কেমন যাবে মঙ্গলবার মঙ্গলে না অমঙ্গলে?
মঙ্গলবারের
ভোট কেমন হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উপচে পড়ছে। ভয়ে না উৎসবে? অবশ্য গতকাল ঢাকা
উত্তর ও দক্ষিণে র্যাবের ৫ হাজার সদস্য মোতায়েনের খবরে ভোটারদের মনে একটা
আস্থার ভাব ফেরার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের
দৃষ্টিভঙ্গিতে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার খুব উল্লেখযোগ্য কোন নমুনা এখনও
পরিষ্কার হয়নি। আওয়ামী লীগের দুটো অস্তিত্ব। একটি সরকারি দল হিসেবে। অন্যটি
প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী বিভাগের পরিচালক হিসেবে। আওয়ামী লীগের একজন নেতা
যখন তিনি দলের তখন তিনি কোন প্রার্থীর পক্ষে সমর্থন ব্যক্ত করতে পারেন। সেই
বিবেচনায় মন্ত্রিসভার সদস্যদের পক্ষে কোন প্রার্থীর পক্ষে কোন প্রচারণা
চালানোর কথা ছিল না। কিন্তু অনেক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘন করার
অভিযোগ উঠেছে। মন্ত্রীরা কারো প্রতি রাগ বা অনুরাগের বশবর্তী হয়ে আচরণ না
করার শপথ নেন।
অনেক পর্যবেক্ষকের মতে বর্তমানে সংসদে ও সরকারের বাইরে থাকা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তার মুখ্য রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে এগিয়ে থাকার কথা ছিল। কিন্তু বাস্তবে তা ঘটেনি। বিএনপি চোয়ারপারসনের কথার উত্তর শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হিসেবেই যেন দিয়েছেন। কারণ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার সুযোগ সীমিত থাকার কথা ছিল। গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করে খালেদা জিয়া এখন ‘প্রতিশোধের’ কথা বলছেন, এখন মানুষ যদি তার বিষয়ে প্রতিশোধ নেয়, তাহলে তিনি কোথায় যাবেন, সেটা তার ভেবে দেখা উচিত। গাড়িবহর নিয়ে চলাচলের জন্য বেগম জিয়া আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন বলেও তিনি মন্তব্য করেন। অবশ্য সরকার সমর্থিত প্রার্থী আনিসুল হকও ১৩ থেকে ১৪টি গাড়ির বহর নিয়ে প্রচারে নেমেছেন। এর আগে আনিসুল হকও গাড়িবহর নিয়ে নির্বাচনী প্রচারে না নামতে খালেদা জিয়ার প্রতি অনুরোধ করেছিলেন। গতকাল চট্টগ্রামে মনজুর আলমের প্রচারাভিযানে হামলার অভিযোগ উঠেছে।
উল্লেখ্য, টানা তিনদিন বেগম খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে প্রকাশ্যে হামলা চালালেও নির্বাচন কমিশন তাদের নিয়োজিত মোবাইল কোর্টকে তদন্ত করতে বলেনি। কিন্তু গাড়ি নিয়ে রাস্তায় চলাচল সংক্রান্ত আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে তারা ব্যবস্থা নিয়েছে।
পর্যবেক্ষকরা বলেন, এটা অভাবনীয় যে, বেগম খালেদা জিয়ার ওপর লাগাতার হামলা চলেছে প্রকাশ্যে। ক্ষমতাসীন দলীয়রা পুলিশের দ্বারা কোনভাবে আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া যায়নি। বরং তাদের অনেকে একই সময়ে মামলা মুক্ত হয়েছেন। বিএনপি সমর্থিত অন্তত ৬ জন কাউন্সিলর প্রার্থী গ্রেপ্তার হয়েছেন। আর আত্মগোপনে রয়েছেন বিপুল সংখ্যক। তারা প্রচারণায় অংশ নিতে পারেননি।
