ইরানের পরমাণু কর্মসূচি- যেসব প্রশ্নের সদুত্তর পায়নি পাশ্চাত্য
ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির পারমাণবিক আলোচনা এখন একেবারে শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে পাশ্চাত্যের কিছু কূটনীতিক বলছেন, অবরোধ থেকে মুক্তি চাইলে ইরানকে আগেই কিছু বিষয়ে খোলাসা করতে হবে। বিশেষ করে অতীতের সন্দেহজনক পারমাণবিক কর্মকাণ্ড নিয়ে কিছু প্রশ্নের সদুত্তর দিতে হবে তেহরানকে।
২০১৩ সালের নভেম্বরে জেনেভায় উভয় পক্ষের মধ্যে হওয়া অন্তর্বর্তী সমঝোতার কোনো শর্ত এখন পর্যন্ত লঙ্ঘন করেনি ইরান। তবে জাতিসংঘের পরমাণুবিষয়ক সংস্থা আইএইএ তদন্তে দ্রুতগতিতে সহযোগিতা করতে ইরানকে বারবার বলে আসছে। বিশেষ করে তেহরানের পারমাণবিক কর্মকাণ্ডের সামরিকীকরণ নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর চায় তারা। খবর রয়টার্সের।
পটভূমি: ইরান ইউরেনিয়ামসমৃদ্ধ করার প্রযুক্তি জ্ঞানের কিছু অংশ পেয়েছে পাকিস্তানের বিশিষ্ট পরমাণুবিজ্ঞানী আবদুল কাদির খানের কাছ থেকে। তিনি ইরান, লিবিয়া ও উত্তর কোরিয়াকে সহযোগিতার কথা স্বীকারও করেছেন। পাশাপাশি ইরানের হাতছাড়া হয়ে বিদেশে চলে যাওয়া একটি ল্যাপটপ থেকে প্রাপ্ত কিছু গোয়েন্দা তথ্যও রয়েছে।
ইরান বরাবরই বলে আসছে, যেগুলোকে তথ্যপ্রমাণ বলে দাবি করা হচ্ছে, সেগুলো আসলে জাল। বাস্তবে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কোনো চেষ্টাই তেহরান করেনি। কিন্তু, আইএইএ বলেছে, তেহরানের পারমাণবিক কর্মকাণ্ডকে সম্ভাব্য সামরিকীকরণ করার বিষয়ে তারা যেসব তথ্য পেয়েছে, তা বিশ্বাসযোগ্য।
অমীমাংসিত প্রশ্নগুলো:
১. বেসামরিক কাজের পাশাপাশি পারমাণবিক বোমা তৈরিতেও ব্যবহার করা যায়, এমন কিছু যন্ত্রপাতি ও উপাদান তেহরান সরাসরি না কিনে বিকল্প কিছু কোম্পানিকে ব্যবহার করেছে। এর মধ্যে রয়েছে উচ্চ গতিসম্পন্ন বৈদ্যুতিক সুইচ, উচ্চ গতিসম্পন্ন ক্যামেরা ও তেজস্ক্রিয়তা পরিমাপের সামগ্রী।
২. ইরান ইউরেনিয়ামের মতো পারমাণবিক উপাদান কেবল অর্জনই করেনি, এ-সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড সব সময়ই গোপন করার চেষ্টা করেছে।
৩. ইউরেনিয়ামের আকরিককে কীভাবে ধাতুতে পরিণত করতে হয়, তার বিশদ বিবরণ সংবলিত নথি রয়েছে ইরানের হাতে। রয়েছে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম দিয়ে গোলাকার ধাতব উপাদান তৈরির কৌশল-সংক্রান্ত নথিও। পারমাণবিক বোমা তৈরিতে এমন উপাদান ব্যবহার করা যেতে পারে।
