ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কঃ চার লেনের সুফল পেতে বাধা ১৪ কিমি রাস্তা by তানভীর সোহেল
ঢাকা
থেকে ময়মনসিংহের উদ্দেশে রওনা হই সকাল ১০টায়। বেলা সাড়ে ১১টায় বহনকারী
মাইক্রোবাসটির চাকা গাজীপুর চৌরাস্তা-সংলগ্ন ঢাকা-ময়মনসিংহ চার লেন
প্রকল্পের মহাসড়ক স্পর্শ করে। চার লেনের মাঝামাঝি একটি লেনের প্রায় সমান
আয়তনের সড়ক বিভাজক (ডিভাইডার)। বিপরীত পাশ থেকে গাড়ি এসে সামনে পড়ার ভয়ও
নেই। গত রোববারের এই সরেজমিন যাত্রায় মহাসড়কে খুব বেশি যানবাহন দেখা
যায়নি। চালক গাড়ির গতি বাড়ালেন। কিছু দূর গিয়ে মাস্টারবাড়ি এলাকায় গ্যাস
নেওয়ার জন্য একটি পাম্পে গাড়ি দাঁড় করালেন।
সেখানেই কথা হয় সৌখিন পরিবহনের চালক আলী হোসেনের সঙ্গে। প্রায় ১৪ বছর এই রুটে বাস চালাচ্ছেন তিনি। সড়কের এখনকার অবস্থা সম্পর্কে বললেন, ‘গত বছরও বাস চলত হেলে-দুলে। এখন এই সড়কে বাস প্রায় উড়ে উড়ে চলে। পুরো কাজ শেষ হলে উড়েই চলবে।’
আগের সঙ্গে এখনকার সময়ের ব্যবধান তুলে ধরে আলী হোসেন বললেন, ঢাকা থেকে এখন ময়মনসিংহ যেতে কমবেশি চার ঘণ্টা লাগে, আগে লাগত সাত থেকে আট ঘণ্টা।
চালকের সঙ্গে কথা বলার সময় এক যাত্রী জানালা দিয়ে গলা বের করে বললেন, গত পাঁচটি বছর এই অঞ্চলের মানুষ চরম ভোগান্তি সহ্য করেছে। মনে হচ্ছে, আগামী পাঁচ-ছয় মাসের মধ্যে যাতায়াতের কষ্ট আর থাকবে না।
চালক আর যাত্রীদের কাছ থেকে ধারণা পেলাম, চার লেনের শুরুটা যেমন, পুরো পথ হয়তোবা তেমন নয়। প্রকল্পটি সরেজমিন ঘুরে এর সত্যতা পেলাম। দেখা গেল, প্রায় ২০ শতাংশ সড়ক এখনো দুই লেন। তাই সড়ক ব্যবহারকারীদের চার লেনের সুফল পেতে আরও কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হবে। ৮৮ কিলোমিটার সড়কের মাত্র ১৪ কিলোমিটারের কাজ শেষ না হওয়ায় এবারও রোজার ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের ভোগান্তি কমবেশি থাকবে।
এই সড়কে নিয়মিত গাড়ি চালান এমন কয়েকজন বাস, ট্রাকচালক ও যাত্রীরা বলেছেন, মহাসড়কের মাঝের অংশটি এখনো দুই লেন থাকা, কয়েকটি স্থানে ভাঙা এবং নির্মাণকাজ চলতে থাকায় যাতায়াত নির্বিঘ্ন হচ্ছে না। তবে তারা বলেছেন, আগের চেয়ে ভোগান্তি এখন অনেক কমেছে এবং কম সময়ে তাঁরা এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে পারছেন।
অবশ্য গত ২৮ মে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে এক অনুষ্ঠানে আলাপকালে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রথম আলোর কাছে আশা প্রকাশ করেন, চলতি বছরের জুনের মধ্যে ঢাকা-ময়মনসিংহ চার লেনের কাজ শেষ হবে। এবার ঈদে এই সড়ক ধরে যাঁরা যাতায়াত করবেন, তাঁরা চার লেনের সুফল ভোগ করবেন।
