বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে পুলিশ সদস্যরা by শাহীন করিম
মরণ
নেশা ইয়াবা ব্যবসা, নারী ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, বিনা কারণে
বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র কিংবা ব্যবসায়ীকে নির্মম নির্যাতন চালিয়ে মোটা অঙ্কের
ঘুষ বাণিজ্যসহ সব অপরাধেই জড়িয়ে পড়ছে পুলিশ। রীতিমতো সিন্ডিকেট করে সরকারি
চাকরির পাশাপাশি কোটি কোটি টাকার অবৈধ ইয়াবা ব্যবসায় নেমেছে খোদ পুলিশ
সদস্যরা। সর্বশেষ গত রোববার ফেনীতে প্রায় সাড়ে ২৭ কোটি টাকা মূল্যের
ইয়াবাসহ পুলিশের একজন এএসআই র্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়ায় বেরিয়ে গেছে থলের
বিড়াল। এ ঘটনার যথাযথ তদন্ত হলে সেই ইয়াবা সম্রাট আমিন হুদার মতো নতুন
কোনো ইয়াবা সম্রাটের নাম বেরিয়ে আসতে পারে। তখন তা হবে যেন কেঁচো খুঁড়তে
সাপ বেরিয়ে আসার মতো ঘটনা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশ কর্মকর্তারা
বলেন, পুলিশ বাহিনীর হাতে গোনা কিছু সদস্য অবৈধভাবে টাকা কামাতে বেপরোয়া
হয়ে গেছে। মাঠ পর্যায়ের কিছু অসৎ, লোভী ও চরিত্রহীন পুলিশ সদস্য এহেন কোনো
অপরাধ নেই, যাতে নিজেকে জড়াচ্ছে না। যদিও এগুলো খুবই বিচ্ছিন্ন ঘটনা।
অধিকাংশ পুলিশ সদস্য পেশাদার ও দক্ষ। পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন, ইয়াবাসহ
বিভিন্ন প্রকার মাদক ব্যবসায় অনেক আগ থেকেই কিছু পুলিশ সদস্য জড়িত। তবে
ফেনীর অনভিপ্রেত ঘটনাটি টনিকের মতো কাজ করবে। ঢাকাসহ সারাদেশে পুলিশ
সদস্যদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, নিরীহ ব্যক্তিদের আটক করে ঘুষ আদায়ের
চেষ্টা, ছিনতাই ও চেকপোস্টে তল্লাশির নামে টাকা লুটে নেয়ার অভিযোগ মাঝে
মধ্যে পাওয়া যায়। ওই সব কর্মকর্তা বলেন, অনুমান করা যায়, ফেনীর ইয়াবার
চালানের সঙ্গে আরো অনেকে জড়িত। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখলে কিছু অজানা তথ্য
বেরিয়ে আসতে পারে।
সর্বশেষ ফেনীতে এক শিশুকে ধাক্কা দিয়ে পালানোর সময় এক প্রাইভেটকার ধাওয়া করে প্রায় সাত লাখ ইয়াবাসহ পুলিশের এক এএসআইসহ দু’জনকে গ্রেফতার করে র্যাব। শনিবার মধ্যরাতে ফেনীর লালপোল এলাকা থেকে জব্দ করা কালো রঙের ‘এলিয়ন’ মডেলের প্রাইভেটকারটির মালিক বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ গ্রেফতার পুলিশ সদস্য মাহফুজুর রহমান (৩৫)। যিনি পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) ঢাকায় কারিগরি শাখায় এএসআই হিসেবে কর্মরত (বিপিনং-৮০০১০৬৩১১৯)। গ্রেফতার জাবেদ আলী তার গাড়ির চালক। ঘটনার পর অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মাহফুজকে রিমান্ডেও নেয়া হয়েছে।
র্যাব কর্মকর্তারা জানান, ফেনীতে প্রায় সাড়ে ২৭ কোটি টাকার জব্দ করা ইয়াবার চালানের সঙ্গে শুধু এএসআই মাহফুজ নয়, পুলিশের একটি বিশাল সিন্ডিকেট এ অবৈধ ব্যবসায় জড়িত। পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখলে হয়ত কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে আসতে পারে।
র্যাব জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে মাহফুজুর র্যাবকে জানিয়েছে, ২০১১ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত টেকনাফ থানায় চাকরি করার সময় বিভিন্ন ইয়াবা ব্যবসায়ীর সঙ্গে তার সখ্য গড়ে ওঠে। মাহফুজুর জানিয়েছেÑ উদ্ধার হওয়া ইয়াবার চালানটি কক্সবাজার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এএসআই মো. বেলাল এবং কুমিরা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মো. আশিক তাকে ঢাকায় পৌঁছে দিতে বলে। ঢাকায় মাহফুজুরের কাছ থেকে হাইকোর্টের এক আইনজীবীর মুহুরি মো. মোতালেব, অ্যাডভোকেট জাকির, কনস্টেবল শাহীন, কাসেম ও গিয়াস বুঝে নেয়ার কথা ছিল।
