স্বাভাবিক অবস্থা থেকে দূরে চলে এসেছি -বিশেষ সাক্ষাৎকারে : আনিসুজ্জামান by মশিউল আলম
শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেট ও লালমাটিয়ার সাম্প্রতিক জোড়া হামলা ও হত্যাকাণ্ড সন্ত্রস্ত করে তুলেছে দেশের মানুষকে। এ ঘটনার নানা প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেছেন ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মশিউল আলম
প্রথম আলো: দুদিন আগে একজন প্রকাশক নৃশংসভাবে খুন হলেন। একই দিনে আরেকজন প্রকাশক ও দুজন লেখক-ব্লগারও দুর্বৃত্তদের একই ধরনের আক্রমণে গুরুতরভাবে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এর আগে দুজন বিদেশি নাগরিক খুন হলেন। একের পর এক নির্বিঘ্নে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড কেন ঘটছে? কীভাবে ঘটতে পারছে?
আনিসুজ্জামান: আমি মনে করি, প্রকাশক ফয়সল আরেফিন (দীপন) হত্যা এবং আহমেদুর রশীদ (টুটুল) ও তাঁর বন্ধুদের ওপর আক্রমণ দুই বিদেশি নাগরিক হত্যার ঘটনা থেকে ভিন্ন। কেননা, দেখা যাচ্ছে যে ধর্মীয় উগ্রপন্থীরা ২০১৩ সালে রাজীব হায়দারকে খুন করল, সেই থেকে একের পর এক ব্লগার এবং লেখকদের হত্যা করে আসছে। তার আগেও তারা হুমায়ুন আজাদকে হত্যা করেছে। এটা তো জানাই যাচ্ছে যে অভিজিৎ রায়ের বই প্রকাশ করার জন্য ফয়সলকে হত্যা করা হয়েছে, আহমেদুরের ওপর আক্রমণ চালানো হয়েছে। এ ধরনের আক্রমণ ভিন্নমতের ওপর আক্রমণ, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ। এটা আমাদের জন্য খুব বড় আশঙ্কার বিষয়। বিদেশিদের ওপর আক্রমণ নিশ্চয়ই শোকাবহ, তবে যত দূর জানা যাচ্ছে, অন্তত ইতালীয় নাগরিক হত্যার বিষয়ে কাগজে যা পড়ছি, তাতে মনে হচ্ছে এর পেছনের উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশের পরিস্থিতি স্থিতিশীল নয়, এটা প্রমাণ করা। কাজেই দুটি বিষয়কে আমি আলাদা করে দেখছি। ব্লগার-লেখক হত্যা বিদেশি হত্যার আগে থেকে ঘটছে।
প্রথম আলো: প্রশ্ন হলো, একের পর এক একই কায়দায় লেখক-প্রকাশক হত্যার এসব ঘটনা কেন ঘটতে পারছে?
আনিসুজ্জামান: এসব হত্যাকাণ্ডের তদন্ত হচ্ছে, কিন্তু তদন্তের গতি এতই ধীর যে আমরা কোনো ফল দেখতে পাচ্ছি না। এক ক্ষেত্রে তৃতীয় লিঙ্গের কজন মানুষ দুজন অপরাধীকে হাতেনাতে ধরে দিল, সে ঘটনায়ও তদন্তের খুব একটা অগ্রগতি হয়েছে বলে মনে হয় না। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে তারা তদন্ত করছে, অভিযোগপত্র তৈরি করছে; কিন্তু এখনো পর্যন্ত ফলপ্রসূ কিছু ঘটেছে বলে মনে হয় না। এটা আমাদের আরও বড় উদ্বেগের বিষয়। আমাদের মনে হয় যে অপরাধীদের যদি দ্রুত আইনের আওতায় না আনা যায়, তাহলে এ ধরনের অপরাধ আরও ঘটতে থাকবে।
প্রথম আলো: প্রকাশক খুন হওয়ার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন, এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কোনো অবনতি ঘটেনি। আপনার প্রতিক্রিয়া কী?