২০১০ সালের জুলাই মাসে ঢাকা-ময়মনসিংহ চার লেন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। এটি শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৩ সালের জুনে। কিন্তু বারবার সময় বাড়ানো হলেও প্রকল্পের কাজ শেষ হয়নি। কয়েক দফা বেড়ে এখন প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৮১৫ কোটি টাকা। শুরুতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৯২১ কোটি টাকা। ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, জামালপুর ও শেরপুর জেলায় যাওয়ার পথ এটি।
গ্যাস নেওয়ার পর মাস্টারবাড়ি থেকে মাইক্রোবাসটি চলতে শুরু করে। কাছেই বাজার-সংলগ্ন স্থানে চার লেন সড়কটি দুই লেনে পরিণত হয়েছে। ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার বিপরীত পাশে সড়কের কাজ চলছে। তাই এক পাশ বন্ধ। দ্রুতগতিতে আসা গাড়িগুলো হঠাৎ ধীরগতিতে চলতে শুরু করল। ধীরগতির কারণে দুই পাশেই গাড়ির সংখ্যা বেড়ে গেল। অবশ্য এই পথটি ছিল এক কিলোমিটারের কিছুটা বেশি। একই অবস্থা মধ্যবাজার নামক স্থানেও।
দুটি উড়ালসড়ক পাড়ি দিয়ে এবার গাড়ি থামল গাজীপুরের শ্রীপুরের জৈনা বাজারে। সেখানে কথা হচ্ছিল একজন সেনাসদস্যের সঙ্গে। যিনি চার লেন প্রকল্পের যে অংশটি সেনাবাহিনী করছে, সেই অংশের কাজের সঙ্গে যুক্ত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সদস্য বললেন, জয়দেবপুর চৌরাস্তা থেকে সোয়া ৩০ কিলোমিটার সড়ক চার লেন করার কাজ সেনাবাহিনী করেছে। সামান্য একটু কাজ বাকি আছে। এখন ড্রেনের কাজ চলছে। সেনাবাহিনীর কাজ যেখানে শেষ হয়েছে, তারপর থেকে অনেকটা পথে আর চার লেনের দেখা মিলল না।
জানা গেল, চৌরাস্তা থেকে শ্রীপুরের নয়নপুর পর্যন্ত চার লেনের কাজ করেছে সেনাবাহিনী। এখানের ৩০ কিলোমিটারের কাজ ঈদের আগে পুরোপুরি শেষ হবে। তবে ড্রেন ও ডিভাইডার নির্মাণ নাও হতে পারে। কিন্তু এতে চার লেনে চলাচলে কোনো প্রভাব পড়বে না। অবশ্য এই সড়কের মধ্যে জৈনা বাজার, আশপাশের শিল্প কলকারখানার গাড়ি সড়কের পাশে দাঁড় করানোর কারণে কোথাও কোথাও সড়কের একটি লেনই দখল হয়ে গেছে।
দারুণ যাত্রায় বড় ধরনের ধাক্কা খেতে হলো ময়মনসিংহের কাঁঠালী নামক স্থানের হাজির বাজার এলাকায়। এখন থেকে চার লেন সড়ক পরিণত হলো দুই লেনে। অবশ্য বাকি দুই লেনের কাজও চলছিল। তবে দেখা গেল, তা প্রাথমিক পর্যায়ে। ফলে শিগগিরই এই সড়কটুকু চার লেন হচ্ছে না। এখানে গাড়িগুলো ধীরগতিতে চলছিল। দুই লেন সড়ক ছিল পিচঢালা। ফলে গাড়ি ধীরে চললেও ভোগান্তি ছিল না।
কিন্তু কিছু দূর যাওয়ার পর ভরাডোবা নামক স্থানের ১০০ মিটারের মতো পথের দুই পাশের সড়কই দেখা গেল ভাঙাচোরা। এক পাশে কাজ চলছে, আরেক পাশে ইট ফেলে যে পথ তৈরি করেছে, তাকে কাদা মাটির পথ বলাই ভালো। গাড়িগুলোকে প্রথমে মূল সড়ক থেকে নিচে নেমে তারপর আবার ওপরে উঠতে হচ্ছে। সামান্য এই পথ পাড়ি দিতে গাড়ির গতি এত কমিয়ে আনতে হয়েছে যে সেখানে দুই পাশে গাড়ির সারি পড়ে যায়।
