রাজনীতি আজ আদর্শ বিবর্জিত by নূরে আলম সিদ্দিকী

অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় দুই নেত্রীর মধ্যে একটা অলিখিত চুক্তি হয়ে আছে যে, আজীবন আমাদের মধ্যেই ক্ষমতা ভাগাভাগি হয়ে কেন্দ্রীভূত থাকবে। বাংলাদেশের মানুষকে এতটা নির্বোধ ভাবা উচিত নয়। এই মানুষই ’৬৯-এ ভিসুভিয়াসের মতো বিস্ফোরিত হয়েছিল, এই মানুষই ’৭০-এর নির্বাচনে ভোট দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে একক নেতৃত্বে অধিষ্ঠিত করেছিল, পঁচিশে মার্চের পৈশাচিক আক্রমণকে শুধু প্রতিরোধই করে নি, তাদেরকে পরাভূত করেছিল। অথচ বেদনাদায়ক হলেও আজকের বাস্তবতায় লক্ষণীয়, জনগণ রাজনৈতিক অবক্ষয়ের দীপ্তিহীন আগুনের নির্দয় দহনে দগ্ধীভূত হলেও আজ নির্লিপ্ত, নির্বিকার। এর সমাধানে যেভাবে বিস্ফোরিত হওয়ার কথা ছিল তা তো হচ্ছেই না, বরং সবকিছুই যেন তাদের কাছে গতানুগতিক বা স্বাভাবিক নিয়তি হিসেবে তারা নীরবে সহ্য করে যাচ্ছে।
আজকে সরকারদলীয় শীর্ষনেতৃত্ব থেকে শুরু করে পাতি নেতারাও চরম দাম্ভিকতায় নির্লজ্জ উচ্চারণ করছেন- ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে আপনারা ভুল করেছেন, প্রায়শ্চিত্তও আপনাদেরকেই করতে হবে। ২০১৯ সালের আগে নির্বাচন সম্পর্কিত কোন আলোচনা হবে না। অথচ সচেতন নাগরিকের কে না জানে, তারা নির্বাচনের আগেই অসংখ্যবার বলেছেন, যেহেতু সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাটি বিলুপ্ত হয়ে গেছে (যদিও পঞ্চদশ সংশোধনীটাই শাসনতন্ত্রের মৌলিক সত্তার পরিপন্থি) সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য নির্বাচনটি করতে হচ্ছে। ফোন করা, অনুরোধ করা, পীড়াপীড়ি করা (রেফারেন্স) তাও হাস্যকর এই কারণে যে, এর সবই ছিল বিএনপিকে ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে অংশগ্রহণ করানোর জন্য। শুধু খালেদা জিয়ার দৃষ্টিকোণ থেকেই নয়, ওই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার কোন বাস্তবতাও ছিল না। বিএনপি প্রথমে নির্বাচনটি বর্জনের কথা বলে পরে প্রতিহতেরও ঘোষণা দেয়। কিন্তু এর কোনটাই তাদের পক্ষে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় নি। বরং ২০১৩-এর ২৯শে ডিসেম্বর মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’র নিদারুণ ব্যর্থতা রাজনৈতিকভাবে বিএনপিকে বিধ্বস্ত ও বিকলাঙ্গ করে দেয়। বান কি মুন থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক গণতান্ত্রিক শক্তিসমূহ- যারা সকল দলের অংশীদারিত্বের নির্বাচন চেয়েছিলেন তারাও বিএনপির সাংগঠনিক বেহাল অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে যান। এখানে আরেকটি মজার বিষয় হলো-  ৬৭টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল থাকা সত্ত্বেও কেন তিনি ১৫৩টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত করে আনলেন, বিবেকের দর্পণের সামনে দাঁড়িয়ে আত্মজিজ্ঞাসা করলে তিনি এর সদুত্তর খুঁজে পাবেন আমি নিশ্চিত।
খালেদা জিয়ার অফিসের বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট ও মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন করে বলা যায় আধুনিক সভ্যতা থেকে তাকে বিযুক্ত করে রাখা হয়েছে। ৫ই জানুয়ারির সমাবেশকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে যে ঘটনাগুলো ঘটে গেল এই ঘটনাটির পর সেটাকে আর ভুল হিসেবে দেখা যাচ্ছে না। এটা কোন রাজনৈতিক আচরণের মধ্যে তো পড়েই না- সম্পূর্ণভাবে শিষ্টাচার-বহির্ভূত। সরকারের এই অদূরদর্শিতা ও অপরিণামদর্শিতা কোন মারাত্মক পরিণতি ডেকে নিয়ে আসতে পারে।
বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত অনেক ব্যক্তিত্ব ও রাষ্ট্রস্বীকৃত ব্যক্তিত্ব এত দিন যারা অজানা আশঙ্কায় নীরব, নিস্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলেন, কাছিমের মতো পেটের মধ্যে মাথা লুকিয়েছিলেন, টক-শোতে, লেখনিতে, বিশ্লেষণে অকষ্মাৎ তারা প্রচ-ভাবে মুখর হয়েছেন একচ্ছত্র ক্ষমতাধারী নেত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের নিমিত্তে। গোটা দেশ আজ দুটি শিবিরে বিভক্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংবাদিক, সরকারি কর্মকতা-কর্মচারী, চিকিৎসক, আইনজীবী, বুদ্ধিজীবী, কবি ও কেরানি সকলেই কোন না কোন দলের কাছে নিজেদের সত্তা বিক্রি করে বসে আছেন। কেউ কেউ সুবিধা নেয়ার জন্য আর সাধারণ জনগোষ্ঠি নিজেদের নিরাপত্তার জন্য। কারণ তারা আজ বড়ই অসহায়। যেকোন অজুহাতে জঙ্গি বা সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত হয়ে নির্যাতনের স্বীকার হওয়ার আশঙ্কায় তারা শঙ্কিত থাকেন। সামাজিক এই অনিশ্চয়তার মুহূর্তে রবি ঠাকুরের উক্তিটি আমার বারবার মনে পড়ছে- ‘অলক্ষুণের এই দুর্যোগে বেঁচে থাকাটাই সব’।
কোকোর মৃত্যুতে প্রেসিডেন্ট এবং স্পিকার যারা দলের ঊর্ধ্বে, জাতির অভিভাবক- নিঃসন্দেহে তাঁরা সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে খালেদা জিয়াকে সমবেদনা জানাতে পারতেন। কিন্তু তাও হয় নি। বিএনপি’র পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ন্যূনতম সম্মান না দেখানো রাজনৈতিক শিষ্টাচার-বিবর্জিত। যেকোন সুনাগরিক নৈতিকতার খাতিরে এটা স্বীকার করতে বাধ্য। কিন্তু এটা নিয়ে সংবাদমাধ্যমগুলোতে যে তর্ক-বিতর্কের ঝড় উঠলো সেটাও নিতান্তই বাড়াবাড়ি। রাজনীতির সুষ্ঠু চর্চা ও পরিচর্যা নেই বলেই ‘নেই কাজ তো খই ভাজ’ -এর মতো অবস্থা। দেশবাসী আশ্চর্যান্বিত হয়েছে যে, কোকোর মৃত্যুর দিনে এমনকি জানাজার দিনেও বিএনপি তথা ২০ দলীয় জোট তাদের অবরোধ কর্মসূচি তো প্রত্যাহার করেই নি এমনকি সাময়িক শিথিলও করে নি! এতে করে তারা দেশবাসীর কাছে জোরালোভাবে প্রমাণ করলো যে ক্ষমতার মোহে তারা কতটা অন্ধ। অন্যদিকে কোকো রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। পিতা-মাতার উত্তরাধিকার ছাড়া অন্য কোন পরিচয়ও তার নেই, তবুও তার জানাজায় বিশাল সমাগমটি নিদারুণ উপেক্ষা না করে বিশ্লেষণের দাবি রাখে- অবহেলার বিষয় তো নয়ই।
দেশ যখন অগ্নিদগ্ধ হচ্ছে- সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ যখন সাধারণ মানুষের জীবনকে চরম আতঙ্কের মধ্যে নিপতিত করেছে তখনও এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে কোনরকম উদ্বেগ আছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে না। বিএনপির রাজনৈতিক কর্মসূচিতে জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোন কথাই নেই। থাকলে আসন্ন ২রা ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে যাওয়া এসএসসি পরীক্ষার বিষয়টি তাদের বিবেচনায় থাকতো। দেশের মানুষের প্রত্যাশা ছিল কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার গুরুত্ব বিবেচনা করে হরতাল-অবরোধ বা নেতিবাচক কোন রাজনৈতিক কর্মসূচি তারা স্থগিত রাখবেন। উভয় জোটেরই কর্মসূচির শেষ কথা- ক্ষমতা। একদল ক্ষমতায় থাকবেনই, আরেক দল ক্ষমতায় আসবেনই। দেশ কোথায় গিয়ে দাঁড়াচ্ছে সেটি তাদের কাছে বিবেচ্য বিষয় নয়।