আনিসুজ্জামান: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এ কথাটা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা তো দেখছি যে এগুলো ধারাবাহিক ঘটনা, সেখানে এটাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলার কোনো সুযোগ আছে বলে মনে হয় না। তিনি যদি গত দুই বছরের হত্যাকাণ্ডগুলোর কথা মনে রাখেন, তাহলে এই ঘটনাকে কোনোভাবেই বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলতে পারেন না। সংঘবদ্ধ জঙ্গিবাদী গোষ্ঠী ভিন্নমতের লোকদের আক্রমণ ও হত্যা করছে, সেই হত্যা-আক্রমণের দায় স্বীকার করছে, প্রতি মাসে একজনকে হত্যা করবে বলে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। এটা কোনোভাবেই বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে উপেক্ষা করা যায় না। এটাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলা চোখ বন্ধ করে রাখার শামিল।
প্রথম আলো: নিহত প্রকাশক ফয়সল আরেফিনের (দীপন) বাবা অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেছেন, তিনি বিচার চান না, কারণ আইন দিয়ে এ সমস্যার সমাধান হবে না, এটা রাজনৈতিক সমস্যা, সাংস্কৃতিক সমস্যা। আপনি কী বলেন?
আনিসুজ্জামান: আবুল কাসেম ফজলুল হক ওই সময়ে স্বভাবতই আবেগ-ভারাক্রান্ত হয়ে বলেছেন যে তিনি বিচার চান না। বিচার না চাইবার একটি কারণ হতে পারে এই যে দেখা যাচ্ছে বিচার হচ্ছে না। একধরনের অভিমান তাঁর কথার মধ্যে কাজ করছে। সমস্যা রাজনৈতিক এটা ঠিক, কিন্তু রাজনৈতিক সমস্যার সঙ্গে যখন ফৌজদারি অপরাধ যুক্ত হয়ে যায়, তখন নিশ্চয়ই আমাদের আইনের সহায়তা নিতে হবে। বিচারের জন্য আমরা অপেক্ষা করব।
প্রথম আলো: ধর্মভিত্তিক রাজনীতি ও ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি—উভয় পক্ষের রাজনীতিই ক্ষতিকর হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আবুল কাসেম ফজলুল হক। এ ক্ষেত্রে কি সংলাপ, আলোচনা, সমঝোতা, বোঝাপড়ার সুযোগ রয়েছে কি না, যেমনটা দেখা গেছে তিউনিসিয়ায়?
আনিসুজ্জামান: আমি মনে করি, দুই পক্ষকে এক করে দেখা ঠিক নয়। ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে আমরা দেশকে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি—এমন কথা মেনে নেওয়াও খুব কঠিন। কারণ পাকিস্তানের ধর্মীয় রাষ্ট্রীয় কাঠামো থেকে বের হয়েই আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছি। বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাকাল থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা রাষ্ট্রের একটা স্তম্ভ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সেখানে যাঁরা ধর্মরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চান বা ধর্মীয় আদর্শে দেশ চালাতে চান, তাঁদের সঙ্গে যদি ধর্মনিরপেক্ষবাদীদের এক করে দেখি, তাহলে ঠিক হয় না। এই দুই পক্ষের মধ্যে সংলাপ-সমঝোতার সুযোগ খুব বেশি নেই। কারণ, যারা এসব আক্রমণ পরিচালনা করছে, হত্যা করছে, তারা তো কোনো যুক্তিতর্কের মধ্যে যাচ্ছে না, গেলে তো তারা লিখেই প্রতিবাদ করত। হয়তো ওই মতাবলম্বী অনেকের সঙ্গে আলোচনা সম্ভব, যারা সহিংসতার পথে অগ্রসর হচ্ছেন না। কিন্তু যারা সহিংসতা করছে, যারা হত্যা করছে, তারা তো সিদ্ধান্তই নিয়েছে যে বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার মধ্যে না গিয়ে শারীরিক বলপ্রয়োগের মধ্য দিয়ে তারা সবকিছু করবে।
প্রথম আলো: অনেকে অভিযোগ করছেন, এর আগে লেখক-ব্লগার হত্যার যেসব ঘটনা ঘটেছে, সেগুলোর ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কাজে স্বচ্ছতার অভাব আছে, প্রকৃত অপরাধীদের ধরা হয়নি। জজ মিয়া প্রসঙ্গ আবার ফিরে এসেছে। এটা কি হত্যাকারী গোষ্ঠীর জন্য উৎসাহব্যঞ্জক হতে পারে না?
