নূর হোসেন সুন্দরী নীলাকে ‘রক্ষিতা’ বানাতে চেয়েছিল
কাউন্সিলর নূর হোসেনের ‘রক্ষিতা’ হতে
চাননি বলে সব হারাতে হয়েছে সুন্দরী জান্নাতুল ফেরদৌস নীলাকে। নূর হোসেনের
কারণেই নীরার সাজানো-গোছানো সংসার ভেঙ্গেছে। স্বামীকে ডিভোর্স দিতে হয়েছে।
জান্নাতুল ফেরদৌস নীলা নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর
ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুব মহিলা লীগের
রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নীলার শিক্ষাজীবন ছিল নারায়ণগঞ্জ সরকারি তোলারাম
কলেজ, সিদ্ধিরগঞ্জ রেবতি মোহন পাইলট উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। নীলার অপরাধ নূর হোসেনের চোখে সে ছিল সুন্দরী। এক সময়
নূর হোসেনের কুনজরে পড়ে সে। এরপর থেকেই নীলাকে পেতে নানা ছলচাতুরি শুরু করে
নূর হোসেন। এক সময় নূর হোসেন নিজেই নীলাকে নিজের স্ত্রী বলে প্রচার চালাতে
থাকে। স্বামীর জীবন রক্ষা ও সন্তান যেন বাবাহারা না হয়; সেজন্য জীবনের
বিনিময়ে তাকে ‘সূক্ষ্ম’ চাতুরী করতে হয়েছে দীর্ঘদিন। নূরের সঙ্গে হোটেল
শেরাটনে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে রাতযাপন এবং একইসঙ্গে ভারত সফরে যেতে হয়েছে
তাকে।
হোটেল শেরাটনে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে রাতযাপন এবং একইসঙ্গে ভারত সফর প্রসঙ্গে কাউন্সিলর নীলার দাবি, তখন আমার মেয়ের বয়স (অফিয়া জাহান সুমাইতা) ৫ বছর। তাকে দার্জিলিংয়ের একটি স্কুলে ভর্তির প্রয়োজনে ভারত যাওয়া হয়। ভর্তির সময় নূর হোসেন আমার সন্তানের অভিভাবক হিসেবে স্বাক্ষরও করেন। তবে তার আরেক বন্ধুর ফ্যামিলির সঙ্গে যাওয়ার কারণে পাশাপাশি রুমে থাকলেও কোনো অঘটন ঘটেনি। আর হোটেল শেরাটনে রাতে থাকলেও আলাদা ছিলাম দুজন। আমি খাটে ঘুমিয়েছে আর নূর হোসেন সোফায়। কারণ জাঁকজমকপূর্ণ এক অনুষ্ঠানে মদ খেয়ে ওই রাতে মাতাল ছিল নূর হোসেন।
বিয়ে না করেও গোপনে কোনো স্থানে একসঙ্গে যাওয়া-থাকা উচিত হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে বলেন, নূর কথা দিয়েছিল— সে শুধু আমাকে দেখবে; কিছু চাইবে না। সত্য বলতে কী— আমার মতো মেয়ে নূর হোসেনের মতো লোককে পছন্দ করার মতো কিছু নেই। ৫৪ বছর বয়সের পুরুষকে ২৭ বছরের মেয়ের পছন্দ করার কথা নয়। আর নূরের অর্থবিত্তের প্রতিও লোভ ছিলনা আমার। এছাড়া এলাকার সম্পর্কে নূর হোসেনকে ‘চাচা’ ডাকতাম আমি।
কাউন্সিলর নীলা জানালেন, নূরের সঙ্গে আমার তেমন সখ্য ছিলনা। বাবা হাজী আবদুল মোতালেবের রাজনীতির সুবাদে (৩০ বছর ধরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি) পরিচয়। ২০১২ সালের ১ ডিসেম্বর কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর যোগাযোগ বাড়ে। এ সময়ই তার লোলুপ দৃষ্টি পড়ে আমার ওপর। নানা কৌশলে পরিকল্পনা আঁটে আমাকে ‘রক্ষিতা’ করার।
