সচিব–জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক একই গ্রেডে by শরিফুজ্জামান
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আন্দোলনের হুমকির মুখে সচিব, সিলেকশন গ্রেডের অধ্যাপক ও মেজর জেনারেলদের বেতনকাঠামো এক নম্বর গ্রেডে রাখা হচ্ছে। তাঁদের সবার মূল বেতন হবে ৭৫ হাজার টাকা। তবে এটা করা হলেও পুরোপুরি সন্তুষ্ট নন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকেরা। আবার সচিবদের মধ্যেও নতুন করে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকেরা সরকারের নির্বাচনী ওয়াদা অনুযায়ী উচ্চতর বেতনকাঠামো চান। এর আগ পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্ত অধ্যাপকেরা (জ্যেষ্ঠ) সরকারের জ্যেষ্ঠ সচিবের মতো এবং অন্য শিক্ষকেরা ঠিক আগের মতোই সম্মান ও মর্যাদাক্রম চান।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, কয়েক দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের ক্ষোভ ও বৈষম্যের অভিযোগ আমলে নিয়ে গ্রেড-১ নড়চড় করা হচ্ছে না। সপ্তম বেতন স্কেলে সচিব, সিলেকশন গ্রেডের অধ্যাপক ও মেজর জেনারেল এক নম্বর গ্রেডেই ছিলেন।
বেতন কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্তরে সৃষ্টি হওয়া ঝামেলা অন্য স্তরকেও প্রভাবিত করে এবং সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও অধ্যাপকদের মর্যাদাক্রম আগের তুলনায় তিন থেকে চার ধাপ নেমে যায়। এ নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ শুরু হলে সচিব কমিটি বিষয়টি পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত নেয়। কমিটি তাদের নতুন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সরকারের কাছে সুপারিশ করেছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে কিছু ভুল-বোঝাবুঝি হয়েছে। আগে এক নম্বর গ্রেডে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা সেখানেই থাকবেন। আর গ্রেডের বাইরে আগে যাঁরা ছিলেন, তাঁরাও সেখানে থাকবেন।
তবে সিলেকশন গ্রেডের অধ্যাপকদের আগের অবস্থানে নেওয়া হলেও তাতে খুশি নয় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। ফেডারেশনের মহাসচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ এস এম মাকসুদ কামাল প্রথম আলোকে জানান, প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরলে তাঁর সঙ্গে দেখা করে তাঁরা দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরবেন।
মাকসুদ কামাল বলেন, ভারত, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানে শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনকাঠামো আছে। বর্তমান সরকার ২০০৮ সালে এই অঙ্গীকার করলেও তা হবে, হচ্ছে বলে সময় পার করছে।
‘দিনবদলের সনদ’ নামে ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে আওয়ামী লীগ মানব উন্নয়নবিষয়ক অঙ্গীকারে (১০.১) শিক্ষকদের জন্য উচ্চতর বেতনকাঠামো করার কথা বলেছিল।
আজ সোমবার ফেডারেশনের নেতারা শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি দেবেন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এটা সরকারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নয়। আলাপ-আলোচনা ও পর্যালোচনার মাধ্যমে বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।
এদিকে সচিবেরা একই গ্রেডে সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্ত অধ্যাপকদের না রাখার পক্ষে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক সচিব প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষকদের আন্দোলনের হুমকিতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও এতে সচিবদের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হবে।