৪. তেহরান ‘এক্সপ্লোডিং ব্রিজ ওয়্যার ডেটোনেটর’ তৈরি করেছে, যার বিস্ফোরণের সময়কাল অত্যন্ত নির্ভুলভাবে নির্ধারণ করে দেওয়া যায়। পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের সময়কাল নির্ধারণের জন্য এমন নিখুঁত ডেটোনেটর তৈরির সক্ষমতা অর্জনকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হয়ে থাকে। তেহরান দাবি করে আসছে, তেল খাতে ব্যবহারের জন্যই তাদের এই প্রযুক্তির দরকার। তবে এই প্রযুক্তি যে শান্তিপূর্ণ কাজে ব্যবহৃত হয় না, তা স্বীকার করেছে তারা।
৫. ডেটোনেটরকে সুসংহত করতে ‘মাল্টি-পয়েন্ট ইনিশিয়েশন সিস্টেম’ প্রযুক্তি রয়েছে ইরানের। কিছু পারমাণবিক বোমায় এমন প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়।
৬. তেহরানের কাছে অবস্থিত সামরিক অবকাঠামো পারচিনে ‘হাইড্রোডায়নামিক’ পরীক্ষা চালানো হয়েছে বলে আইএইএর সন্দেহ। পারমাণবিক বিস্ফোরণের কারণে সৃষ্ট উচ্চ চাপে সুনির্দিষ্ট কিছু উপাদান কী ধরনের বিক্রিয়া দেখায়, তা মূল্যায়নে এমন পরীক্ষা চালানো হয়ে থাকে। তেহরান এখনো পারচিনে পরিদর্শনের অনুমতি দেয়নি।
৭. ক্ষেপণাস্ত্রের মাথায় বিস্ফোরক বহন (মিসাইল পেলোড) এবং এমন ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করার পর সৃষ্ট প্রতিক্রিয়া-সংশ্লিষ্ট প্রকৌশল গবেষণা চালিয়েছে তেহরান। আইএইএর মতে, এমন গবেষণাগুলো ‘একটি পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির সঙ্গে অত্যন্ত সংগতিপূর্ণ’।
৮. ওপরে উল্লিখিত সব কর্মকাণ্ডই ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি কাঠামোগত ব্যবস্থাপনার আওতায় পরিচালিত হয়েছে, এমন ইঙ্গিত মিলেছে।
২০১৩ সালের নভেম্বরে জেনেভায় উভয় পক্ষের মধ্যে হওয়া অন্তর্বর্তী সমঝোতার কোনো শর্ত এখন পর্যন্ত লঙ্ঘন করেনি ইরান। তবে জাতিসংঘের পরমাণুবিষয়ক সংস্থা আইএইএ তদন্তে দ্রুতগতিতে সহযোগিতা করতে ইরানকে বারবার বলে আসছে। বিশেষ করে তেহরানের পারমাণবিক কর্মকাণ্ডের সামরিকীকরণ নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর চায় তারা। খবর রয়টার্সের।
পটভূমি: ইরান ইউরেনিয়ামসমৃদ্ধ করার প্রযুক্তি জ্ঞানের কিছু অংশ পেয়েছে পাকিস্তানের বিশিষ্ট পরমাণুবিজ্ঞানী আবদুল কাদির খানের কাছ থেকে। তিনি ইরান, লিবিয়া ও উত্তর কোরিয়াকে সহযোগিতার কথা স্বীকারও করেছেন। পাশাপাশি ইরানের হাতছাড়া হয়ে বিদেশে চলে যাওয়া একটি ল্যাপটপ থেকে প্রাপ্ত কিছু গোয়েন্দা তথ্যও রয়েছে।
ইরান বরাবরই বলে আসছে, যেগুলোকে তথ্যপ্রমাণ বলে দাবি করা হচ্ছে, সেগুলো আসলে জাল। বাস্তবে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কোনো চেষ্টাই তেহরান করেনি। কিন্তু, আইএইএ বলেছে, তেহরানের পারমাণবিক কর্মকাণ্ডকে সম্ভাব্য সামরিকীকরণ করার বিষয়ে তারা যেসব তথ্য পেয়েছে, তা বিশ্বাসযোগ্য।
