কে কার প্রতিশোধ নেবে? -প্রধানমন্ত্রী
বিএনপি
চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কথায় জনগণ ভোট দেবে না বলে মন্তব্য করেছেন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, যার নির্দেশে আগুনে পুড়িয়ে শত শত
মায়ের বুক খালি করা হয়েছে, এমন লোকের কথায় কেউ ভোট দিতে যাবে না। গতকাল
বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সাম্প্রতিক ইন্দোনেশিয়া সফরের
অভিজ্ঞতা জানাতে এ সংবাদ সম্মেলন ডাকলেও প্রশ্নোত্তর পর্বে দীর্ঘ এক ঘণ্টা
সাম্প্রতিক রাজনৈতিক বিষয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। আসে ঢাকা ও চট্টগ্রাম
সিটি নির্বাচন প্রসঙ্গও। দুপুরে আরেক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসন
খালেদা জিয়ার আহ্বান নাকচ করে সরকার প্রধান বলেন, উনার সমঝোতায় কে বিশ্বাস
করবে? খালেদা জিয়ার কথা কেউ বিশ্বাস করে না। উনি ধোঁকা দিয়ে মিথ্যা বলে
যাচ্ছেন, ওটাই বলে যাক। বিএনপি চেয়ারপারসনের সংবাদ সম্মেলন মিথ্যার ফুলঝুরি
বলেও আখ্যায়িত করেন প্রধানমন্ত্রী।
আসন্ন সিটি নির্বাচনে নীরব প্রতিশোধ নিতে খালেদা জিয়ার আহ্বানের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশ্ন তুলেন, কিসের প্রতিশোধ? কে কার প্রতিশোধ নেবে? তিনি বলেন, ২০০৮ সালে জনগণ তাদের কেন ভোট দেয়নি। ৫ই জানুয়ারি নির্বাচনে কেন জনগণ ভোট দিলো মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে সে প্রতিশোধ তিনি নিতে চেয়েছেন। কথা নেই বার্তা নেই জানুয়ারির ৫ তারিখ আবার মানুষ হত্যা শুরু, কত মানুষকে হত্যা! তাজা মানুষগুলোকে পুড়িয়ে হত্যা করা হলো। ১৫৭ জন নিরীহ নাগরিককে পুড়িয়ে মারা হলো। তার নির্দেশে কত মায়ের কোল খালি হয়েছে। এখন প্রতিশোধ যদি জনগণ নেয় তা কার ওপর নেবে সেটা উনার (খালেদা জিয়া) ভেবে দেখা উচিত। এসব ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, আইন কাউকে ছাড় দেবে না।
খালেদা জিয়ার একটি বক্তব্যের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, উনি অর্থ নেয়াটা ভাল বোঝেন। ক্ষমতায় থাকতে অর্থ নিয়ে গেছেন। অর্থ নেয়া, বেইমানি করাটা উনার স্বভাব। প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া ডাবল নয়; মাল্টি স্ট্যান্ডার্ডের লোক। তিনিই ঢাকা বিভক্ত হওয়ায় হরতাল ডেকেছিলেন। এখন আবার এর সিটি নির্বাচনেও এসেছেন। তিনিই বলেছেন লোকাল গভর্নমেন্ট নির্বাচনের সঙ্গে জাতীয় নির্বাচনের সম্পর্ক নেই। আবার তিনিই বলেন, এতে সরকারের জনপ্রিয়তা প্রমাণ হবে।
সিটি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের জয়ী করতে সরকার নীলনকশা করছে-খালেদা জিয়ার এমন অভিযোগের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নীলনকশা করে কিভাবে নির্বাচনে জয়ী হওয়া যায় তা খালেদা জিয়ার থেকে ভাল আর কে জানে? ১৯৭৯ সালে উনার স্বামী হ্যাঁ-না ভোট দেয়- তাতে ভোট পড়ে ১২০ শতাংশ। উনার আমলে ’৯১ সালে মাগুরা ও মিরপুর উপনির্বাচনে কি হয়েছিল তা দেশবাসী জানে। ২০০১ সালে ফালুকে নির্বাচিত করতে কি করেছিল দেশবাসী জানে। আর ’৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি কি নির্বাচন হয়েছিল? কয় পার্সেন্ট ভোট পড়েছিল?