অনেক পর্যবেক্ষকের মতে বর্তমানে সংসদে ও সরকারের বাইরে থাকা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তার মুখ্য রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে এগিয়ে থাকার কথা ছিল। কিন্তু বাস্তবে তা ঘটেনি। বিএনপি চোয়ারপারসনের কথার উত্তর শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হিসেবেই যেন দিয়েছেন। কারণ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার সুযোগ সীমিত থাকার কথা ছিল। গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করে খালেদা জিয়া এখন ‘প্রতিশোধের’ কথা বলছেন, এখন মানুষ যদি তার বিষয়ে প্রতিশোধ নেয়, তাহলে তিনি কোথায় যাবেন, সেটা তার ভেবে দেখা উচিত। গাড়িবহর নিয়ে চলাচলের জন্য বেগম জিয়া আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন বলেও তিনি মন্তব্য করেন। অবশ্য সরকার সমর্থিত প্রার্থী আনিসুল হকও ১৩ থেকে ১৪টি গাড়ির বহর নিয়ে প্রচারে নেমেছেন। এর আগে আনিসুল হকও গাড়িবহর নিয়ে নির্বাচনী প্রচারে না নামতে খালেদা জিয়ার প্রতি অনুরোধ করেছিলেন। গতকাল চট্টগ্রামে মনজুর আলমের প্রচারাভিযানে হামলার অভিযোগ উঠেছে।
উল্লেখ্য, টানা তিনদিন বেগম খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে প্রকাশ্যে হামলা চালালেও নির্বাচন কমিশন তাদের নিয়োজিত মোবাইল কোর্টকে তদন্ত করতে বলেনি। কিন্তু গাড়ি নিয়ে রাস্তায় চলাচল সংক্রান্ত আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে তারা ব্যবস্থা নিয়েছে।
পর্যবেক্ষকরা বলেন, এটা অভাবনীয় যে, বেগম খালেদা জিয়ার ওপর লাগাতার হামলা চলেছে প্রকাশ্যে। ক্ষমতাসীন দলীয়রা পুলিশের দ্বারা কোনভাবে আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া যায়নি। বরং তাদের অনেকে একই সময়ে মামলা মুক্ত হয়েছেন। বিএনপি সমর্থিত অন্তত ৬ জন কাউন্সিলর প্রার্থী গ্রেপ্তার হয়েছেন। আর আত্মগোপনে রয়েছেন বিপুল সংখ্যক। তারা প্রচারণায় অংশ নিতে পারেননি।
আর
গভীর রাতে দুর্বৃত্তরা হামলা করলো সাবেক প্রেসিডেন্ট বদরুদ্দোজা চৌধুরীর
ছেলে মাহী বি. চৌধুরীর ওপর। মাহী এবিষয়ে যাই বলুন এবং যারা যে কারণেই এই
হামলা করুন না কেন, এটা পরিষ্কার যে, এটা একটি নির্বাচনী সহিংসতা।
দুর্বৃত্তরা এতটাই আত্মবিশ্বাসী ছিল যে, তারা মাহীর মতো একজন ব্যক্তিত্বের
ওপর হামলা চালিয়ে নির্বিঘ্নে পালাতে পেরেছে। তবে অনেকের মতে তার ব্যাখ্যায়
‘কোন দল নয়, প্রতিদ্বন্দ্বীরা হামলা করতে পারে’ একথার কোন মানে দাঁড়ায় না।
এটা হেঁয়ালিপূর্ণ। তবে এটা পরিষ্কার যে, সংবাদ সম্মেলনে তিনি সব দিক
সামলিয়ে খুব বেশি সতর্কতার সঙ্গে বক্তব্য রেখেছেন। তার ব্যাখ্যায় সত্যের
মুখোমুখি হওয়া নাকি পলায়নপরতার ইঙ্গিত ছিল তার উত্তর হয়তো সময় দেবে। কিন্তু
তার ওপরে হামলার ঘটনাটি শান্তি নির্দেশ করে না।
