ভোট দিতে হলে আ.লীগকেই দিতে হবে by আবদুর রশিদ
তিন
সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির আনুষ্ঠানিক ভোট বর্জনের পর তা আওয়ামী
লীগের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় বলে স্বীকার করেছেন দলটির নেতারা। তাঁরা
বলেছেন, দুপুরের পরে নির্বাচন একতরফা হয়ে যাবে, সেটা তাঁরা ভাবতেই
পারেননি।
আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর একজন সদস্য এ প্রসঙ্গে বলেছেন, বিএনপির মাঝপথে নির্বাচন বর্জন তাঁদের অবাক করেছে। দুইটার দিকেও যদি বিএনপি নির্বাচন বর্জন করত তাহলে তাদের অনেক কাউন্সিলর প্রার্থী জয়ী হতে পারতো। তিনি মনে করেন, এই নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ভোটারদের বুঝিয়েছে, ভোট দিতে হলে আওয়ামী লীগকেই দিতে হবে। অন্যদের ভোট দিয়ে লাভ নাই। কারণ অন্য কেউ ক্ষমতায় আসবে না। নির্বাচনে হারতে হারতে বিএনপি এক সময় জাসদ কিংবা মুসলিম লীগ হয়ে যাবে বলে তাঁরা মনে করেন। সেই লক্ষ্য নিয়ে তাঁরা কাজ করছেন।
আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় তিনজন নেতা প্রথম আলোকে বলেন, সিটি নির্বাচনের আগে কর্মীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ছিল—‘তিন সিটি নির্বাচনেই তাঁদের জিততেই হবে। সেইভাবে প্রচারণা চালাও।’ সেইভাবে প্রচার চলছিল। দলের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও কাজ করছিল। ওই তিন নেতা স্বীকার করেন, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণের সব আওয়ামী লীগ-সমর্থিত কাউন্সিলদের প্রতি তাঁদের সমান নিয়ন্ত্রণ ছিল না। এ কারণে উত্তর-দক্ষিণের অধিকাংশ ওয়ার্ডে বিদ্রোহী প্রার্থী ছিল। এরপরে আবার নির্বাচনের দিন বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বিএনপির ভোট বর্জনের ঘোষণা দেয়। তখন বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে উত্তর ও দক্ষিণের আওয়ামী লীগের সমন্বয় কমিটির নেতাদের কাছে কাউন্সিলরদের ফোন আসতে থাকে। তাঁরা জানতে চান, এখন তাঁরা কী করবেন? তখন সমন্বয় কমিটির কোনো কোনো নেতা তাঁদের সমর্থক কাউন্সিলরদের বলেন, তোমাদের যা ইচ্ছা তাই কর। ওই তিন নেতা আরও বলেন, তাঁদের কাছে কাউন্সিলরা ফোন করে এমন কথা বলেন যে নির্বাচন ব্যাপারটা হরিলুট।
নির্বাচনের দিন শেষ পর্যন্ত সবকিছু আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণে ছিল কি না জানতে চাইলে ঢাকা উত্তরে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচারের প্রধান সমন্বয়ক ফারুক খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত সবকিছু আমাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। আপনি দেখবেন মেয়র সমর্থকদের মধ্যে কোনো সংঘর্ষ হয়নি। যা দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে তা কাউন্সিলরদের সমর্থকদের মধ্যে।’
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের একজন সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, ১২টার পর তাঁদের কাছে খবর আসে কোনো কেন্দ্রে এখন আর বিএনপি-সমর্থিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের কোনো এজেন্ট নেই। পরে বিএনপির ভোট বর্জনের ঘোষণার পর সবকিছু তাঁদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। তাঁর মতে, বিএনপির ভোট বর্জনের ঘোষণার পর চাইলেও তাঁরা অনিয়ম এড়াতে পারতেন না।
গত বুধবার সিলেটের কাজিরবাজার সেতুর নির্মাণকাজ পরিদর্শন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির নীরব ভোট বিপ্লবের ডাক দেওয়া ও নীরবে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘটনা রহস্যজনক।’
বিএনপির সমর্থিত মেয়র প্রার্থী মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস দক্ষিণের ৫৭টি ওয়ার্ডের ২৬টি কেন্দ্রের অনিয়মের কথা জানিয়ে নির্বাচন কমিশনে তিনটি অভিযোগের চিঠি দেন। আর ঢাকা উত্তরের প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের অন্যতম নির্বাচন সমন্বয়কারী আবদুল্লাহ আল হারুন জানান, তাঁরা সকাল সাড়ে ১০টায় থেকেই রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নির্বাচন কমিশনে (ইসি) প্রথম অভিযোগ দেন। দুপুরের মধ্যেই তাঁরা অন্তত ২২টি অভিযোগ জমা দিয়ে সেগুলোর স্বীকৃতিপত্রও নেন। পরে ইসি আর অভিযোগ না নেওয়ায় ৩০টি অভিযোগ ফ্যাক্স করেন। নির্বাচন বয়কটের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়ার উত্তর ও দক্ষিণের কোনো পক্ষই ইসিতে আর অভিযোগ দেননি তাঁরা। এ ছাড়া পত্র-পত্রিকায় বিভিন্ন কেন্দ্রের অনিয়মের অভিযোগ এসেছে।
নির্বাচনের দিনের ঘটনায় জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, ঢাকা উত্তরের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আওয়াল, দক্ষিণের মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস, সহস্র নাগরিক কমিটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনের অনিয়মের তদন্ত চেয়েছেন।