খালেদা জিয়া নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচার চালালেও তা গণমাধ্যমে আসেনি বলে সমালোচনাও করেন তিনি। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ১৯৬টি মোটরসাইকেল ও ৯৫টি গাড়ি নিয়ে প্রচারণা চালিয়ে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন, যা কোন মিডিয়ায় আসেনি। এ সময় প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের আচরণবিধির কয়েকটি ধারা পড়ে শোনান। নির্বাচনী প্রচারে আক্রান্ত খালেদা জিয়ার ছবি সংবাদ মাধ্যমে এলেও বিএনপি চেয়ারপারসনের নিরাপত্তাকর্মীদের গাড়ির নিচে চাপা পড়া এক তরুণের ছবি দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ছবি তো আপনারা দেখাননি। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া জনতার রুদ্ররোষেই পড়েছিলেন। সাধারণ মানুষ, খালেদার আগুনে স্বজনহারা মানুষ যাদের আপনজন আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে তারা যদি খালেদা জিয়াকে কালো পতাকা দেখায় আমরা কি করবো। তিনি বলেন, সিএসএফ জনগণকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছে। মানুষের ওপর গাড়ি তুলে দেয়। পরে জনগণ একসঙ্গে হয়ে হামলা করেছে সেটাই বড় হয়ে গেল!
খালেদা জিয়া রাজনৈতিক সমঝোতা চাওয়ার যে কথা সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, তার প্রতিক্রিয়ায় সমঝোতার সম্ভাবনা নাকচ করে এর জন্য খালেদা জিয়াকে দায়ী করে সরকার প্রধান বলেন, নির্বাচনের আগে আমি ফোন করেছিলাম, উনি ছয় ঘণ্টা পর ফোন ধরলেন, উনার যে কথা, আমার এই জীবনে এই রকম মুখ ঝামটা, ঝাড়ি আর খাইনি। উনার ছেলে মারা গেল, আমি গেলাম সহানুভূতি জানাতে। আমি গেলাম, আমি নামতে পারলাম না, উনার গেটে তালা। আমাকে ঢুকতে দিলো না, ভেতরে অনেক লোকজন ছিল, একটু ভদ্রতাও তো দেখায়নি। সবচেয়ে বড় কথা, খালেদা জিয়ার কথা কে বিশ্বাস করবে।
সংবাদ সম্মেলনে খালেদার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তিনি মিথ্যার ফুলঝুরি দিয়ে গেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস সদস্যদের ভুয়া বিবৃতি এবং ভারতের বিজেপিপ্রধান অমিত শাহের ফোনালাপের প্রসঙ্গ ধরে তিনি বলেন, উনার মিথ্যাচারের কথা কি বলবো! দেশের ভেতরে তো মিথ্যাচার করেই যাচ্ছেন, বিদেশীদেরও ছাড় দেননি। মিথ্যা কথা উনি চমৎকারভাবেই বলতে পারেন।
আগুনে মানুষ মারার জন্য সরকারকে দায়ী করায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ খুন করেছেন উনি আর দায়দায়িত্ব আমার! যারা হাতে-নাতে ধরা পড়েছে সেই ৬৬৫ জন বিএনপি-জামায়াতের। সাধারণ মানুষের হাতে বিএনপির ৭০ জন গণধোলাই খেয়েছে। বোমা বানাতে গিয়ে পুরান ঢাকায় তাদের দলের নেতার হাতের কব্জি উড়ে গেছে। চট্টগ্রামে বোমাসহ বিএনপি নেতা ধরা পড়লো। এত কিছুর পরও উনি মিথ্যা কথা খুব চমৎকারভাবে বলতে পারেন।
একজন সিনিয়র সাংবাদিক প্রশ্ন করেন গণমাধ্যম এ পর্যন্ত স্বাধীনভাবে কাজ করছে। অদূর অভিষ্যৎ এমনটি সামনের দু-চার দিন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে কিনা? জবাবে প্রধানমন্ত্রী পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, আপনারা কি এখন স্বাধীনভাবে কাজ করছেন না। এখন করতে পারলে সামনের জন্য ভয় কেন?
