৬ মাসে ক্রসফায়ারে শতাধিক মৃত্যু
গত ছয় মাসে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে ও ক্রসফায়ারে মৃত্যু হয়েছে ১০১ জনের।
আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে সাদা পোশাকে এসে ২৯ জনকে
আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরে চারজনের লাশ পাওয়া যায়। একজন ফেরত আসে।
একজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তবে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এসব অভিযোগ
অস্বীকার করেছে।
আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ছয় মাসের মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তাতে এসব তথ্য দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন দৈনিক সংবাদ পত্র এবং আসকের সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে আজ মঙ্গলবার আসকের এক বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পরিবার, প্রত্যক্ষদর্শী ও সহকর্মীদের দাবি অনুযায়ী, গত ছয় মাসে র্যাবের ক্রসফায়ারে ২২ জন, পুলিশের ক্রসফায়ারে ৪০ জন, র্যাব ও বিজিবির ক্রসফায়ারে একজন, আনসার বাহিনীর ক্রসফায়ারে একজন, ডিবি পুলিশের ক্রসফায়ারে সাতজন, যৌথ বাহিনীর ক্রসফায়ারে একজন মারা যান। পুলিশের নির্যাতনে চারজন, ডিবি পুলিশের নির্যাতনে একজন, র্যাবের নির্যাতনে একজন এবং বিজিবির নির্যাতনে একজন মারা যান। এ ছাড়া পুলিশের গুলিতে ১৪ জন, ডিবি পুলিশের গুলিতে একজন মারা যান।
গত ছয় মাসে থানা হাজতে আত্মহত্যা করেন তিনজন। গ্রেপ্তারের পর পুলিশের হেফাজতে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে দুজন, র্যাবের হেফাজতে একজন মারা যান। ট্রেনে কাটা পড়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের দাবি ট্রেনের নিচে ফেলে দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। কারা হেফাজতে মারা গেছেন ৩৪ জন। এর মধ্যে কয়েদি ১৩ ও হাজতি ছিলেন ২১ জন। সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে মারা গেছেন ১৫ জন, নির্যাতনে মৃত্যু হয়েছে আটজনের। গত ছয় মাসে আহত হয়েছেন ৩৮ জন। অপহরণের শিকার হন ৪৯ জন। অপহরণের পর বিজিবির মধ্যস্থতায় ফেরত আসে ২২ জন।
আসকের এ প্রতিবেদন সম্পর্কে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘন পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে যে উদ্বেগ তারই প্রতিফলন ঘটেছে আসকের প্রতিবেদনে। মানবাধিকার রক্ষার দায়িত্ব যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার, সেই সংস্থার মাধ্যমেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলে একটি গণতান্ত্রিক দেশের জন্য তা খুবই উদ্বেগজনক। স্বল্প মেয়াদের পাশাপাশি দীর্ঘ মেয়াদেও এ ধরনের ঘটনা ঝুঁকিপূর্ণ। কেননা এতে এ ধরনের সংস্থার প্রতি মানুষের আস্থা কমে যায়। সমাজে তখন মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বেশি ঘটে। সাধারণ অপরাধ বাড়ার প্রবণতাও বেড়ে যায়।
গত বৃহস্পতিবার ২০১৪ সালের মার্কিন মানবাধিকার প্রতিবেদনে বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুমকে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান মানবাধিকার সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া সংবাদপত্র এবং সাংবাদিকদের ওপর হামলার বিবরণ, ইন্টারনেটে মত প্রকাশের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপসহ সভা-সমাবেশে বাধা প্রদান, সরকারের দুর্নীতি ও অস্বচ্ছতার কথাও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
আসকের প্রতিবেদন বলছে, গত ছয় মাসে রাজনৈতিক সংঘাতের মোট ঘটনা ঘটেছে ৬৬০ টি। এতে নিহত হয়েছেন ১৩২ জন। আহত হয়েছেন ৩ হাজার ৮৯২ জন। নিহতদের মধ্যে ৭০ জনই মারা গেছেন অগ্নিদগ্ধ হয়ে। ছয় মাসে সাতটি বিভাগের বিভিন্ন স্থানে ১৯ বার ১৪৪ ধারা জারির ঘটনা ঘটে। শুধু গণপিটুনিতেই মৃত্যু হয় ৬৯ জনের।
হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের ঘটনাও থেমে ছিল না গত ছয় মাসে। এ সম্প্রদায়ের ৯৪টি বাড়ি ভাঙচুর ও পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ১৩৭টি প্রতিমা ভেঙে ফেলা হয়। বিভিন্ন ঘটনায় ২৮ জন আহত হন। ১৬১ জন গণমাধ্যমকর্মী বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন, হয়রানি, হুমকি ও পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন।
নারী নির্যাতন: ছয় মাসে ধর্ষণের শিকার হয় ৩২৬ জন। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয় ২৯ জনকে। আত্মহত্যা করেন একজন। ৫২ জনের বেশি নারীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয়।
যৌন হয়রানির কারণে ছয়জন নারী আত্মহত্যা করেন। এ ধরনের ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে একজন নারী ও একজন পুরুষ নিহত হন। এ ছাড়া ৯৪ জন হয়রানি ও লাঞ্ছনার শিকার হন।
২২ জন গৃহকর্মী বিভিন্ন ভাবে নির্যাতনের শিকার হন। এর মধ্যে মারা যান তিনজন। রহস্যজনক মৃত্যু হয় ১১ জনের। সালিস ও ফতোয়ার কারণে নির্যাতনের শিকার হন চারজন নারী।
যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হন ১৩৩ জন। হত্যা করা হয় ৯১ জন নারীকে। আত্মহত্যা করেন চারজন। যৌতুকের কারণে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন ৩৭ জন। পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হন ২০০ জন। এর মধ্যে ১৪৮ জনকে হত্যা করা হয়। এ ধরনের নির্যাতনে আত্মহত্যা করেন ৩২ জন।
নারী নির্যাতন প্রসঙ্গে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, যৌতুক বা অন্যান্য নির্যাতন এক ধরনের সামাজিক ব্যাধি। তবে এ ধরনের নির্যাতন যখন নিয়ন্ত্রণ করা যায় না তখন এ ধরনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে। যাদের এ ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করার কথা তারা তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। এই সুযোগে ক্ষমতাবানরা বেশি করে নারীর মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে।
আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ছয় মাসের মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তাতে এসব তথ্য দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন দৈনিক সংবাদ পত্র এবং আসকের সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে আজ মঙ্গলবার আসকের এক বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পরিবার, প্রত্যক্ষদর্শী ও সহকর্মীদের দাবি অনুযায়ী, গত ছয় মাসে র্যাবের ক্রসফায়ারে ২২ জন, পুলিশের ক্রসফায়ারে ৪০ জন, র্যাব ও বিজিবির ক্রসফায়ারে একজন, আনসার বাহিনীর ক্রসফায়ারে একজন, ডিবি পুলিশের ক্রসফায়ারে সাতজন, যৌথ বাহিনীর ক্রসফায়ারে একজন মারা যান। পুলিশের নির্যাতনে চারজন, ডিবি পুলিশের নির্যাতনে একজন, র্যাবের নির্যাতনে একজন এবং বিজিবির নির্যাতনে একজন মারা যান। এ ছাড়া পুলিশের গুলিতে ১৪ জন, ডিবি পুলিশের গুলিতে একজন মারা যান।
গত ছয় মাসে থানা হাজতে আত্মহত্যা করেন তিনজন। গ্রেপ্তারের পর পুলিশের হেফাজতে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে দুজন, র্যাবের হেফাজতে একজন মারা যান। ট্রেনে কাটা পড়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের দাবি ট্রেনের নিচে ফেলে দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। কারা হেফাজতে মারা গেছেন ৩৪ জন। এর মধ্যে কয়েদি ১৩ ও হাজতি ছিলেন ২১ জন। সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে মারা গেছেন ১৫ জন, নির্যাতনে মৃত্যু হয়েছে আটজনের। গত ছয় মাসে আহত হয়েছেন ৩৮ জন। অপহরণের শিকার হন ৪৯ জন। অপহরণের পর বিজিবির মধ্যস্থতায় ফেরত আসে ২২ জন।