এই সড়কের কাজ করছে এমবিইসি ও পিবিএল নামে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এরা প্রায় ৩০ কিলোমিটার সড়ক চার লেন করার কাজ করছে। এই ৩০ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ১৪ কিলোমিটার সড়ক এখনো দুই লেন। এর মধ্যে টানা ১১ কিলোমিটারের পুরোটাই দুই লেন। এখানে তিনটি স্থানে সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ।
সেখানে কাজ করছেন এমন কয়েকজন শ্রমিক বললেন, ঈদের আগে চার লেনের কাজ শেষ হবে না। তবে যেসব স্থানে ভাঙাচোরা আছে, সেগুলো ঠিক করার কাজ চলছে। তাদের সেই রকমই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলায় রায়মণি এসে আবার চার লেন সড়ক শুরু হয়েছে। এই সড়ক চলে গেছে ময়মনসিংহ শহর পর্যন্ত। তবে শহরে ঢোকার মুখে মাসকান্দা বাসস্ট্যান্ড-সংলগ্ন সড়কের কিছু অংশ এখনো দুই লেন। ফলে বাসস্ট্যান্ডে ঢুকতে ও বের হতে যানবাহনগুলোকে যানজটে পড়তে হচ্ছে। এ ছাড়া এই পথে ডিভাইডার নির্মাণসহ কিছু কাজ চলছে। এই অংশের কাজ করেছে সেল ও তমা নামে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
বেলা আড়াইটায় ময়মনসিংহ শহরে পৌঁছে কথা হলো স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক জগলুল আহমেদ বললেন, গত কয়েক বছর যে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে, তা বর্ণনা করার মতো নয়। এখন সাড়ে তিন থেকে চার ঘণ্টায় ঢাকা যাওয়া যায়।
ওই চিকিৎসকের স্ত্রী লামিয়া আহমেদ ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি কোর্স করছেন। তিনি বললেন, চার বছর আগে যখন ময়মনসিংহে আসতাম, মনে হতো হাড়গোড় ভেঙে গেছে। চার লেনের কাজ পুরো শেষ হতে এই যাত্রা আনন্দের হবে।
সেখানেই কথা হয় সৌখিন পরিবহনের চালক আলী হোসেনের সঙ্গে। প্রায় ১৪ বছর এই রুটে বাস চালাচ্ছেন তিনি। সড়কের এখনকার অবস্থা সম্পর্কে বললেন, ‘গত বছরও বাস চলত হেলে-দুলে। এখন এই সড়কে বাস প্রায় উড়ে উড়ে চলে। পুরো কাজ শেষ হলে উড়েই চলবে।’
আগের সঙ্গে এখনকার সময়ের ব্যবধান তুলে ধরে আলী হোসেন বললেন, ঢাকা থেকে এখন ময়মনসিংহ যেতে কমবেশি চার ঘণ্টা লাগে, আগে লাগত সাত থেকে আট ঘণ্টা।
চালকের সঙ্গে কথা বলার সময় এক যাত্রী জানালা দিয়ে গলা বের করে বললেন, গত পাঁচটি বছর এই অঞ্চলের মানুষ চরম ভোগান্তি সহ্য করেছে। মনে হচ্ছে, আগামী পাঁচ-ছয় মাসের মধ্যে যাতায়াতের কষ্ট আর থাকবে না।
চালক আর যাত্রীদের কাছ থেকে ধারণা পেলাম, চার লেনের শুরুটা যেমন, পুরো পথ হয়তোবা তেমন নয়। প্রকল্পটি সরেজমিন ঘুরে এর সত্যতা পেলাম। দেখা গেল, প্রায় ২০ শতাংশ সড়ক এখনো দুই লেন। তাই সড়ক ব্যবহারকারীদের চার লেনের সুফল পেতে আরও কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হবে। ৮৮ কিলোমিটার সড়কের মাত্র ১৪ কিলোমিটারের কাজ শেষ না হওয়ায় এবারও রোজার ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের ভোগান্তি কমবেশি থাকবে।