আওয়ামী লীগের ওই তিন নেতার মতে, হয়তো বিভিন্ন ঘটনার তদন্ত হবে। তবে বিজয়ী কারও প্রার্থিতা বাতিলের মতো ঘটনা ঘটবে না।
আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর একজন সদস্য এ প্রসঙ্গে বলেছেন, বিএনপির মাঝপথে নির্বাচন বর্জন তাঁদের অবাক করেছে। দুইটার দিকেও যদি বিএনপি নির্বাচন বর্জন করত তাহলে তাদের অনেক কাউন্সিলর প্রার্থী জয়ী হতে পারতো। তিনি মনে করেন, এই নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ভোটারদের বুঝিয়েছে, ভোট দিতে হলে আওয়ামী লীগকেই দিতে হবে। অন্যদের ভোট দিয়ে লাভ নাই। কারণ অন্য কেউ ক্ষমতায় আসবে না। নির্বাচনে হারতে হারতে বিএনপি এক সময় জাসদ কিংবা মুসলিম লীগ হয়ে যাবে বলে তাঁরা মনে করেন। সেই লক্ষ্য নিয়ে তাঁরা কাজ করছেন।
আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় তিনজন নেতা প্রথম আলোকে বলেন, সিটি নির্বাচনের আগে কর্মীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ছিল—‘তিন সিটি নির্বাচনেই তাঁদের জিততেই হবে। সেইভাবে প্রচারণা চালাও।’ সেইভাবে প্রচার চলছিল। দলের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও কাজ করছিল। ওই তিন নেতা স্বীকার করেন, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণের সব আওয়ামী লীগ-সমর্থিত কাউন্সিলদের প্রতি তাঁদের সমান নিয়ন্ত্রণ ছিল না। এ কারণে উত্তর-দক্ষিণের অধিকাংশ ওয়ার্ডে বিদ্রোহী প্রার্থী ছিল। এরপরে আবার নির্বাচনের দিন বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বিএনপির ভোট বর্জনের ঘোষণা দেয়। তখন বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে উত্তর ও দক্ষিণের আওয়ামী লীগের সমন্বয় কমিটির নেতাদের কাছে কাউন্সিলরদের ফোন আসতে থাকে। তাঁরা জানতে চান, এখন তাঁরা কী করবেন? তখন সমন্বয় কমিটির কোনো কোনো নেতা তাঁদের সমর্থক কাউন্সিলরদের বলেন, তোমাদের যা ইচ্ছা তাই কর। ওই তিন নেতা আরও বলেন, তাঁদের কাছে কাউন্সিলরা ফোন করে এমন কথা বলেন যে নির্বাচন ব্যাপারটা হরিলুট।
নির্বাচনের দিন শেষ পর্যন্ত সবকিছু আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণে ছিল কি না জানতে চাইলে ঢাকা উত্তরে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচারের প্রধান সমন্বয়ক ফারুক খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত সবকিছু আমাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। আপনি দেখবেন মেয়র সমর্থকদের মধ্যে কোনো সংঘর্ষ হয়নি। যা দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে তা কাউন্সিলরদের সমর্থকদের মধ্যে।’
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের একজন সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, ১২টার পর তাঁদের কাছে খবর আসে কোনো কেন্দ্রে এখন আর বিএনপি-সমর্থিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের কোনো এজেন্ট নেই। পরে বিএনপির ভোট বর্জনের ঘোষণার পর সবকিছু তাঁদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। তাঁর মতে, বিএনপির ভোট বর্জনের ঘোষণার পর চাইলেও তাঁরা অনিয়ম এড়াতে পারতেন না।
গত বুধবার সিলেটের কাজিরবাজার সেতুর নির্মাণকাজ পরিদর্শন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির নীরব ভোট বিপ্লবের ডাক দেওয়া ও নীরবে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘটনা রহস্যজনক।’
বিএনপির সমর্থিত মেয়র প্রার্থী মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস দক্ষিণের ৫৭টি ওয়ার্ডের ২৬টি কেন্দ্রের অনিয়মের কথা জানিয়ে নির্বাচন কমিশনে তিনটি অভিযোগের চিঠি দেন। আর ঢাকা উত্তরের প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের অন্যতম নির্বাচন সমন্বয়কারী আবদুল্লাহ আল হারুন জানান, তাঁরা সকাল সাড়ে ১০টায় থেকেই রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নির্বাচন কমিশনে (ইসি) প্রথম অভিযোগ দেন। দুপুরের মধ্যেই তাঁরা অন্তত ২২টি অভিযোগ জমা দিয়ে সেগুলোর স্বীকৃতিপত্রও নেন। পরে ইসি আর অভিযোগ না নেওয়ায় ৩০টি অভিযোগ ফ্যাক্স করেন। নির্বাচন বয়কটের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়ার উত্তর ও দক্ষিণের কোনো পক্ষই ইসিতে আর অভিযোগ দেননি তাঁরা। এ ছাড়া পত্র-পত্রিকায় বিভিন্ন কেন্দ্রের অনিয়মের অভিযোগ এসেছে।
নির্বাচনের দিনের ঘটনায় জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, ঢাকা উত্তরের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আওয়াল, দক্ষিণের মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস, সহস্র নাগরিক কমিটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনের অনিয়মের তদন্ত চেয়েছেন।
আওয়ামী লীগের ওই তিন নেতার মতে, হয়তো বিভিন্ন ঘটনার তদন্ত হবে। তবে বিজয়ী কারও প্রার্থিতা বাতিলের মতো ঘটনা ঘটবে না।
No comments