বেতনকাঠামোয় পরিবর্তন আসছে: মন্ত্রিপরিষদ, মুখ্য ও জ্যেষ্ঠ সচিব এবং তিন বাহিনীর প্রধান গ্রেডের ঊর্ধ্বে দৃষ্টান্ত হিসেবে একজন সচিব বলেন, শিক্ষাসচিব এবং শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এক নম্বর গ্রেডে বেতন পাওয়ায় সচিবের কর্তৃত্ব বা নির্দেশ মানতে তিনি বাধ্য না-ও হতে পারেন। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের মধ্যেও এমন ঝামেলা তৈরি হতে পারে।
তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে দেখছি যে সিভিলিয়ান রুলে আধিপত্যের ব্যাপারটা থেকেই যাচ্ছে।’ তিনি অধ্যাপক ও সচিবদের গ্রেড-১ দিয়ে সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্ত অধ্যাপকদের মন্ত্রিপরিষদ সচিব, মুখ্য সচিব, জ্যেষ্ঠ সচিব ও তিন বাহিনী প্রধানের সমান বেতন বা মর্যাদা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, এখন ৩৭টি সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক আছেন প্রায় ১৫ হাজার। এর মধ্যে অধ্যাপক পাঁচ হাজারের কাছাকাছি। বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপকদের ২৫ শতাংশ সিলেকশন গ্রেড পান, এই হিসাবে তাঁদের সংখ্যা প্রায় ১ হাজার ২৫০।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনকে প্রধান করে ২০১৩ সালে অষ্টম বেতন ও চাকরি কমিশন গঠন করে সরকার। গত বছরের ২১ ডিসেম্বর ওই কমিশন প্রতিবেদন জমা দেয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞার নেতৃত্বাধীন বেতন কমিশনের প্রতিবেদন পর্যালোচনা কমিটি গত ১৩ মে অর্থমন্ত্রীর কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়।
সপ্তম বেতন স্কেলে একজন অধ্যাপকের মূল বেতন ৩৩ হাজার ৫০০ টাকা। অষ্টম বেতন কমিশনের সুপারিশে তা দ্বিগুণের একটু বেশি করে ৭০ হাজার টাকা করা হয়। সচিব কমিটি এটা ৬৪ হাজার ৬০০ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে। এই অধ্যাপকেরা গ্রেড-২ অনুয়ায়ী এই বেতন পাবেন।
অধ্যাপকের ওপরে আছেন সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্ত অধ্যাপক, যাঁদের মূল বেতন কমিশন ৮০ হাজার টাকা করার সুপারিশ করে। সচিব কমিটি এটা ৭৫ হাজার টাকা প্রস্তাব করেছে। সপ্তম বেতন স্কেল অনুযায়ী, সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও সচিব উভয়েই ৪০ হাজার টাকা মূল বেতন পান। এখন তাঁরা এক নম্বর গ্রেডে একই বেতন পাবেন।
বেতন কমিশন অবশ্য সিলেকশন গ্রেড তুলে দেওয়ার প্রস্তাব করেছে। আর তা করলে অধ্যাপকদের নেমে আসতে হবে গ্রেড-২ থেকে কয়েক ধাপ নিচে।
গ্রেড-১ এর ওপরে প্রথম ধাপে ৯০ হাজার টাকা মূল বেতন পাবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব, মুখ্য সচিব ও তিন বাহিনী প্রধান। বর্তমানে তাঁদের মূল বেতন ৪৫ হাজার টাকা। বেতন কমিশন এক লাখ টাকা করার সুপারিশ করেছিল।
আর দ্বিতীয় ধাপে ৮৪ হাজার টাকা পাবেন জ্যেষ্ঠ সচিবেরা, বেতন কমিশন সুপারিশ করেছিল ৮৮ হাজার টাকা। বর্তমানে তাঁরা ৪২ হাজার মূল বেতন পান।
ঠিক সময়ে পদোন্নতি দেওয়া সম্ভব হয় না বলে আর্থিক সুবিধা হিসেবে সিলেকশন গ্রেড দেওয়া হয়। আবার চাকরির একটি নির্ধারিত সময় অনুযায়ী দেওয়া হয় টাইমস্কেল। কিন্তু বেতন কমিশন ও পর্যালোচনা কমিটি এই সুবিধা বাদ দেওয়ার পক্ষে। এ নিয়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারি কর্মকর্তাদের বিভিন্ন ভাতার ওপর আয়কর আরোপ করায় এই ক্ষোভ আরও বেড়েছে।
