এরদোয়ানের দ্বিতীয় সুযোগ by সিনান আলজেন
তুরস্কের
সর্বশেষ সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল দেখে দেশটির গণতন্ত্রের প্রকৃতি ও
সেখানকার নাগরিকদের অগ্রাধিকার সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। গত পাঁচ মাসে
দেশটির ভোটাররা এ নিয়ে দুবার ভোট দিলেন। বহুল প্রচলিত ধারণা হচ্ছে এ বছরের
জুনে যে প্রথম নির্বাচনটি হলো, সেটা ছিল আসলে দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ
তাইয়েপ এরদোয়ানের ক্ষমতা সংহত করার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত গণভোট। এর ফলাফল ছিল
পরিষ্কার। এরদোয়ানের জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (একেপি) স্রেফ
৪১ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। দলটি ২০০০ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে
সংখ্যাগরিষ্ঠতা ভোগ করে আসছিল, এবারই তারা সেটা হারাল।
জুনের নির্বাচনে ঝুলন্ত সংসদ গঠিত হওয়ায় অনেক আলোচনা শেষে ১ নভেম্বর তুরস্কে আবার নির্বাচন হলো। এবারের নির্বাচন সম্পর্কে মানুষের মনে যে ধারণা সবচেয়ে শক্তিশালী ছিল সেটি হচ্ছে, এ নির্বাচনটি আসলে একদলীয় শাসন চলবে কি না, এ বিষয়ে গণভোট। একেপি ৪৯ শতাংশ ভোট পেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছে, ফলে তারা এখন নিশ্চিন্ত থাকতে পারে।
সর্বশেষ নির্বাচনের আগে এরদোয়ান ও একেপি দেশটির রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার ওপর জোর দিয়েছিল। ওদিকে বিরোধীরা পাল্টা যুক্তি দিয়েছে, শক্তিশালী জোট গঠিত হলে রাজনৈতিক মেরুকরণ ঠেকানো যাবে, ক্ষমতার অপব্যবহার রোধে আরও কার্যকর ব্যবস্থা গড়ে তোলা যাবে। তবে স্থিতিশীলতার বার্তাই হালে বেশি পানি পায়।
জুনের নির্বাচনের পর যে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা দেখা দেয়, অভ্যন্তরীণ ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা নাজুক হয়ে পড়লে তা আরও জটিল হয়। বিচ্ছিন্নতাবাদী কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) নতুন করে সহিংসতার আহ্বান ও ইসলামিক স্টেটের আত্মঘাতী বোমা হামলায় আঙ্কারায় ১০০ জন নিহত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে একেপির এই আহ্বান হালে পানি পায়।
ভোটের ফলাফল থেকে এটা স্পষ্ট যে তুরস্কে সংসদীয় পদ্ধতির সরকারে বিরোধী দল অকার্যকর, যারা একেপির জনপ্রিয়তায় চিড় ধরাতে আবারও ব্যর্থ হয়েছে। ব্যাপারটা যেন এমন যে, সরকার দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকলে ভোটাররা ক্লান্ত ও বিরক্ত হয়ে যায়—এই তত্ত্ব তারা ভুল প্রমাণ করেছে। এর বদলে দেখা গেল, একেপি ১৩ বছর একটানা শাসন করার পর প্রতিদ্বন্দ্বীদের হটিয়ে ভূমিধস বিজয় লাভ করল। গত জুনের নির্বাচনের চেয়ে এবার তারা ৫০ লাখ ভোট বেশি পেয়েছে, অর্থাৎ তাদের জনপ্রিয়তা ৫০ শতাংশ বেড়েছে। দুটি বিরোধী দল ন্যাশনালিস্ট মুভমেন্ট পার্টি (এমএইচপি) ও প্রভাবশালী কুর্দিশ পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি (এইচডিপি) সম্মিলিতভাবে ৩০ লাখ ভোট হারিয়েছে, অন্যদিকে মধ্য বামপন্থী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) ২৫ শতাংশ ভোট পেয়ে নিজের অবস্থান ধরে রেখেছে এবং নির্বাচনে দ্বিতীয় হয়েছে।