গত ৫ই জানুয়ারি জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণটি আমি গভীর মনোযোগের সঙ্গে শ্রবণ করেছি। সেখানে তার এক বছরের অর্জন-সফলতার চিত্র আর খালেদা জিয়ার চৌদ্দ-গুষ্টি উদ্ধার করা হয়েছে। শুধু দেশে বিদ্যমান সীমাহীন দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারিত হয় নি। বিএনপিও দুর্নীতির বিরুদ্ধে টুঁ শব্দটি করে না। এই সমীকরণের অর্থ জনগণ বুঝতে অক্ষম মনে করা নির্বুদ্ধিতার পরিচয়। শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়ার জন্য এটি ভয়াল কোন বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে।
বিএনপি কিভাবে গণতন্ত্র রক্ষা করতে চায় তা কি তারা কখনো বলেছে। মানুষ হত্যা করে তো গণতন্ত্র রক্ষা করা যায় না। ২৭ দিন লাগাতার অবরোধ কর্মসূচিতে এ পর্যন্ত নৃশংসতায় নিহত হয়েছে ৪৫ জন সাধারণ নিরীহ মানুষ। একটি জরিপ মতে, অর্থনীতির ক্ষতি কমপক্ষে ৫৫,০০০ কোটি টাকা। প্রতিটি সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকা হুমকির সম্মুখীন। দেশের রপ্তানি খাত থেকে শুরু করে পর্যটন শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্যের সর্বক্ষেত্রে প্রচ- স্থবিরতা বিরাজ করছে। কৃষক তার উৎপাদিত ফসল বিক্রি করতে পারছে না- পারলেও সঠিক মূল্য পাচ্ছে না, সাধারণ খেটে-খাওয়া শ্রমিক কাজ পাচ্ছে না। বাসের নিরীহ যাত্রীটি- দুই পক্ষের কারও রাজনীতির সঙ্গে যার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই- অতর্কিত পেট্রলবোমায় পুড়ে অঙ্গার হয়ে যাচ্ছে। নিষ্পাপ শিশু থেকে নারী কেউই সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদীদের নৃশংসতা, পৈশাচিকতা থেকে রেহাই পাচ্ছে না।  যেন সাধারণ মানুষ হয়ে এ দেশে জন্ম নেয়াটাই তার অপরাধ! ধরে নিলাম এই সন্ত্রাসে খালেদা জিয়ার কোন হাত নেই, কিন্তু তার বিরামহীন অবরোধ-হরতালের ছত্রচ্ছায়ায়ই তো এই নাশকতা, নৃশংসতা ও পাশবিক হত্যাকা-ের পটভূমি তৈরি হয়েছে। আর চোরাগুপ্তা জঙ্গি হামলা ছাড়া অন্য কোন রাজনৈতিক কর্মকা- তো সাধারণ জনগণের কাছে দৃশ্যমানও হচ্ছে না। অন্যদিকে প্রশাসনযন্ত্রের শীর্ষকর্তাদের দম্ভোক্তি রাজনীতিতে শুধু আতঙ্ক আর সংশয়ই নয়- একটা মারাত্মক বিপর্যয়ের আশঙ্কা তৈরি করেছে।
নূর হোসেন, ডা. মিলনদের মতো আত্মাহুতি দেয়ার জন্য এখন আর কেউ নেই। কেন-না দেশের শতকরা ৮৫ ভাগ লোক বিশ্বাস করে, রাজনৈতিক আদর্শের প্রশ্নে দুজন মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। এ যেন জলে কুমির, ডাঙায় বাঘ। দেশে যা কিছুই ঘটুক তিনি ক্ষমতা ছাড়বেন না- কোন সমাধানের দিকেও যাবেন না। আর বেগম জিয়ার অবস্থান হচ্ছে- ‘তোরা যে যা বলিস ভাই, আমার সোনার হরিণ চাই’- দেশ সোমালিয়াই হোক আর জাহান্নামেই যাক। রাজনীতিকে কুক্ষিগত রাখার দাবাখেলায় তারা উভয়েই সমান পারদর্শী। উভয়েই তরুণ সমাজকে সুকৌশলে অবক্ষয়ের অতলান্তে নিক্ষেপ করেছেন, বিকল্প কোন নতুন শক্তির উত্থান ঘটতে দেননি। একমাত্র এখানেই তাদের সাফল্য আকাশছোঁয়া।
