৩০ দিনেও অগ্রগতি নেই তদন্তে by নুরুজ্জামান লাবু
ব্লগার
ও লেখক অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের এক মাস পেরিয়ে গেছে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা
পুলিশের সঙ্গে তদন্তে যুক্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা
এফবিআই। তবু তদন্তে দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি নেই। যদিও তদন্ত সংশ্লিষ্টরা
বলছেন, তারা অত্যধিক গুরুত্ব দিয়ে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করার চেষ্টা
করছেন। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যে ধর্মীয় একটি উগ্রপন্থি দল জড়িত তা মোটামুটি
নিশ্চিত হয়েছেন তারা। তবে হত্যাকাণ্ডটি অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে সংগঠিত
করায় রহস্য উন্মোচনে কিছুটা সময় লাগছে। এদিকে হত্যাকাণ্ডের এক মাস পেরিয়ে
গেলেও তদন্তে অগ্রগতি না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন অভিজিৎ রায়ের বাবা অজয়
রায় ও বন্ধু-স্বজনরা।
গত ২৬শে ফেব্রুয়ারি একুশে বইমেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির পাশে নির্মম হামলার শিকার হন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায় এবং তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যা। দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মারা যান অভিজিৎ। গুরুতর আহত রাফিদাকে ঢাকা মেডিক্যাল থেকে স্কয়ার হাসপাতাল ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়। ঘটনার পরের দিন অভিজিতের বাবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানের সাবেক অধ্যাপক ড. অজয় রায় বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও ডিবির যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, তদন্ত অনেকটা এগিয়েছে। হামলাকারীদের বিষয়ে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। মনিরুল ইসলাম বলেন, যে উগ্রপন্থি দল এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তাদের মোটামুটি শনাক্ত করা গেছে। এখন গ্রেপ্তারের অপেক্ষা। হত্যাকারীরা অত্যন্ত চতুর হওয়ায় তাদের গ্রেপ্তারে কিছুটা সময় লাগছে।
মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, নাস্তিক্যবাদ ও ধর্মীয় বিষয় নিয়ে লেখালেখি করার কারণে অন্তত বছর পাঁচেক আগে থেকেই হত্যার হুমকি পেয়ে আসছিলেন অভিজিৎ। প্রথম দিকে এসবকে পাত্তা দেননি তিনি। ফেবসুকেও তাকে প্রতিনিয়ত হত্যার হুমকি দেয়া হতো। এরই ধারাবাহিকতায় কোন একটি ধর্মীয় উগ্রপন্থি সংগঠন তাকে হত্যা করেছে বলে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তারা এর আগে কয়েকজন ব্লগার ও মুক্তমনা ব্যক্তির হত্যাকাণ্ডের ধরনের সঙ্গে অভিজিতের ওপর হামলা মিলিয়ে দেখেছেন। এ থেকে তারা প্রাথমিকভাবে আনসারুল্লাহ বাংলা টিম নামে আল-কায়েদার অনুসারী একটি উগ্রপন্থি দলকে হত্যাকাণ্ডের সম্পৃক্ত বলে ধারণা করছেন। আনসারুল্লাহ বাংলার প্রধান জসিমউদ্দিন রাহমানী গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। তার অবর্তমানে রেজওয়ানুল আজাদ রানা নামে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র দায়িত্ব পালন করে আসছিল। তাকে গ্রেপ্তারের জন্য অনেকদিন ধরেই চেষ্টা করা হচ্ছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের ধারণা, রানাকে গ্রেপ্তার করতে পারলে অভিজিৎসহ আরও কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত হতে পারে। তবে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, রানা বর্তমানে দেশের বাইরে অবস্থান করছে।