এ সময় তিনি অভিযোগ করেন সরকারের উন্নয়নের চেয়ে বিরোধী নেতাদের বক্তব্য গণমাধ্যম বেশি গুরুত্ব দেয়।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নেপালে ঘটিত ভূমিকম্পে তাদের পাশে থাকার কথা জানান এবং ভূমিকম্প মোকাবিলায় তার সরকারের প্রস্তুতির কথা তুলে ধরেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী তার ইন্দোনেশিয়া সফরের বিস্তারিত তুলে ধরেন। ‘বান্দুং সম্মেলন’-এর ৬০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এ সম্মেলনে ‘বান্দুং মেসেজ’, ‘এশিয়া-আফ্রিকা নয়া কৌশলগত অংশীদারিত্ব’ শীর্ষক উদ্যোগ ও ফিলিস্তিন ঘোষণাপত্র গৃহীত হয়। এ সফরে প্রধানমন্ত্রী ইন্দোনেশিয়া, চীন, ইরান ও মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট এবং জাপান, সিঙ্গাপুর, ফিলিস্তিন, নেপালের প্রধানমন্ত্রীসহ কাতারের উপ-প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন এবং সম্মেলনে বাংলাদেশের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী জানান, ইন্দোনেশিয়ার সম্মেলনে অংশগ্রহণের পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেন তিনি। বৈঠকে নারী ক্ষমতায়ন, শিক্ষা, প্রযুক্তি, জলবায়ুসহ বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশের ভূমিকা উল্লেখ করে সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। এ ছাড়া ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে বাণিজ্য, জ্বালানির বিষয়ে আলোচনা হয়। দুদেশের বিভিন্ন সহযোগিতার বিষয় চিহ্নিত করে সহযোগিতার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এবং চীনের প্রেসিডেন্টকে বিনিয়োগের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। গত ২১ থেকে ২৩শে এপ্রিল ইন্দোনেশিয়ায় অনুষ্ঠিত আফ্রো-এশিয়ান দ্বিতীয় সম্মেলনে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। গতকালের সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর পাশে ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
আসন্ন সিটি নির্বাচনে নীরব প্রতিশোধ নিতে খালেদা জিয়ার আহ্বানের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশ্ন তুলেন, কিসের প্রতিশোধ? কে কার প্রতিশোধ নেবে? তিনি বলেন, ২০০৮ সালে জনগণ তাদের কেন ভোট দেয়নি। ৫ই জানুয়ারি নির্বাচনে কেন জনগণ ভোট দিলো মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে সে প্রতিশোধ তিনি নিতে চেয়েছেন। কথা নেই বার্তা নেই জানুয়ারির ৫ তারিখ আবার মানুষ হত্যা শুরু, কত মানুষকে হত্যা! তাজা মানুষগুলোকে পুড়িয়ে হত্যা করা হলো। ১৫৭ জন নিরীহ নাগরিককে পুড়িয়ে মারা হলো। তার নির্দেশে কত মায়ের কোল খালি হয়েছে। এখন প্রতিশোধ যদি জনগণ নেয় তা কার ওপর নেবে সেটা উনার (খালেদা জিয়া) ভেবে দেখা উচিত। এসব ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, আইন কাউকে ছাড় দেবে না।
