লোহিত সাগরে আলোর জগৎ!
লোহিত সাগরের গভীরে জাদুকরি ও জ্যোতির্ময় এক জগতের সন্ধান পাওয়ার দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। তাদের মতে- এটা এমন এক জগৎ যেখানে জলজ প্রাণী কোরালের আলোয় অন্ধকার দূর হয়। বিশেষ এ কোরাল থেকে ফ্লোরোসেন্ট বিকিরিত হয় যা পানির নিচে এক অবিশ্বাস্য রামধনু সৃষ্টি করে। বিজ্ঞানীরা এ কোরালকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের নতুন বিস্ময় হিসেবে অভিহিত করেছেন।
কোরালের গায়ে উপস্থিত রজক পদার্থগুলো কাজে লাগবে চিকিৎসা গবেষণায়। বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখেছেন কোরালদের এসব রঞ্জক পদার্থগুলো জৈব চিকিৎসার গবেষণায়ও দারুণ কাজে আসতে পারে। জীবন্ত কোষগুলোকে উজ্জ্বলতম করতে এগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে। কোষীয় কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের জন্য ফ্লোরোসেন্ট প্রোটিনগুলো জীবিত কোষে ব্যবহার করা যেতে পারে। ফ্লোরোসেন্ট কোরালগুলো এর আগে লোহিত সাগরের অগভীর পানিতে পাওয়া গিয়েছিল, কিন্তু পানির ৫০ থেকে ১০০ মিটার গভীরে এ ধরনের জাজ্বল্যমান কোরালের উপস্থিতি এবারই প্রথম শনাক্ত করা গেল। বিজ্ঞানীরা জানান, বেশিরভাগ কোরালই যখন আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মির সংস্পর্শে আসে, তখন তাদের প্রাকৃতিক নীল রং থেকে পরিবর্তিত হয়ে কমলা এবং লালচে রং ধারণ করে। এর আগে অগভীর পানিতেও এসব রঙের কোরাল দেখা যায়নি। পানির অনেক গভীরে থাকে বলে এদের বর্ণচ্ছটা বা বিচ্ছুরণ আরও আকর্ষণীয় লাগে,
কারণ অত গভীরে সাধারণত সূর্যের আলো পৌঁছায় না। যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব সাউদাম্পটনের কোরাল রিফ ল্যারেটরির গবেষক জর্গ ওয়াইডেনমেন এবং তার সহকর্মীরা প্লাস ওয়ান সাময়িকীতে নতুন আবিষ্কৃত এসব কোরালের বিস্তারিত তুলে ধরেছেন। ওয়াইডেনমেন কোরালের এসব রঞ্জক পদার্থকে (যেগুলো থেকে আলোর বিচ্ছুরণ হয়) প্রোটিন হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তিনি বলেন, এ কোরালগুলো যখন নীল বা আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মির সংস্পর্শে আসে, তখন তারা অধিক তরঙ্গদৈর্ঘ্যরে লাল বা সবুজ আলো বিচ্ছুরণ করে। যখন এ কোরালগুলো অগভীর পানিতে আসে, তখন এদের রজক পদার্থগুলো অতিরিক্ত আলো বা অতিরিক্ত প্রকাশিত হওয়া থেকে তাদেরকে রক্ষা করে। এছাড়া কোরালের টিস্যুতে থাকা অন্যান্য মিথোজীবী এলগিগুলোকেও (শ্যাওলা) সুরক্ষা দেয় এটি। এপি।
No comments