সূত্র জানায়, অভিজিতের ওপর হামলাকারীরা অত্যন্ত সূচারু পরিকল্পনায় হামলার ছক এঁকেছিল। হামলার পর অপরাধীদের কোনও ক্লু পাওয়া যায়নি। হামলায় ৫ থেকে ৬ জনের যে দল অংশ নিয়েছিল তারা অনেক বেশি প্রশিক্ষিত বলেই মনে করছেন গোয়েন্দারা। এ কারণে মানুষের ভিড়ের মধ্যেও টার্গেটকে কুপিয়ে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যেতে পেরেছে তারা। হামলার কয়েক দিন আগে থেকেই তারা অভিজিৎকে অনুসরণ করছিল। তদন্ত সংশ্লিষ্ট ওই সূত্র জানায়, হামলাকারীদের চিহ্নিত করতে তারা দুটি পদ্ধতিতে তদন্তকাজ করছেন। ম্যানুয়াল ও প্রযুক্তিগতভাবে হামলাকারীদের শনাক্ত করতে চেষ্টা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ফেসবুকে ফারাবীর মতো আরো যারা অভিজিৎকে নিয়মিত হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল, তাদের মধ্যে দশ জনকে চিহ্নিত করেছেন। এই দশ জনের নাম এফবিআইকে দেয়া হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক থেকে তাদের বিস্তারিত পরিচয় উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। এছাড়া ঘটনার পর হত্যার দায় স্বীকার করে লন্ডন থেকে যে টুইট করা হয়েছিল তাকেও শনাক্তের চেষ্টা চলছে। এসব কাজ করছে মূলত এফবিআই। আর তদন্ত সংস্থা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের একটি স্লিপার সেলের সন্ধান পেয়েছে। যারা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে মনে করছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। তদন্ত সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের কিছু তথ্য তারা হাতে পেয়েছেন। তবে তাদের গ্রেপ্তারের আগ পর্যন্ত শতভাগ নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের ওই স্লিপার সেলের সদস্যদের গ্রেপ্তারে একধিক অভিযানিক দল অভিযান পরিচালনা করছে। সূত্র জানায়, এই স্লিপার সেলের সদস্যদের সঙ্গে হত্যাকাণ্ড ঘটনার আগে বইমেলার ভেতরে একটি বৈঠকের কিছুটা যোগসূত্রের তথ্য পেয়েছেন। এসব তথ্য মূলত যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ওই বৈঠকের উদ্যোক্তা বুয়েটের শিক্ষক ফারসীমকে ডিবি কার্যালয়ে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত সবার বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
এদিকে নিহত অভিজিতের বাবা ড. অজয় রায় হতাশা প্রকাশ করে বলেছেন, তদন্ত সংশ্লিষ্টরা কোনও ক্লু পাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, কতটা আন্তরিকতার সঙ্গে তারা কাজ করছে বুঝতে পারছি না। তা না হলে একটি হত্যাকাণ্ডের এক মাস পেরিয়ে গেলেও রহস্য উন্মোচন হবে না কেন? অজয় রায় বলেন, আমরা পরিবারের সদস্যরা সবাই অপেক্ষা করছি। ছেলেকে যদিও ফেরত পাবো না, তবে তার হত্যাকারীদের যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয় সেই আশায় আছি।
গত ২৬শে ফেব্রুয়ারি একুশে বইমেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির পাশে নির্মম হামলার শিকার হন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায় এবং তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যা। দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মারা যান অভিজিৎ। গুরুতর আহত রাফিদাকে ঢাকা মেডিক্যাল থেকে স্কয়ার হাসপাতাল ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়। ঘটনার পরের দিন অভিজিতের বাবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানের সাবেক অধ্যাপক ড. অজয় রায় বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও ডিবির যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, তদন্ত অনেকটা এগিয়েছে। হামলাকারীদের বিষয়ে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। মনিরুল ইসলাম বলেন, যে উগ্রপন্থি দল এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তাদের মোটামুটি শনাক্ত করা গেছে। এখন গ্রেপ্তারের অপেক্ষা। হত্যাকারীরা অত্যন্ত চতুর হওয়ায় তাদের গ্রেপ্তারে কিছুটা সময় লাগছে।
মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, নাস্তিক্যবাদ ও ধর্মীয় বিষয় নিয়ে লেখালেখি করার কারণে অন্তত বছর পাঁচেক আগে থেকেই হত্যার হুমকি পেয়ে আসছিলেন অভিজিৎ। প্রথম দিকে এসবকে পাত্তা দেননি তিনি। ফেবসুকেও তাকে প্রতিনিয়ত হত্যার হুমকি দেয়া হতো। এরই ধারাবাহিকতায় কোন একটি ধর্মীয় উগ্রপন্থি সংগঠন তাকে হত্যা করেছে বলে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তারা এর আগে কয়েকজন ব্লগার ও মুক্তমনা ব্যক্তির হত্যাকাণ্ডের ধরনের সঙ্গে অভিজিতের ওপর হামলা মিলিয়ে দেখেছেন। এ থেকে তারা প্রাথমিকভাবে আনসারুল্লাহ বাংলা টিম নামে আল-কায়েদার অনুসারী একটি উগ্রপন্থি দলকে হত্যাকাণ্ডের সম্পৃক্ত বলে ধারণা করছেন। আনসারুল্লাহ বাংলার প্রধান জসিমউদ্দিন রাহমানী গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। তার অবর্তমানে রেজওয়ানুল আজাদ রানা নামে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র দায়িত্ব পালন করে আসছিল। তাকে গ্রেপ্তারের জন্য অনেকদিন ধরেই চেষ্টা করা হচ্ছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের ধারণা, রানাকে গ্রেপ্তার করতে পারলে অভিজিৎসহ আরও কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত হতে পারে। তবে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, রানা বর্তমানে দেশের বাইরে অবস্থান করছে।
সূত্র জানায়, অভিজিতের ওপর হামলাকারীরা অত্যন্ত সূচারু পরিকল্পনায় হামলার ছক এঁকেছিল। হামলার পর অপরাধীদের কোনও ক্লু পাওয়া যায়নি। হামলায় ৫ থেকে ৬ জনের যে দল অংশ নিয়েছিল তারা অনেক বেশি প্রশিক্ষিত বলেই মনে করছেন গোয়েন্দারা। এ কারণে মানুষের ভিড়ের মধ্যেও টার্গেটকে কুপিয়ে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যেতে পেরেছে তারা। হামলার কয়েক দিন আগে থেকেই তারা অভিজিৎকে অনুসরণ করছিল। তদন্ত সংশ্লিষ্ট ওই সূত্র জানায়, হামলাকারীদের চিহ্নিত করতে তারা দুটি পদ্ধতিতে তদন্তকাজ করছেন। ম্যানুয়াল ও প্রযুক্তিগতভাবে হামলাকারীদের শনাক্ত করতে চেষ্টা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ফেসবুকে ফারাবীর মতো আরো যারা অভিজিৎকে নিয়মিত হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল, তাদের মধ্যে দশ জনকে চিহ্নিত করেছেন। এই দশ জনের নাম এফবিআইকে দেয়া হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক থেকে তাদের বিস্তারিত পরিচয় উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। এছাড়া ঘটনার পর হত্যার দায় স্বীকার করে লন্ডন থেকে যে টুইট করা হয়েছিল তাকেও শনাক্তের চেষ্টা চলছে। এসব কাজ করছে মূলত এফবিআই। আর তদন্ত সংস্থা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের একটি স্লিপার সেলের সন্ধান পেয়েছে। যারা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে মনে করছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। তদন্ত সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের কিছু তথ্য তারা হাতে পেয়েছেন। তবে তাদের গ্রেপ্তারের আগ পর্যন্ত শতভাগ নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের ওই স্লিপার সেলের সদস্যদের গ্রেপ্তারে একধিক অভিযানিক দল অভিযান পরিচালনা করছে। সূত্র জানায়, এই স্লিপার সেলের সদস্যদের সঙ্গে হত্যাকাণ্ড ঘটনার আগে বইমেলার ভেতরে একটি বৈঠকের কিছুটা যোগসূত্রের তথ্য পেয়েছেন। এসব তথ্য মূলত যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ওই বৈঠকের উদ্যোক্তা বুয়েটের শিক্ষক ফারসীমকে ডিবি কার্যালয়ে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত সবার বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
এদিকে নিহত অভিজিতের বাবা ড. অজয় রায় হতাশা প্রকাশ করে বলেছেন, তদন্ত সংশ্লিষ্টরা কোনও ক্লু পাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, কতটা আন্তরিকতার সঙ্গে তারা কাজ করছে বুঝতে পারছি না। তা না হলে একটি হত্যাকাণ্ডের এক মাস পেরিয়ে গেলেও রহস্য উন্মোচন হবে না কেন? অজয় রায় বলেন, আমরা পরিবারের সদস্যরা সবাই অপেক্ষা করছি। ছেলেকে যদিও ফেরত পাবো না, তবে তার হত্যাকারীদের যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয় সেই আশায় আছি।
No comments