খালেদা জিয়ার একটি বক্তব্যের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, উনি অর্থ নেয়াটা ভাল বোঝেন। ক্ষমতায় থাকতে অর্থ নিয়ে গেছেন। অর্থ নেয়া, বেইমানি করাটা উনার স্বভাব। প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া ডাবল নয়; মাল্টি স্ট্যান্ডার্ডের লোক। তিনিই ঢাকা বিভক্ত হওয়ায় হরতাল ডেকেছিলেন। এখন আবার এর সিটি নির্বাচনেও এসেছেন। তিনিই বলেছেন লোকাল গভর্নমেন্ট নির্বাচনের সঙ্গে জাতীয় নির্বাচনের সম্পর্ক নেই। আবার তিনিই বলেন, এতে সরকারের জনপ্রিয়তা প্রমাণ হবে।
সিটি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের জয়ী করতে সরকার নীলনকশা করছে-খালেদা জিয়ার এমন অভিযোগের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নীলনকশা করে কিভাবে নির্বাচনে জয়ী হওয়া যায় তা খালেদা জিয়ার থেকে ভাল আর কে জানে? ১৯৭৯ সালে উনার স্বামী হ্যাঁ-না ভোট দেয়- তাতে ভোট পড়ে ১২০ শতাংশ। উনার আমলে ’৯১ সালে মাগুরা ও মিরপুর উপনির্বাচনে কি হয়েছিল তা দেশবাসী জানে। ২০০১ সালে ফালুকে নির্বাচিত করতে কি করেছিল দেশবাসী জানে। আর ’৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি কি নির্বাচন হয়েছিল? কয় পার্সেন্ট ভোট পড়েছিল?
খালেদা জিয়া নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচার চালালেও তা গণমাধ্যমে আসেনি বলে সমালোচনাও করেন তিনি। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ১৯৬টি মোটরসাইকেল ও ৯৫টি গাড়ি নিয়ে প্রচারণা চালিয়ে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন, যা কোন মিডিয়ায় আসেনি। এ সময় প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের আচরণবিধির কয়েকটি ধারা পড়ে শোনান। নির্বাচনী প্রচারে আক্রান্ত খালেদা জিয়ার ছবি সংবাদ মাধ্যমে এলেও বিএনপি চেয়ারপারসনের নিরাপত্তাকর্মীদের গাড়ির নিচে চাপা পড়া এক তরুণের ছবি দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ছবি তো আপনারা দেখাননি। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া জনতার রুদ্ররোষেই পড়েছিলেন। সাধারণ মানুষ, খালেদার আগুনে স্বজনহারা মানুষ যাদের আপনজন আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে তারা যদি খালেদা জিয়াকে কালো পতাকা দেখায় আমরা কি করবো। তিনি বলেন, সিএসএফ জনগণকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছে। মানুষের ওপর গাড়ি তুলে দেয়। পরে জনগণ একসঙ্গে হয়ে হামলা করেছে সেটাই বড় হয়ে গেল!