সচিবালয়ে উপসচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা জানান, সন্তানের শিক্ষা ভাতা হিসেবে ২০০ টাকা পান। এর ১০ শতাংশ কর দিতে হলে ১৮০ টাকা পাবেন। বিষয়টি কতটা হাস্যকর তা ভেবে দেখার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অনুরোধ জানান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকেরা সরকারের নির্বাচনী ওয়াদা অনুযায়ী উচ্চতর বেতনকাঠামো চান। এর আগ পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্ত অধ্যাপকেরা (জ্যেষ্ঠ) সরকারের জ্যেষ্ঠ সচিবের মতো এবং অন্য শিক্ষকেরা ঠিক আগের মতোই সম্মান ও মর্যাদাক্রম চান।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, কয়েক দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের ক্ষোভ ও বৈষম্যের অভিযোগ আমলে নিয়ে গ্রেড-১ নড়চড় করা হচ্ছে না। সপ্তম বেতন স্কেলে সচিব, সিলেকশন গ্রেডের অধ্যাপক ও মেজর জেনারেল এক নম্বর গ্রেডেই ছিলেন।
বেতন কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্তরে সৃষ্টি হওয়া ঝামেলা অন্য স্তরকেও প্রভাবিত করে এবং সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও অধ্যাপকদের মর্যাদাক্রম আগের তুলনায় তিন থেকে চার ধাপ নেমে যায়। এ নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ শুরু হলে সচিব কমিটি বিষয়টি পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত নেয়। কমিটি তাদের নতুন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সরকারের কাছে সুপারিশ করেছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে কিছু ভুল-বোঝাবুঝি হয়েছে। আগে এক নম্বর গ্রেডে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা সেখানেই থাকবেন। আর গ্রেডের বাইরে আগে যাঁরা ছিলেন, তাঁরাও সেখানে থাকবেন।
তবে সিলেকশন গ্রেডের অধ্যাপকদের আগের অবস্থানে নেওয়া হলেও তাতে খুশি নয় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। ফেডারেশনের মহাসচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ এস এম মাকসুদ কামাল প্রথম আলোকে জানান, প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরলে তাঁর সঙ্গে দেখা করে তাঁরা দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরবেন।
মাকসুদ কামাল বলেন, ভারত, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানে শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনকাঠামো আছে। বর্তমান সরকার ২০০৮ সালে এই অঙ্গীকার করলেও তা হবে, হচ্ছে বলে সময় পার করছে।
‘দিনবদলের সনদ’ নামে ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে আওয়ামী লীগ মানব উন্নয়নবিষয়ক অঙ্গীকারে (১০.১) শিক্ষকদের জন্য উচ্চতর বেতনকাঠামো করার কথা বলেছিল।
আজ সোমবার ফেডারেশনের নেতারা শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি দেবেন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এটা সরকারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নয়। আলাপ-আলোচনা ও পর্যালোচনার মাধ্যমে বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।
এদিকে সচিবেরা একই গ্রেডে সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্ত অধ্যাপকদের না রাখার পক্ষে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক সচিব প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষকদের আন্দোলনের হুমকিতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও এতে সচিবদের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হবে।
