আফগান জঙ্গিদের দেখভাল করে সৌদি
আফগানভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন হাক্কানি নেটওয়ার্কের নেতাদের সঙ্গে গোপন সম্পর্ক রয়েছে সৌদি আরবের। সৌদির বিশেষ পাকিস্তান মিশনের অংশ হিসেবে আফগান জঙ্গিদের দেখভাল করে তারা। ২০১২ সালে পাকিস্তানের ইসলামাবাদে নিযুক্ত তৎকালীন সৌদি রাষ্ট্রদূত দু’বার হাক্কানি নেটওয়ার্কের প্রধান জালালুদ্দিন হাক্কানির ছেলে নাসিরুদ্দিন হাক্কানির সঙ্গে বৈঠক করেন। সম্প্রতি উইকিলিকসের ফাঁস করা গোপন দলিলে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। নথিতে দেখা গেছে, আফগানিস্তানের রাশিয়ার দখল থেকে মুক্ত হওয়ার যুদ্ধে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইয়ের অর্থায়নে পরিচালিত জিহাদের সময় থেকে এখনও হাক্কানি নেটওয়ার্কের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখে চলছে সৌদি আরব। সালের ১৫ ফেব্র“য়ারি হাক্কানি নেটওয়ার্কের তৎকালীন প্রধান অর্থের জোগানদাতা নাসিরুদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করেন ইসলামাবাদে নিযুক্ত তৎকালীন সৌদি রাষ্ট্রদূত আবদুল আজিজ ইব্রাহিম সালেহ আল গাদের। বৈঠকটি ঠিক কোথায় অনুষ্ঠিত হয় তা উল্লেখ করা হয়নি। তবে সাধারণত দূতাবাস ও নিজ ভবনে বৈঠক করতেন গাদের। কূটনীতিক পরিবেষ্টিত ওই স্থানগুলো পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নজরদারির মধ্যেই ছিল।
ওই বৈঠকে সৌদি বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজের কাছে বাবা জালালুদ্দিনকে সৌদিতে চিকিৎসা দেয়ার আহ্বান জানান নাসিরুদ্দিন। একই বছরের ২৫ ফেব্র“য়ারি আরেকটি বৈঠকে গাদেরের কাছে বাবার অসুস্থতার প্রকৃতি ও পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন নাসিরুদ্দিন। তবে নথিতে রোগের নাম উল্লেখ করা হয়নি। নাসিরুদ্দিন ও গাদেরের এ বৈঠকের কিছুদিন আগে পাকিস্তানে সফর করেছিলেন তৎকালীন আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই। ওই সফরে পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি ও সাবেক সেনা প্রধান আশফাক পারভেজ কায়ানির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। কায়ানিকে কারজাই বলেছিলেন, তিনি হাক্কানি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করতে রাজি আছেন, কিন্তু তারা (হাক্কানি) সম্ভবত তাকে (কারজাই) দেখতে চাইবে না। আফগানিস্তানে ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় তালেবান সরকারের পতনের পর পাকিস্তান সীমান্তসংলগ্ন উত্তর ওয়াজিরিস্তানে ঘাঁটি গাড়েন জালালুদ্দিন। পাকিস্তানের মাটিতে বসেই আফগানিস্তানে হামলা পরিচালনা করে আসছেন তিনি। ২০০১ সালের ৩১ জানুয়ারি জালালুদ্দিনের আন্তর্জাতিক চলাফেরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিল। ডন, এশিয়ান এইজ।
No comments