আসকের এ প্রতিবেদন সম্পর্কে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘন পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে যে উদ্বেগ তারই প্রতিফলন ঘটেছে আসকের প্রতিবেদনে। মানবাধিকার রক্ষার দায়িত্ব যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার, সেই সংস্থার মাধ্যমেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলে একটি গণতান্ত্রিক দেশের জন্য তা খুবই উদ্বেগজনক। স্বল্প মেয়াদের পাশাপাশি দীর্ঘ মেয়াদেও এ ধরনের ঘটনা ঝুঁকিপূর্ণ। কেননা এতে এ ধরনের সংস্থার প্রতি মানুষের আস্থা কমে যায়। সমাজে তখন মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বেশি ঘটে। সাধারণ অপরাধ বাড়ার প্রবণতাও বেড়ে যায়।
গত বৃহস্পতিবার ২০১৪ সালের মার্কিন মানবাধিকার প্রতিবেদনে বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুমকে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান মানবাধিকার সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া সংবাদপত্র এবং সাংবাদিকদের ওপর হামলার বিবরণ, ইন্টারনেটে মত প্রকাশের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপসহ সভা-সমাবেশে বাধা প্রদান, সরকারের দুর্নীতি ও অস্বচ্ছতার কথাও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
আসকের প্রতিবেদন বলছে, গত ছয় মাসে রাজনৈতিক সংঘাতের মোট ঘটনা ঘটেছে ৬৬০ টি। এতে নিহত হয়েছেন ১৩২ জন। আহত হয়েছেন ৩ হাজার ৮৯২ জন। নিহতদের মধ্যে ৭০ জনই মারা গেছেন অগ্নিদগ্ধ হয়ে। ছয় মাসে সাতটি বিভাগের বিভিন্ন স্থানে ১৯ বার ১৪৪ ধারা জারির ঘটনা ঘটে। শুধু গণপিটুনিতেই মৃত্যু হয় ৬৯ জনের।
হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের ঘটনাও থেমে ছিল না গত ছয় মাসে। এ সম্প্রদায়ের ৯৪টি বাড়ি ভাঙচুর ও পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ১৩৭টি প্রতিমা ভেঙে ফেলা হয়। বিভিন্ন ঘটনায় ২৮ জন আহত হন। ১৬১ জন গণমাধ্যমকর্মী বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন, হয়রানি, হুমকি ও পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন।
নারী নির্যাতন: ছয় মাসে ধর্ষণের শিকার হয় ৩২৬ জন। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয় ২৯ জনকে। আত্মহত্যা করেন একজন। ৫২ জনের বেশি নারীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয়।
যৌন হয়রানির কারণে ছয়জন নারী আত্মহত্যা করেন। এ ধরনের ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে একজন নারী ও একজন পুরুষ নিহত হন। এ ছাড়া ৯৪ জন হয়রানি ও লাঞ্ছনার শিকার হন।
২২ জন গৃহকর্মী বিভিন্ন ভাবে নির্যাতনের শিকার হন। এর মধ্যে মারা যান তিনজন। রহস্যজনক মৃত্যু হয় ১১ জনের। সালিস ও ফতোয়ার কারণে নির্যাতনের শিকার হন চারজন নারী।
যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হন ১৩৩ জন। হত্যা করা হয় ৯১ জন নারীকে। আত্মহত্যা করেন চারজন। যৌতুকের কারণে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন ৩৭ জন। পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হন ২০০ জন। এর মধ্যে ১৪৮ জনকে হত্যা করা হয়। এ ধরনের নির্যাতনে আত্মহত্যা করেন ৩২ জন।
নারী নির্যাতন প্রসঙ্গে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, যৌতুক বা অন্যান্য নির্যাতন এক ধরনের সামাজিক ব্যাধি। তবে এ ধরনের নির্যাতন যখন নিয়ন্ত্রণ করা যায় না তখন এ ধরনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে। যাদের এ ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করার কথা তারা তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। এই সুযোগে ক্ষমতাবানরা বেশি করে নারীর মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে।
No comments