এর আগে গত ১৭ জুন এক নারী পুলিশ কনস্টেবলকে গণধর্ষণে জড়িত তার সাবেক স্বামী এএসআই কলিমুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ঘটনার এক সপ্তাহ পর গত বুধবার সকালে কক্সবাজার শহরের কলাতলীর একটি হোটেল থেকে তাকে গ্রেফতার করে ডিবির একটি টিম। বর্তমানে ওই পুলিশ সদস্য গোয়েন্দা পুলিশের কাছে রিমান্ডে রয়েছে। এর আগে ওই নারী কনস্টেবল অভিযোগ করেন, তার সাবেক স্বামী কলিমুর রহমান আলোচনার কথা বলে গত ১০ জুন রাতে তাকে খিলগাঁওয়ের তিলপাপাড়ার ৮৬/৩ নম্বর বাসায় ডেকে নিয়ে সে নিজে ও তার বন্ধুরা তাকে ধর্ষণ করে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খিলগাঁও থানায় মামলা করেন ঘটনার শিকার ওই নারী কনস্টেবলের বড় বোন।
এছাড়া গত ১৪ জুন আরেক এএসআই স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছেন তার সাবেক স্ত্রী। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের নাম মোশারফ হোসেন। পুলিশের বিশেষ ইউনিট এসপিবিএনে এএসএআই হিসেবে তিনি কর্মরত। মোশারফ সম্প্রতি ফের বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কয়েক দফা ধর্ষণ করেছে বলে তার সাবেক স্ত্রীর অভিযোগ। ওই নারী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি হয়েছিলেন। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য মোশারফ এখনো পলাতক।
অপরদিকে বহুল আলোচিত রাজধানীর খিলগাঁও থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র আবদুল কাদেরকে নির্মম নির্যাতনের ঘটনায় আদালতের দেয়া তিন বছরের দণ্ডের খড়গ নিয়ে পালিয়ে বেড়ানোর পর গত ৩১ মে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। প্রায় চার বছর আগে বিনা কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবদুল কাদেরকে নির্যাতনের মামলায় গত ১৭ মে খিলগাঁও থানার সাবেক ওসি হেলাল উদ্দিনকে তিন বছরের সাজা দেয় ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর আদালত। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। এছাড়া মিরপুর ও শেরেবাংলানগরে পৃথক ঘটনায় ব্যবসায়ী ও ছাত্রকে অকারণে নির্যাতন চালিয়ে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগে গ্রেফতার দুইজন পুলিশের এসআই বর্তমানে কারগারে রয়েছেন। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলো এখন আদালতে বিচারাধীন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ডিএমপির গোয়েন্দা পুলিশের মুখপাত্র মনিরুল ইসলাম বলেন, লক্ষাধিক পুলিশ সদস্যের মধ্যে দুই-চারজন অসৎ পুলিশ সদস্য থাকতে পারে। তাদের অপরাধী হিসেবে বিবেচনা করে শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে। কাউকে ছাড় দেয়া হচ্ছে না। তিনি বলেন, ইয়াবাসহ ধরাপড়া বা অন্য দুই একটি ঘটনা- এগুলো নিছক বিচ্ছিন্ন ঘটনা। তবে কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে কঠোর বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সর্বশেষ ফেনীতে এক শিশুকে ধাক্কা দিয়ে পালানোর সময় এক প্রাইভেটকার ধাওয়া করে প্রায় সাত লাখ ইয়াবাসহ পুলিশের এক এএসআইসহ দু’জনকে গ্রেফতার করে র্যাব। শনিবার মধ্যরাতে ফেনীর লালপোল এলাকা থেকে জব্দ করা কালো রঙের ‘এলিয়ন’ মডেলের প্রাইভেটকারটির মালিক বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ গ্রেফতার পুলিশ সদস্য মাহফুজুর রহমান (৩৫)। যিনি পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) ঢাকায় কারিগরি শাখায় এএসআই হিসেবে কর্মরত (বিপিনং-৮০০১০৬৩১১৯)। গ্রেফতার জাবেদ আলী তার গাড়ির চালক। ঘটনার পর অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মাহফুজকে রিমান্ডেও নেয়া হয়েছে।
র্যাব কর্মকর্তারা জানান, ফেনীতে প্রায় সাড়ে ২৭ কোটি টাকার জব্দ করা ইয়াবার চালানের সঙ্গে শুধু এএসআই মাহফুজ নয়, পুলিশের একটি বিশাল সিন্ডিকেট এ অবৈধ ব্যবসায় জড়িত। পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখলে হয়ত কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে আসতে পারে।
