এই ভূমিকম্পই শেষ নয় বড় মাত্রার শংকা সামনে!
হিমালয়কন্যা নেপালকে লণ্ডভণ্ড করে শনিবারের ৭.৯ মাত্রার ভূমিকম্পটি গত ৮০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ভূমিকম্পই শেষ নয়, এর চেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাতের অপেক্ষায়। শনিবারের ভূমিকম্প একটি বড় ভূমিকম্প, কিন্তু সবচেয়ে বড়টা এখনও সামনে। ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে রোববার নেশন পত্রিকার এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। ভারতের বিখ্যাত বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট আইআইটির অধ্যাপক শংকর কুমার নাথ দীর্ঘদিন ধরে হিমালয় অঞ্চলের ভূতাত্ত্বিক পরিবর্তন নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি বলেন, ‘কাঠমান্ডুর ৭.৯ মাত্রার এই ভূমিকম্প ১০ কোটি টন জ্বালানি বিস্ফোরণের মতো শক্তিশালী।’
এর আগে ১৯৩৪ সালের ১৫ জানুয়ারি বিহার ও নেপাল অঞ্চলে ৮.৩ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল। আর ১৯৫০ সালের ১৫ আগস্ট হিমালয়ের পূর্বাঞ্চলীয় এলাকা চীন সীমান্তবর্তী ভারতের অরুণাচল প্রদেশে ৮.৫ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। হিমালয় সংশ্লিষ্ট অঞ্চল ভূগর্ভস্থ দুই বিশাল শক্তিশালী টেকটোনিক প্লেটের মিলনস্থল। ভারতীয় ও ইউরেশীয় নামের এই দুই প্লেটের আন্তঃমিথস্ক্রিয়া, ফাটল ও সংঘর্ষ বড় বড় ভূমিকম্পের সৃষ্টি করছে। বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে বলছেন ভারতীয় পাথরটি ক্রমশই উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এলাকার দিকে সরে যাচ্ছে। আর সেটা ঢুকে যাচ্ছে ইউরেশীয় প্লেটের নিচে। ভূগর্ভস্থ এই দুই প্লেটের রেষারেষির ফলে যে শক্তি উৎপন্ন হচ্ছে, তা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিরোশিমায় ফেলা এটম বোমার থেকেও ৫০০ গুণ বেশি শক্তিশালী। এর ফলেই কেঁপে উঠছে ভূ-অভ্যন্তর।
ভারতের হায়দ্রাবাদভিত্তিক জাতীয় ভূগঠন গবেষণা ইন্সটিটিউটের সাবেক পরিচালক হারেশ কে গুপ্ত বলেন, এই অঞ্চলের ভূ-অভ্যন্তরে ব্যাপক পরিবর্তনের ফলে যে কোনো সময় ৮ মাত্রার বেশি ভূমিকম্প হতে পারে। আর তা চলতে পারে ধারাবাহিক। তিন বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রান্সিসকোতে ভূ-পদার্থবিদদের এক বার্ষিক সম্মেলনে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেন, হিমালয় ও প্রশান্ত মহাসাগরের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্পের আশংকা বাড়ছে। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানান, কাছাকাছি সময়ের মধ্যে এ অঞ্চলে ৮ থেকে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানতে পারে। ওই সম্মেলনে সারা বিশ্বের প্রায় ২০ হাজার ভূ-পদার্থবিদ ও বিজ্ঞানী অংশ নিয়েছিলেন। তাই বিজ্ঞানীরা জোর দিয়ে বলেন বড় ভূমিকম্প আঘাতের আশংকাই সত্য হয়ে দাঁড়াবে।
No comments