বাল্যবিবাহমুক্ত গ্রামের প্রত্যয় by আব্দুল আজিজ
বাল্যবিবাহ ও নারী নির্যাতন রোধে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে গ্রামের কিশোরীদের নিয়ে উঠান বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। সম্প্রতি জামালপুর সদর উপজেলার কানিল গ্রাম থেকে তোলা ছবি |
গ্রামের
কোথাও বাল্যবিবাহের খবর পেলেই ছুটে যাচ্ছেন তাঁরা। পরিবারের সঙ্গে আলোচনা
করে বাল্যবিবাহের হাত থেকে রক্ষা করছেন কিশোরীদের। ঘুরে ঘুরে সচেতন করার
চেষ্টা করছেন সবাইকে। এভাবে জামালপুরে সাতটি উপজেলার সাতটি গ্রামকে ২০১৬
সালের মধ্যে বাল্যবিবাহমুক্ত ঘোষণার উদ্যোগ নিয়েছেন সেখানকার গ্রাম্য
দূতেরা।
গত তিন মাসে তাঁদের নিরলস প্রচেষ্টায় প্রায় ১৫ জন কিশোরী বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পেয়েছে। একই সঙ্গে গ্রাম্য দূতেরা নারী নির্যাতন রোধেও কাজ করছেন।
সদ্য বদলি হওয়া জামালপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) নজরুল ইসলামের উদ্যোগে গত বছর গ্রাম্য দূতদের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার কানিল, মেলান্দহের বীর ঘোষেরপাড়া, ইসলামপুরের কুড়িপাড়া, দেওয়ানগঞ্জের দফরপাড়া, বকশীগঞ্জের বাঙালপাড়া, মাদারগঞ্জের বাকুরচর এবং সরিষাবাড়ী উপজেলার শিবপুর গ্রামকে বাল্যবিবাহের ঝুঁকিপূর্ণ গ্রাম হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে ওই সাতটি গ্রামের লোকজনের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বাল্যবিবাহ ও নারী নির্যাতন রোধে গ্রাম্য দূত হিসেবে একজন করে নারী দায়িত্ব পান।
সাতটি উপজেলার গ্রাম্য দূতেরা গ্রামের প্রতিটি পরিবারের সদস্য ও কিশোরীদের নিয়ে মাসে একবার করে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে সচেতনতা সৃষ্টি, বাল্যবিবাহের ঝুঁকিতে থাকা কিশোরীদের তালিকা তৈরি, গ্রামের সচেতন নাগরিক, শিক্ষক ও জনপ্রতিনিধিদের আলোচনার মাধ্যমে তাঁদের কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করার কাজ করছেন। ইতিমধ্যে তাঁদের সঙ্গে সাতটি গ্রামে বাল্যবিবাহের ঝুঁকিতে থাকা ২৩০ জন কিশোরী যোগ দিয়েছে।
বকশীগঞ্জ উপজেলার বাঙালপাড়া গ্রামের গ্রাম্য দূত কাজলরেখা জানান, তিনি প্রতি মাসে তাঁর বাড়িতে প্রায় ১০০ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে উঠান বৈঠক করেন। সেখানে বোঝানোর চেষ্টা করেন, ১৮ বছরের আগে মেয়ের বিয়ে দিলে অপুষ্ট মায়ের অপুষ্ট শিশু ছাড়াও সন্তান দুর্বল, এমনকি বিকলাঙ্গও হতে পারে।
সম্প্রতি তাঁরা সবাই ওই গ্রামের পঞ্চম শ্রেণিপড়ুয়া এক ছাত্রীকে বাল্যবিবাহের হাত থেকে রক্ষা করেছেন। এ ছাড়া গত মাসে নির্যাতিত এক নারীকে এসপির কাছে নিয়ে আইনি সহায়তা পাইয়ে দিয়েছেন।
মাদারগঞ্জ উপজেলার বাকুরচরের গ্রাম্য দূত রিনা আক্তার বলেন, বাল্যবিবাহ সম্পর্কে প্রথম দিকে গ্রামে সচেতনতা সৃষ্টিতে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। এখন তাঁর সঙ্গে আরও ২৬ জন কিশোরী আছে, যারা এ ব্যাপারে কাজ করে যাচ্ছে।
গ্রামের ১০ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে কোনো মেয়ের বিয়ের কথা শোনার সঙ্গে সঙ্গে সবাই ওই বাড়ির লোকজনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বিয়ের কার্যক্রম বন্ধ করেন। গত চার মাসে এমন পাঁচটি বিয়ে আলোচনার মাধ্যমে বন্ধ করা হয়েছে।
সদর উপজেলায় কানিল গ্রামের এক স্কুলছাত্রীর বাবা জানান, সম্প্রতি তাঁর মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছিল। বিয়ের কয়েক দিন আগে তাঁদের গ্রাম্য দূত হাছনা খানের নেতৃত্বে প্রায় ১৫ থেকে ২০ নারী দুই দিন ধরে তাঁদের বুঝিয়ে বিয়ে বন্ধ করে দেন। এরপর তাঁর মেয়ে আবার বিদ্যালয়ে যেতে শুরু করেছে।