আনিসুজ্জামান: আমি সরাসরি অভিযোগ আনতে পারব না, কারণ আমার কাছে ও রকম তথ্য নেই। কিন্তু এটা খুবই স্পষ্ট যে এসব ঘটনার তদন্তের ধীরগতি এবং আদালতে মামলা না ওঠায় আমাদের মধ্যেও শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে, আমাদের নিরাপত্তাবোধ বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আজকে আমাকে আমার বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন সাবধানে চলাফেরা করতে বলছেন। স্বাধীন দেশে কেন আমাকে এই ধরনের সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ শুনতে হবে? দেশের স্বাভাবিক অবস্থা থেকে আমরা দূরে চলে এসেছি। যাঁরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে আছেন, এটার জন্য আমরা অবশ্যই তাঁদের দায়ী করব।
প্রথম আলো: এসব হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার সুযোগের অভাব, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারসহ দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির কোনো সম্পর্ক থেকে থাকতে পারে কি না?
আনিসুজ্জামান: সরাসরি সম্পর্ক আছে বলে আমার মনে হয় না। কিন্তু দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশের জন্য সবটাই আমাদের বিবেচনায় নেওয়া উচিত। নিশ্চয়ই আশা করব, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যাঁরা আছেন, তাঁরা যেমন সভা-সমাবেশ করার অধিকার ভোগ করেন, তেমনি যাঁরা বিরোধী দলে আছেন, তাঁরাও সেই অধিকার ভোগ করবেন। তাঁদের অধিকার সংকুচিত হলে গণতন্ত্রের পরিবেশ কলুষিত হয়। তবে আমার মনে হয় না বিরোধী দল এমন অবস্থার মধ্যে পড়ে গেছে, যে জন্য তাদের এ ধরনের অসাংবিধানিক কর্মপন্থা নিতে হবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার যাঁরা রোধ করতে চান, ওই বিচারে যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত, তাঁরা অবশ্যই এ ধরনের কাজ সমর্থন করতে পারেন।
প্রথম আলো: আপনি কি লক্ষ করছেন, দেশে নানাভাবে চিন্তার স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সংবাদমাধ্যমগুলোর স্বাধীনতা সংকুচিত হয়ে আসছে?
আনিসুজ্জামান: আমার মনে হয়, যেহেতু আমরা সংসদীয় ব্যবস্থায় ফিরে এসেছি, কাজেই সংসদকে কার্যকর করার চেষ্টা পুরোমাত্রায় করতে হবে। এখন সংসদ কার্যকর নয়। সংবিধানে যেসব স্বাধীনতার অঙ্গীকার করা হয়েছে, তার মধ্যে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা, ব্যক্তিস্বাধীনতা, বাক্স্বাধীনতা—এগুলো যাতে মানুষ প্রয়োগ করতে পারে, সেই নিশ্চয়তা রাষ্ট্রকে দিতে হবে।
প্রথম আলো: কিন্তু তা তো পাওয়া যাচ্ছে না।
আনিসুজ্জামান: না, সর্বত্র এবং সকল সময়ে তা পাওয়া যাচ্ছে না। নাগরিকদের পক্ষ থেকে আমাদের প্রয়োজন সেটা দাবি করা। যাঁরা ক্ষমতায় আছেন, তাঁরা বলছেন যে আমাদের দেশে সংবাদপত্র যত স্বাধীনতা ভোগ করে, অনেক দেশেই তা করে না। এটা হতেও পারে...
প্রথম আলো: আপনি কি ক্ষমতাসীনদের এই দাবির সঙ্গে একমত বোধ করেন?
