বেথেলহাম বৈঠকে আব্বাসকে ধমক দিলেন ট্রাম্প
পশ্চিম তীরের বেথেলহামে বৈঠকে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে রীতিমতো ধমক দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইসরাইল সফরে এসে ২৩ মে বেথেলহামে মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। বৈঠকে আব্বাসকে ধমক দিয়ে ট্রাম্প বলেন, ওয়াশিংটন বৈঠকে আপনি আমার কাছে মিথ্যা বলেছিলেন! আপনি ওখানে শান্তি প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে আপনার প্রতিশ্রুতির কথা বলেছিলেন। কিন্তু ইসরাইলের বিরুদ্ধে সহিংসতায় আপনার সংশ্লিষ্টতা ইসরাইলিরা আমাকে দেখিয়েছে। সম্প্রতি চ্যানেল-২ ব্রডকাস্টার নামের ইসরাইলের একটি টিভি এমনটা দাবি করেছে। ওই বৈঠকে একজন মার্কিন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন বলে চ্যানেলটির দাবি। চ্যানেলটি আরও বলেছে, ট্রাম্পের এমন আচরণে প্রেসিডেন্ট আব্বাস কিছুক্ষণের জন্য চুপ হয়ে যান। খবর নিউজউইক ও ইনডিপেন্ডেন্ট। তরুণ ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সহিংসতা উস্কে দেয়ার জন্য ইসরাইলি সরকার ফিলিস্তিনি নেতৃত্ব ও আব্বাসের ফাতাহ দলের ওপর দোষারোপ করে থাকে। তাদের দাবি, ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ফিলিস্তিনি তরুণরা ছুরি, বন্দুক ও গাড়ি নিয়ে পশ্চিম তীর ও জেরুজালেমে ইসরাইলিদের ওপর হামলা চালিয়ে আসছে। ফিলিস্তিনিরা বলছেন, ওই অঞ্চলে ইসরাইলিদের অবৈধ দখলদারিত্বই সহিংসতা উস্কে দিয়েছে। গত ৩ মে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্টের ওয়াশিংটন সফরে হোয়াইট হাউসের বৈঠকে ট্রাম্প আব্বাসকে সহিংসতা উস্কে দেয়া ও সন্ত্রাসের দায়ে অভিযুক্ত পরিবারগুলোকে ইসরাইলি আইনের অধীনে বিচারের পরামর্শ দেন। কিন্তু আব্বাস বলেন, আমরা আমাদের ছেলেমেয়ে, সন্তান-সন্ততিদের শান্তির সংস্কৃতির মধ্যেই লালনপালন করছি। তবে ইসরাইলে ট্রাম্পের সাম্প্রতিক সফরে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে বলেন,
আব্বাসের ওই দাবি সত্য নয় এবং তিনি ইসরাইলবিরোধী সহিংসতা উস্কে দিচ্ছেন। বেথেলহাম বৈঠকে নেতানিয়াহুর মন্ত্রণাই মূলত আব্বাসের প্রতি প্রয়োগ করেন ট্রাম্প এবং তাকে ধমকে কথা বলেন। অবশ্য পররাষ্ট্রনীতির বিভিন্ন ইস–্যতে বিদেশি নেতাদের ধমকিয়ে ট্রাম্প ইতিমধ্যে বেশ কুখ্যাতি কুড়িয়েছেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার পর গত ফেব্রুয়ারি মাসে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুলকে ফোন দিয়ে ধমকের সুরে কথা বলেন ট্রাম্প এমনকি কূটনৈতিক রীতির লঙ্ঘন করে ফোন কেটে দেন তিনি। সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে করা শরণার্থী প্রত্যর্পণ নিয়ে এক চুক্তির কথা স্মরণ করিয়ে দিলে ট্রাম্প টার্নবুলের সঙ্গে ওই আচরণ করেন। ট্রাম্প গত মঙ্গলবার নজিরবিহীন নিরাপত্তার মধ্যে প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে বৈঠকের জন্য পশ্চিম তীরের বেথেলহামে এসে পৌঁছান। এর একদির আগেই নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। ট্রাম্প বলেন, দৃঢ়প্রত্যয়, ছাড় দেয়ার মানসিকতা ও শান্তি সম্ভব এমন বিশ্বাস সঙ্গে করে ইসরাইলি ও ফিলিস্তিনিরা একটা চুক্তি সম্পন্ন করতে পারে। আব্বাসের সঙ্গে বৈঠক শেষে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে নিজেকে ইসরাইল ও ফিলিস্তিন শান্তি প্রক্রিয়ায় অংশীদার দাবি করে ট্রাম্প বলেন, আমি সত্যিই বিশ্বাস করি যদি ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়, তাহলে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রক্রিয়া শুরু হবে।
No comments