লাঙ্গলবন্দ ট্র্যাজেডির নেপথ্যে... by বিল্লাল হোসেন রবিন
নারায়ণগঞ্জের
লাঙ্গলবন্দে শেষ হলো সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বী পুণ্যার্থীদের ঐতিহ্যবাহী
অষ্টমী স্নানোৎসব। ১০ পুণ্যার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় এবার স্নানোৎসব বিষাদে
পরিণত হয়। দুঃখ-কষ্ট ও ক্ষোভ নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন পুণ্যার্থীরা। শুক্রবারের
দুর্ঘটনাটিকে প্রশাসনের চরম অব্যবস্থাপনা ও অবৈধ দখলদারদের আগ্রাসনের ফল
বলে মনে করছেন তারা। আগে থেকে সংশ্লিষ্টরা নজরদারি রাখলে এমন দুর্ঘটনা ঘটতো
না বলেও তারা মন্তব্য করেন।
এদিকে পদদলিত হয়ে ১০ জন নিহত হওয়ায় ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি আজ রোববার থেকে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করবেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসক আনিছুর রহমান মিঞা স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ইসরাত হোসেন খানকে প্রধান করে এ কমিটি করেন। গঠিত কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন- নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মাহমুদুর রহমান হাবিব ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মিজানুর রহমান। তবে তদন্তে যাই হোক না কেন, আগামীতে এমন দুর্ঘটনা এড়াতে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে স্নান ঘাটে পুণ্যার্থীদের স্নানোৎসব নির্বিঘ্ন করতে চলাচলের পথকে প্রশস্ত করার দাবি জানিয়েছেন পূজা উদযাপন কমিটি ও স্নানোৎসব কমিটির নেতৃবৃন্দ। এদিকে শুক্রবার ভোর ৫টা ৪৮ মিনিট ৪৭ সেকেন্ড থেকে স্নানোৎসবের লগ্ন শুরু হয়। শেষ হয় গতকাল শনিবার ভোর ৬টা ৫৯ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডে। শুক্রবার সকাল পৌনে ৮টার দিকে রাজঘাট ও বেইলী ব্রিজের মধ্যবর্তীস্থানে পদদলিত হয়ে ৭ নারীসহ ১০ নিহত হয়।
গতকাল শনিবার ভোর পর্যন্ত তিথি অনুযায়ী পাপ মোচনের আশায় লাঙ্গলবন্দে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। শুক্রবার ভোর থেকে তিথি শুরু হওয়ার পরপরই ব্রহ্মপুত্র নদের ১৬টি ঘাটে স্নান করতে নামেন হাজার হাজার পুণ্যার্থী। মানিকগঞ্জের ঘিওর থেকে আসা মিনতী রানী (৩২) ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এতো চিকন (সরু) রাস্তা দিয়ে হাজার হাজার পুণ্যার্থী আসা-যাওয়া করতে পারে? রাস্তায় দুই পাশে যেভাবে দোকান বসানো হয়েছে এগুলো না থাকলে তো রাস্তাটা প্রশস্ত হয়। ঘাটে যাওয়ার মধ্যেও কোন শৃঙ্খলা নেই। তাছাড়া স্নানের জায়গা বা কোথায়? কচুরিপানায় সয়লাব ছিল নদী। নিরুপায় হয়ে কচুরিপানার মধ্যেই স্নান করতে হয়েছে। চরম অব্যবস্থাপনার কারণে এবার পুণ্যার্থীরা ঠিকমত স্নানোৎসব করতে পারেনি। কুমিল্লার রামচন্দ্রপুর থেকে আসা মুকুল ঘোষ (৪৫) জানান, প্রতিবছর হাজার হাজার পুণ্যার্থী এখানে আসে। প্রচণ্ড ভিড়ে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে বাধ্য হয় আগতরা। এটা সবাই জানে। কিন্তু উত্তরণের কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় না। প্রতি বছরই আমরা আশ্বাস শুনি। আগামীতে আর দুর্ভোগ হবে না। শেষ পর্যন্ত অবৈধ দখলদারদের কারণে সরু রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে পদদলিত হয়ে এতগুলো লোক মারা গেল। এর দায় কে নেবে? বি-বাড়িয়ার নবীনগর থেকে আসা রাখাল চন্দ্র শীল বলেন, এবার প্রশাসনের অব্যবস্থাপনা ও উদাসীনতা ছিল। যেহেতু চলাচলের পথ মাত্র একটি। সেহেতু মাঝে দড়ি বা-বাঁশ দিয়ে ওয়ানওয়ে করে দিলে চলাচল সুবিধা হতো। সেটা করা হয়নি। ঘাটগুলোতেও ওয়ানওয়ে করা হয়নি। ফলে বিশৃঙ্খলা ছিল চোখে পড়ার মতো। পরিষ্কার করা হয়নি নদীর কচুরিপানা। অধিংকাশ ঘাটে বাধ্য হয়ে পুণ্যার্থীরা কচুরিপানার মধ্যে স্নান করেছে। তাছাড়া রাস্তার দু’পাশে মেলার নামে দোকান বসতে না দিলে রাস্তাটা প্রশস্ত থাকতো। এতো বড় একটা উৎসব। অথচ প্রশাসনের খামখেয়ালীপনা ছিল। যার জন্য ১০জন পুণ্যার্থীকে প্রাণ দিতে হয়েছে।
মোটকথা এবারের পুণ্যস্নানের আয়োজনে ব্যাপক অব্যবস্থাপনার অভিযোগ করেছেন পুণ্যার্থীরা। স্নানঘাটগুলোতে কচুরিপানা থাকায় চরম দুর্ভোগ ও বিড়ম্বনা পোহাতে হয়েছে পুণ্যার্থীদের। এছাড়াও ঠিকমতো খনন না করায় অনেক ঘাটের পানি সকালেই কাদামাটিতে ময়লা হয়ে যায় বলে জানান তারা।
লাঙ্গলবন্দ স্নানোৎসব উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বাসুদেব চক্রবর্তী জানান, অন্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি পুণ্যার্থীর উপস্থিতির কারণেই শুক্রবার দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। নেপাল, ভূটান, ভারতসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ১৫ লাখের বেশি পুণ্যার্থী এসেছিল বলে ধারণা করছি আমরা। এ দুর্ঘটনার পর দ্রুত সড়ক প্রশস্ত করাসহ অবকাঠামোগত অন্যান্য উন্নয়নের ব্যাপারে সরকারকে অনুরোধ করবো আমরা। নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিনারা নাজমীন সাংবাদিকদের জানান, বন্ধের দিন হওয়ায় ওই স্নানঘাটে ঢল নেমেছিল পুণ্যার্থীদের। গত বছর রাস্তাটি ১২ ফুট ছিল। এবার বাড়িয়ে ১৬ ফুট করা হয়েছিল। শুক্রবারের ঘটনাটি একটি দুর্ঘটনা।
এদিকে পদদলিত হয়ে ১০ জন নিহত হওয়ায় ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি আজ রোববার থেকে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করবেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসক আনিছুর রহমান মিঞা স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ইসরাত হোসেন খানকে প্রধান করে এ কমিটি করেন। গঠিত কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন- নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মাহমুদুর রহমান হাবিব ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মিজানুর রহমান। তবে তদন্তে যাই হোক না কেন, আগামীতে এমন দুর্ঘটনা এড়াতে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে স্নান ঘাটে পুণ্যার্থীদের স্নানোৎসব নির্বিঘ্ন করতে চলাচলের পথকে প্রশস্ত করার দাবি জানিয়েছেন পূজা উদযাপন কমিটি ও স্নানোৎসব কমিটির নেতৃবৃন্দ। এদিকে শুক্রবার ভোর ৫টা ৪৮ মিনিট ৪৭ সেকেন্ড থেকে স্নানোৎসবের লগ্ন শুরু হয়। শেষ হয় গতকাল শনিবার ভোর ৬টা ৫৯ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডে। শুক্রবার সকাল পৌনে ৮টার দিকে রাজঘাট ও বেইলী ব্রিজের মধ্যবর্তীস্থানে পদদলিত হয়ে ৭ নারীসহ ১০ নিহত হয়।