এই সড়কে নিয়মিত গাড়ি চালান এমন কয়েকজন বাস, ট্রাকচালক ও যাত্রীরা বলেছেন, মহাসড়কের মাঝের অংশটি এখনো দুই লেন থাকা, কয়েকটি স্থানে ভাঙা এবং নির্মাণকাজ চলতে থাকায় যাতায়াত নির্বিঘ্ন হচ্ছে না। তবে তারা বলেছেন, আগের চেয়ে ভোগান্তি এখন অনেক কমেছে এবং কম সময়ে তাঁরা এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে পারছেন।
অবশ্য গত ২৮ মে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে এক অনুষ্ঠানে আলাপকালে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রথম আলোর কাছে আশা প্রকাশ করেন, চলতি বছরের জুনের মধ্যে ঢাকা-ময়মনসিংহ চার লেনের কাজ শেষ হবে। এবার ঈদে এই সড়ক ধরে যাঁরা যাতায়াত করবেন, তাঁরা চার লেনের সুফল ভোগ করবেন।
২০১০ সালের জুলাই মাসে ঢাকা-ময়মনসিংহ চার লেন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। এটি শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৩ সালের জুনে। কিন্তু বারবার সময় বাড়ানো হলেও প্রকল্পের কাজ শেষ হয়নি। কয়েক দফা বেড়ে এখন প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৮১৫ কোটি টাকা। শুরুতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৯২১ কোটি টাকা। ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, জামালপুর ও শেরপুর জেলায় যাওয়ার পথ এটি।
গ্যাস নেওয়ার পর মাস্টারবাড়ি থেকে মাইক্রোবাসটি চলতে শুরু করে। কাছেই বাজার-সংলগ্ন স্থানে চার লেন সড়কটি দুই লেনে পরিণত হয়েছে। ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার বিপরীত পাশে সড়কের কাজ চলছে। তাই এক পাশ বন্ধ। দ্রুতগতিতে আসা গাড়িগুলো হঠাৎ ধীরগতিতে চলতে শুরু করল। ধীরগতির কারণে দুই পাশেই গাড়ির সংখ্যা বেড়ে গেল। অবশ্য এই পথটি ছিল এক কিলোমিটারের কিছুটা বেশি। একই অবস্থা মধ্যবাজার নামক স্থানেও।
দুটি উড়ালসড়ক পাড়ি দিয়ে এবার গাড়ি থামল গাজীপুরের শ্রীপুরের জৈনা বাজারে। সেখানে কথা হচ্ছিল একজন সেনাসদস্যের সঙ্গে। যিনি চার লেন প্রকল্পের যে অংশটি সেনাবাহিনী করছে, সেই অংশের কাজের সঙ্গে যুক্ত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সদস্য বললেন, জয়দেবপুর চৌরাস্তা থেকে সোয়া ৩০ কিলোমিটার সড়ক চার লেন করার কাজ সেনাবাহিনী করেছে। সামান্য একটু কাজ বাকি আছে। এখন ড্রেনের কাজ চলছে। সেনাবাহিনীর কাজ যেখানে শেষ হয়েছে, তারপর থেকে অনেকটা পথে আর চার লেনের দেখা মিলল না।