বেগম খালেদা জিয়ার ওপর হামলার দায়িত্ব স্বীকারের অভিনব ঘটনা টিভি দর্শকরা উপভোগ করেছে। একজন সন্দেহভাজন হামলাকারী টিভিতে লাইভ অনুষ্ঠানে ‘বীরদর্পে’ ব্যাখ্যা করেছেন কি পরিস্থিতিতে বিএনপি চেয়ারপারসনের ওপর হামলা চলেছে। তার কথায়, অবরোধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কাওরান বাজারের ব্যবসায়ীরা বেগম জিয়ার ওপর হামলা করেছে! কেউ হয়তো প্রশ্ন তোলেনি পুলিশ কেন তাকে গ্রেপ্তার করেনি। তিনি কিভাবে লাইভ অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন। আবদুল আউয়াল মিন্টু প্রার্থী হতে চেয়েও পারেননি। মির্জা আব্বাস শেষ পর্যন্ত প্রচারণায় নামতে পারেননি। পর্যবেক্ষকদের কাছে এটা স্পষ্ট যে, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড শব্দটি ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে গেল। সমতল মাঠ অসমতল রইলো, আর সেই অবস্থাতেই মঙ্গল-অমঙ্গলের ভোট, ভয়ে কিংবা উৎসবের আমেজের ভোট কাল মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হবে।
সর্বত্র এমনকি কূটনৈতিক পল্লীতেও একটি ছবি আলোচনার ঝড় তুলেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে বেগম জিয়ার একজন ইউনিফর্মধারী দেহরক্ষীকে এক দুর্বৃত্ত পুলিশের সামনে নির্দয়ভাবে পেটাচ্ছে। হামলাকারীকে মৃদু কিংবা বিনয়ের সঙ্গে বাধাদানকারী পুলিশের হোলস্টারে পিস্তল। হামলাকারীর কোমরেও গোঁজা পিস্তল।
বেগম খালেদা জিয়ার ওপর হামলার দায়িত্ব স্বীকারের অভিনব ঘটনা টিভি দর্শকরা উপভোগ করেছে। একজন সন্দেহভাজন হামলাকারী টিভিতে লাইভ অনুষ্ঠানে ‘বীরদর্পে’ ব্যাখ্যা করেছেন কি পরিস্থিতিতে বিএনপি চেয়ারপারসনের ওপর হামলা চলেছে। তার কথায়, অবরোধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কাওরান বাজারের ব্যবসায়ীরা বেগম জিয়ার ওপর হামলা করেছে! কেউ হয়তো প্রশ্ন তোলেনি পুলিশ কেন তাকে গ্রেপ্তার করেনি। তিনি কিভাবে লাইভ অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন। আবদুল আউয়াল মিন্টু প্রার্থী হতে চেয়েও পারেননি। মির্জা আব্বাস শেষ পর্যন্ত প্রচারণায় নামতে পারেননি। পর্যবেক্ষকদের কাছে এটা স্পষ্ট যে, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড শব্দটি ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে গেল। সমতল মাঠ অসমতল রইলো, আর সেই অবস্থাতেই মঙ্গল-অমঙ্গলের ভোট, ভয়ে কিংবা উৎসবের আমেজের ভোট কাল মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হবে।
সর্বত্র এমনকি কূটনৈতিক পল্লীতেও একটি ছবি আলোচনার ঝড় তুলেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে বেগম জিয়ার একজন ইউনিফর্মধারী দেহরক্ষীকে এক দুর্বৃত্ত পুলিশের সামনে নির্দয়ভাবে পেটাচ্ছে। হামলাকারীকে মৃদু কিংবা বিনয়ের সঙ্গে বাধাদানকারী পুলিশের হোলস্টারে পিস্তল। হামলাকারীর কোমরেও গোঁজা পিস্তল।
আগামীকালের
ভোট নানা কারণে তাৎপর্যপূর্ণ। এটা এমন একটি নির্বাচন যা নিতান্তই স্থানীয়
সরকারের, সংসদীয় কোন আসনের উপনির্বাচনও নয়। কিন্তু এটা যে গুরুত্ব পেয়েছে