আনিসুজ্জামান: না, আমার মনে হয় যে আমাদের দেশে সংবাদমাধ্যম যে স্বাধীনতা ভোগ করে তা যথেষ্ট নয়। অনেক ক্ষেত্রেই আমরা দেখছি যে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ বাধা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করছে, সংবাদকর্মীদের স্বাধীনতার অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
প্রথম আলো: সরকারের বাইরে যে রাজনৈতিক দলগুলো আছে, এ অবস্থায় তাদের কিছু করণীয় আছে কি না?
আনিসুজ্জামান: আছে নিশ্চয়ই।
প্রথম আলো: কিন্তু বিরোধী দল অভিযোগ করছে, সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক, স্বৈরতান্ত্রিক পন্থায় দেশ চালানো হচ্ছে, তাদের কোনো কর্মকাণ্ডই করতে দেওয়া হচ্ছে না...
আনিসুজ্জামান: তাদের এই অভিযোগে কিছুটা অতিরঞ্জন আছে। তাদের মূল আপত্তি গত সংসদ নির্বাচন নিয়ে। এটা এমন একটা বিষয়, যার কোনো সহজ সমাধান আমি দেখতে পাচ্ছি না। বিরোধী দল তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যেতে চায়নি। এখন হয়তো তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়াও নির্বাচনে যেতে পারে, কিন্তু নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়ে তাদের অন্য দাবি আছে। সেখানে সরকারের সঙ্গে তাদের মত মিলবে বলে মনে হয় না। বিরোধী দল যে সভা-সমাবেশ একদমই করতে পারছে না, তাও ঠিক নয়।
প্রথম আলো: কিন্তু তাঁরা বলছেন, তাঁরা পারছেন না। তাঁদের নেতা-কর্মীদের ওপর প্রবল দমন-পীড়ন চালানো হচ্ছে, অনেক নেতা-কর্মী কারারুদ্ধ, অনেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে প্রচুর মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসবের প্রতিক্রিয়া অন্য কোনোভাবে ঘটছে কি না?
আনিসুজ্জামান: এগুলোর তো সহজ মীমাংসা মুশকিল, কেননা সরকারকে বললে সরকার বলবে, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করার জন্য মামলা হচ্ছে। এটা একটা অশুভ চক্রের মতো ব্যাপার: সন্ত্রাসী কার্যকলাপ হচ্ছে বলে মামলা হচ্ছে, মামলা হচ্ছে বলে স্বাভাবিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করা যাচ্ছে না; সেটা যাচ্ছে না বলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হচ্ছে—এটা একটা ভিশাস সার্কল।
প্রথম আলো: সব মিলিয়ে দেশে যে অবস্থা চলছে, তা কি খুবই অস্বাভাবিক নয়? এ থেকে বেরোনোর পথ কী?
আনিসুজ্জামান: বেরোতে হবে। গণতন্ত্রে বিরোধী দলের জন্য জায়গা অবশ্যই ছাড়তে হবে। সেটা সরকারকে করতে হবে। আর বিরোধী দলকেও বলপ্রয়োগ বা সন্ত্রাস-সহিংসতার পথ ত্যাগ করতে হবে।
প্রথম আলো: লেখক-প্রকাশক হত্যার ঘটনা থেকে দেশে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, এই ক্ষেত্রে সরকারের আশু করণীয় কী বলে আপনি মনে করেন?
আনিসুজ্জামান: হত্যাকাণ্ডগুলোর তদন্ত দ্রুত শেষ করতে হবে, বিচারপ্রক্রিয়া দ্রুত এগিয়ে নিতে হবে...
প্রথম আলো: এসব তদন্ত কি সুষ্ঠু, সঠিক ও স্বচ্ছ হতে হবে না? প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারি দলের নেতারা তদন্ত শুরু হওয়ার আগেই যেভাবে প্রধান দলকে দোষারোপ করে কথাবার্তা বলছেন, তাতে কি তদন্ত সুষ্ঠু হতে পারে?
