চট্টগ্রামে ভোটের মাঠে ফ্যাক্টর by কাজী সুমন ও মহিউদ্দীন জুয়েল
এবিএম
মহিউদ্দিন চৌধুরী। বর্তমান নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি। একাধারে দীর্ঘ ১৭ বছর
মেয়র ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের। গত নির্বাচনে রাজনৈতিক শিষ্য মনজুর
আলমের কাছে হেরে যান তিনি। তবে এবারও মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে
চেয়েছিলেন প্রবীণ এই নেতা। কিন্তু গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ
সভানেত্রী শেখ হাসিনা মনোনয়ন দেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ
সম্পাদক আ জ ম নাছিরউদ্দিনকে। এতে কিছুটা মনঃক্ষুণ্ন হন মহিউদ্দিন চৌধুরী।
জানা গেছে, শেষ মুহূর্তে ভোটের মাঠের হিসাব-নিকাশে আলোচনায় উঠে এসেছেন
মহিউদ্দিন চৌধুরী। চট্টগ্রাম নগরীতেও তার নিজস্ব একটা ভোটব্যাংক রয়েছে। তার
ভূমিকাও কিছুটা রহস্যাবৃত্ত। তিনি নীরব, নিশ্চুপ। তাকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে
শহরজুড়ে। চায়ের দোকান থেকে পাড়ার মোড়ে মোড়ে। দলীয় প্রার্থী আ জ ম নাছিরের
পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় খুব কমই দেখা যাচ্ছে তাকে। নাছিরের নির্বাচনী
ইশতেহার ঘোষণার দিনও চুপচাপ ছিলেন তিনি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি
বলেছেন, নাছিরের নির্বাচনী প্রচারণায় না থাকার বিষয়টি রাজনৈতিক কৌশল। অবশ্য
তার ছেলে চৌধুরী মহিবুল হাসান নওফেল সক্রিয় রয়েছেন দলীয় প্রার্থী নাছিরের
প্রচারণায়। পুত্রকে নিয়মিত দেখা গেলেও পিতাকে রহস্যের শেষ নেই সর্বমহলে।
কেন তিনি নীরব। তবে কি তিনি মনোনয়ন না পেয়ে অভিমান করে আছেন? নাকি দলীয়
সিদ্ধান্ত মানতে পারছেন না বলে চুপচাপ হয়ে গেছেন-এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে
সবার মাঝে।
তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে বলেছেন, শারীরিক অবস্থা ভালো না থাকায় এই মুহূর্তে কিছুটা বিশ্রামে রয়েছেন বাবা (মহিউদ্দিন চৌধুরী)। এর মধ্যে বিভিন্ন ওয়ার্ডে গণসংযোগও করেছেন। বাসায় থাকলেও নিয়মিতভাবে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছেন।
নগর আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানায়, টানা ১৭ বছর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ছিলেন শেখ হাসিনার পছন্দের ব্যক্তি মহিউদ্দিন চৌধুরী। তবে রাজনৈতিকভাবে তিনি দুর্বল হতে শুরু করেন ২০১০ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর। ওই নির্বাচনে চমক দেখিয়ে তাকে পরাজিত করেছিলেন আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে যোগ দেয়া বর্তমান মেয়র মনজুর আলম। সেই সময় আওয়ামী লীগের মহিউদ্দিন চৌধুরীর চেয়ে ৯৫ হাজার ৫২৮ ভোট বেশি পান তিনি। এরপর দলীয়ভাবে কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ার পর তার বিরোধী পক্ষ হিসেবে দলের অভ্যন্তরে দাঁড়িয়ে যায় সাবেক শিক্ষামন্ত্রী আফসারুল আমিন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম, সাবেক এমপি নুরুল ইসলাম বিএসসিসহ বেশ কয়েকজন।
পরবর্তীতে এই নিয়ে বিরোধ তুঙ্গে উঠলে আ জ ম নাছিরকে কাছে টেনে নিয়ে নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক করেন মহিউদ্দিন। আগামী ২৮শে এপ্রিল অনুষ্ঠেয় সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মনোনয়ন না পাওয়া নিয়ে এই বিরোধ অনেকাংশে রয়েছে বলে জানা গেছে। গণভবনে শেখ হাসিনা মনোনয়ন দেয়ার আগে মহিউদ্দিন চৌধুরীর শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন। একই সঙ্গে নাছিরকে মনোনয়ন দেয়ার পর কারও কোন আপত্তি না থাকায় এই নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেন নেত্রী। এই ঘটনার পর মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্বতন্ত্র নির্বাচন করার কথা শোনা গেলেও শেষদিকে তিনি দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালাবেন বলে ঘোষণা দেন। এতে টানা বেশ কয়েকদিন তার বাসার সামনে সক্রিয় নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করেন। তারা মহিউদ্দিন চৌধুরীকে নির্বাচন করার অনুরোধ জানান। কিন্তু তিনি নাছিরের পক্ষে কাজ করবেন বলে জানালে অনেকের মনে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। মহিউদ্দিন চৌধুরী সবাইকে দ্বন্দ্ব ভুলে নাছিরের পক্ষে কাজ করার নির্দেশ দেন।