তা নজিরবিহীন। এক ডজনের বেশি বিদেশী দূতাবাস এই নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে
বলে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছে। গত বছরের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের পরে
এবারই প্রথম একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কিন্তু গোড়াতে
যেমনটা আশা করা হয়েছিল যে, সরকার যতোটা সম্ভব এই নির্বাচনকে অবাধ ও
সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে উদ্যোগী হবে, ততোটা এখন আর আশা করা হচ্ছে না।
সর্বশেষ সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়ে ইসি’র নাটকীয় ভোল পাল্টানো ছিল দেখবার মতো। গতকাল তারা আরেকটি ব্যাখ্যা হাজির করে বলেছে, ‘সেনাবাহিনী মাঠে না থাকলেও তাদের কার্যকারিতা থাকবে।’ এনিয়ে তারা দ্বিতীয়বার সিদ্ধান্ত পাল্টালো বা ব্যাখ্যা দেয়ার দরকার পড়লো। প্রথম দিনের পরে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অফিস আদেশ সংশোধন করে তারা বলেছে যে, সেনাবাহিনী রিজার্ভ ফোর্স হয়ে সেনানিবাসেই থাকবে। প্রয়োজনের সময় এই রিজার্ভ ফোর্স পরিণত হবে স্ট্রাইকিং ফোর্সে। অথচ ওয়াকিবহাল মহল এতে বিস্ময় প্রকাশ করে বলছেন, সেনাবাহিনী সেনানিবাসে থাকবে, সেটাই তো স্বাভাবিক। মাছেরা পানিতে থাকবে, এটা বলা নিরর্থক। সেনানিবাসে থাকাকালে তাদেরকে রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে থাকার কি দরকার। আর অন্য কথায় সেনাবাহিনী তো সেনানিবাসে প্রজাতন্ত্রের ঐতিহ্যবাহী রিজার্ভ ফোর্সের মর্যাদাতেই থাকেন। সেটা কেন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে পৃথকভাবে বলে দিতে হবে। সে কারণে ইসি এবিষয়ে যে সংশোধনী প্রকাশ করেছে তাকে শুদ্ধ মনে করার কারণ নেই। তবে অনেক প্রার্থী যারা আত্মগোপনে রয়েছেন তারা বলছেন, সেনা মোতায়েনে ইসির সিদ্ধান্ত শুনে তারা উৎসাহিত হয়েছিলেন। কিন্তু এখন তাদের ও তাদের কর্মীদের মনোবলে চোট লেগেছে। তারা বলছেন, ভোটারদের উপস্থিতি নির্ভর করবে নিরাপত্তা ও পরিবেশ কেমন থাকে তার ওপর। বাংলাদেশের অতীতের নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের অভিজ্ঞতায় দেখা যায়, তারা কখনও ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করে না। তাদেরকে বাস্তবে খুব কম ক্ষেত্রেই সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করতে হয়। তাদের মোতায়েন করার বিষয়টি মূলত ভোটের দিনের আস্থা বৃদ্ধির সঙ্গে জড়িত। সেনাবাহিনী নির্বাচনে সাধারণত শো অফ ফোর্স হিসেবে কার্যকারিতা দেখিয়েছে। কারণ সেনাবাহিনীকে অ্যাকশনে যেতে হলে নির্বাচনী পরিবেশ আর যাই হোক, তাকে শান্তিপূর্ণ বা ভয়শূন্য বলে গণ্য করার সুযোগ থাকে না।