আনিসুজ্জামান: এ দেশে দোষারোপের রাজনীতি বহুকাল ধরে চলে আসছে। তা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসা উচিত। তদন্তগুলো সুষ্ঠু হতে হবে, এটা যদি আমরা চাই, তাহলে আগে থেকে কাউকে দোষারোপ করা সংগত নয়। তদন্তের ফলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
প্রথম আলো: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আনিসুজ্জামান: ধন্যবাদ।
প্রথম আলো: দুদিন আগে একজন প্রকাশক নৃশংসভাবে খুন হলেন। একই দিনে আরেকজন প্রকাশক ও দুজন লেখক-ব্লগারও দুর্বৃত্তদের একই ধরনের আক্রমণে গুরুতরভাবে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এর আগে দুজন বিদেশি নাগরিক খুন হলেন। একের পর এক নির্বিঘ্নে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড কেন ঘটছে? কীভাবে ঘটতে পারছে?
আনিসুজ্জামান: আমি মনে করি, প্রকাশক ফয়সল আরেফিন (দীপন) হত্যা এবং আহমেদুর রশীদ (টুটুল) ও তাঁর বন্ধুদের ওপর আক্রমণ দুই বিদেশি নাগরিক হত্যার ঘটনা থেকে ভিন্ন। কেননা, দেখা যাচ্ছে যে ধর্মীয় উগ্রপন্থীরা ২০১৩ সালে রাজীব হায়দারকে খুন করল, সেই থেকে একের পর এক ব্লগার এবং লেখকদের হত্যা করে আসছে। তার আগেও তারা হুমায়ুন আজাদকে হত্যা করেছে। এটা তো জানাই যাচ্ছে যে অভিজিৎ রায়ের বই প্রকাশ করার জন্য ফয়সলকে হত্যা করা হয়েছে, আহমেদুরের ওপর আক্রমণ চালানো হয়েছে। এ ধরনের আক্রমণ ভিন্নমতের ওপর আক্রমণ, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ। এটা আমাদের জন্য খুব বড় আশঙ্কার বিষয়। বিদেশিদের ওপর আক্রমণ নিশ্চয়ই শোকাবহ, তবে যত দূর জানা যাচ্ছে, অন্তত ইতালীয় নাগরিক হত্যার বিষয়ে কাগজে যা পড়ছি, তাতে মনে হচ্ছে এর পেছনের উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশের পরিস্থিতি স্থিতিশীল নয়, এটা প্রমাণ করা। কাজেই দুটি বিষয়কে আমি আলাদা করে দেখছি। ব্লগার-লেখক হত্যা বিদেশি হত্যার আগে থেকে ঘটছে।
প্রথম আলো: প্রশ্ন হলো, একের পর এক একই কায়দায় লেখক-প্রকাশক হত্যার এসব ঘটনা কেন ঘটতে পারছে?
আনিসুজ্জামান: এসব হত্যাকাণ্ডের তদন্ত হচ্ছে, কিন্তু তদন্তের গতি এতই ধীর যে আমরা কোনো ফল দেখতে পাচ্ছি না। এক ক্ষেত্রে তৃতীয় লিঙ্গের কজন মানুষ দুজন অপরাধীকে হাতেনাতে ধরে দিল, সে ঘটনায়ও তদন্তের খুব একটা অগ্রগতি হয়েছে বলে মনে হয় না। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে তারা তদন্ত করছে, অভিযোগপত্র তৈরি করছে; কিন্তু এখনো পর্যন্ত ফলপ্রসূ কিছু ঘটেছে বলে মনে হয় না। এটা আমাদের আরও বড় উদ্বেগের বিষয়। আমাদের মনে হয় যে অপরাধীদের যদি দ্রুত আইনের আওতায় না আনা যায়, তাহলে এ ধরনের অপরাধ আরও ঘটতে থাকবে।
প্রথম আলো: প্রকাশক খুন হওয়ার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন, এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কোনো অবনতি ঘটেনি। আপনার প্রতিক্রিয়া কী?