জুনের নির্বাচনের পর এমএইচপি যে বাধা সৃষ্টি করেছিল, তার পরিপ্রেক্ষিতে জনগণ তাদের শাস্তি দিয়েছে। সে সময় তাদের জোট সরকারে যোগ দেওয়ার সব ধরনের প্রস্তাব দেওয়া হলেও তারা সেটা প্রত্যাখ্যান করেছিল। এবার তারা ১২ শতাংশ ভোট পেয়েছে, জুনে পেয়েছিল ১৬ শতাংশ ভোট, কিন্তু তারা সংসদের অর্ধেক আসন হারিয়েছে। এইচডিপি পিকেকের কাছ থেকে নিজেদের সরিয়ে আনতে না পারায় দুর্বল হয়ে পড়ে। কারণ ভোটারদের একটা বড় অংশ মনে করে, তুরস্কে সহিংসতা বাড়ার জন্য এই পিকেকে দায়ী।
নির্বাচনের আগে ঝুঁকি ছিল, এইচডিপি ১০ শতাংশ ভোট পাবে না, ফলে তারা সংসদে যেতে পারত না। সেটা হলে একেপি এমন সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করতে পারত, যার বলে তারা নিজেরাই সংবিধান সংশোধন করতে পারত। শেষমেশ দেখা গেল, এইচডিপি ১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ ভোট পেয়েছে, গত জুনের নির্বাচনে তারা ১৩ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। এর ফলে নির্বাহী প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য এরদোয়ানের যে নমনীয় সংসদ দরকার হতো, সেটা তিনি পেলেন না।
এসব সত্ত্বেও তুরস্কের নতুন সরকার যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে, তাতে তারা দেশটির সবচেয়ে কঠিন ও আসন্ন নীতিগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারবে—এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে কুর্দিদের সঙ্গে শান্তি-প্রক্রিয়ার বিষয়টি। এর আগেও এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নির্বাচনের আগে পিকেকে নতুন করে সহিংসতা শুরু করলে এবং একেপির নেতৃত্ব ক্রমবর্ধমান হারে জাতীয়তাবাদী ও সামরিক বলপ্রয়োগের বাগাড়ম্বর শুরু করলে তা স্থগিত করা হয়। নির্বাচন শেষ হয়েছে। মানুষ আশা করছে, নতুন সরকার পুনরায় আলোচনা শুরু করবে। আর সেটা সফল হলে তার প্রভাব বেশ গুরুত্বপূর্ণই হবে। সেটা শুধু দেশের ভেতরেই অনুভূত হবে না, ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধের ক্ষেত্রেও তা অনুভূত হবে।
একেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে তুরস্ক পররাষ্ট্রনীতিতেও পরিবর্তন আনতে পারবে। আরব বসন্তের পর পররাষ্ট্রনীতির কারণে তুরস্ক নিজ অঞ্চলে বন্ধু ও প্রভাব হারিয়েছে, কিন্তু তারা সম্প্রতি পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে পররাষ্ট্রনীতিতে পরিবর্তন এনেছে। ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে তারা যে নতুন করে অঙ্গীকার করেছে, সে কারণে পশ্চিমা সহযোগীদের সঙ্গে তাদের মন-কষাকষির অবসান ঘটেছে।
নতুন সরকারকে পিতৃতান্ত্রিক কায়দায় দেশ পরিচালনা করলে চলবে না। একেপি যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে, তাতে তার স্বস্তি বোধ করা উচিত। এমনকি শান্তিপূর্ণ উপায়ে কেউ যদি তার বিরোধিতাও করে, তাহলে তার উচিত হবে সহিষ্ণুতার সঙ্গে তা মোকাবিলা করা। সে ইউরোপীয় ইউনিয়নে ঢোকার জন্য আলোচনা করছে, ফলে তার এমনভাবে ভিন্নমত মোকাবিলা করা উচিত, যাতে তা এই চলমান আলোচনা প্রক্রিয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। দুটি নির্বাচনের ফলাফল পরিষ্কার: তুরস্কের ভোটাররা শক্তিশালী ও স্থিতিশীল সরকার চায়, যে সরকার বিরোধীদের নিপীড়ন করবে না।