খালেদা জিয়া রাজনৈতিক সমঝোতা চাওয়ার যে কথা সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, তার প্রতিক্রিয়ায় সমঝোতার সম্ভাবনা নাকচ করে এর জন্য খালেদা জিয়াকে দায়ী করে সরকার প্রধান বলেন, নির্বাচনের আগে আমি ফোন করেছিলাম, উনি ছয় ঘণ্টা পর ফোন ধরলেন, উনার যে কথা, আমার এই জীবনে এই রকম মুখ ঝামটা, ঝাড়ি আর খাইনি। উনার ছেলে মারা গেল, আমি গেলাম সহানুভূতি জানাতে। আমি গেলাম, আমি নামতে পারলাম না, উনার গেটে তালা। আমাকে ঢুকতে দিলো না, ভেতরে অনেক লোকজন ছিল, একটু ভদ্রতাও তো দেখায়নি। সবচেয়ে বড় কথা, খালেদা জিয়ার কথা কে বিশ্বাস করবে।
সংবাদ সম্মেলনে খালেদার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তিনি মিথ্যার ফুলঝুরি দিয়ে গেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস সদস্যদের ভুয়া বিবৃতি এবং ভারতের বিজেপিপ্রধান অমিত শাহের ফোনালাপের প্রসঙ্গ ধরে তিনি বলেন, উনার মিথ্যাচারের কথা কি বলবো! দেশের ভেতরে তো মিথ্যাচার করেই যাচ্ছেন, বিদেশীদেরও ছাড় দেননি। মিথ্যা কথা উনি চমৎকারভাবেই বলতে পারেন।
আগুনে মানুষ মারার জন্য সরকারকে দায়ী করায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ খুন করেছেন উনি আর দায়দায়িত্ব আমার! যারা হাতে-নাতে ধরা পড়েছে সেই ৬৬৫ জন বিএনপি-জামায়াতের। সাধারণ মানুষের হাতে বিএনপির ৭০ জন গণধোলাই খেয়েছে। বোমা বানাতে গিয়ে পুরান ঢাকায় তাদের দলের নেতার হাতের কব্জি উড়ে গেছে। চট্টগ্রামে বোমাসহ বিএনপি নেতা ধরা পড়লো। এত কিছুর পরও উনি মিথ্যা কথা খুব চমৎকারভাবে বলতে পারেন।
একজন সিনিয়র সাংবাদিক প্রশ্ন করেন গণমাধ্যম এ পর্যন্ত স্বাধীনভাবে কাজ করছে। অদূর অভিষ্যৎ এমনটি সামনের দু-চার দিন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে কিনা? জবাবে প্রধানমন্ত্রী পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, আপনারা কি এখন স্বাধীনভাবে কাজ করছেন না। এখন করতে পারলে সামনের জন্য ভয় কেন?
এ সময় তিনি অভিযোগ করেন সরকারের উন্নয়নের চেয়ে বিরোধী নেতাদের বক্তব্য গণমাধ্যম বেশি গুরুত্ব দেয়।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নেপালে ঘটিত ভূমিকম্পে তাদের পাশে থাকার কথা জানান এবং ভূমিকম্প মোকাবিলায় তার সরকারের প্রস্তুতির কথা তুলে ধরেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী তার ইন্দোনেশিয়া সফরের বিস্তারিত তুলে ধরেন। ‘বান্দুং সম্মেলন’-এর ৬০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এ সম্মেলনে ‘বান্দুং মেসেজ’, ‘এশিয়া-আফ্রিকা নয়া কৌশলগত অংশীদারিত্ব’ শীর্ষক উদ্যোগ ও ফিলিস্তিন ঘোষণাপত্র গৃহীত হয়। এ সফরে প্রধানমন্ত্রী ইন্দোনেশিয়া, চীন, ইরান ও মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট এবং জাপান, সিঙ্গাপুর, ফিলিস্তিন, নেপালের প্রধানমন্ত্রীসহ কাতারের উপ-প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন এবং সম্মেলনে বাংলাদেশের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী জানান, ইন্দোনেশিয়ার সম্মেলনে অংশগ্রহণের পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেন তিনি। বৈঠকে নারী ক্ষমতায়ন, শিক্ষা, প্রযুক্তি, জলবায়ুসহ বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশের ভূমিকা উল্লেখ করে সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। এ ছাড়া ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে বাণিজ্য, জ্বালানির বিষয়ে আলোচনা হয়। দুদেশের বিভিন্ন সহযোগিতার বিষয় চিহ্নিত করে সহযোগিতার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এবং চীনের প্রেসিডেন্টকে বিনিয়োগের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। গত ২১ থেকে ২৩শে এপ্রিল ইন্দোনেশিয়ায় অনুষ্ঠিত আফ্রো-এশিয়ান দ্বিতীয় সম্মেলনে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। গতকালের সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর পাশে ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
No comments