র্যাব জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে মাহফুজুর র্যাবকে জানিয়েছে, ২০১১ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত টেকনাফ থানায় চাকরি করার সময় বিভিন্ন ইয়াবা ব্যবসায়ীর সঙ্গে তার সখ্য গড়ে ওঠে। মাহফুজুর জানিয়েছেÑ উদ্ধার হওয়া ইয়াবার চালানটি কক্সবাজার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এএসআই মো. বেলাল এবং কুমিরা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মো. আশিক তাকে ঢাকায় পৌঁছে দিতে বলে। ঢাকায় মাহফুজুরের কাছ থেকে হাইকোর্টের এক আইনজীবীর মুহুরি মো. মোতালেব, অ্যাডভোকেট জাকির, কনস্টেবল শাহীন, কাসেম ও গিয়াস বুঝে নেয়ার কথা ছিল।
এর আগে গত ১৭ জুন এক নারী পুলিশ কনস্টেবলকে গণধর্ষণে জড়িত তার সাবেক স্বামী এএসআই কলিমুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ঘটনার এক সপ্তাহ পর গত বুধবার সকালে কক্সবাজার শহরের কলাতলীর একটি হোটেল থেকে তাকে গ্রেফতার করে ডিবির একটি টিম। বর্তমানে ওই পুলিশ সদস্য গোয়েন্দা পুলিশের কাছে রিমান্ডে রয়েছে। এর আগে ওই নারী কনস্টেবল অভিযোগ করেন, তার সাবেক স্বামী কলিমুর রহমান আলোচনার কথা বলে গত ১০ জুন রাতে তাকে খিলগাঁওয়ের তিলপাপাড়ার ৮৬/৩ নম্বর বাসায় ডেকে নিয়ে সে নিজে ও তার বন্ধুরা তাকে ধর্ষণ করে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খিলগাঁও থানায় মামলা করেন ঘটনার শিকার ওই নারী কনস্টেবলের বড় বোন।
এছাড়া গত ১৪ জুন আরেক এএসআই স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছেন তার সাবেক স্ত্রী। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের নাম মোশারফ হোসেন। পুলিশের বিশেষ ইউনিট এসপিবিএনে এএসএআই হিসেবে তিনি কর্মরত। মোশারফ সম্প্রতি ফের বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কয়েক দফা ধর্ষণ করেছে বলে তার সাবেক স্ত্রীর অভিযোগ। ওই নারী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি হয়েছিলেন। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য মোশারফ এখনো পলাতক।
অপরদিকে বহুল আলোচিত রাজধানীর খিলগাঁও থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র আবদুল কাদেরকে নির্মম নির্যাতনের ঘটনায় আদালতের দেয়া তিন বছরের দণ্ডের খড়গ নিয়ে পালিয়ে বেড়ানোর পর গত ৩১ মে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। প্রায় চার বছর আগে বিনা কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবদুল কাদেরকে নির্যাতনের মামলায় গত ১৭ মে খিলগাঁও থানার সাবেক ওসি হেলাল উদ্দিনকে তিন বছরের সাজা দেয় ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর আদালত। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। এছাড়া মিরপুর ও শেরেবাংলানগরে পৃথক ঘটনায় ব্যবসায়ী ও ছাত্রকে অকারণে নির্যাতন চালিয়ে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগে গ্রেফতার দুইজন পুলিশের এসআই বর্তমানে কারগারে রয়েছেন। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলো এখন আদালতে বিচারাধীন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ডিএমপির গোয়েন্দা পুলিশের মুখপাত্র মনিরুল ইসলাম বলেন, লক্ষাধিক পুলিশ সদস্যের মধ্যে দুই-চারজন অসৎ পুলিশ সদস্য থাকতে পারে। তাদের অপরাধী হিসেবে বিবেচনা করে শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে। কাউকে ছাড় দেয়া হচ্ছে না। তিনি বলেন, ইয়াবাসহ ধরাপড়া বা অন্য দুই একটি ঘটনা- এগুলো নিছক বিচ্ছিন্ন ঘটনা। তবে কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে কঠোর বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
No comments