গত ১৫ দিনের নির্বাচনী কর্মকাণ্ড ঘেঁটে দেখা যায়, দলের শীর্ষ নেতারা আজম নাছিরের পাশে থেকে প্রচারণা চালালেও মহিউদ্দিন চৌধুরী রয়েছেন ব্যতিক্রম। ঢাকায় প্রার্থী ঘোষণার পর থেকে সর্বশেষ ইশতেহার ঘোষণা পর্যন্ত নাছিরের পাশে তাকে খুব কমই দেখা গেছে। নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নাছিরের পাশে মহিউদ্দিনকে দেখা গিয়েছিল। ওই অনুষ্ঠানে তাকে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ‘আপনাকে নাছিরের প্রচারণায় কম দেখা যাচ্ছে কেন?’ জবাবে মহিউদ্দিন বলেন, বলতে পারেন এটা আমাদের একটা রাজনৈতিক কৌশল। এর আগে নাছিরের নির্বাচনী ইশতেহারের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাকে ইশতেহারটা দেখানো হয়নি। হলে ভালো হতো। নাছির ভালো ছেলে। সে কাজ করার জন্য উদগ্রীব। তাকে পেলে ভালো হবে নগরবাসীর। তার এই কথায় কিছুটা অভিমানের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে সর্বমহলে। এই গুঞ্জন আরো দানা বাঁধতে শুরু করে যখন মহিউদ্দিনের বাসায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মনজুর যান কিংবা সিটি করপোরেশনের একটি প্রতিষ্ঠানে যখন একান্তে দুইজন ৩ ঘণ্টা বৈঠক করেন ভোটের আগে। রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের মহিউদ্দিন চৌধুরী ও বিএনপির মনজুর আলম গুরু-শিষ্য বলে পরিচিত। একসময় মনজুর মহিউদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে রাজনীতি করতেন। পরে সেনাসমর্থিত সরকারের আমলে মহিউদ্দিন জেলে গেলে মেয়র হন মনজুর। আর এর পরপরই মনজুর সঙ্গে মহিউদ্দিনের বিরোধ তুঙ্গে উঠে। একপর্যায়ে দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে রূপ নেয়। সেই সময় মেয়র নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী সংকটে ভুগতে থাকলে মনজুর দলে যোগ দিয়ে জয়লাভ করেন। তার এই বুদ্ধিমত্তায় খুশি হয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তাকে উপদেষ্টা করেন নিজের। এরপর মনজুর সঙ্গে মহিউদ্দিনের সম্পর্ক পুনরায় জোরালো হলে এই নিয়ে দলের বিরোধী পক্ষ ঈর্ষান্বিত হয়ে পড়ে। এদিকে দলীয় সূত্রে জানা গেছে, মহিউদ্দিন চৌধুরীর সমর্থক বলে পরিচিত কয়েকজন কাউন্সিলর প্রার্থীও কাজ করছেন মনজুর পক্ষে। মহিউদ্দিনের কর্মী-সমর্থকরা নাছিরের পক্ষে প্রচারণা থেকে দূরে রয়েছেন। তারা যদি ভোটের মাঠে না থাকেন তাহলে শেষ মুহূর্তে পাল্টে যেতে পারে ভোটের হিসাব। ফলে জয়-পরাজয়ে ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারেন মহিউদ্দিন চৌধুরী।
তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে বলেছেন, শারীরিক অবস্থা ভালো না থাকায় এই মুহূর্তে কিছুটা বিশ্রামে রয়েছেন বাবা (মহিউদ্দিন চৌধুরী)। এর মধ্যে বিভিন্ন ওয়ার্ডে গণসংযোগও করেছেন। বাসায় থাকলেও নিয়মিতভাবে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছেন।
নগর আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানায়, টানা ১৭ বছর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ছিলেন শেখ হাসিনার পছন্দের ব্যক্তি মহিউদ্দিন চৌধুরী। তবে রাজনৈতিকভাবে তিনি দুর্বল হতে শুরু করেন ২০১০ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর। ওই নির্বাচনে চমক দেখিয়ে তাকে পরাজিত করেছিলেন আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে যোগ দেয়া বর্তমান মেয়র মনজুর আলম। সেই সময় আওয়ামী লীগের মহিউদ্দিন চৌধুরীর চেয়ে ৯৫ হাজার ৫২৮ ভোট বেশি পান তিনি। এরপর দলীয়ভাবে কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ার পর তার বিরোধী পক্ষ হিসেবে দলের অভ্যন্তরে দাঁড়িয়ে যায় সাবেক শিক্ষামন্ত্রী আফসারুল আমিন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম, সাবেক এমপি নুরুল ইসলাম বিএসসিসহ বেশ কয়েকজন।