নীলা জানান, আমাকে পেতে নূর সূক্ষ্ম পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে থাকে। আমার মন জয় করতে কাজে অকাজে বাড়িতে গাড়ি পাঠিয়ে দিতেন। সময় অসময়ে শিমরাইল ট্রাকস্ট্যান্ডের নূরের কাউন্সিলর অফিসে ডেকে পাঠাতেন। কাজের অজুহাতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসিয়ে রেখে আজগুবি গল্প করতেন। একদিন বলেই বসলেন, নীলা আমি তোমাকে অনেক পছন্দ করি; এটা বোঝ না। তুমি চাইলে তোমাকে আলাদা বাড়ি গাড়ি দিয়ে ‘রাজারহালে’ রাখতে পারি। তুমি কখন আসতে চাও বলো। নূর হোসেনের এই প্রস্তাবের প্রতিবাদ করে বলি আপনি আমার চাচা। বয়সের পার্থক্য দ্বিগুণ। এছাড়া স্বামী-সন্তান নিয়ে সূখের সংসার আছে আমার। কী প্রয়োজনে আপনার সঙ্গে সম্পর্ক করব। প্রতিবাদের পর আমি নূরের ফোন ধরা বন্ধ করে বাড়িতে চলে আসি। বাইরে বেরুনো একদম বন্ধ করে দেই। এ সময় নূর তার সহযোগী আরিফুল হক হাসান ও শাহজাহানকে বাড়িতে পাঠায়। একবারের জন্য হলেও নূর হোসেনের ফোন ধরতে বলেন। এ সময় নূর হোসেন ফোন করে বলেন, নীলা তুমি আমার সম্পর্কে জানো। যা বলি তার চেয়েও বেশি করি। আমার কথা না শুনলে এবং কাছে না এলে বড় বিপদ হবে তোমার। তুমি স্বামীকে আর তোমার সন্তান হারাবে বাবাকে। এখন ভেবে সিদ্ধান্ত নাও— তোমার স্বামী সন্তানের ভবিষ্যৎ কোনদিকে দেবে।
নীলা জানান, এসব ঘটনার মধ্যেই নূর তার সাঙ্গোপাঙ্গদের দিয়ে এলাকায় নানা অপপ্রচার ছড়াতে থাকে। এক সময় এলাকার মানুষের মুখে মুখে রটে যায়— নূর হোসেন নীলাকে গোপনে বিয়ে করেছে— এমন গুজব। বিষয়টি আমাকে বড় দুশ্চিন্তায় ফেলে। স্বামীসহ পরিচিত কয়েকজনের সঙ্গে আলোচনা করি। কিন্তু ইতিপূর্বেই নূরের ঘোষণা দেয়া ‘স্ত্রী পরিচয়’-এর কারণে আমাকে আপনজনরাও অবিশ্বাস করতে থাকে। আমার বিপদে পাশে না দাঁড়িয়ে উল্টো নানা ধরনের যন্ত্রণা দেয়। আমাকে রাস্তায় ছুড়ে ফেলে। এরপর আমি আবারও নূরের বিভিন্ন প্রস্তাবের প্রতিবাদ করে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করি। এবার আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে নূর হোসেন। একদিন ফোনে বলেন, ৩ দিনের মধ্যে স্বামীকে ডিভোর্স দিতে হবে। নইলে তোমার প্রিয় সন্তানের মুখ থেকে আজীবনের জন্য বাবা ডাক বন্ধ হয়ে যাবে। এরপর আমি নূরের বিভিন্ন প্রস্তাবের প্রতিবাদ করে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করি। এবার আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে নূর হোসেন। একদিন ফোনে বলেন, ৩ দিনের মধ্যে স্বামীকে ডিভোর্স দিতে হবে। নইলে তোমার প্রিয় সন্তানের মুখ থেকে আজীবনের জন্য বাবা ডাক বন্ধ হয়ে যাবে। এরপর আমি অনেকটা দিশেহারা হয়ে পড়ি। কার কাছে বিচার চাইব? কারণ প্রশাসন নূর হোসেনের কথায় উঠেবসে। প্রশাসনের শীর্ষ ক্ষমতাধররাও নূর হোসেনের কেনা ‘গোলাম’। এজন্য কোনো ধরনের বাড়াবাড়ি না করে বরং মেয়ে যেন বাবাহারা না হয়— সেদিক বিবেচনায় নিয়ে সাজানো গোছানো সুখের সংসার তছনছ করি। স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে নিজের সর্বনাশ ডেকে আনি।
উৎসঃ দ্য বেঙ্গলি টাইমস ডটকম. @probasebangladesh.com
No comments