ইংরেজি থেকে অনুবাদ: প্রতীক বর্ধন; স্বত্ব: প্রজেক্ট সিন্ডিকেট
সিনান আলজেন: ইস্তাম্বুলভিত্তিক ইডিএএম থিংক ট্যাংকের চেয়ারম্যান।
জুনের নির্বাচনে ঝুলন্ত সংসদ গঠিত হওয়ায় অনেক আলোচনা শেষে ১ নভেম্বর তুরস্কে আবার নির্বাচন হলো। এবারের নির্বাচন সম্পর্কে মানুষের মনে যে ধারণা সবচেয়ে শক্তিশালী ছিল সেটি হচ্ছে, এ নির্বাচনটি আসলে একদলীয় শাসন চলবে কি না, এ বিষয়ে গণভোট। একেপি ৪৯ শতাংশ ভোট পেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছে, ফলে তারা এখন নিশ্চিন্ত থাকতে পারে।
সর্বশেষ নির্বাচনের আগে এরদোয়ান ও একেপি দেশটির রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার ওপর জোর দিয়েছিল। ওদিকে বিরোধীরা পাল্টা যুক্তি দিয়েছে, শক্তিশালী জোট গঠিত হলে রাজনৈতিক মেরুকরণ ঠেকানো যাবে, ক্ষমতার অপব্যবহার রোধে আরও কার্যকর ব্যবস্থা গড়ে তোলা যাবে। তবে স্থিতিশীলতার বার্তাই হালে বেশি পানি পায়।
জুনের নির্বাচনের পর যে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা দেখা দেয়, অভ্যন্তরীণ ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা নাজুক হয়ে পড়লে তা আরও জটিল হয়। বিচ্ছিন্নতাবাদী কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) নতুন করে সহিংসতার আহ্বান ও ইসলামিক স্টেটের আত্মঘাতী বোমা হামলায় আঙ্কারায় ১০০ জন নিহত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে একেপির এই আহ্বান হালে পানি পায়।
ভোটের ফলাফল থেকে এটা স্পষ্ট যে তুরস্কে সংসদীয় পদ্ধতির সরকারে বিরোধী দল অকার্যকর, যারা একেপির জনপ্রিয়তায় চিড় ধরাতে আবারও ব্যর্থ হয়েছে। ব্যাপারটা যেন এমন যে, সরকার দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকলে ভোটাররা ক্লান্ত ও বিরক্ত হয়ে যায়—এই তত্ত্ব তারা ভুল প্রমাণ করেছে। এর বদলে দেখা গেল, একেপি ১৩ বছর একটানা শাসন করার পর প্রতিদ্বন্দ্বীদের হটিয়ে ভূমিধস বিজয় লাভ করল। গত জুনের নির্বাচনের চেয়ে এবার তারা ৫০ লাখ ভোট বেশি পেয়েছে, অর্থাৎ তাদের জনপ্রিয়তা ৫০ শতাংশ বেড়েছে। দুটি বিরোধী দল ন্যাশনালিস্ট মুভমেন্ট পার্টি (এমএইচপি) ও প্রভাবশালী কুর্দিশ পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি (এইচডিপি) সম্মিলিতভাবে ৩০ লাখ ভোট হারিয়েছে, অন্যদিকে মধ্য বামপন্থী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) ২৫ শতাংশ ভোট পেয়ে নিজের অবস্থান ধরে রেখেছে এবং নির্বাচনে দ্বিতীয় হয়েছে।
জুনের নির্বাচনের পর এমএইচপি যে বাধা সৃষ্টি করেছিল, তার পরিপ্রেক্ষিতে জনগণ তাদের শাস্তি দিয়েছে। সে সময় তাদের জোট সরকারে যোগ দেওয়ার সব ধরনের প্রস্তাব দেওয়া হলেও তারা সেটা প্রত্যাখ্যান করেছিল। এবার তারা ১২ শতাংশ ভোট পেয়েছে, জুনে পেয়েছিল ১৬ শতাংশ ভোট, কিন্তু তারা সংসদের অর্ধেক আসন হারিয়েছে। এইচডিপি পিকেকের কাছ থেকে নিজেদের সরিয়ে আনতে না পারায় দুর্বল হয়ে পড়ে। কারণ ভোটারদের একটা বড় অংশ মনে করে, তুরস্কে সহিংসতা বাড়ার জন্য এই পিকেকে দায়ী।