অমীমাংসিত প্রশ্নগুলো:
১. বেসামরিক কাজের পাশাপাশি পারমাণবিক বোমা তৈরিতেও ব্যবহার করা যায়, এমন কিছু যন্ত্রপাতি ও উপাদান তেহরান সরাসরি না কিনে বিকল্প কিছু কোম্পানিকে ব্যবহার করেছে। এর মধ্যে রয়েছে উচ্চ গতিসম্পন্ন বৈদ্যুতিক সুইচ, উচ্চ গতিসম্পন্ন ক্যামেরা ও তেজস্ক্রিয়তা পরিমাপের সামগ্রী।
২. ইরান ইউরেনিয়ামের মতো পারমাণবিক উপাদান কেবল অর্জনই করেনি, এ-সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড সব সময়ই গোপন করার চেষ্টা করেছে।
৩. ইউরেনিয়ামের আকরিককে কীভাবে ধাতুতে পরিণত করতে হয়, তার বিশদ বিবরণ সংবলিত নথি রয়েছে ইরানের হাতে। রয়েছে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম দিয়ে গোলাকার ধাতব উপাদান তৈরির কৌশল-সংক্রান্ত নথিও। পারমাণবিক বোমা তৈরিতে এমন উপাদান ব্যবহার করা যেতে পারে।
৪. তেহরান ‘এক্সপ্লোডিং ব্রিজ ওয়্যার ডেটোনেটর’ তৈরি করেছে, যার বিস্ফোরণের সময়কাল অত্যন্ত নির্ভুলভাবে নির্ধারণ করে দেওয়া যায়। পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের সময়কাল নির্ধারণের জন্য এমন নিখুঁত ডেটোনেটর তৈরির সক্ষমতা অর্জনকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হয়ে থাকে। তেহরান দাবি করে আসছে, তেল খাতে ব্যবহারের জন্যই তাদের এই প্রযুক্তির দরকার। তবে এই প্রযুক্তি যে শান্তিপূর্ণ কাজে ব্যবহৃত হয় না, তা স্বীকার করেছে তারা।
৫. ডেটোনেটরকে সুসংহত করতে ‘মাল্টি-পয়েন্ট ইনিশিয়েশন সিস্টেম’ প্রযুক্তি রয়েছে ইরানের। কিছু পারমাণবিক বোমায় এমন প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়।
৬. তেহরানের কাছে অবস্থিত সামরিক অবকাঠামো পারচিনে ‘হাইড্রোডায়নামিক’ পরীক্ষা চালানো হয়েছে বলে আইএইএর সন্দেহ। পারমাণবিক বিস্ফোরণের কারণে সৃষ্ট উচ্চ চাপে সুনির্দিষ্ট কিছু উপাদান কী ধরনের বিক্রিয়া দেখায়, তা মূল্যায়নে এমন পরীক্ষা চালানো হয়ে থাকে। তেহরান এখনো পারচিনে পরিদর্শনের অনুমতি দেয়নি।
৭. ক্ষেপণাস্ত্রের মাথায় বিস্ফোরক বহন (মিসাইল পেলোড) এবং এমন ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করার পর সৃষ্ট প্রতিক্রিয়া-সংশ্লিষ্ট প্রকৌশল গবেষণা চালিয়েছে তেহরান। আইএইএর মতে, এমন গবেষণাগুলো ‘একটি পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির সঙ্গে অত্যন্ত সংগতিপূর্ণ’।
৮. ওপরে উল্লিখিত সব কর্মকাণ্ডই ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি কাঠামোগত ব্যবস্থাপনার আওতায় পরিচালিত হয়েছে, এমন ইঙ্গিত মিলেছে।
No comments