আনিসুজ্জামান: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এ কথাটা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা তো দেখছি যে এগুলো ধারাবাহিক ঘটনা, সেখানে এটাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলার কোনো সুযোগ আছে বলে মনে হয় না। তিনি যদি গত দুই বছরের হত্যাকাণ্ডগুলোর কথা মনে রাখেন, তাহলে এই ঘটনাকে কোনোভাবেই বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলতে পারেন না। সংঘবদ্ধ জঙ্গিবাদী গোষ্ঠী ভিন্নমতের লোকদের আক্রমণ ও হত্যা করছে, সেই হত্যা-আক্রমণের দায় স্বীকার করছে, প্রতি মাসে একজনকে হত্যা করবে বলে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। এটা কোনোভাবেই বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে উপেক্ষা করা যায় না। এটাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলা চোখ বন্ধ করে রাখার শামিল।
প্রথম আলো: নিহত প্রকাশক ফয়সল আরেফিনের (দীপন) বাবা অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেছেন, তিনি বিচার চান না, কারণ আইন দিয়ে এ সমস্যার সমাধান হবে না, এটা রাজনৈতিক সমস্যা, সাংস্কৃতিক সমস্যা। আপনি কী বলেন?
আনিসুজ্জামান: আবুল কাসেম ফজলুল হক ওই সময়ে স্বভাবতই আবেগ-ভারাক্রান্ত হয়ে বলেছেন যে তিনি বিচার চান না। বিচার না চাইবার একটি কারণ হতে পারে এই যে দেখা যাচ্ছে বিচার হচ্ছে না। একধরনের অভিমান তাঁর কথার মধ্যে কাজ করছে। সমস্যা রাজনৈতিক এটা ঠিক, কিন্তু রাজনৈতিক সমস্যার সঙ্গে যখন ফৌজদারি অপরাধ যুক্ত হয়ে যায়, তখন নিশ্চয়ই আমাদের আইনের সহায়তা নিতে হবে। বিচারের জন্য আমরা অপেক্ষা করব।
প্রথম আলো: ধর্মভিত্তিক রাজনীতি ও ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি—উভয় পক্ষের রাজনীতিই ক্ষতিকর হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আবুল কাসেম ফজলুল হক। এ ক্ষেত্রে কি সংলাপ, আলোচনা, সমঝোতা, বোঝাপড়ার সুযোগ রয়েছে কি না, যেমনটা দেখা গেছে তিউনিসিয়ায়?
আনিসুজ্জামান: আমি মনে করি, দুই পক্ষকে এক করে দেখা ঠিক নয়। ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে আমরা দেশকে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি—এমন কথা মেনে নেওয়াও খুব কঠিন। কারণ পাকিস্তানের ধর্মীয় রাষ্ট্রীয় কাঠামো থেকে বের হয়েই আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছি। বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাকাল থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা রাষ্ট্রের একটা স্তম্ভ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সেখানে যাঁরা ধর্মরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চান বা ধর্মীয় আদর্শে দেশ চালাতে চান, তাঁদের সঙ্গে যদি ধর্মনিরপেক্ষবাদীদের এক করে দেখি, তাহলে ঠিক হয় না। এই দুই পক্ষের মধ্যে সংলাপ-সমঝোতার সুযোগ খুব বেশি নেই। কারণ, যারা এসব আক্রমণ পরিচালনা করছে, হত্যা করছে, তারা তো কোনো যুক্তিতর্কের মধ্যে যাচ্ছে না, গেলে তো তারা লিখেই প্রতিবাদ করত। হয়তো ওই মতাবলম্বী অনেকের সঙ্গে আলোচনা সম্ভব, যারা সহিংসতার পথে অগ্রসর হচ্ছেন না। কিন্তু যারা সহিংসতা করছে, যারা হত্যা করছে, তারা তো সিদ্ধান্তই নিয়েছে যে বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার মধ্যে না গিয়ে শারীরিক বলপ্রয়োগের মধ্য দিয়ে তারা সবকিছু করবে।
প্রথম আলো: অনেকে অভিযোগ করছেন, এর আগে লেখক-ব্লগার হত্যার যেসব ঘটনা ঘটেছে, সেগুলোর ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কাজে স্বচ্ছতার অভাব আছে, প্রকৃত অপরাধীদের ধরা হয়নি। জজ মিয়া প্রসঙ্গ আবার ফিরে এসেছে। এটা কি হত্যাকারী গোষ্ঠীর জন্য উৎসাহব্যঞ্জক হতে পারে না?