গতকাল শনিবার ভোর পর্যন্ত তিথি অনুযায়ী পাপ মোচনের আশায় লাঙ্গলবন্দে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। শুক্রবার ভোর থেকে তিথি শুরু হওয়ার পরপরই ব্রহ্মপুত্র নদের ১৬টি ঘাটে স্নান করতে নামেন হাজার হাজার পুণ্যার্থী। মানিকগঞ্জের ঘিওর থেকে আসা মিনতী রানী (৩২) ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এতো চিকন (সরু) রাস্তা দিয়ে হাজার হাজার পুণ্যার্থী আসা-যাওয়া করতে পারে? রাস্তায় দুই পাশে যেভাবে দোকান বসানো হয়েছে এগুলো না থাকলে তো রাস্তাটা প্রশস্ত হয়। ঘাটে যাওয়ার মধ্যেও কোন শৃঙ্খলা নেই। তাছাড়া স্নানের জায়গা বা কোথায়? কচুরিপানায় সয়লাব ছিল নদী। নিরুপায় হয়ে কচুরিপানার মধ্যেই স্নান করতে হয়েছে। চরম অব্যবস্থাপনার কারণে এবার পুণ্যার্থীরা ঠিকমত স্নানোৎসব করতে পারেনি। কুমিল্লার রামচন্দ্রপুর থেকে আসা মুকুল ঘোষ (৪৫) জানান, প্রতিবছর হাজার হাজার পুণ্যার্থী এখানে আসে। প্রচণ্ড ভিড়ে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে বাধ্য হয় আগতরা। এটা সবাই জানে। কিন্তু উত্তরণের কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় না। প্রতি বছরই আমরা আশ্বাস শুনি। আগামীতে আর দুর্ভোগ হবে না। শেষ পর্যন্ত অবৈধ দখলদারদের কারণে সরু রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে পদদলিত হয়ে এতগুলো লোক মারা গেল। এর দায় কে নেবে? বি-বাড়িয়ার নবীনগর থেকে আসা রাখাল চন্দ্র শীল বলেন, এবার প্রশাসনের অব্যবস্থাপনা ও উদাসীনতা ছিল। যেহেতু চলাচলের পথ মাত্র একটি। সেহেতু মাঝে দড়ি বা-বাঁশ দিয়ে ওয়ানওয়ে করে দিলে চলাচল সুবিধা হতো। সেটা করা হয়নি। ঘাটগুলোতেও ওয়ানওয়ে করা হয়নি। ফলে বিশৃঙ্খলা ছিল চোখে পড়ার মতো। পরিষ্কার করা হয়নি নদীর কচুরিপানা। অধিংকাশ ঘাটে বাধ্য হয়ে পুণ্যার্থীরা কচুরিপানার মধ্যে স্নান করেছে। তাছাড়া রাস্তার দু’পাশে মেলার নামে দোকান বসতে না দিলে রাস্তাটা প্রশস্ত থাকতো। এতো বড় একটা উৎসব। অথচ প্রশাসনের খামখেয়ালীপনা ছিল। যার জন্য ১০জন পুণ্যার্থীকে প্রাণ দিতে হয়েছে।
মোটকথা এবারের পুণ্যস্নানের আয়োজনে ব্যাপক অব্যবস্থাপনার অভিযোগ করেছেন পুণ্যার্থীরা। স্নানঘাটগুলোতে কচুরিপানা থাকায় চরম দুর্ভোগ ও বিড়ম্বনা পোহাতে হয়েছে পুণ্যার্থীদের। এছাড়াও ঠিকমতো খনন না করায় অনেক ঘাটের পানি সকালেই কাদামাটিতে ময়লা হয়ে যায় বলে জানান তারা।
লাঙ্গলবন্দ স্নানোৎসব উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বাসুদেব চক্রবর্তী জানান, অন্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি পুণ্যার্থীর উপস্থিতির কারণেই শুক্রবার দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। নেপাল, ভূটান, ভারতসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ১৫ লাখের বেশি পুণ্যার্থী এসেছিল বলে ধারণা করছি আমরা। এ দুর্ঘটনার পর দ্রুত সড়ক প্রশস্ত করাসহ অবকাঠামোগত অন্যান্য উন্নয়নের ব্যাপারে সরকারকে অনুরোধ করবো আমরা। নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিনারা নাজমীন সাংবাদিকদের জানান, বন্ধের দিন হওয়ায় ওই স্নানঘাটে ঢল নেমেছিল পুণ্যার্থীদের। গত বছর রাস্তাটি ১২ ফুট ছিল। এবার বাড়িয়ে ১৬ ফুট করা হয়েছিল। শুক্রবারের ঘটনাটি একটি দুর্ঘটনা।
No comments