জানা গেল, চৌরাস্তা থেকে শ্রীপুরের নয়নপুর পর্যন্ত চার লেনের কাজ করেছে সেনাবাহিনী। এখানের ৩০ কিলোমিটারের কাজ ঈদের আগে পুরোপুরি শেষ হবে। তবে ড্রেন ও ডিভাইডার নির্মাণ নাও হতে পারে। কিন্তু এতে চার লেনে চলাচলে কোনো প্রভাব পড়বে না। অবশ্য এই সড়কের মধ্যে জৈনা বাজার, আশপাশের শিল্প কলকারখানার গাড়ি সড়কের পাশে দাঁড় করানোর কারণে কোথাও কোথাও সড়কের একটি লেনই দখল হয়ে গেছে।
দারুণ যাত্রায় বড় ধরনের ধাক্কা খেতে হলো ময়মনসিংহের কাঁঠালী নামক স্থানের হাজির বাজার এলাকায়। এখন থেকে চার লেন সড়ক পরিণত হলো দুই লেনে। অবশ্য বাকি দুই লেনের কাজও চলছিল। তবে দেখা গেল, তা প্রাথমিক পর্যায়ে। ফলে শিগগিরই এই সড়কটুকু চার লেন হচ্ছে না। এখানে গাড়িগুলো ধীরগতিতে চলছিল। দুই লেন সড়ক ছিল পিচঢালা। ফলে গাড়ি ধীরে চললেও ভোগান্তি ছিল না।
কিন্তু কিছু দূর যাওয়ার পর ভরাডোবা নামক স্থানের ১০০ মিটারের মতো পথের দুই পাশের সড়কই দেখা গেল ভাঙাচোরা। এক পাশে কাজ চলছে, আরেক পাশে ইট ফেলে যে পথ তৈরি করেছে, তাকে কাদা মাটির পথ বলাই ভালো। গাড়িগুলোকে প্রথমে মূল সড়ক থেকে নিচে নেমে তারপর আবার ওপরে উঠতে হচ্ছে। সামান্য এই পথ পাড়ি দিতে গাড়ির গতি এত কমিয়ে আনতে হয়েছে যে সেখানে দুই পাশে গাড়ির সারি পড়ে যায়।
এই সড়কের কাজ করছে এমবিইসি ও পিবিএল নামে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এরা প্রায় ৩০ কিলোমিটার সড়ক চার লেন করার কাজ করছে। এই ৩০ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ১৪ কিলোমিটার সড়ক এখনো দুই লেন। এর মধ্যে টানা ১১ কিলোমিটারের পুরোটাই দুই লেন। এখানে তিনটি স্থানে সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ।
সেখানে কাজ করছেন এমন কয়েকজন শ্রমিক বললেন, ঈদের আগে চার লেনের কাজ শেষ হবে না। তবে যেসব স্থানে ভাঙাচোরা আছে, সেগুলো ঠিক করার কাজ চলছে। তাদের সেই রকমই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলায় রায়মণি এসে আবার চার লেন সড়ক শুরু হয়েছে। এই সড়ক চলে গেছে ময়মনসিংহ শহর পর্যন্ত। তবে শহরে ঢোকার মুখে মাসকান্দা বাসস্ট্যান্ড-সংলগ্ন সড়কের কিছু অংশ এখনো দুই লেন। ফলে বাসস্ট্যান্ডে ঢুকতে ও বের হতে যানবাহনগুলোকে যানজটে পড়তে হচ্ছে। এ ছাড়া এই পথে ডিভাইডার নির্মাণসহ কিছু কাজ চলছে। এই অংশের কাজ করেছে সেল ও তমা নামে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
বেলা আড়াইটায় ময়মনসিংহ শহরে পৌঁছে কথা হলো স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক জগলুল আহমেদ বললেন, গত কয়েক বছর যে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে, তা বর্ণনা করার মতো নয়। এখন সাড়ে তিন থেকে চার ঘণ্টায় ঢাকা যাওয়া যায়।
ওই চিকিৎসকের স্ত্রী লামিয়া আহমেদ ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি কোর্স করছেন। তিনি বললেন, চার বছর আগে যখন ময়মনসিংহে আসতাম, মনে হতো হাড়গোড় ভেঙে গেছে। চার লেনের কাজ পুরো শেষ হতে এই যাত্রা আনন্দের হবে।
No comments