গ্রাম্য দূতদের বাল্যবিবাহ সম্পর্কে জানানো ও বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের জেন্ডারবিষয়ক জামালপুরের কর্মকর্তা আকলিমা জেসমিন। এখানে নারীদের পাশাপাশি পুরুষদের অংশগ্রহণও জরুরি।
নজরুল ইসলাম বলেন, জেলার সব গ্রামে বাল্যবিবাহ ও নারী নির্যাতন বন্ধ করা অল্প সময়ে সম্ভব নয়। তাই প্রথম ধাপে এভাবে কাজ শুরু করা হয়েছে।
গত তিন মাসে তাঁদের নিরলস প্রচেষ্টায় প্রায় ১৫ জন কিশোরী বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পেয়েছে। একই সঙ্গে গ্রাম্য দূতেরা নারী নির্যাতন রোধেও কাজ করছেন।
সদ্য বদলি হওয়া জামালপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) নজরুল ইসলামের উদ্যোগে গত বছর গ্রাম্য দূতদের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার কানিল, মেলান্দহের বীর ঘোষেরপাড়া, ইসলামপুরের কুড়িপাড়া, দেওয়ানগঞ্জের দফরপাড়া, বকশীগঞ্জের বাঙালপাড়া, মাদারগঞ্জের বাকুরচর এবং সরিষাবাড়ী উপজেলার শিবপুর গ্রামকে বাল্যবিবাহের ঝুঁকিপূর্ণ গ্রাম হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে ওই সাতটি গ্রামের লোকজনের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বাল্যবিবাহ ও নারী নির্যাতন রোধে গ্রাম্য দূত হিসেবে একজন করে নারী দায়িত্ব পান।
সাতটি উপজেলার গ্রাম্য দূতেরা গ্রামের প্রতিটি পরিবারের সদস্য ও কিশোরীদের নিয়ে মাসে একবার করে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে সচেতনতা সৃষ্টি, বাল্যবিবাহের ঝুঁকিতে থাকা কিশোরীদের তালিকা তৈরি, গ্রামের সচেতন নাগরিক, শিক্ষক ও জনপ্রতিনিধিদের আলোচনার মাধ্যমে তাঁদের কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করার কাজ করছেন। ইতিমধ্যে তাঁদের সঙ্গে সাতটি গ্রামে বাল্যবিবাহের ঝুঁকিতে থাকা ২৩০ জন কিশোরী যোগ দিয়েছে।
বকশীগঞ্জ উপজেলার বাঙালপাড়া গ্রামের গ্রাম্য দূত কাজলরেখা জানান, তিনি প্রতি মাসে তাঁর বাড়িতে প্রায় ১০০ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে উঠান বৈঠক করেন। সেখানে বোঝানোর চেষ্টা করেন, ১৮ বছরের আগে মেয়ের বিয়ে দিলে অপুষ্ট মায়ের অপুষ্ট শিশু ছাড়াও সন্তান দুর্বল, এমনকি বিকলাঙ্গও হতে পারে।
সম্প্রতি তাঁরা সবাই ওই গ্রামের পঞ্চম শ্রেণিপড়ুয়া এক ছাত্রীকে বাল্যবিবাহের হাত থেকে রক্ষা করেছেন। এ ছাড়া গত মাসে নির্যাতিত এক নারীকে এসপির কাছে নিয়ে আইনি সহায়তা পাইয়ে দিয়েছেন।
মাদারগঞ্জ উপজেলার বাকুরচরের গ্রাম্য দূত রিনা আক্তার বলেন, বাল্যবিবাহ সম্পর্কে প্রথম দিকে গ্রামে সচেতনতা সৃষ্টিতে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। এখন তাঁর সঙ্গে আরও ২৬ জন কিশোরী আছে, যারা এ ব্যাপারে কাজ করে যাচ্ছে।
গ্রামের ১০ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে কোনো মেয়ের বিয়ের কথা শোনার সঙ্গে সঙ্গে সবাই ওই বাড়ির লোকজনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বিয়ের কার্যক্রম বন্ধ করেন। গত চার মাসে এমন পাঁচটি বিয়ে আলোচনার মাধ্যমে বন্ধ করা হয়েছে।
সদর উপজেলায় কানিল গ্রামের এক স্কুলছাত্রীর বাবা জানান, সম্প্রতি তাঁর মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছিল। বিয়ের কয়েক দিন আগে তাঁদের গ্রাম্য দূত হাছনা খানের নেতৃত্বে প্রায় ১৫ থেকে ২০ নারী দুই দিন ধরে তাঁদের বুঝিয়ে বিয়ে বন্ধ করে দেন। এরপর তাঁর মেয়ে আবার বিদ্যালয়ে যেতে শুরু করেছে।
গ্রাম্য দূতদের বাল্যবিবাহ সম্পর্কে জানানো ও বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের জেন্ডারবিষয়ক জামালপুরের কর্মকর্তা আকলিমা জেসমিন। এখানে নারীদের পাশাপাশি পুরুষদের অংশগ্রহণও জরুরি।
নজরুল ইসলাম বলেন, জেলার সব গ্রামে বাল্যবিবাহ ও নারী নির্যাতন বন্ধ করা অল্প সময়ে সম্ভব নয়। তাই প্রথম ধাপে এভাবে কাজ শুরু করা হয়েছে।
No comments