিক্রি ও জবাই বন্ধের
নির্দেশনার প্রতিবাদ জানানো হয়। ওদিকে কেরালায় এনডিএ জোট গতকাল মঙ্গলবার
প্রতিবাদ দিবস পালন করছে। কান্নুরে গরুর মাংসের যে উৎসব পালন করা হয়েছে তার
একটি ভিডিও-ও ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এটাকে নিষ্ঠুরতা বলে আখ্যায়িত করেছেন
কেরালা বিজেপির সভাপতি কুম্মানাম রাজাসেখারান। তিনি বলেছেন, কোনো স্বাভাবিক
মানুষের পক্ষে এমন কাজ করা সম্ভব নয়।
No comments