মায়া ইস্যুতে বিতর্কে জড়াতে চায় না সংসদ by কাজী সোহাগ

মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়া
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়ার সংসদ সদস্যপদ বাতিলের বিতর্কে জড়াতে চায় না জাতীয় সংসদ। এ বিষয়ে মন্তব্য করার সময় আসেনি বলে জানিয়েছেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। আর বিতর্ক হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া। এদিকে মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়ার বিরুদ্ধে আদালতের দেয়া রায়ের বিষয়ে কোন উদ্যোগ নেই জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের। তবে আদালতের নির্দেশনা পেলে তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হবে বলে সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তারা বলেন, মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়ার মন্ত্রিত্ব ও সংসদ সদস্য পদ নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। আপিল বিভাগের রায়ের পর সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তার মন্ত্রিত্ব ও সংসদ সদস্য পদ খারিজ হয়েছে বলে একাধিক আইন বিশেষজ্ঞ দাবি করেছেন। সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদের ২নং উপ-অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘কোন ব্যক্তি সংসদের সদস্য নির্বাচিত হওয়ার এবং সংসদ সদস্য থাকবার যোগ্য হবেন না, যদি “তিনি নৈতিক স্খলনজনিত কোন ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অন্যূন দু’বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং তার মুক্তিলাভের পর পাঁচ বছর অতিবাহিত না হয়ে থাকে”। মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ২০০৮ সালে জ্ঞাত আয়ের বাইরে অবৈধভাবে ৬ কোটির বেশি টাকার সম্পদ অর্জনের মামলায় ১৩ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন। ২০১০ সালের অক্টোবরে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ ওই রায় বাতিল করেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে দুদক আপিল করে। ১৪ই জুন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বাতিল করে হাইকোর্টে আপিলের পুনঃশুনানির নির্দেশ দেন। আর হাইকোর্টের রায় বাতিল হওয়ায় নিম্ন আদালতের বহাল আছে উল্লেখ করে অনেকেই বলছেন, সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়ার সংসদ সদস্য পদ ও মন্ত্রিত্ব দুটোই খারিজ হয়েছে। এ প্রসঙ্গে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী জানান, এ বিষয়ে মন্তব্য করার সময় আসেনি। আর আদালত আদেশ দিলেও রায়ের কপি না পেলে জাতীয় সংসদের করণীয় কিছু নেই। এখনো সংসদকে আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু জানানো হয়নি। পত্রিকার খবর দেখে সিদ্ধান্ত নেয়া যান না। তিনি আরও বলেন, যেহেতু আপিল বিভাগ শুনানির কথা বলেছে, সেহেতু তার আবারো আপিলের সুযোগ আছে। আর মামলাও নিষ্পত্তি হয়নি। আর বিচারাধীন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ নেই। তবে সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ না থাকলেও বিতর্ক করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া। তিনি বলেন, আদালতের রায়ে নৈতিকস্খলনের কারণে তার সাজা হয়েছে। সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তার সংসদ সদস্যপদ থাকবে না। কিন্তু মামলাটি এখনো নিষ্পত্তি হয়নি। ফলে এ বিষয়ে এখনই কোন সিদ্ধান্ত দেয়া যাচ্ছে না। তাই বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। আর সিদ্ধান্ত নিতে পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি দেখতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.