’৬০-এর দশক থেকে ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত এদেশের ছাত্র-সমাজ বিশেষ করে ছাত্রলীগ বাঙালি চেতনার উন্মেষ, বিকাশ, ব্যাপ্তি ও স্বাধীনতার চেতনা ও সফলতার যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে তার সঙ্গে বর্তমান ছাত্র রাজনীতির কোন চেতনাগত ও চারিত্রিক যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সন্ত্রাস এবং অর্থ এখন সংগঠনের পদলাভের প্রধানতম যোগ্যতা। এর আগে বিশ্বজিৎ হত্যাকা-ের সঙ্গে যুক্ত একটি ছেলে তার জবানবন্দিতে বলেছিল, মূল নেতৃত্বের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য সে এটি করেছে। মাত্র ক’দিন আগে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করতে গিয়ে ধরা পড়া ছাত্রদলের একটি ছেলে বলেছে যে, ‘তাদেরকে দল থেকে আশ্বাস দেয়া হয়েছে, যে যত বেশি গাড়ি পোড়াতে পারবে তাকে তত ভাল পদ দেয়া হবে। কি ভয়াবহতাপূর্ণ অপরিণামদর্শিতা! যে কারণে শুভ বোধসম্পন্ন অংশটি সম্পূর্ণভাবে রাজনীতিবিমুখ হয়ে পড়ছে। আর স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক অঙ্গনটি দুর্বৃত্তদের অভয়ারণ্যে পরিণত হচ্ছে। এটি দেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতির জন্যও একটি মারাত্মক অশনি সংকেত।
স্বায়ত্তশাসন থেকে স্বাধিকার, স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতার মূল কারিগর ছাত্রলীগই, আর বঙ্গবন্ধু এর স্থপতি। ছাত্ররাই এখানে সবসময় সকল রাষ্ট্রীয় দুঃশাসন ও অপশাসনের বিরুদ্ধে প্রজ্বলিত মশাল বহন করেছে, রুখে দাঁড়িয়েছে। আমি নিশ্চিত এই বাস্তবের আলোকেই সুপরিকল্পিতভাবে নতুন প্রজন্মকে অবক্ষয়ের গভীরে নিমজ্জিত করে দেয়া হয়েছে। ’৯০ পর্যন্ত সামরিক শাসনের সময়ও দেশের কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র সংসদ ছিল। কিন্তু এরপর ক্রমান্বয়ে সুকৌশলে তা বিলুপ্ত  করা হয়েছে। সেই ছাত্রদেরকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজির সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। এখন যে যত বড় সন্ত্রাসী সে তত বড় নেতা। নির্বাচনের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের ভোটে নেতৃত্ব নির্বাচিত হলে কোনভাবেই এ অবস্থাটি তৈরী হতো না, কেন না- সেক্ষেত্রে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের সমর্থন পাওয়ার জন্য আদর্শ ও নৈতিকতার চর্চার মাধ্যমে তাদের আস্থা ও শ্রদ্ধা অর্জন করতে হতো।
এ কথা বলার অধিকার আমি রাখি এই কারণে যে, স্বায়ত্তশাসন থেকে স্বাধিকার, স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতা অর্জনের আন্দোলনের উত্তরণে আমি সক্রিয় ছিলাম। আমাদের সময়ে ছাত্ররা মূল রাজনৈতিক আন্দোলনের ধারাকে তৈরি করেছে বঙ্গবন্ধুকে সামনে নিয়ে। কিন্তু কোন অবস্থাতেই কারও অঙ্গসংগঠন ছিল না। সেই আমি কখনোই তাদের ৬০ দশকের রাজনৈতিক পথ পরিক্রমণের ধারায় আর দেখতে চাই না। কারণ, তখনকার ও এখনকার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। কিন্তু অবশ্যই তারা জ্ঞান ও প্রদীপ্ত আলোকচ্ছটায় শিক্ষাঙ্গনে উদ্ভাসিত হবে এবং দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে- এটিই এখন আমার মতোই দেশবাসীরও কাম্য। গোটা দেশটা আজ সরকার ও বিরোধী পক্ষের শুধু জেদেরই শিকার নয়, জাহান্নামের আগুনে দগ্ধীভূত। এই অসহ্য অসহনীয় পরিবেশ থেকে দেশবাসী আমার মতোই আল্লাহর কাছে নিষ্কৃতি প্রার্থনা করছেন বলেই আমার বিশ্বাস।
==================
আপডেট >>  ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫, বুধবার

No comments

Powered by Blogger.