বেতনকাঠামোয় পরিবর্তন আসছে: মন্ত্রিপরিষদ, মুখ্য ও জ্যেষ্ঠ সচিব এবং তিন বাহিনীর প্রধান গ্রেডের ঊর্ধ্বে দৃষ্টান্ত হিসেবে একজন সচিব বলেন, শিক্ষাসচিব এবং শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এক নম্বর গ্রেডে বেতন পাওয়ায় সচিবের কর্তৃত্ব বা নির্দেশ মানতে তিনি বাধ্য না-ও হতে পারেন। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের মধ্যেও এমন ঝামেলা তৈরি হতে পারে।
তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে দেখছি যে সিভিলিয়ান রুলে আধিপত্যের ব্যাপারটা থেকেই যাচ্ছে।’ তিনি অধ্যাপক ও সচিবদের গ্রেড-১ দিয়ে সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্ত অধ্যাপকদের মন্ত্রিপরিষদ সচিব, মুখ্য সচিব, জ্যেষ্ঠ সচিব ও তিন বাহিনী প্রধানের সমান বেতন বা মর্যাদা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, এখন ৩৭টি সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক আছেন প্রায় ১৫ হাজার। এর মধ্যে অধ্যাপক পাঁচ হাজারের কাছাকাছি। বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপকদের ২৫ শতাংশ সিলেকশন গ্রেড পান, এই হিসাবে তাঁদের সংখ্যা প্রায় ১ হাজার ২৫০।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনকে প্রধান করে ২০১৩ সালে অষ্টম বেতন ও চাকরি কমিশন গঠন করে সরকার। গত বছরের ২১ ডিসেম্বর ওই কমিশন প্রতিবেদন জমা দেয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞার নেতৃত্বাধীন বেতন কমিশনের প্রতিবেদন পর্যালোচনা কমিটি গত ১৩ মে অর্থমন্ত্রীর কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়।
সপ্তম বেতন স্কেলে একজন অধ্যাপকের মূল বেতন ৩৩ হাজার ৫০০ টাকা। অষ্টম বেতন কমিশনের সুপারিশে তা দ্বিগুণের একটু বেশি করে ৭০ হাজার টাকা করা হয়। সচিব কমিটি এটা ৬৪ হাজার ৬০০ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে। এই অধ্যাপকেরা গ্রেড-২ অনুয়ায়ী এই বেতন পাবেন।
অধ্যাপকের ওপরে আছেন সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্ত অধ্যাপক, যাঁদের মূল বেতন কমিশন ৮০ হাজার টাকা করার সুপারিশ করে। সচিব কমিটি এটা ৭৫ হাজার টাকা প্রস্তাব করেছে। সপ্তম বেতন স্কেল অনুযায়ী, সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও সচিব উভয়েই ৪০ হাজার টাকা মূল বেতন পান। এখন তাঁরা এক নম্বর গ্রেডে একই বেতন পাবেন।
বেতন কমিশন অবশ্য সিলেকশন গ্রেড তুলে দেওয়ার প্রস্তাব করেছে। আর তা করলে অধ্যাপকদের নেমে আসতে হবে গ্রেড-২ থেকে কয়েক ধাপ নিচে।
গ্রেড-১ এর ওপরে প্রথম ধাপে ৯০ হাজার টাকা মূল বেতন পাবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব, মুখ্য সচিব ও তিন বাহিনী প্রধান। বর্তমানে তাঁদের মূল বেতন ৪৫ হাজার টাকা। বেতন কমিশন এক লাখ টাকা করার সুপারিশ করেছিল।
আর দ্বিতীয় ধাপে ৮৪ হাজার টাকা পাবেন জ্যেষ্ঠ সচিবেরা, বেতন কমিশন সুপারিশ করেছিল ৮৮ হাজার টাকা। বর্তমানে তাঁরা ৪২ হাজার মূল বেতন পান।
ঠিক সময়ে পদোন্নতি দেওয়া সম্ভব হয় না বলে আর্থিক সুবিধা হিসেবে সিলেকশন গ্রেড দেওয়া হয়। আবার চাকরির একটি নির্ধারিত সময় অনুযায়ী দেওয়া হয় টাইমস্কেল। কিন্তু বেতন কমিশন ও পর্যালোচনা কমিটি এই সুবিধা বাদ দেওয়ার পক্ষে। এ নিয়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারি কর্মকর্তাদের বিভিন্ন ভাতার ওপর আয়কর আরোপ করায় এই ক্ষোভ আরও বেড়েছে।
সচিবালয়ে উপসচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা জানান, সন্তানের শিক্ষা ভাতা হিসেবে ২০০ টাকা পান। এর ১০ শতাংশ কর দিতে হলে ১৮০ টাকা পাবেন। বিষয়টি কতটা হাস্যকর তা ভেবে দেখার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অনুরোধ জানান তিনি।
No comments