আনিসুজ্জামান: আমি সরাসরি অভিযোগ আনতে পারব না, কারণ আমার কাছে ও রকম তথ্য নেই। কিন্তু এটা খুবই স্পষ্ট যে এসব ঘটনার তদন্তের ধীরগতি এবং আদালতে মামলা না ওঠায় আমাদের মধ্যেও শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে, আমাদের নিরাপত্তাবোধ বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আজকে আমাকে আমার বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন সাবধানে চলাফেরা করতে বলছেন। স্বাধীন দেশে কেন আমাকে এই ধরনের সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ শুনতে হবে? দেশের স্বাভাবিক অবস্থা থেকে আমরা দূরে চলে এসেছি। যাঁরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে আছেন, এটার জন্য আমরা অবশ্যই তাঁদের দায়ী করব।
প্রথম আলো: এসব হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার সুযোগের অভাব, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারসহ দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির কোনো সম্পর্ক থেকে থাকতে পারে কি না?
আনিসুজ্জামান: সরাসরি সম্পর্ক আছে বলে আমার মনে হয় না। কিন্তু দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশের জন্য সবটাই আমাদের বিবেচনায় নেওয়া উচিত। নিশ্চয়ই আশা করব, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যাঁরা আছেন, তাঁরা যেমন সভা-সমাবেশ করার অধিকার ভোগ করেন, তেমনি যাঁরা বিরোধী দলে আছেন, তাঁরাও সেই অধিকার ভোগ করবেন। তাঁদের অধিকার সংকুচিত হলে গণতন্ত্রের পরিবেশ কলুষিত হয়। তবে আমার মনে হয় না বিরোধী দল এমন অবস্থার মধ্যে পড়ে গেছে, যে জন্য তাদের এ ধরনের অসাংবিধানিক কর্মপন্থা নিতে হবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার যাঁরা রোধ করতে চান, ওই বিচারে যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত, তাঁরা অবশ্যই এ ধরনের কাজ সমর্থন করতে পারেন।
প্রথম আলো: আপনি কি লক্ষ করছেন, দেশে নানাভাবে চিন্তার স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সংবাদমাধ্যমগুলোর স্বাধীনতা সংকুচিত হয়ে আসছে?
আনিসুজ্জামান: আমার মনে হয়, যেহেতু আমরা সংসদীয় ব্যবস্থায় ফিরে এসেছি, কাজেই সংসদকে কার্যকর করার চেষ্টা পুরোমাত্রায় করতে হবে। এখন সংসদ কার্যকর নয়। সংবিধানে যেসব স্বাধীনতার অঙ্গীকার করা হয়েছে, তার মধ্যে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা, ব্যক্তিস্বাধীনতা, বাক্স্বাধীনতা—এগুলো যাতে মানুষ প্রয়োগ করতে পারে, সেই নিশ্চয়তা রাষ্ট্রকে দিতে হবে।
প্রথম আলো: কিন্তু তা তো পাওয়া যাচ্ছে না।
আনিসুজ্জামান: না, সর্বত্র এবং সকল সময়ে তা পাওয়া যাচ্ছে না। নাগরিকদের পক্ষ থেকে আমাদের প্রয়োজন সেটা দাবি করা। যাঁরা ক্ষমতায় আছেন, তাঁরা বলছেন যে আমাদের দেশে সংবাদপত্র যত স্বাধীনতা ভোগ করে, অনেক দেশেই তা করে না। এটা হতেও পারে...
প্রথম আলো: আপনি কি ক্ষমতাসীনদের এই দাবির সঙ্গে একমত বোধ করেন?
আনিসুজ্জামান: না, আমার মনে হয় যে আমাদের দেশে সংবাদমাধ্যম যে স্বাধীনতা ভোগ করে তা যথেষ্ট নয়। অনেক ক্ষেত্রেই আমরা দেখছি যে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ বাধা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করছে, সংবাদকর্মীদের স্বাধীনতার অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
প্রথম আলো: সরকারের বাইরে যে রাজনৈতিক দলগুলো আছে, এ অবস্থায় তাদের কিছু করণীয় আছে কি না?