নির্বাচনের আগে ঝুঁকি ছিল, এইচডিপি ১০ শতাংশ ভোট পাবে না, ফলে তারা সংসদে যেতে পারত না। সেটা হলে একেপি এমন সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করতে পারত, যার বলে তারা নিজেরাই সংবিধান সংশোধন করতে পারত। শেষমেশ দেখা গেল, এইচডিপি ১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ ভোট পেয়েছে, গত জুনের নির্বাচনে তারা ১৩ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। এর ফলে নির্বাহী প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য এরদোয়ানের যে নমনীয় সংসদ দরকার হতো, সেটা তিনি পেলেন না।
এসব সত্ত্বেও তুরস্কের নতুন সরকার যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে, তাতে তারা দেশটির সবচেয়ে কঠিন ও আসন্ন নীতিগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারবে—এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে কুর্দিদের সঙ্গে শান্তি-প্রক্রিয়ার বিষয়টি। এর আগেও এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নির্বাচনের আগে পিকেকে নতুন করে সহিংসতা শুরু করলে এবং একেপির নেতৃত্ব ক্রমবর্ধমান হারে জাতীয়তাবাদী ও সামরিক বলপ্রয়োগের বাগাড়ম্বর শুরু করলে তা স্থগিত করা হয়। নির্বাচন শেষ হয়েছে। মানুষ আশা করছে, নতুন সরকার পুনরায় আলোচনা শুরু করবে। আর সেটা সফল হলে তার প্রভাব বেশ গুরুত্বপূর্ণই হবে। সেটা শুধু দেশের ভেতরেই অনুভূত হবে না, ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধের ক্ষেত্রেও তা অনুভূত হবে।
একেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে তুরস্ক পররাষ্ট্রনীতিতেও পরিবর্তন আনতে পারবে। আরব বসন্তের পর পররাষ্ট্রনীতির কারণে তুরস্ক নিজ অঞ্চলে বন্ধু ও প্রভাব হারিয়েছে, কিন্তু তারা সম্প্রতি পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে পররাষ্ট্রনীতিতে পরিবর্তন এনেছে। ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে তারা যে নতুন করে অঙ্গীকার করেছে, সে কারণে পশ্চিমা সহযোগীদের সঙ্গে তাদের মন-কষাকষির অবসান ঘটেছে।
নতুন সরকারকে পিতৃতান্ত্রিক কায়দায় দেশ পরিচালনা করলে চলবে না। একেপি যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে, তাতে তার স্বস্তি বোধ করা উচিত। এমনকি শান্তিপূর্ণ উপায়ে কেউ যদি তার বিরোধিতাও করে, তাহলে তার উচিত হবে সহিষ্ণুতার সঙ্গে তা মোকাবিলা করা। সে ইউরোপীয় ইউনিয়নে ঢোকার জন্য আলোচনা করছে, ফলে তার এমনভাবে ভিন্নমত মোকাবিলা করা উচিত, যাতে তা এই চলমান আলোচনা প্রক্রিয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। দুটি নির্বাচনের ফলাফল পরিষ্কার: তুরস্কের ভোটাররা শক্তিশালী ও স্থিতিশীল সরকার চায়, যে সরকার বিরোধীদের নিপীড়ন করবে না।
ইংরেজি থেকে অনুবাদ: প্রতীক বর্ধন; স্বত্ব: প্রজেক্ট সিন্ডিকেট
সিনান আলজেন: ইস্তাম্বুলভিত্তিক ইডিএএম থিংক ট্যাংকের চেয়ারম্যান।
No comments