সুতরাং আগামীকাল ভোটারদের উপস্থিতি কোথায় কতটা হবে সেটাই কোটি টাকা দামের প্রশ্ন। নগরপিতা নির্বাচনে উৎসবমুখর কিংবা তাৎপর্যপূর্ণ করতে হলে ভোটারদেরও যে একটা নাগরিক দায়িত্ব আছে এবং সেখানেও যে ঝুঁকি নিয়ে এগিয়ে আসতে হয়, সবটুকু সরকারের বা ইসির উপরে দায় চাপাতে হয় না, সেটা ভোটাররা কতটা মানেন, সেটাও কালকের জন্য দেখার বিষয়। এটা মীমাংসিত যে, ভোটাররা যত বেশি সংখ্যায় স্বতঃপ্রণোদিতভাবে অংশ নেবেন, নাগরিকের কর্তব্য পালন করবেন, ততোই মঙ্গল আসবে। অমঙ্গলের মাত্রা কমবে।
সর্বশেষ সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়ে ইসি’র নাটকীয় ভোল পাল্টানো ছিল দেখবার মতো। গতকাল তারা আরেকটি ব্যাখ্যা হাজির করে বলেছে, ‘সেনাবাহিনী মাঠে না থাকলেও তাদের কার্যকারিতা থাকবে।’ এনিয়ে তারা দ্বিতীয়বার সিদ্ধান্ত পাল্টালো বা ব্যাখ্যা দেয়ার দরকার পড়লো। প্রথম দিনের পরে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অফিস আদেশ সংশোধন করে তারা বলেছে যে, সেনাবাহিনী রিজার্ভ ফোর্স হয়ে সেনানিবাসেই থাকবে। প্রয়োজনের সময় এই রিজার্ভ ফোর্স পরিণত হবে স্ট্রাইকিং ফোর্সে। অথচ ওয়াকিবহাল মহল এতে বিস্ময় প্রকাশ করে বলছেন, সেনাবাহিনী সেনানিবাসে থাকবে, সেটাই তো স্বাভাবিক। মাছেরা পানিতে থাকবে, এটা বলা নিরর্থক। সেনানিবাসে থাকাকালে তাদেরকে রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে থাকার কি দরকার। আর অন্য কথায় সেনাবাহিনী তো সেনানিবাসে প্রজাতন্ত্রের ঐতিহ্যবাহী রিজার্ভ ফোর্সের মর্যাদাতেই থাকেন। সেটা কেন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে পৃথকভাবে বলে দিতে হবে। সে কারণে ইসি এবিষয়ে যে সংশোধনী প্রকাশ করেছে তাকে শুদ্ধ মনে করার কারণ নেই। তবে অনেক প্রার্থী যারা আত্মগোপনে রয়েছেন তারা বলছেন, সেনা মোতায়েনে ইসির সিদ্ধান্ত শুনে তারা উৎসাহিত হয়েছিলেন। কিন্তু এখন তাদের ও তাদের কর্মীদের মনোবলে চোট লেগেছে। তারা বলছেন, ভোটারদের উপস্থিতি নির্ভর করবে নিরাপত্তা ও পরিবেশ কেমন থাকে তার ওপর। বাংলাদেশের অতীতের নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের অভিজ্ঞতায় দেখা যায়, তারা কখনও ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করে না। তাদেরকে বাস্তবে খুব কম ক্ষেত্রেই সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করতে হয়। তাদের মোতায়েন করার বিষয়টি মূলত ভোটের দিনের আস্থা বৃদ্ধির সঙ্গে জড়িত। সেনাবাহিনী নির্বাচনে সাধারণত শো অফ ফোর্স হিসেবে কার্যকারিতা দেখিয়েছে। কারণ সেনাবাহিনীকে অ্যাকশনে যেতে হলে নির্বাচনী পরিবেশ আর যাই হোক, তাকে শান্তিপূর্ণ বা ভয়শূন্য বলে গণ্য করার সুযোগ থাকে না।
সুতরাং আগামীকাল ভোটারদের উপস্থিতি কোথায় কতটা হবে সেটাই কোটি টাকা দামের প্রশ্ন। নগরপিতা নির্বাচনে উৎসবমুখর কিংবা তাৎপর্যপূর্ণ করতে হলে ভোটারদেরও যে একটা নাগরিক দায়িত্ব আছে এবং সেখানেও যে ঝুঁকি নিয়ে এগিয়ে আসতে হয়, সবটুকু সরকারের বা ইসির উপরে দায় চাপাতে হয় না, সেটা ভোটাররা কতটা মানেন, সেটাও কালকের জন্য দেখার বিষয়। এটা মীমাংসিত যে, ভোটাররা যত বেশি সংখ্যায় স্বতঃপ্রণোদিতভাবে অংশ নেবেন, নাগরিকের কর্তব্য পালন করবেন, ততোই মঙ্গল আসবে। অমঙ্গলের মাত্রা কমবে।
No comments