পরবর্তীতে এই নিয়ে বিরোধ তুঙ্গে উঠলে আ জ ম নাছিরকে কাছে টেনে নিয়ে নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক করেন মহিউদ্দিন। আগামী ২৮শে এপ্রিল অনুষ্ঠেয় সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মনোনয়ন না পাওয়া নিয়ে এই বিরোধ অনেকাংশে রয়েছে বলে জানা গেছে। গণভবনে শেখ হাসিনা মনোনয়ন দেয়ার আগে মহিউদ্দিন চৌধুরীর শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন। একই সঙ্গে নাছিরকে মনোনয়ন দেয়ার পর কারও কোন আপত্তি না থাকায় এই নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেন নেত্রী। এই ঘটনার পর মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্বতন্ত্র নির্বাচন করার কথা শোনা গেলেও শেষদিকে তিনি দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালাবেন বলে ঘোষণা দেন। এতে টানা বেশ কয়েকদিন তার বাসার সামনে সক্রিয় নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করেন। তারা মহিউদ্দিন চৌধুরীকে নির্বাচন করার অনুরোধ জানান। কিন্তু তিনি নাছিরের পক্ষে কাজ করবেন বলে জানালে অনেকের মনে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। মহিউদ্দিন চৌধুরী সবাইকে দ্বন্দ্ব ভুলে নাছিরের পক্ষে কাজ করার নির্দেশ দেন।
গত ১৫ দিনের নির্বাচনী কর্মকাণ্ড ঘেঁটে দেখা যায়, দলের শীর্ষ নেতারা আজম নাছিরের পাশে থেকে প্রচারণা চালালেও মহিউদ্দিন চৌধুরী রয়েছেন ব্যতিক্রম। ঢাকায় প্রার্থী ঘোষণার পর থেকে সর্বশেষ ইশতেহার ঘোষণা পর্যন্ত নাছিরের পাশে তাকে খুব কমই দেখা গেছে। নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নাছিরের পাশে মহিউদ্দিনকে দেখা গিয়েছিল। ওই অনুষ্ঠানে তাকে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ‘আপনাকে নাছিরের প্রচারণায় কম দেখা যাচ্ছে কেন?’ জবাবে মহিউদ্দিন বলেন, বলতে পারেন এটা আমাদের একটা রাজনৈতিক কৌশল। এর আগে নাছিরের নির্বাচনী ইশতেহারের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাকে ইশতেহারটা দেখানো হয়নি। হলে ভালো হতো। নাছির ভালো ছেলে। সে কাজ করার জন্য উদগ্রীব। তাকে পেলে ভালো হবে নগরবাসীর। তার এই কথায় কিছুটা অভিমানের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে সর্বমহলে। এই গুঞ্জন আরো দানা বাঁধতে শুরু করে যখন মহিউদ্দিনের বাসায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মনজুর যান কিংবা সিটি করপোরেশনের একটি প্রতিষ্ঠানে যখন একান্তে দুইজন ৩ ঘণ্টা বৈঠক করেন ভোটের আগে। রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের মহিউদ্দিন চৌধুরী ও বিএনপির মনজুর আলম গুরু-শিষ্য বলে পরিচিত। একসময় মনজুর মহিউদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে রাজনীতি করতেন। পরে সেনাসমর্থিত সরকারের আমলে মহিউদ্দিন জেলে গেলে মেয়র হন মনজুর। আর এর পরপরই মনজুর সঙ্গে মহিউদ্দিনের বিরোধ তুঙ্গে উঠে। একপর্যায়ে দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে রূপ নেয়। সেই সময় মেয়র নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী সংকটে ভুগতে থাকলে মনজুর দলে যোগ দিয়ে জয়লাভ করেন। তার এই বুদ্ধিমত্তায় খুশি হয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তাকে উপদেষ্টা করেন নিজের। এরপর মনজুর সঙ্গে মহিউদ্দিনের সম্পর্ক পুনরায় জোরালো হলে এই নিয়ে দলের বিরোধী পক্ষ ঈর্ষান্বিত হয়ে পড়ে। এদিকে দলীয় সূত্রে জানা গেছে, মহিউদ্দিন চৌধুরীর সমর্থক বলে পরিচিত কয়েকজন কাউন্সিলর প্রার্থীও কাজ করছেন মনজুর পক্ষে। মহিউদ্দিনের কর্মী-সমর্থকরা নাছিরের পক্ষে প্রচারণা থেকে দূরে রয়েছেন। তারা যদি ভোটের মাঠে না থাকেন তাহলে শেষ মুহূর্তে পাল্টে যেতে পারে ভোটের হিসাব। ফলে জয়-পরাজয়ে ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারেন মহিউদ্দিন চৌধুরী।
No comments