রাষ্ট্রকে প্রমাণ করতে হবে, আমি সবার: মিজানুর রহমান
জাতীয়
মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেছেন, ‘রাষ্ট্রকে প্রমাণ
করতে হবে নির্দিষ্ট একটি গোষ্ঠী বা ধর্মের মানুষের নয়, আমি সবার।’ মঙ্গলবার দিনাজপুরে সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবসের ১৬০ বছর পূর্তি উপলক্ষে
আদিবাসীদের গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মিজানুর রহমান এ কথা বলেন।
সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠনের দাবিতে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ ও দিনাজপুরের নাগরিক সমাজ এই গণসমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে দুই হাজারের বেশি আদিবাসী নারীদের যোগ দিতে দেখা গেছে।
সমাবেশে মিজানুর রহমান বলেন, ‘রাষ্ট্রকে প্রমাণ করতে হবে, আমি সবার। বাংলাদেশে বসবাসকারী প্রতিটি জাতিসত্তার মানুষের। কেবল নির্দিষ্ট একটি গোষ্ঠী বা ধর্মের মানুষের নয়।’
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, আদিবাসীদের প্রতি রাষ্ট্রের ভূমিকা মহান স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল। যারা মুক্তিযুদ্ধের প্রকাশ্যে বিরোধিতা করেছিল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস বাহিনী গঠন করেছিল, দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রতি আজও যারা কটাক্ষ করে, স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে তাঁরা সকল সুযোগসুবিধা ভোগ করছে। কিন্তু যে আদিবাসীরা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে দেশের স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দিয়েছে, তাঁরা দেশ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে।
মিজানুর রহমান বলেন, ভূমিদস্যুরা আগ্রাসী হয়ে সম্পূর্ণ বে-বেআইনিভাবে আদিবাসীদের ভূমি অধিকার কেড়ে নিচ্ছে, আর আদিবাসীরা আইনি লড়াই করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না। তিনি প্রশ্ন করেন, তবে কি রাষ্ট্রের হাত সংকুচিত হয়ে গেল? রাষ্ট্রকে বলতে হবে, সে কার পাশে দাঁড়াবে? সাধারণ অধিকার বঞ্চিতদের নাকি ভূমি দস্যুদের? তিনি বলেন, সমতলের আদিবাসীদের প্রধান দাবি পৃথক ভূমি কমিশন গঠন-যা বর্তমান সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার ছিল। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর আমলে দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও যুগান্তকারী সমস্যার সমাধান হয়েছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর আমলেই সমতলের আদিবাসীদের দাবি বাস্তবায়িত হবে মর্মে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বেসরকারি সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, কোন সরকার বা রাজনৈতিক দল সংবিধানের চেয়ে বড় হতে পারে না। সংবিধানে দেশের প্রতিটি নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করার কথা উল্লেখ থাকলেও প্রতি মুহূর্তে সেই সংবিধান লঙ্ঘিত হচ্ছে। আর আমরা নাগরিক সমাজ নীরব দর্শক হয়ে বসে আছি। তিনি বলেন, একটি স্বাধীন দেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ শ্রেণি দম্ভ করবে আর ক্ষুদ্র জাতিসত্তাগুলোর ন্যূনতম মানুষের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে এটা অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়। দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই চালিয়ে যেতে আদিবাসী সমাজের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। দেশের প্রগতিশীল সব মানুষ ও সংগঠন সেই লড়াইয়ে আদিবাসীদের পাশে থাকবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং বলেন, বিশ্বব্যাপী আদিবাসীরা তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করছে। বাংলাদেশের আদিবাসীরা প্রচণ্ড বঞ্চনার শিকার। ১৬০ বছর আগে সাঁওতাল বিদ্রোহ হয়েছিল, কিন্তু আজও আদিবাসীদের জমির জাল দলিল হয়, হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতনের বিচার হয় না। তিনি রাষ্ট্রকে আদিবাসীদের প্রতি সংবেদনশীল এবং সরকারকে আদিবাসী বান্ধব হওয়ার দাবি জানান। তিনি আরও বলেন, আদিবাসীদের ভাষায় ‘খাস’ বলে কোনো শব্দ নেই। বংশ পরম্পরায় যে জমি পুকুরপাড়ে আদিবাসীরা বাস করে আসছে, তা কখনো খাস হতে পারে না। সরকারের খাতায় লেখা হলেও নয়। এটাই আদিবাসীদের সংস্কৃতি বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ‘হেকস বাংলাদেশ’ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর অনিক আসাদ বলেন, দিনাজপুরের পার্বতীপুরে চিড়াকুটা গ্রামে সংখ্যাগরিষ্ঠদের হামলা ও লুটপাটে ধুলায় মিশে যাওয়া আদিবাসীদের ঘর-বাড়ি পুনরায় নির্মাণে সরকার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা আজও পূরণ হয়নি। আদিবাসীদের সমস্যা সমাধানে তিনি কর্মরত বেসরকারি সংগঠনগুলোকে সমন্বয় করে কাজ করার আহ্বান জানান।
জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেনের সভাপতিত্বে আদিবাসীদের গণসমাবেশে দিনাজপুর সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি মির্জা আনোয়ারুল ইসলাম, গ্রাম বিকাশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন, প্রেসক্লাব সভাপতি চিত্ত ঘোষ, মহিলা পরিষদ সভাপতি কানিজ রহমান, আদিবাসী নারী পরিষদ সভাপতি বাসন্তী মুর্মু, আদিবাসী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিভূতী ভূষণ মাহাতো বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী দিনাজপুর জেলা সংসদের শিল্পীরা গণসংগীত পরিবেশন করে।
সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠনের দাবিতে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ ও দিনাজপুরের নাগরিক সমাজ এই গণসমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে দুই হাজারের বেশি আদিবাসী নারীদের যোগ দিতে দেখা গেছে।
সমাবেশে মিজানুর রহমান বলেন, ‘রাষ্ট্রকে প্রমাণ করতে হবে, আমি সবার। বাংলাদেশে বসবাসকারী প্রতিটি জাতিসত্তার মানুষের। কেবল নির্দিষ্ট একটি গোষ্ঠী বা ধর্মের মানুষের নয়।’
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, আদিবাসীদের প্রতি রাষ্ট্রের ভূমিকা মহান স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল। যারা মুক্তিযুদ্ধের প্রকাশ্যে বিরোধিতা করেছিল, রাজাকার, আলবদর, আল শামস বাহিনী গঠন করেছিল, দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রতি আজও যারা কটাক্ষ করে, স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে তাঁরা সকল সুযোগসুবিধা ভোগ করছে। কিন্তু যে আদিবাসীরা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে দেশের স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দিয়েছে, তাঁরা দেশ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে।
মিজানুর রহমান বলেন, ভূমিদস্যুরা আগ্রাসী হয়ে সম্পূর্ণ বে-বেআইনিভাবে আদিবাসীদের ভূমি অধিকার কেড়ে নিচ্ছে, আর আদিবাসীরা আইনি লড়াই করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না। তিনি প্রশ্ন করেন, তবে কি রাষ্ট্রের হাত সংকুচিত হয়ে গেল? রাষ্ট্রকে বলতে হবে, সে কার পাশে দাঁড়াবে? সাধারণ অধিকার বঞ্চিতদের নাকি ভূমি দস্যুদের? তিনি বলেন, সমতলের আদিবাসীদের প্রধান দাবি পৃথক ভূমি কমিশন গঠন-যা বর্তমান সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার ছিল। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর আমলে দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও যুগান্তকারী সমস্যার সমাধান হয়েছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর আমলেই সমতলের আদিবাসীদের দাবি বাস্তবায়িত হবে মর্মে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বেসরকারি সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, কোন সরকার বা রাজনৈতিক দল সংবিধানের চেয়ে বড় হতে পারে না। সংবিধানে দেশের প্রতিটি নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করার কথা উল্লেখ থাকলেও প্রতি মুহূর্তে সেই সংবিধান লঙ্ঘিত হচ্ছে। আর আমরা নাগরিক সমাজ নীরব দর্শক হয়ে বসে আছি। তিনি বলেন, একটি স্বাধীন দেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ শ্রেণি দম্ভ করবে আর ক্ষুদ্র জাতিসত্তাগুলোর ন্যূনতম মানুষের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে এটা অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়। দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই চালিয়ে যেতে আদিবাসী সমাজের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। দেশের প্রগতিশীল সব মানুষ ও সংগঠন সেই লড়াইয়ে আদিবাসীদের পাশে থাকবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং বলেন, বিশ্বব্যাপী আদিবাসীরা তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করছে। বাংলাদেশের আদিবাসীরা প্রচণ্ড বঞ্চনার শিকার। ১৬০ বছর আগে সাঁওতাল বিদ্রোহ হয়েছিল, কিন্তু আজও আদিবাসীদের জমির জাল দলিল হয়, হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতনের বিচার হয় না। তিনি রাষ্ট্রকে আদিবাসীদের প্রতি সংবেদনশীল এবং সরকারকে আদিবাসী বান্ধব হওয়ার দাবি জানান। তিনি আরও বলেন, আদিবাসীদের ভাষায় ‘খাস’ বলে কোনো শব্দ নেই। বংশ পরম্পরায় যে জমি পুকুরপাড়ে আদিবাসীরা বাস করে আসছে, তা কখনো খাস হতে পারে না। সরকারের খাতায় লেখা হলেও নয়। এটাই আদিবাসীদের সংস্কৃতি বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ‘হেকস বাংলাদেশ’ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর অনিক আসাদ বলেন, দিনাজপুরের পার্বতীপুরে চিড়াকুটা গ্রামে সংখ্যাগরিষ্ঠদের হামলা ও লুটপাটে ধুলায় মিশে যাওয়া আদিবাসীদের ঘর-বাড়ি পুনরায় নির্মাণে সরকার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা আজও পূরণ হয়নি। আদিবাসীদের সমস্যা সমাধানে তিনি কর্মরত বেসরকারি সংগঠনগুলোকে সমন্বয় করে কাজ করার আহ্বান জানান।
জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেনের সভাপতিত্বে আদিবাসীদের গণসমাবেশে দিনাজপুর সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি মির্জা আনোয়ারুল ইসলাম, গ্রাম বিকাশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন, প্রেসক্লাব সভাপতি চিত্ত ঘোষ, মহিলা পরিষদ সভাপতি কানিজ রহমান, আদিবাসী নারী পরিষদ সভাপতি বাসন্তী মুর্মু, আদিবাসী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিভূতী ভূষণ মাহাতো বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী দিনাজপুর জেলা সংসদের শিল্পীরা গণসংগীত পরিবেশন করে।
No comments