আনিসুজ্জামান: আছে নিশ্চয়ই।
প্রথম আলো: কিন্তু বিরোধী দল অভিযোগ করছে, সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক, স্বৈরতান্ত্রিক পন্থায় দেশ চালানো হচ্ছে, তাদের কোনো কর্মকাণ্ডই করতে দেওয়া হচ্ছে না...
আনিসুজ্জামান: তাদের এই অভিযোগে কিছুটা অতিরঞ্জন আছে। তাদের মূল আপত্তি গত সংসদ নির্বাচন নিয়ে। এটা এমন একটা বিষয়, যার কোনো সহজ সমাধান আমি দেখতে পাচ্ছি না। বিরোধী দল তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যেতে চায়নি। এখন হয়তো তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়াও নির্বাচনে যেতে পারে, কিন্তু নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়ে তাদের অন্য দাবি আছে। সেখানে সরকারের সঙ্গে তাদের মত মিলবে বলে মনে হয় না। বিরোধী দল যে সভা-সমাবেশ একদমই করতে পারছে না, তাও ঠিক নয়।
প্রথম আলো: কিন্তু তাঁরা বলছেন, তাঁরা পারছেন না। তাঁদের নেতা-কর্মীদের ওপর প্রবল দমন-পীড়ন চালানো হচ্ছে, অনেক নেতা-কর্মী কারারুদ্ধ, অনেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে প্রচুর মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসবের প্রতিক্রিয়া অন্য কোনোভাবে ঘটছে কি না?
আনিসুজ্জামান: এগুলোর তো সহজ মীমাংসা মুশকিল, কেননা সরকারকে বললে সরকার বলবে, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করার জন্য মামলা হচ্ছে। এটা একটা অশুভ চক্রের মতো ব্যাপার: সন্ত্রাসী কার্যকলাপ হচ্ছে বলে মামলা হচ্ছে, মামলা হচ্ছে বলে স্বাভাবিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করা যাচ্ছে না; সেটা যাচ্ছে না বলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হচ্ছে—এটা একটা ভিশাস সার্কল।
প্রথম আলো: সব মিলিয়ে দেশে যে অবস্থা চলছে, তা কি খুবই অস্বাভাবিক নয়? এ থেকে বেরোনোর পথ কী?
আনিসুজ্জামান: বেরোতে হবে। গণতন্ত্রে বিরোধী দলের জন্য জায়গা অবশ্যই ছাড়তে হবে। সেটা সরকারকে করতে হবে। আর বিরোধী দলকেও বলপ্রয়োগ বা সন্ত্রাস-সহিংসতার পথ ত্যাগ করতে হবে।
প্রথম আলো: লেখক-প্রকাশক হত্যার ঘটনা থেকে দেশে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, এই ক্ষেত্রে সরকারের আশু করণীয় কী বলে আপনি মনে করেন?
আনিসুজ্জামান: হত্যাকাণ্ডগুলোর তদন্ত দ্রুত শেষ করতে হবে, বিচারপ্রক্রিয়া দ্রুত এগিয়ে নিতে হবে...
প্রথম আলো: এসব তদন্ত কি সুষ্ঠু, সঠিক ও স্বচ্ছ হতে হবে না? প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারি দলের নেতারা তদন্ত শুরু হওয়ার আগেই যেভাবে প্রধান দলকে দোষারোপ করে কথাবার্তা বলছেন, তাতে কি তদন্ত সুষ্ঠু হতে পারে?
আনিসুজ্জামান: এ দেশে দোষারোপের রাজনীতি বহুকাল ধরে চলে আসছে। তা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসা উচিত। তদন্তগুলো সুষ্ঠু হতে হবে, এটা যদি আমরা চাই, তাহলে আগে থেকে কাউকে দোষারোপ করা সংগত নয়। তদন্তের ফলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
প্রথম আলো: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আনিসুজ্জামান: ধন্যবাদ।
No comments