সাঁওতাল বিদ্রোহের উত্তরাধিকার by নজরুল ইসলাম
আজ
মহান সাঁওতাল বিদ্রোহের ১৬০তম বার্ষিকী। ১৬০ বছর আগে ১৮৫৫-৫৬ সালে ভারতের
পশ্চিমবঙ্গের ভগনাডিহি গ্রামে বীর সিধু-কানুর নেতৃত্বে এ বিদ্রোহ হয়েছিল।
ইতিহাসে যা সাঁওতালি ‘হুল’ বা সাঁওতাল বিদ্রোহ নামে পরিচিত।
শাসনব্যবস্থার িভত শক্ত করতেই ইংরেজ শাসক গোষ্ঠী অন্যায়, শোষণ ও
নিপীড়নের পথ বেছে নিয়েছিল, তাদের আক্রমণ থেকে আদিবাসী সাঁওতাল জনগোষ্ঠীও
বাদ যায়নি।
সেদিনের সাঁওতালি হুল ছিল ইংরেজ শাসক গোষ্ঠী ও তাদের দালাল জমিদার শ্রেণি, সুদখোর মহাজন, নিপীড়ক প্রশাসনের বিরুদ্ধে সংঘটিত প্রথম শক্তিশালী সশস্ত্র প্রতিবাদ। সিপাহি বিদ্রোহের কিছুদিন আগেই এটি সংঘটিত হয়। সাঁওতালি জাতি তার নিজ ভূমিতে স্বাধীন সাঁওতালি রাজ্য প্রতিষ্ঠার দাবিতে সেদিন গর্জে উঠেছিল। সিধু-কানুর গ্রাম ভগনাডিহিতে ২০-২৫ হাজার সমবেত সাঁওতালি প্রকাশ্য সমাবেশে এ বিদ্রোহের ঘোষণা দেয়। বিদ্রোহ দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে। নিম্নবর্গের হিন্দু, ডোম, তেলীসহ অন্যান্য জাতিসত্তার মানুষেরাও শোষণ থেকে মুক্তির আশায় এ বিদ্রোহে অংশ নেয়। ১৮৫৫-৫৬ সালে সাঁওতালি ‘হুল’ ইংরেজ শাসনের শক্ত ভিত্তিমূলে আঘাত হানে।
ইংরেজ নীলকুঠিতে ও জমিদারদের বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের মধ্য দিয়ে বিদ্রোহ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু ইংরেজ বাহিনীর আধুনিক মারণাস্ত্রের সামনে সাঁওতালি তির-ধনুক, বর্শা, টাঙ্গি বেশি দিন টিকতে পারেনি। বিদ্রোহের নেতা সিধু-কানু গ্রেপ্তার হলে বিদ্রোহীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। তাদের মনোবল ভেঙে পড়ে। ইংরেজদের নথি থেকে জানা যায়, সেদিন বিদ্রোহ দমনের নামে বহু গ্রাম আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। হাজার হাজার সাঁওতালকে গ্রেপ্তার করে জেলে পোরা হয়। বিদ্রোহের মহান নেতা সিধু-কানুকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়। একই সঙ্গে এ বিদ্রোহে অংশ নেওয়া হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়, এটা গণহত্যার শামিল।
সেদিনের সাঁওতাল বিদ্রোহের রক্তাক্ত পথ ধরে মুণ্ডা বিদ্রোহ, তেলেঙ্গানা বিদ্রোহ, টংক আন্দোলন, তেভাগা ও পরবর্তীকালের ভারতের নকশালবাড়ি আন্দোলনসহ আরও অনেক আন্দোলন হয়েছে। সে কারণে মহাশ্বেতা দেবীর সেই উক্তি যেন এখনো সত্য ‘আদিবাসীরা আজও যেখানে হকের লড়াই লড়ছে, সে লড়াই সিধু-কানু ও বিরসা মুণ্ডাদের ফেলে যাওয়া লড়াই। শালবনে ফুল ফোটার যেমন শেষ নেই, আদিবাসীদের লড়াই সংগ্রামের তেমন শেষ নেই।’
লেখক: চেয়ারম্যান, আদিবাসী গবেষণা পর্ষদ।
সেদিনের সাঁওতালি হুল ছিল ইংরেজ শাসক গোষ্ঠী ও তাদের দালাল জমিদার শ্রেণি, সুদখোর মহাজন, নিপীড়ক প্রশাসনের বিরুদ্ধে সংঘটিত প্রথম শক্তিশালী সশস্ত্র প্রতিবাদ। সিপাহি বিদ্রোহের কিছুদিন আগেই এটি সংঘটিত হয়। সাঁওতালি জাতি তার নিজ ভূমিতে স্বাধীন সাঁওতালি রাজ্য প্রতিষ্ঠার দাবিতে সেদিন গর্জে উঠেছিল। সিধু-কানুর গ্রাম ভগনাডিহিতে ২০-২৫ হাজার সমবেত সাঁওতালি প্রকাশ্য সমাবেশে এ বিদ্রোহের ঘোষণা দেয়। বিদ্রোহ দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে। নিম্নবর্গের হিন্দু, ডোম, তেলীসহ অন্যান্য জাতিসত্তার মানুষেরাও শোষণ থেকে মুক্তির আশায় এ বিদ্রোহে অংশ নেয়। ১৮৫৫-৫৬ সালে সাঁওতালি ‘হুল’ ইংরেজ শাসনের শক্ত ভিত্তিমূলে আঘাত হানে।
ইংরেজ নীলকুঠিতে ও জমিদারদের বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের মধ্য দিয়ে বিদ্রোহ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু ইংরেজ বাহিনীর আধুনিক মারণাস্ত্রের সামনে সাঁওতালি তির-ধনুক, বর্শা, টাঙ্গি বেশি দিন টিকতে পারেনি। বিদ্রোহের নেতা সিধু-কানু গ্রেপ্তার হলে বিদ্রোহীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। তাদের মনোবল ভেঙে পড়ে। ইংরেজদের নথি থেকে জানা যায়, সেদিন বিদ্রোহ দমনের নামে বহু গ্রাম আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। হাজার হাজার সাঁওতালকে গ্রেপ্তার করে জেলে পোরা হয়। বিদ্রোহের মহান নেতা সিধু-কানুকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়। একই সঙ্গে এ বিদ্রোহে অংশ নেওয়া হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়, এটা গণহত্যার শামিল।
সেদিনের সাঁওতাল বিদ্রোহের রক্তাক্ত পথ ধরে মুণ্ডা বিদ্রোহ, তেলেঙ্গানা বিদ্রোহ, টংক আন্দোলন, তেভাগা ও পরবর্তীকালের ভারতের নকশালবাড়ি আন্দোলনসহ আরও অনেক আন্দোলন হয়েছে। সে কারণে মহাশ্বেতা দেবীর সেই উক্তি যেন এখনো সত্য ‘আদিবাসীরা আজও যেখানে হকের লড়াই লড়ছে, সে লড়াই সিধু-কানু ও বিরসা মুণ্ডাদের ফেলে যাওয়া লড়াই। শালবনে ফুল ফোটার যেমন শেষ নেই, আদিবাসীদের লড়াই সংগ্রামের তেমন শেষ নেই।’
লেখক: চেয়ারম্যান, আদিবাসী গবেষণা পর্ষদ।
No comments